লক্ষ্মী পূজার প্রথমদিন || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

ওম বিশ্বরূপস্য ভার্যাসি পদ্মে পদ্মালয়ে শুভ সর্বতঃ পাহি মাং দেবী মহালক্ষ্মী

এবারে দুর্গাপূজার যতই মোটামুটি ভাবে কাটুক না কেন, লক্ষ্মী পুজোর দুর্দান্ত সময় কাটলো। আমার বাবার বন্ধু উত্তম জেঠু দের বাড়িতে প্রতিবছর বেশ ধুমধাম করে লক্ষ্মী পুজো হয়। আসলে জেঠুরা স্বর্ণকার। কৃষ্ণনগরের বুকে একটি বড় সোনার দোকান ওনাদের আছে ।ওনাদের দুটো বাড়ি ।একটি কৃষ্ণনগর শহরের মধ্যে। আরেকটি কৃষ্ণনগরের বাইরে একটি গ্রামে।গ্রামের বাড়িতে ওনারা প্রতিবছরই পুজো করে থাকেন ।আর এই দিনকে অনেক লোকজন খাওয়া-দাওয়া করে ।

20211019_214509.jpg

বাবার তৈরী মূর্তি খবরের কাগজে

বাবা সাধারণত মাটির ঠাকুর তৈরি করে না অর্থাৎ পুজোর সময় মণ্ডপে মণ্ডপে যেমনভাবে পূজো হয় সেই ঠাকুর বাবা তৈরি করে না ।যদি এককালীন বা প্রতিষ্ঠা করার জন্য ঠাকুর তৈরির প্রস্তাব আসে, তবেই বাবা সেটা করে ।
কালকে সকাল বেলায় বর্তমান পেপার নদিয়া মুর্শিদাবাদ পার্ট এ এই ছবিটি বেরিয়েছে। উত্তম জেঠু দের সকলে খুবই আনন্দিত।

20211019_124000.jpg

জেঠুর ইচ্ছে ছিল যে এবারের ঠাকুর একদম ফাইবার গ্লাসের করে নেবেন ,তাহলে আর প্রতিবারে ঠাকুর পাল্টাতে হবে না ।আর এর দায়িত্ব আমার বাবার ঘাড়ের উপর এসে পড়ে ।আশা করছি আপনারা জেনে থাকবেন, হয়তো বা কোন পোস্টে আমি বলেছি,যে আমার বাবা একজন শিল্পী। বাবার কাজ সংক্রান্ত ব্যাপারে হয়তো কোন ভাবে সেরকম ভাবে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করিনি। তবে অবশ্যই কোনো একদিন পোস্টে বাবার পুরো জীবন সম্পর্কে এবং বাবার কাজ সম্পর্কে আমি কথা বলব। আজকে শুধুমাত্র লক্ষ্মীপুজো নিয়েই পোস্ট লিখছি। তো বন্ধুর অনুরোধ এই বাবা ঠাকুর বানালো। আমি এখানে আমাদের কারখানায় তৈরি হওয়ার সময় কয়েকটি ছবি আমার সাথে শেয়ার করছি।

কারখানায় দাদারা মূর্তির কাজে ব্যস্ত

IMG-20211018-WA0010.jpg

ঠাকুর টি এত সুন্দর দেখতে হয়েছে, জেঠুর বাড়িতে একটি মন্দির রয়েছে সেই মাপ অনুযায়ী ঠাকুর তৈরি করা হয়েছে। আর আমার প্রথম দেখাতেই মনে হচ্ছিল ঠাকুর রাজরানীর মতো দেখতে লাগছে ।ভেতরে অষ্টধাতু পরিপূর্ণ ।আরো রীতিনীতি মেনে ঠাকুর তৈরি করেছে বাবা ।

রঙ করার পর কারখানাতে

20211020_175111.jpg

এবার এই ঠাকুর কালকে অর্থাৎ ১৯শে অক্টোবর, সকালবেলায় বেশ কুড়ি জন লোক এসে ঢাকঢোল বাজিয়ে কারখানা থেকে নিয়ে গেল উত্তম জেঠুর গ্রামের বাড়িতে। ওরা ঠাকুর দেখে সত্যিই অভিভূত এবং খুবই আনন্দিত ।খুবই ভালো লেগেছে ওদের এই ঠাকুরের কাজ এবং বিশেষ করে ঠাকুরের মুখের আদল। ওদের মুখের হাসি একজন শিল্পীর কাছে সবথেকে বড় পাওনা।

20211019_192352.jpg

সন্ধ্যাবেলায় আমাদের যাওয়ার কথা ছিল ওদের বাড়িতে।আমি এর আগে ওদের বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোর সময় যেতে পারিনি। কারণ আমাদের বাড়িতেও লক্ষ্মীপুজো হয় বেশ ধুমধাম করে। সেই নিয়েও আমি একটি পোস্ট লিখব কালকে ।আজকে সেসব কথা বলছিনা । এবারের পুজো যেহেতু দু'দিন পড়েছে তাই মা পরের দিন পূজা করছে।তাই যাওয়ার সুযোগ হলো।

