৪র্থ পর্বঃ লিপা
10-01-23
২৭ পৌষ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
শুভ সকাল 🌼🦋। সকালের শুরুটা হোক সুন্দরভাবে এই প্রত্যশায় করছি! আজ সকাল সকাল সূর্যের দেখা পেয়ে ভালোই লাগছে! মনে হচ্ছে কতদিন পর সূর্যের দেখা পেলাম! যাক, গল্পের চতুর্থ পর্বে চলে এলাম। আশা করি এ পর্বটিও আপনারা উপভোগ করবেন!
৩য় পর্বের পর থেকে
পরদিন লিপা আর ভার্সিটিতে যায়নি! সকাল সকাল গ্রাম থেকে বাবার ফোন!
-কিরে মা! কখন গিয়ে পৌছাঁলি ঢাকায়?কিছুই তো বলিস নি!
-আমার ফোনে টাকা ছিল না, আব্বা ! ট্রেন থেকে নেমেই টাকা রিচার্জ করেছিলাম! পরে সোজা বাসায় ! ফ্রেশ হতে হতে রাত হয়ে যায়, এজন্য ফোন তোমাকে জানায়নি?
-রাতে কি খেয়েছিলি পরে?
-বাহির থেকে পরোটা নিয়ে এসেছিলাম! বুয়া গ্রামে বাড়ি গেছে! আপাতত এ কয়দিন নিজেরা রান্না করে খেতে হবে!
-সকালে কিছু রান্না করে খেয়ে নিস!
-ঠিক আছে, আব্বা! তুমি কোনো টেনশন করো না! আম্মা কোথায়, কি করে!
-তোর মা রান্না করছে!
-ফোনটা আম্মার কাছে একটু দাও!
রাহেলা, লিপা ফোন দিয়েছে! তোমার সাথে কথা বলবে! রাহেলা বেগম লিপার মা!
- ঠিক মতো গিয়েছিলি তো!
- হুমম, আম্মা! তুমি কি রান্না করছো সকাল সকাল?
- তোর বাবা বাজার থেকে লাউ নিয়ে এসেছিল আর শাক! সকালে কি কিছু খেয়েছিস!
- না, আম্মা! খাবো একটু পরে! আমাকেও আজ রান্না করতে হবে।
- শোন, খাওয়া নিয়ে কষ্ট করিস না! রান্না করে খেয়ে নে।
- আচ্ছা আম্মা! তাহলে রাখি এবার। পরে কথা হবে!
- ঠিক আছে (রাহেলা বেগম ফোন কেটে দেয়)
বুয়া না থাকায় লিপার এখন টান্না করে খেতে হবে! লিপার রুমমেট শিলা কোনো কিছুই পারে না! শহরের মেয়ে শিলা! রান্না করাটাই এখনও ভালো করে পারে না! অনেক সকাল অবধি ঘুমায়! শহরের মেয়ে বলে কথা! লিপার এতে সকাল অবধি ঘুমানোর অভ্যাস নেই! এই শহরে যখন লিপা প্রথম প্রথম এসেছিল তখন সবাই তাকে নিয়ে অট্রহাসিতে মেতেছিল! গ্রামের ক্ষেত মেয়ে! শহরের কালচার সম্পর্কে কোনো আইডিয়া নেই! ঠিক সেই সময়টায়, শিলা তার পাশে দাড়িঁয়েছিল! শিলার কাছ থেকে লিপা ধীরে ধীরে সবকিছু আয়ত্ত করতে থাকে! শুদ্ধ করে কথা বলাটাও! এখন লিপা ভালোভাবেই কথা বলতে পারে! সবার সাথে মিশতে পারে!
শিলা উঠবে না সকাল সকাল! লিপাকেই সব করতে হবে! বাসায় শুধু ডিম ও আলু ছিল! আর কিছু নেই! গ্রামে চলে যাওয়ার পর শিলা মনে হয় ডিম খেয়েই পার করতে হয়েছে। মেয়েটা রুমে একা একা অনেক কষ্ট করেছে! লিপা সকাল সকাল ডিম ভুনা রান্না করে ফেলে! লিপার হাতের খাবারের স্বাদ অনেক ভালো লাগে শিলার কাছে! রান্না হয়ে গেছে! সরকারি গ্যাস! গ্যাসের চুলায় বসিয়ে রাখলে বেশিক্ষণ লাগে না! তখন লিপার রুমে গিয়ে শিলাকে ডাকে!
-শিলা,ঘুম থেকে উঠবি না নাকি?
-আরেকটু ঘুমাই বইন! এতো সকাল সকাল ডাক দিতেছিস কেন?
-কয়টা বাজে খেয়াল আছে তোর? ক্যাম্পাসে যাবিনা?
-কয়টা বাজে?
-সাড়ে নয়টা বাজতে চললো!
-কি বলিস! শিলা তাড়াতাড়ি করে ঘুম থেকে উঠে পড়ে!
