সরস্বতী পুজোর ঘোরাঘুরি || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
নমস্কার বন্ধুরা । আশা করছি সকলে ভালো আছেন।কালকের কথা মতো চলে এলাম সরস্বতী পুজোর ঘোরাঘুরি নিয়ে গল্প করতে।
বাড়ির পুজো শেষ হয়ে যাওয়ার পর ফ্রেশ হলাম আর রেডি হওয়া শুরু করলাম। আমি জানতাম আজ দেরি হবে ।বাড়ির পুজো থাকলে বেরোতে একটু দেরি হয়ে যায়। তবে আমার বাড়িতে সন্ধ্যেবেলায় একা ঘোরাঘুরি করতে দেয় না ।তাই সকাল সকাল বেরিয়ে আসতে হবে ।বাবা ভীষণ বকাবকি করে না হলে।
আমি আগের পোষ্টে বলেছিলাম যেহেতু আমার পরীক্ষা চলছে, আমি অনেক আগে থেকেই কোন শাড়ি পড়বো কি পড়বো সবই ঠিক করে রেখেছিলাম । সেই মতোই সব গোছানো ছিল ।সেই মতই রেডি হয়ে নিলাম। বেশ কিছু বছর আগেও আমি একা শাড়ি পড়তে পারতাম না। আর এখন কাউকে ধরতেও হয় না ।একা একাই শাড়ি পড়ে ফেলি।
তারপর শাড়ীটা পড়া হয়ে যাওয়ার পরে আমার মা এসে আমার মুখটা কালো করে দিয়ে গেল ।বলল হলুদ শাড়ি পর। এইসব কীসব শাড়ি পড়েছিস! আজকে পুজোর দিনে এমন বুড়ি শাড়ি কে পড়ে! , আমার মেজাজ গরম হয়ে গেল।আমার ইচ্ছা, সবাই যখন হলুদ পড়ছে ,আমি একটু অন্যরকম পড়বো। তাই আমি এরকম শাড়ি পড়েছি।
আমার মা বলতে থাকলো যে ভালো লাগবে না, দেখতে ভালো লাগবে না ।এই শাড়ি পরিস না। তাও আমি এই শাড়ি পড়লাম। তারপর সাজুগুজু শুরু হল ।সাজুগুজু করতে একটু কম সময় লাগে। কিন্তু কাল একটু বেশি সময় লাগল ।আমার চুল পুরোপুরি স্ট্রেট। আর আমি খুব শখ করে এই প্লাটফর্ম থেকে উপার্জন করা টাকা দিয়েই এক বছর আগে একটা কারলার কিনেছিলাম।
তারপর মাঝেমধ্যেই কার্ল করি। খুবই ভালো লাগে। করতে বেশ সময় লাগে, কারণ একহাতে করা ভীষণ চাপের ।এই করতে করতে প্রায় একটা বেজে গেল। তারপর আমি গেলাম টোটো করে আমার বান্ধবীর বাড়ি ।
আমার বান্ধবীর বাড়ির সামনে যে পুজোটা হয় সেটা ওদের পূজো ।ক্লাবের নাম উদ্যোগ ।ওই পাড়ার সকলে মিলে ,সকলে বলতে ইয়ং ছেলে মেয়ে মিলে এই পুজোটা করে ।প্রতিবারেই পুজো হয়। আর ওরা ভীষণ সুন্দর থিম করে পুজো করে ।আর ঠাকুর টা তৈরি করে ওদের টিমের একজন অর্থাৎ সায়ন দা ।
প্রতিবার আমি পুজোর দিনে ওদের বাড়িতে। দুপুরবেলায় খাওয়া দাওয়াও হয়।যাইহোক যাওয়ার পরেই সবার সাথে অনেকদিন পর দেখা হওয়াতে বেশ গল্পগুজব শুরু হলো ।এবারে ওদের পুজোর থিম ছিল স্মরণ।
স্মরণ বোঝাতে এখানে যারা করোনাতে প্রাণ হারিয়েছে, তাদের উদ্দেশ্যে তাদের কে স্মরণ করেই এই পুজোটা রেখেছে ।ওদের এই থিম। আমার খুবই পছন্দ হলো। বাগদেবীর মূর্তিটা অতীব সুন্দর হয়েছে। আর সব থেকে বড় কথা গুটিকয়েক ১০/১২ জন মিলে পুজোটা করে ওরা।
আর এত পরিশ্রম করে সমস্ত কিছু তৈরি করেছে ওরা বহুদিন আগে থেকে ।সমস্ত কিছুই ওদের পরিশ্রমের ফসল ।কৃষ্ণনগরের পক্ষ থেকে ওদেরকে সেরা পুজো হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।কৃষ্ণনগরে অনেক অনেক ঠাকুর হয়েছে ।কিন্তু আমি সব জায়গায় যাইনি।