আরতির সময়

20211019_205820.jpg

তো ওখানে যাওয়ার পর আমার খুবই মজা হলো ।কারণ প্রচুর লোকজন ছিল আর ঠাকুরের কে দেবী প্রতিমার মত পুজো করা হচ্ছিল। আর ঠাকুরের গঠন ঠাকুরের মুখের আদল এর পরিভাষা যেন অনেকটা পরিবর্তন হয়ে গেছিল পুজোর পরে। আমি খুবই মজা করছিলাম কারন উত্তম জেঠুর দুই মেয়ে রয়েছে।আমার থেকে বয়সে ছোট তবে পূজা আমার থেকে দুই বছরের ছোট। পূজার সাথে আমার খুব ভালো একটি সম্পর্ক ।আমি ছোট বোনের মত ওকে দেখি। একসাথে আমি সবরকম কথা শেয়ার করতে পারি ।একটা ভালো বন্ডিং বলতে পারেন। তো পূজা আর নেহা দুই বোন দুজনেই খুব সুন্দর করে শাড়ি পড়েছিল ।আর দুজনকে খুবই মিষ্টি দেখতে লাগছিল।

আমি আর পূজা

20211019_193314.jpg

20211019_192322.jpg

এছাড়াও আমাদের চেনা পরিচিত বহু মানুষ ছিলেন ।আর আমার থেকে বড়, ছোট ,কিছু দাদা ভাই বোন দিদিরাও ছিল। তাই জন্য আমরা বেশ গল্প গুজব করতে পেরেছি। সময়টাকে ভালো ভাবে কাটাতে পেরেছি । আমাদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে বলতে গেলে ,সেদিনকে ওদের বাড়িতে সকলে প্রায় দুশো জন মানুষ খায়। পুরো গ্রাম একত্রিত হয়ে মজা করে ।তো খুব মজা হয়েছে ।রান্না হয়েছিল - খিচুড়ি, ছেচরা, পোলা ও আলুর দম ,চাটনি, পাপর,পায়েস আর মিষ্টি। রান্না খুবই সুন্দর হয়েছিল।

আমরা

20211019_201138.jpg

সব মিলে একটা দারুন দিন গেছে । সবথেকে বড় হাসির কথা - হয়তো আমার সাথে শুধুমাত্র এই ঘটনাটা ঘটে না, প্রত্যেকটা মেয়ের সাথে এই ঘটনা ঘটে ,আমি যখনই কোথাও যাওয়ার থাকে তার আগে আলমারি খুলে দেখি চারিদিকে। তারপর মাকে বলি, মা আমার কাছে একটাও পড়ার মতো জামা নেই ।কালকেও যাওয়ার সময় ঠিক একই ঘটনা হয়েছিল । আমি নিজেও খুব আপ্সেট ছিলাম কারণ আমি বুঝতে পারছিলাম না কোন জামাটা পড়বো, আমার মা বলেন সারা আলমারী ভর্তি জামা আজ আমার চোখে পড়ে না তোর!

যাইহোক কালকে একটা কম্বিনেশন করে জামা পড়ার চেষ্টা করেছি, যাইহোক আমি সাকসেসফুল ,পরে দেখলাম আমাকে ভালোই লাগছে দেখতে।

আলোয় আলোয় ঈশা😅

20211019_205917.jpg

ভারী মিষ্টি মুখ

20211019_212042.jpg

তো এভাবে আমার দিন টা কেটে গেল ।মা লক্ষ্মী সকলের ঘরের মঙ্গল হোক এবং সকলের সুস্থ রাখুক। মা লক্ষী সকলের বাড়িতে অবস্থান করুক ,এ পৃথিবীর মঙ্গল হোক। এটাই চাওয়া। দিনটিকে আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে পেরে আমি অনেক আনন্দিত। লক্ষ্মী পুজো নিয়ে আরেকটি পোস্টও আমি কালকে করার চেষ্টা করব ।আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।নমস্কার।
@isha.ish

Sort:  
 3 years ago 

আপু প্রথমে একটা কথা বলতে চাই তা হলো আপনি দেখতে খুব মিষ্টি। বিশেষ করে আপনার হাসিটা আমার খুব ভালো লাগে।
আর আপনার বাবার হাতের কাজ অত্যন্ত নিখুঁত।
শুভকামনা অবিরাম।

