ফেলে আসা জগতে ঘুরে আসা|| ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
করোনা হল ।অনলাইন পরীক্ষা ।অনলাইন ক্লাস এই করতে করতে গ্রাজুয়েট হয়ে গেলাম ।তারপরে তো আপনারা জানেন ই কলকাতায় চলে এসেছি। কিন্তু একবারও কলেজের দিকে পা দেইনি ।গিয়েছিলাম কিছু অফিসিয়াল কাজে কয়েকবার ।বাইরে অফিস থেকে ঘুরে চলে এসেছি কাজ সেরে। বহুবার চেষ্টা করেছিলাম চারজন দেখা করার, সাথে যদি প্রফেসরদের সাথে দেখা হতো খুব ভালো হতো ।কিন্তু সময় সেটা হতে দেয়নি।
বাড়ি এসেছিলাম কিছুদিন আগে ।হঠাৎ জানতে পারি আমার প্রিয় তিনজন প্রফেসার ,তাদের মধ্যে একজন প্রফেসর তো আমার বাড়িতে এসে লুচি মাংস পর্যন্ত খেয়ে গেছেন, তিনজনের সাথেই আমার খুব ভালো একটা সম্পর্ক। ক্লাসের বাইরে ও কত যে ফোনে পড়া বুঝেছি ওনাদের কাছ থেকে তা ধারণার বাইরে। সেই তিনজন প্রফেসর বদলি হয়ে যাচ্ছেন অন্যান্য কলেজে ।এই কথাটা জানতে পারলাম সোমদত্তার কাছ থেকে। জানতে পেরে মনটা বেশ ভেঙে গেল।
এই বছরের লাস্ট ব্যাচ অর্থাৎ ওদের পরীক্ষা শেষ ।ওরাও বেরিয়ে যাবে ।গত তিন বছর ধরে তিনটে ব্যাচের ফেয়ারওয়েল দেয়া হয়নি। তাই ওদের ব্যাচে বলে ঠিক করেছে যে নাদিম দাদাদের ,আমাদের এবং ওদের নিজেদের ফেয়ারওয়েল ,সাথে প্রফেসরদের ফেয়ারওয়েল একটা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে পালন করা হবে।
সোমদত্তা বেশ রিকুয়েস্ট করা শুরু করলো যাতে আমি কোনরকমে সেদিন উপস্থিত থাকতে পারি ।ওর কথামত আমি রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু মনে ভয় ছিলো কখন কি কাজ বাঁধে ।আমি যদি না যেতে পারি ।ভগবান মুখ তুলে হয়তো চেয়েছিলেন,যে আমি সেদিন উপস্থিত থাকতে পেরেছি ।এর আগে আমার আরেকজন অত্যন্ত প্রিয় প্রফেসর বদলি হয়ে গেছেন ।কিন্তু আমি সেদিন উপস্থিত ছিলাম না। ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল ।
আসলে মানুষ গুলোর সাথে সময়টা অল্প কাটালেও কেমন যেন একটা আত্মিক সম্পর্কের মত তৈরী হয়ে গিয়েছিল ।আসলেই স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি লাইফটা একেবারেই জীবনের তুখর একটা মুহূর্ত। কলেজ গেলাম সাথে সাথে সোমদত্তার মানালি আমাকে জড়িয়ে ধরে আদর করল ।ওদের অনুষ্ঠানের আয়োজন দেখে নিজের পুরনো স্মৃতিগুলো ভেসে আসছিল , কিভাবে আমিও দায়িত্ব নিয়ে এত এত আয়োজন করতাম। ওরা বেশ বড় হয়ে গেছে ।চারিদিকে ক্লাসরুম পুরনো স্মৃতি, সাদা বারান্দায় যেন এখনও একই রকম।
এখনও আমি, সোমদত্তা ,মানিনা হাসতে হাসতে আড্ডা মারছি ক্লাসরুমের সামনের বারান্দায়। সেই দু'বছর আগের যেন বেঞ্চে বসে প্রফেসরের পড়া শুনছি আমি আর দরজার ফাঁক দিয়ে মানালি ইশারা করে ডাকছে ,দিদি কখন ক্লাস শেষ হবে ।সেই গাছটা যেটা ভেঙে পড়েছিল ,সে ভাবেই পড়ে আছে ।ওই গাছটার ওপরে বসে কত দুঃখ-কষ্ট আনন্দ ভাগ করে নিয়েছিলাম। এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ চোখের কোনায় জল চলে এলো ।কাউকে বুঝতে দিইনি ।নিজেকেও না ।
শুধু একটা জিনিস অনুভব করছিলাম জীবনে আমরা অনেক দোষ করি ,আমাদের আশেপাশের মানুষ অনেক দূরে চলে যায় কিন্তু আমরা যদি শুধু ভালোটুকু নিয়ে স্মৃতি হিসেবে রেখে সবকিছুকে ভুলে সবকিছুকে মাফ করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি, তাহলে সব থেকে বড় শান্তি। যে মুহূর্তে আমরা বেঁচে আছি ,এই মুহূর্ত আমরা কখনো ফিরে পাবো না ।এই মুহূর্ত আশেপাশের মানুষজন কেউ থাকবে না ।তাহলে কেনই বা এত ঝামেলা করি! সবার সাথে !