আগে নিজের কলেজ থেকে শুরু করে আশেপাশে সমস্ত স্কুলগুলোতে যেতাম ।কিন্তু এখন বেশি ঘোরাঘুরি করতে ইচ্ছা করে না ।তাও আমার ভাইয়ের স্কুল অর্থাৎ আমাদের বিখ্যাত কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলে না গেলেই নয় । ওরাও সুন্দর পুজো করে।
যাইহোক খাওয়া দাওয়া করলাম ওখানে,সবাই মিলে খেতে বসলাম। এবারে পোলাও আর আলুর দম ছিল ঠাকুরের প্রসাদ হিসাবে ।খাওয়া-দাওয়ার পর আমার বান্ধবী পর্ণবী র সাথে জেদাজেদি শুরু করলাম ঘুরতে যাওয়ার জন্য।
যেহেতু ওর বাড়ির পুজো ।বাড়ির সামনে পুজো ।তাই ওর অনেক দায়িত্ব থাকে। তাই ও সহজে ওখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না ।তাও আমার জোর করাতে ও বেরিয়ে আসলো। আগের বছর আমি আমার এক দিদি আর আমার সমবয়সী এক বন্ধুর সাথে বেরিয়েছিলাম ।
এবছর এত ক্লান্ত ছিল শরীর, তাই জন্য আমি আর বেশি ঘোরাঘুরি করলাম না । সোজা চলে গেলাম আমাদের কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলে। ওখানে যাওয়ার পর ছবি তুলতে তুলতে হঠাৎ দেখা হয়ে গেল আমার বন্ধু কাম ভাই সম্রাটের সাথে ।
সম্রাটকে হয়তো আপনারা কিছুজন চেনেন । কিছুদিন আগে ব্যাটাকে এই প্ল্যাটফর্মে আমি আনার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু গত বেশ কিছুদিন হল সে ব্যাটা কোন পোস্ট করে না। তার জন্য আমার তার ওপর বিশাল রাগ।
দেখলাম সে এবং তার গার্লফ্রেন্ড অর্থাৎ আমার স্কুলের খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু অদিতি দাঁড়িয়ে রয়েছে। তারপর কিছুক্ষণ ধরে সম্রাটকে বকাবকি করলাম। বেশ বকাঝকা খেলো। বকাবকি শেষ করে ফটো সেশন শুরু হল ।নানান ধরনের ফটো তোলা ।
এদিক-ওদিক করে এসব করতে করতে সময়টা বেশ গেল ।সাথে অনেক হাসি মজা চলছিল।হুট করে দেখলাম বাবা ফোন করেছে ।তখন বাজে চারটে ।বাবা আমাকে নিতে চলে এসেছে ভাইয়ের সাথে ।
বাড়ি থেকে অনেকবার বলেছিল ভাইকে নিয়ে বেরোতে। কিন্তু ভাইকে নিয়ে বেরোলে আর এক ঝামেলায় পড়তে হয় ।সারাক্ষণ রাস্তায় ও বলতে থাকে এটা কিনে দে, ওটা কিনে দে। তাই ওকে নিয়ে বেরোনো আমার খুব চাপের হয়ে যায়। তাই জন্য আমি খুব একটা ওকে নিয়ে বের হতে চাইনা ।
বাবা আমাকে নিতে আসলো। তারপর বাবার গাড়ি করে বাড়ি পৌঁছে গেলাম ।সারাদিন সকাল থেকে যা গেছে ,তারপরে শরীর কি আর চলে ?কিন্তু বাড়ি এসেই আবার সমস্ত কিছু ঠিকঠাক করে রেখে, ফ্রেশ হয়ে সন্ধি পুজোর জন্য জোগাড় করতে হল।
সেই নিয়ে তো আগের দিনই আমি সব বলে ফেলেছি। এই ছিল আমার ঘোরাঘুরি ।কৃষ্ণনগরের প্রচুর প্রচুর ঠাকুর গুলো আমার দেখা হয়নি, তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারলাম না । রাতের বেলায় দেখলাম বাড়িতে পুজোর প্রসাদ এ ভর্তি ।কেউ পোলাও ,আলুর দম দিয়ে গেছে ।কেউ আবার ফ্রাইড রাইস আলুর দম দিয়ে গেছে। রাতের খাবার বেশ ভালই হল। আর তার পর শরীরের ক্লান্তি নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তাড়াতাড়ি।
কৃষ্ণনগরে সরস্বতী পুজোতে দেখি আজকাল কত পরিমাণে ঠাকুর হচ্ছে! বাঙালি সত্যিই মেতে ওঠে সবকিছুতে !ব্যাপারটা এরকম দাঁড়িয়ে গেছে এখন, আমাদের শহরে কোন পুজো হলে যেন মনে হয় কি বিরাট বিরাট পুজো হচ্ছে!