শিলা তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠারও কারণ আছে! আজ অভির সাথে দেখা করার কথা! অভির সাথে রিলেশন হবার পর প্রথম দেখা হবে আজ! রাতে অবশ্য লিপাকে বলে রেখেছিল সে যেন সকাল সকাল ডাক দেয়! কিন্তু শিলার ঘুম থেকে উঠতেই লেইট হয়ে যায়! অভি বেচারা আজ কি করে আল্লাহ ই জানে! লিপা ভাবতে ভাবতে তার কাজে মনোযোগী হয়! লিপা আজ ক্যাম্পাসে যাবে না! রাতে শাওনকে আগে থেকেই বলে রেখেছিল!
কিছুক্ষণ পরেই শাওনের মেসেজ!
-আপনি কোথায়? আপনাকে দেখতে পাচ্ছি না!
-আমি একটু অসুস্থ! আজ আসে নি! (মিথ্যে বলেছে লিপা)
-ওহ! কি হয়েছে আপনার! (মনটা খারাপ তখন)
-তেমন কিছু না! ভালো লাগছে না!
-তাহলে রেস্ট নেন। কাল দেখা হবে!
-নাও হতে পারে! যদি অসুস্থ থাকি!
-কাল আপনি আসবেন, প্লিজ!
-দেখি,,,,
এদিকে ফ্রেশ হয়ে চলে আসে শিলা! এসেই হুলস্থুল কান্ড করে বসলো! কিরে তুই এখনও রেডি হসনি কেন??
-আমি রেডি হয়ে কি করবো?
-আমি একা একা যাবো অভির সাথে দেখা করতে!
-তো কি! তোর বয়ফ্রেন্ড! একাই তো যাবি!
-এই প্রথমবার দেখা করবো! তুই একটু চলনা আমার সাথে, প্লিজ!
-ঠিক আছে! আমি তোর বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলতে পারবো না!
-ঠিক আছে বলিস না!
শিলা অভির সাথে দেখা করবে! দুই বছরের প্রেমের সম্পর্ক সেটাও আবার ফেইসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়ে! একে অপরের প্রতি ভালো লাগাটাও তখন থেকেই! দুজনের প্রতি প্রবল বিশ্বাসের কারণে ভালোবাসাটা এখনও টিকে আছে! শিলা, অভিকে অনেক ভালোবাসে! অভি শিলার থেকে আবার এক ব্যাচ সিনিয়র! সুূদূর চট্রগ্রাম ভার্সিটিতে পড়াশোনা করে! দেখা করার কথা ছিল না! অভির দরকারি কাজে তার ফুফুর বাসায় ঢাকা আসে! তখনই সে সুযোগ হয় একে অপরের মুখোমুখি দেখা করার!
শিলা আজ ভীষণ খুশি! লিপা সেটা ভালোভাবেই বুঝতে পারছে! মানুষ প্রেমে পড়লে এতো খুশি হয়! হওয়ারই কথা! যেখানে বিশ্বাস ও ভালোবাসা দুটোই রয়েছে! লিপার অবশ্য শিলার ভালোবাসার মুহুর্তটা দেখতে ভালোই লাগছে! শিলা নীল রঙের জামা পরেছে! অনেক সুন্দর লাগছে শিলাকে! লিপা তখন শিলাকে বল, "তোকে দেখে আজ দেখবি অভি ভাইয়ার মাথা ঘুরে যাবে! "
চলবে.......
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
twitter share link
লিপার এই গল্পটি আমি যত পড়ছি ততই ভালো লাগছে। আজকে কিন্তু শাওনের বেশ ভালই মন খারাপ হয়েছে কারণ লিপা কলেজে যায়নি তাই। আপনি এই গল্পটি খুবই সুন্দর ভাবে লিখেছেন যার জন্য বুঝতে অনেক সুবিধা হয়েছে। পরবর্তী পর্বে কি হবে আমি তার অপেক্ষায় আছি শুধু। আশা করছি পরবর্তী পর্ব খুবই সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করবেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি গল্প সবার মাঝে ভাগ করে নেওয়ার জন্য। ভালো থাকবেন।
জি আপু! আপনাদের কাছে গল্পটি ভালো লাগছে জেনে অনেক খুশি হলাম! পরের পর্ব খুব শীঘ্রই আসছে!
সত্যি বলতে মনের মানুষকে একদিন না দেখলে অনেক কষ্ট লাগে। আর সেরকমই লেগেছিল শাওনের কাছে। কারণ লিপাকে কলেজে না পেয়ে। যাইহোক আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
জি ভাইয়া! আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ গল্পটি পড়ার জন্য 🌼
গল্প পড়তে আমি একটু বেশি পছন্দ করি কারণ গল্পের মাধ্যমে বাস্তবতার অনেক কিছুই আমরা জানতে এবং শিখতে পারি। লিপার এই গল্পটি আমি যত পড়ছি ততই ভালো লাগতেছে। শাওনের মন খারাপ হওয়ারই কথা কারণ তার আজকে প্রিয় মানুষটি কলেজে যায়নি। আমার মনে হচ্ছে পরবর্তী পর্বে আরো বেশি ইন্টারেস্টিং কিছু দেখতে পাবো। ধন্যবাদ।
জি ভাইয়া! আপনি গল্পটি পড়ে চমৎকার একটি মন্তব্য করেছেন! পরের পর্ব খুব শীঘ্রই আসছে! আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া 🌼