অন্ধ ভালোবাসা || ৩য় পর্ব

01-07-2022

১৬ আষাঢ় ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো আছেন। আমি আপনাদের দোয়াই ভালো আছি। তবে কলেজে মিডটার্ম পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এজন্য একটু পড়াশোনার চাপেও আছি। যায়হোক, ইতোপূর্বে আপনাদের সাথে গল্পের দ্বিতীয় পর্বটি শেয়ার করেছি। তাড়াতাড়ি করে তৃতীয় পর্বটিও লিখলাম। আসলে গল্প অনেকেই পড়তে চায়না এজন্য কিছুটা হতাশাও ফিল করি। সামনে আরেকটি পর্বের মাধ্যমে গল্পটি শেষ করবো। আশা করি আপনারা পড়বেন সবাই।

দ্বিতীয় পর্বের পর

man-2933984_1280.webp

Image source

মীরা রূপা আর রোহানকে নিয়ে একটি রেস্টুরেন্ট এ যায়। সকাল সকাল বেরিয়ে এসেছে রোহান। রূপা ভালো করেই জানে রোহান খেয়ে আসেনি। তাই তো রূপা রোহানের জন্য মজার নুডলস আর সেমাই রান্না করে নিয়ে এসেছে। ব্যাগ থেকে টিফিন বক্স বের করে রোহানকে দেয় খাওয়ার জন্য। ঠিক সে সময় মীরা বলে, আমাদের জন্য কখনো রান্না করে আনিস নি! অথচ রোহানের জন্য নিয়ে এসেছিস "। রূপা এ কথা শুনে একদম চুপ হয়ে যায়। কিছুর বলারও নেই কারণ মীরাকে কখনো নিজের হাতের কিছু খাওয়াইনি রূপা। মীরা অবশ্য কিছুটা রাগ ফিল করছিল। রূপা তখন মীরাকেও খাইতে দেয়। বেচারির রাগ যেন কমতেই ছিল না। রোহান তখন মীরাকে বলে শেয়ার করে খেয়ে নেয় আমরা। রূপা এই প্রথম কারোজন্য রান্না করে কিছু নিয়ে এসেছে।

কেমন হয়েছে? রোহানকে বললো রূপা। রোহান হাসিমুখে উত্তর দিয়েছে ভালো হয়েছে রান্না। আমার কাছে নুডলস বেশি ভালো লেগেছে। তুমি আমার জন্য এই প্রথম রান্না করে নিয়ে আসছো এইজন্য ধন্যবাদ। রেস্টুরেন্ট এ বসে কিছুক্ষণ কথা বলতে থাকে রোহান আর রূপা। মীরা তাদের কথা শুধু শুনেই যাচ্ছে। কি আর করার! মীরার একটি ফোনে কল আসে মিথ্যা বলে বেরিয়ে যায় সেখান থেকে। রূপার দিকে রোহান অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কোনো ভাবেই যেন চোখ সরানো যাচ্ছে। রূপাকে এতো মায়াবী লাগছে! চোখের কোণের কাজলে রূপাকে মানিয়েছে। রোহান রূপাকে বলে শুনেছি চোখের নিচে মেয়েদের কাজল দিয়ে নাকি আরও বেশি মায়াবতী লাগে। একথা শুনে রূপা হেসে উড়িয়ে দেয়। আসলে রূপা তেমন সাজগোজ করেনা। মা বাবার খড়া শাসনের মধ্যেই থাকে সবসময়। নীল শাড়িতেও রূপাকে বেশ মানিয়েছে যেমনটা বলে রোহান।

