৩য় পর্বঃ লিপা

08-01-23

২৫ পৌষ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে



শুভ সকাল 🌼🦋। সকালের শুরুটা হোক সুন্দরভাবে এই প্রত্যশায় করছি! যাক, গল্পের তৃতীয় পর্বে চলে এলাম। আশা করি এ পর্বটিও আপনারা উপভোগ করবেন!

book-3755514_1280.jpg

copyright free image from pixabay

২য় পর্বের পর থেকে

লিপা সকাল সকাল অবশ্য না খেয়েই বের হয়েছিল! সাত কি আট বছরের এক ছেলে! পড়নে হাফ হাতা হার্ট আর শর্ট প্যান্ট! পায়ে জুতা নেই! সিদ্ধ ডিম বিক্রি করছে! ট্রেনের যাত্রীরাও কিনে খাচ্ছে! দাম একটু বেশি! লিপা ছোট ছেলেটিকে কাছে এনে একটা সিদ্ধ ডিম দিতে বলে! "আফা,এই নেন ডিম " ডিমের দাম বিশ টাকা! ছেলেটির পাওনা মিটিয়ে লিপা ডিম খেয়ে নেই! লিপার অবশ্য ডিম পছন্দ না! কারণ সে ডিম তেমন খেতে পারে না! কিন্তু পেটে ক্ষুধা থাকলে কি আর না খেয়ে থাকা যায়! দেখতে দেখতে ট্রেন চলে এল স্টেশনে! স্টেশনে নেমেই লিপা একটি রিচার্জের দোকানে যায়! সেখানে গিয়ে তার ফোনে টাকা রিচার্জ করে নেই! তারপর শাওনের মেসেজের রিপ্লাই দেয়!

শাওন তখনও ঘুমাচ্ছিল! লেইট করেই ঘুম থেকে উঠে! সকাল সাড়ে নয়টায় শাওন ঘুম থেকে উঠল! বালিশের পাশেই ফোনটি রাখা ছিল! ফোনের স্ক্রিনে লিপার মেসেজ! দেখেই এক লাফে ঘুম থেকে উঠে পড়ে শাওন!
-আপনি কিছু না বলেই ঘুমিয়ে গেছিলেন?

ফোনের অপর প্রান্তে লিপা বাসায় তখন ফ্রেশ হচ্ছে! কিছুক্ষণ আগেই বাসায় গিয়ে পৌছাঁলো। শাওন মেসেজ দিয়ে আবার অস্থিরতা ফিল করতে থাকে! এক হাতে ব্রাশ অন্য হাতে ফোন নিয়ে শাওন দাড়িঁয়ে আছে! কখন লিপার মেসেজের রিপ্লাই আসবে? কিছুক্ষণ পরেই লিপার মেসেজ!

-ঘুমিয়ে যায়নি, কেন বলেন তো?
-আপনি কাল রাতে মেসেজের রিপ্লাই না দিয়ে চলে গেলেন যে!
-রিপ্লাই দেয়া কি খুব দরকার ছিল!
-না ঠিক! তেমন না ব্যাপারটা (কিছুটা লাজুক হয়ে)
-তাহলে ব্যাপারটা কেমন? বলেন শুনি!
-সত্যি বলতে, আপনার মেসেজের রিপ্লাইয়ের অপেক্ষায় ছিলাম। খুব অস্তিরতা ফিল করছিলাম!
-ওহ আচ্ছা! আসলে আমার ফোনের টাকা শেষ হয়ে গিয়েছিল! কিছুক্ষণ আগে ঢাকা এসে টাকা রিচার্জ করে মেসেজ দিলাম আপনাকে!
-আপনি তাহলে ঢাকা চলে গেছেন!
-হুমম!
-আমিও কাল চলে আসবো ঢাকা! এখানে পড়াশোনা হচ্ছে না!
-পড়াশোনা হচ্ছে না! নাকি অন্য কোনো কারণ (মুচকি হেসে)
-না মানে! দুটোই কারণ রয়েছে! আপনাকে দেখার পর থেকে কেন যেন খুব অস্থিরতা ফিল করছি!
-এতো অস্থিরতা ফিল করা ভালো নয়! যেমন আছেন তেমনি থাকেন!

তারপর থেকে লিপা আর শাওনের মাঝে ভাবের আাদান-প্রদান ভালোই চলছিল! দুজন একে অপরকে পছন্দ করে। কিন্তু কেউই বলতে পারে না! এরই মাঝে শাওনও ঢাকা চলে আসে! ক্যাম্পাস খুলে দিয়েছে। লিপার সাথে এবার দেখাটা হয়ে যাবে! লিপাকে খুব মিস করছে শাওন! মনে হচ্ছে কি যেন একটা মিসিং! উত্তর খোঁজে পাচ্ছে না কোথাও! যেন এক অসহ্য যন্ত্রনা কাউকে মিস করার! এই অনুভূতি শাওনের প্রথমবারে! লিপাকে প্রথমবারের পর থেকেই তার মনে যেন উতাল ঢেউ বইছে!

