৪র্থ পর্বঃ এক তরফা ভালোবাসা

11-09-2022

২৭ ভাদ্র ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


শুভ সন্ধ্যা সবাইকে 🌼। কেমন আছেন তাহলে? নিশ্চয় ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। যাক আজকে আপনাদের সাথে চতুর্থ পর্বটি শেয়ার করতে চলে এলাম। ইতিমধ্যে তৃতীয় পর্বটি লিখেছিলাম। তৃতীয় পর্বটি না পড়ে থাকলে লিংকে প্রবেশ করে পড়ে আসতে পারবেন। যায়হোক, চতুর্থ পর্বটির দিকে আলোকপাত করা যাক।

৩য় পর্বের লিংক

mirror-3864155_1280.webp

copyright free image from pixabay

পরদিন রাফি ওয়ালমেটটি দোকান থেকে নিয়ে আসে। ওয়ালমেটের উপরে কাগজ দিয়ে মোড়ানো। ওয়ালমেটটি বাড়িতে নিয়ে গেলেও সমস্যা। এজন্য রাফি তার বন্ধু সাগরের বাসায় ওয়ালমেটটি রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। বাজারের পাশেই সাগরদের বাসা ছিল। রাফি ওয়ালমেটটি নিয়ে চলে যায় সাগরদের বাসায়। তারপর সেখানে রেখে বাড়িতে চলে যায়। গতকাল রাতে বলে রেখেছিল রূপা বাসায় সবাই মিলে বার্থডে সেলিব্রেট করবে। রাফি বাড়িতে গিয়ে দুপুরের দিকে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। রাফি আর রূপার একসাথে কোনো ছবি তোলা হয়নি কখনো। রাফি শাওমি ভার্সনের যে ফোনটা সেটা দিয়ে ভালো ছবিও উঠেনা। প্রিয় মানুষের সাথে এই ক্যামেরা দিয়ে সে ছবিও তুলতে চায় না। রাফি সিদ্ধান্ত নেয় আজ যেহেতু রূপার জন্মদিন সে উপলক্ষে ভালো ফোন দিয়ে ছবিগুলো সুন্দর হবে সেই সাথে মুহূর্তটাও ভালো কাটবে। রাফির চাচাতো ভাইয়ের দামি একটি ফোন ছিল। নাম ছিল স্যামসাং গ্যালাক্সি। বিদেশ থেকে আনা ফোনটি। ক্যামেরার রেজোলেশন যথেষ্ট ভালো। চাচাতো ভাইয়ের কাছে গিয়ে ফোনটা কিছু সময়ের জন্য নিয়ে আসে। প্রথমে অবশ্য দিতে চায়নি, পরে যখন শুনেছে বন্ধুদের সাথে জন্মদিন উযযাপন করবে তখন কিছু ছবি তুলবে।

ফোনটা হাতে পেয়ে রাফি বেশ খুশি হয়। আজ তার প্রিয় মানুষটির সাথে ইচ্ছেমতো ছবি তুলতে পারে। স্মৃতির এলবামে থেকে যাবে ছবিগুলো। এদিকে দুপুর হয়ে গেল। রাফি ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়ে। তার মা তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, এই ভরদুপুরে কোথায় যাচ্ছে? সে অবশ্য বলেছিল যে তার আজকে বন্ধুদের সাথে বার্থডে উদযাপন করবে। ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে পড়ে, বেশি দেরিও করেনি। সরাসরি চলে যায় সাগরদের বাসায়। সেখান থেকে ওয়ালমেটটি নিয়ে রূপাদের বাসার দিকে রওনা দেয়। যাওয়ার পথে গৌরাঙ্গ বাজারের মোড় থেকে একটি ফুলের তোড়া নিয়ে নেয়। রূপা হয়তো খুশি হবে খুব। রাফি ফুলের তোড়া আর ওয়ালমেট নিয়ে রূপাদের বাসায় চলে যায়। বাসায় গিয়ে দরজার কলিং চাপতেই রূপার মা দরজা খুলে। রূপার মা বলে যে রূপা জন্মদিন উদযাপনের জন্য গাঙচিল রেস্টুরেন্ট এ গেলো কিছুক্ষণ আগে। তারপর রাফি অবশ্য রূপার মাকে সালাম দিয়ে সেখান থেকে চলে আসে। রাফির মনে এখন কেমন জানি করতেছিল। বাসায় বার্থডে সেলিব্রেট করার কথা তাহলে রেস্টুরেন্ট এ গেলো কেনো রূপা? রাফি রূপাদের বাসার সামনে থেকে একটি রিকশা নিয়ে চলে যায় গাঙচিল রেস্টুরেন্ট এর সামনে। গিয়ে দেখে সবাই উপস্থিত। রূপার সাথে সেই আরিফ ছেলেটাও রয়েছে। তাহলে কি আরিফের জন্যই রূপা এখানে বার্থডে সেলিব্রেট করতে এসেছে?

রাফির মনটা খুবই খারাপ হয়ে যায়। দূর থেকেই দেখতে থাকে তারা বার্থডে সেলিব্রেট করার প্রিপারেশন নিচ্ছে। তারপর রূপা অবশ্য দেখতে পায় তার একমাত্র ভালো বন্ধু রাফি ফুলের তোড়া নিয়ে দাড়িঁয়ে আছে। রূপা রাফিকে তার বয়ফ্রেন্ড আরিফের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। রাফি পরিচয় হয় আরিফের সাথে। রাফির খুব মন খারাপ এদিকে। কতো আশা নিয়ে এসেছিল রাফি। হয়তো আজকে রূপাকে তার সব অনুভূতিগুলো বলে দিবে। নিমিষেই যেন তা ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। রূপার বুঝার বাকি রইলো না যে রাফির বড্ড মন খারাপ। রূপা সবাইকে নিয়ে কেক কাটে। রূপার সব মেয়ে ফ্রেন্ড ও আরিফ রূপাকে মুখে তুলে কেক খাওয়ায় দেয়। কেক কাটার পর রাফি আর সেখানে থাকেনি। প্রচন্ড অভিমান নিয়ে সে আখড়া বাজারের মোড়ে এসে বসে থাকে। রূপা তার বান্ধবীদের সাথে বার্থডে সেলিব্রেট করায় ব্যস্ত। এদিকে খেয়াল করলো রাফি নেই! রূপা বুঝতে পারে কিছু একটা করে ফেলতে পারে ছেলেটা এজন্য তার বান্ধবী দিনাকে পাঠায়। গিয়ে দেখে রাফি একা একা আখড়া বাজারে বসে আছে। তারপর অবশ্য দিন তাকে অনেক নীতি কথাই শুনাই। কারণ সেইম ব্যাচের সাথে আসলে রিলেশনটা হয় না। বন্ধুত্বটাই পারফেক্ট থাকে। দিনা আরও বলে যে, রূপার আগে থেকেই রিলেশন ছিল। রাফি কষ্ট পাবে এজন্য সে বলেনি কখনো। দিনার কথা শুনের রাফির আরও মন খারাপ হয়ে গেল। চোখের কোণে যেন জল চলে এসেছিল। দিনা রাফিকে বুঝায় যে লাইফে আরও ভালো কাউকে পাবে তবে রূপার সাথে বন্ধুত্বটা ঠিক রাখতে বলে।

রাফি মন খারাপ নিয়েই বাড়ির দিকে রওনা দেয়। আখড়া বাজার থেকে তার বাড়ি পাচঁ কিলোমিটার রাস্তা। সারা রাস্তা সে হেটেঁ হেটেঁ চলে আসে। পথে কতো কথা ভাবতে থাকে রাফি। কতো স্বপ্ন ছিল আজকে সুন্দর একটা মুহূর্ত কাটাবে। আর কি হয়ে গেল। আসলে ভাগ্যে লেখা না থাকলে কিছুই হয় না। রাফি সব ভাগ্যের উপরে ছেড়ে দেয়। ভাবতে ভাবতে রাফি তার বাড়ির কাছে চলে আসে। তার মা রাফিকে দেখে ঠিকই বুঝতে পারে কিছু একটা হয়েছে। সবসময় হাসিখুশি থাকা ছেলেটা আজ হঠাৎ এতো নীরব হয়ে গেল! মায়ের মনে বুঝতে আর দেরি হলো না। রাফি মাকে কিছু হয়নি বলেই উড়িয়ে দেয়। বাড়িতে এসে সিদ্ধান্ত নেয় আর কখনো কথা বলবে না রূপার সাথে। ফোন থেকে সিম খুলে রেখে দেয় রাফি। রূপা ফোন দিলে হয়তো এখন বন্ধ পাবে রাফির ফোনটি। রাফি চাচাতো ভাইয়ের ফোনটি ফেরত দিয়ে দেয়। তিনদিন ধরে রাফি স্কুলেও যায় না। সামনে ফরম ফিল আপ করতে হবে। এজন্য হয়তো রাফিকে স্কুলে যেতে হবে।

চলবে....



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg



আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  

Hello friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

 2 years ago 
 2 years ago 

আসলে ভাই একতরফা ভালোবাসা খুবই কষ্টের। রাফির ওই মুহূর্তে মনের অবস্থা যে কি সেটা আসলে আমরা যারা এরকম একতরফা ভালোবেসে কষ্ট পেয়েছি তারা ছাড়া অন্য কেউ বুঝতে পারব না। সত্যি বলতে আমার রাফির জন্য খুব খারাপ লাগছিল যাই হোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59404.52
ETH 2610.92
USDT 1.00
SBD 2.41