tic-tac-toe-1777859_1280.jpg

Image source

রোহান হঠাৎ তার ব্যাগ থেকে একটি সাদা গোলাপ বের করে। সেই চাদঁপুর থেকে কিনে নিয়ে এসেছিল। গোলপ ফুলটা কিছুটা শুকিয়ে গেছে। রূপাকে তখন গোলাপ ফুলটা দেয়। ভালোবাসার প্রতীক হলো গোলাপ ফুল। যদিও এটা শুকিয়ে গেছে। তোমার জন্য সেই গার্ডেন থেকে কিনে ব্যাগে রেখে দিয়েছিলাম। রূপা বুঝতে পারে। সামান্য উপহারটুকু পেয়ে রূপা খুশি হয়। রূপা আর রোহান তাদের প্রেমের কথা বলতে থাকে। রোহান কালই চাদঁপুর চলে যাবে রূপাকে বড্ড মিস করবে। রূপাও বড্ড মিস করবে রোহানকে। তার পাশে বসে কিছুটা সময় কাটিয়েছে বেশ ভালো লেগেছে। তাদের কথা বলার মাঝে হঠাৎ মীরা চলে আসে। মীরা ফোনে কথা বলার ভান ধরে বাহিরে চলে গেছিল। মীরা এসে বলে এখানে আর বসে কি করবো? রোহান কোথাও যেতে চাচ্ছিল না। মীরা রোহানকে বলে আজকে বাসায় চলে যাবে নাকি? রোহান বাসায় চলে যাবে। মীরার বাসাও চাদঁপুরে।

এখানে হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে। রোহান বলে রূপাকে নিয়ে শহরটা ঘুরে বেড়াবো কিছুক্ষণ। রূপারও ইচ্ছে করছিল রোহানের সাথে রিকশায় করে ঘুরে বেড়ানোর। কিন্তু মীরাকে ছাড়া কিভাবে ঘুরবে তারা? মীরা বলে আমি রিকশা করে হোস্টেলে যায়। তোরা দুজন ঘুরাঘুরি শেষ করে ফোন দিলে চলে আসবো । রূপা মীরাকে ছাড়তে চাইছেনা। এমনিতেই তার ভয় করছে। এভাবে সে ঘুরেওনি কোনোদিন। তখন মীরা রাজি হয় তাদের সাথেই যাবে। একটা রিকশা নিয়ে শহরের অলিগলি ঘরতে থাকে। দেখতে দেখতে দুপুর ঘনিয়ে এলো। শহরের অনেক স্থান মীরা চেনায় রোহানকে। তারপর রোহানকে নিয়ে চলে যায় বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকেই আবার বাড়িতে চলে যাবে রোহান। রোহানের খারাপ লাগতেছিল যে রূপাকে ছেড়ে যাবে। রূপারও খারাপ লাগতেছিল কিছুক্ষণ এর জন্য দেখা হলো আবার চলে যাচ্ছে। চাদঁপুর বাস বিকালেই ছাড়বে এখান থেকে। রোহান বসে থাকে বাসস্ট্যান্ডে। "সাবধানে বাসায় যেও" এ কথা বলে রূপা মীরাকে নিয়ে চলে আসে।

চলবে



10% beneficary for @shyfox ❤️



ধন্যবাদ

WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg



আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  
 2 years ago 

ভাই আপনার অন্ধ ভালবাসার গল্পের তৃতীয় পর্বটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। তাই ভাবলাম ভালোলাগার গল্পটির দ্বিতীয় পর্বটি পড়তে পারলে খুবই ভালো লাগতো তাই আপনার আইডিতে গিয়ে দ্বিতীয় পর্ব থেকে ঘুরে আসলাম। রোহান ও রূপার অন্ধ ভালোবাসার গল্পটি বেশ দারুণ লিখেছেন। রোহান দ্বিতীয় পর্বে রূপার জন্য চাঁদপুর থেকে একটি সাদা গোলাপ নিয়ে এসেছে এবং তৃতীয় পর্বে সেই গোলাপটি ব্যাগ থেকে বের করে রুপাকে দিয়েছে। গোলাপ ফুল ভালবাসার প্রতীক আর তাই এই ফুল দিয়েই তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করছে। মীরার মাধ্যমেই রোহান ও রুপার ভালোবাসা এগিয়ে চলছে। খুব সুন্দর গুছিয়ে গল্প লিখেছেন ভাই। যা পরে খুবই ভালো লাগলো। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ

 2 years ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া গল্পটি পড়ার জন্য। আপনার কাছে গল্পটি ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ❤️

আপনার লিখিত 'অন্ধ ভালবাসা' গল্পের তৃতীয় পর্বটি অসাধারণ হয়েছে। অবসর সময়ে গল্প পড়তে কার না ভালো লাগে। খুব সুন্দর ভাবে মুহূর্তগুলো বর্ণনা করেছেন। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকবো।

 2 years ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া চমৎকার মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 60157.20
ETH 2416.98
USDT 1.00
SBD 2.43