ঘড়িতে তখন রাত বারোটার মতো বাজে! এতো রাতে লিপা ঘুমিয়ে যায়নি তো আবার! নাকি সকালেই মেসেজ দিবো! ক্যাম্পাসে তাকে সারপ্রাইজ দিবো দেখা করে! হাজার রকমের চিন্তা আসছে মাথায় শাওনের! শাওন লিপাকে আবার মেসেজ দেয়!

  • আপনি কাল ক্যাম্পাসে আসতে পারবেন?

লিপার ফোন তখন চার্জে! সাইলেন্ট মোড করে রাখা! লিপা ফোন সাইলেন্ট মোড করেই রাখতে ভালোবাসে! নীরবতা প্রিয়! সকালের শুভ্রতার মতো! শুধু পাখির কিচিরমিচির শব্দ ছাড়া আর কিছুই শোনা যাবে না! প্রকৃতির মধ্যে হারিয়ে যাওয়া শুধু! লিপা যখন পড়তে বসে তখন ফোন সাইলেন্ট করেই পড়তে! লিপা জানে, জীবনে ক্যারিয়ার আগে দেন ভালোবাসা এবং অন্যকিছু! বাবার স্বপ্ন যে তাকে পূরণ করতে হবে। বাবার শরীরটাও ভালো নেই! ভার্সিটি শেষ করে ভালো একটা জবও নিতে হবে!

শাওন ভেবেছে লিপা হয়তো ঘুমিয়ে গেছে! না হয় মেসেজের রিপ্লাি দিয়েই ঘুমাতো! শাওন ঘুমিয়ে পড়ে তখন! ঘড়িতে তখন রাত ১টা বেজে ৩০ মিনিট! লিপা পড়ার টেবিল থেকে উঠে ফোনটা চার্জার থেকে খুল হাতে নেই! শাওনের মেসেজ! শাওন লিপার সাথে দেখা করতে চাইছে। দেখা করাটা কি ঠিক হবে! লিপা তখন বলেই দেয়, সে কাল ক্যাম্পাসে যাবে না! শাওন যে লিপাকে ভালোবেসে ফেলেছে সেটা লিপা ঠিকই বুঝতে পারে! কিন্তু শাওনের ভালোবাসা গ্রহণ করলে তার ক্যারিয়ারের কিছু হবে না তো! বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে সে! লিপা ভাবছে! আবেগ -অনুভূতির বয়সটা অনেক আগেই পার করে এসেছে লিপা! এখন ম্যাচিউরড একটা মেয়ে! নিজের ভালো-মন্দ বোঝার ক্ষমতা রাখে! জীবনের এই মুহূর্তে এমন কিছু করা যাবে না যাতে লাইফ, ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়! তবে শাওনের এই ছোট ছোট মেসেজ, পাগলামো ভালোই লাগে লিপার কাছে!

চলবে.........



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 2 years ago 

একটা মেয়ের সবচেয়ে মূল্যবান একটি জিনিস হচ্ছে তার বাবা-মায়ের সম্মান রক্ষা করা এবং বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করা। লিপা তার বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য শাওনকে তার সম্মতিতে হ্যাঁ বলেছে। লিপা চাইলেও এখন কিছু করতে পারবে না কারণ তাকে আগে তার বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। যাইহোক অসংখ্য ধন্যবাদ পড়ে কিন্তু ভীষণ ভালো লেগেছে পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

 2 years ago 

জি আপু! একটা মেয়ের মূল্যবান জিনিস তার বাবা মায়ের স্বপ্নগুলো পূরণ করার চেষ্টা করা। আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু 🌼🦋

 2 years ago 

লিপার এই গল্পটি আমি যত পড়ছি ততই ইন্টারেস্টিং লাগছে আমার কাছে। যদিও তারা একে অপরকে অনেক পছন্দ করে কিন্তু নিপা চাইলেও সেই সম্মতিতে হ্যাঁ বলতে পারবেনা। কারণ সবার আগে তার কাছে তার বাবা-মাই সব। সত্যি বলেছেন শাওনের ভালবাসা গ্রহণ করলে লিপার ক্যারিয়ারের কিছু হবে না। আগে প্রথমে তার বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতেই হবে। যাই হোক আশা করছি পরের পর্ব একটু তাড়াতাড়ি পেয়ে যাব। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

জি ভাইয়া! বাবা মায়ের স্বপ্নটাই মুখ্য! খুব শীঘ্রই পাবেন পরবর্তী পর্ব 🌼

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 59972.21
ETH 2389.55
USDT 1.00
SBD 2.42