 3 years ago 

অনেক ধন্যবাদ
অনেক ধন্যবাদ
আপনি এতো মিষ্টি যে, যে ভালো,তার চোখে সবাই ভালো।
আপনিও খুব ভালো যে,আর সত্যি বলতে আমি হাসতে খুব ভালোবাসি।আমি চাইও হাসিখুশি থাকতে। আপনিও ভালো থাকুন, হাসতে থাকুন🙈😁

 3 years ago 

আপনার হাসিটাই আমার খুব বেশি প্রিয়।
প্রিয় হওয়ার ও কারণ আছে,
আপনার হাসিটার মধ্যে একটা নির্ভেজালতার ব্যাপার আছে। একদক ই ফেইক স্মাইল না।এটাই বেশি ভালো লাগে আমার।

 3 years ago 

হাসবো যখন ভালোভাবেই হাসবো
ফেক জিনিস টা বেশি দিন টিকে থাকে না,
তাই যে যেমন,তার তেমন থাকাটাই মানুষের মন ছুঁয়ে যায়, তাই নাহ?
আপনিও অনেক মিষ্টি করে কথা বলেন,এটাও ফেক না, আপনার যা মন থেকে হয়, আপনি তাই করেন

 3 years ago 

খুব সুন্দর লাগছে আপনাদের
আর আপনাদের প্রতিমার কাজটাও বেশ সুন্দর এবং নিখুঁত
অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য

 3 years ago 

অনেক ধন্যবাদ দাদা , এত সাপোর্ট করার জন্য।

আলোয় আলোয় ঈশা লাইনটা খুব ভালো লাগলো আমার কাছে। আপনাদের সকলেই একসাথে খুব হাসিখুশি লাগছে, বুঝাই যাচ্ছে আপনি খুব ভালো একটি সময় কাটিয়েছেন। আর আপনার বাবার কাজের প্রশংসা যত করবো ততই মনে হয় কম হবে।

 3 years ago 

অনেক ধন্যবাদ দাদা এত সুন্দর করে আমার পোস্টের প্রশংসা করার জন্য। ভালো থাকুন।

 3 years ago 

খুব সুন্দর উপস্থাপন আপু, আপনাকেও খুব দারুণ লাগছে। মনে হচ্ছে পূজোতে গিয়ে আরো বেশী সতেজ হয়েছেন আপনি। ফটোগ্রাফিগুলো অনেক সুন্দর ছিলো। শুভ কামনা রইল।

 3 years ago 

হ্যাঁ, টা একটু হয়েছিলাম,
আপনার কমেন্ট পড়লেই আরও সজীব হয় যাই আমি😜

 3 years ago 

হতেই হবে, ভাই যে এতো মজা করে কমেন্ট লিখে, হি হি হি

 3 years ago 

প্রথমেই দেবী মা লক্ষী দেবীর পূজার শুভেচ্ছা নিবেন দিদি। দিদি, অনেক নিপুণতার সাথে দেবী মা লক্ষী তৈরি করা হয়েছে। আপনার বাবা ও জেঠু মানে তাদের প্রশংসা করতেই হবে। কাকুর তৈরি মূর্তি টি খবরের কাগজে প্রকাশিত হয়েছে শুনে খুবই ভালো লাগলো। অনেক চমৎকার মুহূর্ত কাটিয়েছেন। দিদিকে দারুন লাগছে। সবগুলি ফটোগ্রাফি খুবই সুন্দর হয়েছে। অনেক অনেক শুভ কামনা দিদি।

 3 years ago 

অনেক ধন্যবাদ দাদা,এত ভালো ভাবে আমার পোস্ট পড়ে কমেন্ট করার জন্য।

 3 years ago 

আপনি তো দেখছি বেশ মন্ত্রও পাঠ করতে পারেন, প্রথমেই মন্ত্র দিয়ে শুরু। এটা কিন্তু বেশ ভালো। মূর্তিটা আসলেই অনেক সুন্দর হয়েছে,ফলে খবরের কাগজে উঠবেই। দেখে বেশ ভালো লাগলো। সারাদিন বেশ আনন্দের সাথে কাটিয়েছেন দেখে যা বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু লাইটিং দেখে মনে হচ্ছে এখনো দূর্গা পুজো চলছে , যাক ভালোই হলো দূর্গা পুজোর আনন্দ লক্ষী পুজোয় কাটিয়ে নিলেন।

 3 years ago 

অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা , আপনি যে সময় নিয়ে আমার পোস্ট পড়েছেন এবং এতো সুন্দর কমেন্ট করেছেন , আমার সত্যিই খুব ভালো লাগলো। ভালো থাকুন। অনেক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

 3 years ago 

এত সুন্দর মা লক্ষী ঠাকুর আমি কখনোও দেখিনি। আপনার দেয়া পোষ্ট এর মাধ্যমে দেখার সুযোগ পেলাম। আপানাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 57962.42
ETH 3050.85
USDT 1.00
SBD 2.25