আরেক জায়গায় যেতে হবে ,এইজন্য অনুষ্ঠানের মাঝপথে সকল প্রফেসরদের থেকে বিদায় নিলাম। প্রফেসররা আমাকে দেখে ভীষণ খুশি হয়েছিলেন, কারণ আমি একবারও দেখা করতে আসিনি এর মধ্যে।সোমদত্তা ,মানালি ,নাদিম দাদাকে বিদায় দেওয়ার সময় কষ্ট হয়নি ।একগাল হাসি নিয়ে তারপর সকলকে বিদায় দিয়ে এসেছি। ওদের উপর আমার অনেক রাগ অভিমান ছিল। সেগুলো যেন সেদিন সবকিছু মিটিয়ে দিয়েছি।কোন রাগ অভিমান আর আমার ভেতরে কাজ করছে না ওদের প্রতি ।
শুধু একটাই চাই। সবাই ভালো থাকুক। সবাই সুস্থ থাকুক আমার পরিচিত মানুষজন ,আমার কাছের মানুষ জন সকলের মঙ্গল হোক ।জীবনের প্রত্যেকটা মুহূর্ত অনেক কিছু শিক্ষা দেয় ।প্রতিটা মুহূর্তের একটা ঘটনা অনেক কিছু শিখিয়ে দিয়ে যায় ।ধরতে পারলেই আপনি রাজা।
লোকেশন
https://w3w.co/ticked.clipboard.remove
আশা করছি আমার আজকের পোষ্ট আপনাদের সকলের ভাল লেগেছে ।সকলে ভাল থাকুন।
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 6/7) Get profit votes with @tipU :)
This post was upvoted by @hustleaccepted
Use our tag #hustleaccepted and mention us at @hustleaccepted to get an instant upvote.
Also, you can post at our small community and we'll support you at Hustle Accepted
Visit our website at Hustle Accepted
আপু আপনার কলেজের স্যার ম্যাডাম এবং বন্ধুবান্ধবের সাথে খুব সুন্দর একটা সময় কাটিয়েছেন। আমার কলেজের প্রফেসরদের সাথে আমার ও খুব ভালো একটা সম্পর্ক আছে।তেনারাও খুব ভালো মনের মানুষ। ছবিতে কিন্তু আপনাকে বেশ সুন্দর লাগছে আপু। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এই পোস্ট টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল। ভালোবাসা অবিরাম।
ধন্যবাদ আপনাকে।
সব মানুষগুলো সারাজীবন একটি জায়গায় স্থির থাকে না ।যেমনটি আপনার তিনজন প্রিয় প্রফেসর স্যারদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে ।যারা সব সময় আপনাকে পড়াশোনায় হেল্প করেছে। আপনার পরিচিত মানুষের জন্য আশীর্বাদ রইল সকলের জন্য ভালো থাকে।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।
দিদি আপনার জুতো কিন্তু সুন্দর হয়েছে। আপনার পছন্দে কিনেছিলেন নাকি আন্টির পছন্দে? ঐদিন আপনার জুতো কেনার বল্গটি পড়ছিলাম তো তাই হঠাত মনে পড়ে গেল। হাহা।
যাইহোক আজকে আপনার কলেজের প্রিয় প্রফেসারদের সাথে সুন্দর একটি অনুষ্ঠান এ সময় কাটিয়েছেন। সেই সাথে অনেক গুছিয়ে কিছু কথা শেয়ার করেছেন। পড়ে ভাল লাগল। ডেইলি লাইফ বল্গ গুলো পড়তে কেমন জানি ভাল লাগে। অনেক ধন্যাবাদ আপনাকে দিদি। ভালবাসা নিবেন।
এটা মা এরই জুতো দাদা, হিহি।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোষ্ট পড়ার জন্য।খুব ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে।