৫ম পর্বঃ নীল শাড়ি
08-10-2022
২৩ আশ্বিন ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমি ভালো আছি। যাক, আপনাদের সাথে একটি গল্পের কয়েকটি পর্ব শেয়ার করেছিলাম। ৪র্থ এর পর পর্বটি লেখতে টাইম মেলাতে পারছিলাম না। তাই আজ ৫ম পর্বটা লিখে ফেললাম। পর্বটি আর একটি বা দুটি হতে পারে। আশা করি আপনাদের কাছে ভালোই লেগেছে গল্পটি পড়তে।
৪র্থ পর্বের পর
সকাল সকাল আবির তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পড়ে। আজ কাজের প্রথম দিন। প্রথমদিনই লেইট করে গেলে ঝামেলা হয়ে যেতে পারে। ঘুম থেকে উঠে আবির ফ্রেশ হয়ে নেয়। মামী এখনও আজ ঘুম থেকে উঠেনি। টেবিলের উপরে যা রাখাছিল তা খেয়েই আবির রেস্টুরেন্ট এ চলে যায়। অফিসে গিয়ে আবির সব কাজ বুঝে নেয়। সকাল সকাল রেস্টুরেন্ট এ কফির অর্ডার বেশি আসে। আবির সব কাস্টমারকে ভদ্রতার সাথে খাবার সার্ভ করতে থাকে। কাজের ফাকেঁ আবির সারাকে মেসেজ দেয়, "আপনি কখন আসবেন? " আবির তখন আবার কাজ শুরু করে দেয়। এরই মাঝে মতিন ভাই আবিরকে বলে,"কিছু খেয়ে নাও! " আবির প্রথমে কিছু খেতে চায়নি। তারপর আবির কিছু খেয়ে নেয়।
সারা কাজ নিয়ে একটু ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কাজ শেষ করে ফোনের ডাটা অন করতেই আবিরের মেসেজ!
সারা তখন বলে, কাজ শেষ করে আসবে। আপনার কাজ করতে কেমন লাগছে?
আবির তখন অন লাইনে ছিল। সারার মেসেজের রিপ্লাই দেয়। কাজ করতে ভালোই লাগছে আবিরের। তবে আপনার জন্য অপেক্ষা করছি, আপনাকে ট্রিট দেয়ার কথা ছিল আমার!
সারার তখন মনে পড়ে, আজ আবির তাকে ট্রিট দিবে। সারা টেবিলের পাশে ফোনটি রেখে দেয়। কাজে মনোযোগ দেয়। কিছু ডকুমেন্ট বাকি ছিল সেগুলো করে ফেলে সারা। আবির সকালের নাস্তা খেয়ে আবার কাজ শুরু করে দেয়।
এরই মাঝে আবিরের মামীর ফোন! সকাল সকাল তোমাকে রুমে পায়নি, নাস্তা খেয়ে বের হয়েছো? আবির তখন বলে, হ্যা! খেয়ে বের হয়েছি। মা মারা যাওয়ার পর মামা আর মামীর কাছেই আবির বড় হয়েছে। মামী মাঝে মাঝে অনেক কটু কথা বললেও আবির সেসব কথা গায়ে লাগায় না। কারণ সে জানে তার ভালোর জন্যই বলছে। আবিরের মামী তখন ফোনটি রেখে দেয়। আবিরের প্রথমদিন কাজ করতে ভালোই লাগছে। সব থেকে ভালো লাগছে মতিন ভাই আবিরকে অনেক হেল্প করছে।
ঠিক সন্ধ্যার আগে সারা কাজ শেষ করে রেস্টুরেন্ট এ চলে আসে। সারাকে আসতে দেখেই আবির কিছুটা এগিয়ে যায়। অনেকক্ষণ ধরেই তার জন্য অপেক্ষা করছিল আবির। সারা তখন অফিসের ব্যাগ রেখে কাজ শুরু করে দেয়। দুজন একসাথে খাবার সার্ভ করছে। মাঝে মাঝে পাশাপাশি দুজনের দেখা হয়ে যাচ্ছে। কিছুটা মৃদু হাসছে দুজনে। সারা যখন খাবার সার্ভ করে আবির তখন সারাকে সাহায্য করে। একজনের চোখ আরেকজনের দিকে পড়ে । অপলক দৃষ্টিতে আবির সারার দিকে তাকিয়ে তাকে। কাজের ফাকেঁ সারা আর আবির কথোপকথন শুরু করে। আজ আবির সারাকে ট্রিট দিবে। কাজ শেষ করে বাহিরে কোনো একটা রেস্টুরেন্ট এ।
কাজ শেষ করতে রাত আটটা বেজে যায়। সারা আর আবির একসাথে বের হয়। রাতের শহরে আবির সারাকে নিয়ে কিছুক্ষণ হাটঁতে থাকে। পাশাপাশি হাটঁতে থাকে। আবির সারার হাত ধরে হাটঁতে চায়। কিন্তু এখনও সে সৌভাগ্য যে হয়নি আবিরের। হঠাৎ আবির সারাকে বলে উঠে -
আপনার প্রিয় রঙ কি?