একটু ঢং🤪
https://youtube.com/shorts/NRXzRsHctN0?feature=share
যাইহোক মানুষ ভালো থাকুক। আনন্দে থাকো ।এটাই চাওয়া। ভগবান মঙ্গল করুক, এটাই প্রার্থনা ।আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আশা করছি আমার আজকের পোস্ট আপনাদের ভাল লেগেছে ।আপনাদের সকলের মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকলাম ।সকলে ভাল থাকুন। সুস্থ থাকুন।
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 0/6) Get profit votes with @tipU :)
আমিও সরস্বতী পূজা দেখতে গিয়েছিলাম পরশু অনেক এনজয় করেছি। অনেক ভালো লেগেছে আমার। আপনার পোস্ট দেখে বুঝতে পারছি আপনিও অনেক এনজয় করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে আপনার স্মৃতি শেয়ার করার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ দাদা।
ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাওয়ার অনুভূতি অন্য রকম হয়ে থাকে। আপনি খুব সুন্দর মুহূর্ত খাটিয়েছেন পূজা মণ্ডল। সবাইকে নিয়ে খুব ভালো সময় পার করছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো খুবই অসাধারণ হয়েছে। বিশেষ করে কাপড় পরা অবস্থায় আপনার ছবিটি দেখতে খুবই ভালো লাগছে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।
অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা।
দিদি আপানার সরস্বতী পুজো দেয়া পুজোর কাটনো মুহূর্তগুলো দেখে খুব লাগলো ৷কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয় আমি এবার পুজোটা ভালো ভাবে করতে পারি নি ৷কারন পুজোর দুই দিন আগে থেকেই আমার শরীরটা খুব খারাপ ছিলো শুধু পুজো করেছি আনন্দ করতে পারি নি ৷ আপনার আনন্দের মূহুর্ত গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো ৷ধন্যবাদ মুহূর্ত গুলো শেয়ার কারার জন্য
আশা করছি আপনি এখন সুস্থ আছেন। ভগবান আপনার মঙ্গল করুক।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
যেমন সুন্দর পুজোর থিম তেমন সুন্দর সরস্বতী ঠাকুর। প্রত্যেকটা ঠাকুর ভীষণ ভালো লাগলো দেখতে। কত বড় করে ওখানে পুজো হয়। আর তোমাকে কি বলবো তুমি তো সবসময়ই সুন্দরী। শাড়ীটাও যেমন সুন্দর লাগছে তেমন চুলটাও কার্ল করে ভীষণ ভালো লাগছে।লাস্টের ভিডিওটা ও দারুন ছিল। মিষ্টি বোন আমার। পুজোয় ঘোরার মুহূর্তগুলো ভীষণ সুন্দর ভাবে আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছো।ভালোবাসা রইলো অনেক।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে দিদি, সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।
সরস্বতী পুজোতে দিদি আপনি খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন । সম্রাট শাহা দাদার সাথে দেখা হয় খুবই মজা করেছেন আপনারা , মুহূর্তটুকু খুবই সুন্দর ছিল এবং আপনাকে শাড়িতে খুবই সুন্দর লাগছে দিদি । আপনার জন্য দোয়া রইল দিদি । আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি । ধন্যবাদ
অনেক ধন্যবাদ দাদা, আপনার জন্য ও অনেক শুভেচ্ছা।
উফফফ আপু শাড়ীতে আপনাকে যা লাগছে।জাস্ট অসাধারণ। খুব সুন্দর লাগছে আপনাকে। বন্ধুদের সাথে খুব মজায় পূজা উদযাপন করেছেন।এটা দেখে খুব ভালো লাগলো। সবাই দেখছে শাড়ি ও পড়েছেন, ব্যাপারটা কিন্তু বেশ সুন্দর। পূজার পাশাপাশি বাঙালিয়ানা টাও ধরে রেখেছেন।খাবার গুলোর কথা আর কি বলব। খুবই লোভনীয়। সবশেষে খাবারের ছবিগুলোই কষ্ট দেয় আমাকে 🥺। প্রার্থনা করি প্রতিটি পূজা আপনার এ রকম মজায় কাটুক। অনেক ভালোবাসা ও শুভকামনা রইল আপনার জন্য।🥰❤️
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে দিদি। ভালো থাকুন।