-নীল আমার প্রিয়। নীল রঙটা অনেকটা দুঃখবিলাসের মতো। কষ্টগুলো শুধু লুকিয়ে রাখতে ভালোবাসে! (সারা)
-আপনার তাহলে অনেক কষ্ট! ভাগীদার হওয়া যাবে আপনার কষ্টের? (আবির)
-মানে?(সারা)
-মানে আমি আপনাকে ভালোবাসি! অংশীদার করবেন আপনার সেই কষ্টের!
সারা কোনো কথা না বলেই হাটঁছে। সারা আবিরকে পছন্দ করে কিন্তু মুখে বলে না। হাটঁতে হাটঁতে একটি রেস্টুরেন্ট এর সামনে চলে আসে। রেস্টুরেন্ট এর ভিতরে প্রবেশ করে দুজন। আবির তখন বলে, আজ আপনার পছন্দ অনুযায়ী কিছু অর্ডার করুন! সারা তখন একটি পিজ্জা আর কোল্ড কফি অর্ডার করে দেয়।
কিছুক্ষণ পরই খাবারগুলো চলে আসে। দুজন বসে খেতে থাকে। এ রেস্টুরেন্ট এর খাবারের মান ভালোই বুঝা যাচ্ছে, আবির তখন বলে। সারা তখন আবিরকে বলে,"তাহলে এ রেস্টুরেন্ট এ কাজ নিয়ে নিন! হাহাহা। আবির তখন বলে, "আপনার মতো দুঃখবিলাসী মেয়ের ভাগীদার হয়েই ঐ রেস্টুরেন্ট এ থেকে যাব। সারা কিছু মৃদু হাসি হাসে আবিরের কথা শুনে। তাদের বন্ধুত্বটাও অনেক গভীর হতে থাকে। একটা বিশ্বস্ত বন্ধু পেয়েছে সারা। রেস্টুরেন্ট এ খাওয়া-দাওয়া শেষ করে দুজন বের হয়ে পড়ে। আবির তখন সারাকে একটি রিকশায় উঠিয়ে দেয়। সারার বাসা এখান থেকে খানিকটা পথ দূরে। আবিরের বাসা কাছেই। হেটেঁ গেলে বেশকিছুক্ষণ লাগে। সারাকে বিদায় দিয়ে আবির বাসার দিকে হাটঁতে থাকে। বাসায় এসে আবির ফ্রেশ হয়ে নেয়। সকালে কিছু খায়নি। মামী তারজন্য আজ স্পেশনা ভুনাখিচুড়ি রান্না করে। আবির তার প্রিয় খাবার পেয়ে ভীষন খুশি। আবির তখন ফোনের ডাটা অন করে সারাকে মেসেজ দেয়। বাসায় পৌঁছেছে কি না! সারা বাসায় গিয়ে আবিরের মেসেজের রিপ্লাই দেয়, কিছুক্ষণ আগেই বাসায় এসেছে। ফ্রেশ হয়ে এখন খেতে বসেছে।
সারা খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আবিরের কথা ভাবতে থাকে। আবিরের কথাগুলো যেন সারার চোখের সামনে ভেসে উঠছে। তাহলে কি সারা আবিরের প্রেমে পড়ে গেছে। আর আবির তাকে বড্ড ভালোবাসে।
চলবে....
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Hello friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)