অন্ধ ভালোবাসা ||২য় পর্ব

28-06-2022

১৪ আষাঢ় ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো আছেন। ইতোপূর্বে আপনাদের সাথে একটি গল্প শেয়ার করেছিলাম। কিন্তু গল্পটি কয়েকটি পর্ব আকারে সাজিয়েছি। সময় ম্যানেজ করতে পারতেছিলাম না আর গল্পটিও শেয়ার করা হয়ে উঠতেছিল না। আজকে দ্বিতীয় পর্বটি লিখলাম।

প্রথম পর্বের পর

heart-700141_1280.webp

Image source

আজ রোহান আসবে রূপার সাথে দেখা করার জন্য। রাতে অবশ্য রোহান বলে নেয় কখন রওনা দিবে। চাদঁপুর থেকে টাঙ্গাইল বেশ খানিকটা পথ। তাই সকাল সকাল রওনা দিবে। রোহান খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে পড়ে। উঠে ব্যাগ ঘুছিয়ে নেই। সকাল সকাল কিছু না খেয়েই রওয়ানা দিয়ে দেয় রোহান। বাসে উঠে রূপাকে মেসেজ দেয় সে রওনা দিয়েছে। রোহান মনে মনে অনেক খুশি। রূপার সাথে তার প্রথম দেখা হবে। এদিকে রূপা ঘুম থেকে উঠে দেখে রোহান মেসেজ করেছে সে রওনা দিয়েছে। "সাবধানে আসো" মেসেজ দিয়ে রূপা ফোনটা রেখে দেয়। রূপা জানে রোহান সকালে না খেয়েই হয়তো বেরিয়ে পড়েছে। এজন্য রূপা রোহানের জন্য নুডলস রান্না করে আর পায়েস। রোহানের পায়েস খুব পছন্দ।

love-3061483__480.webp

Image source

রোহান বাসে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নেয়। ফোনের ডাটা অন করেই দেখে রূপা মেসেজ দিয়েছে যে সাবধানে আসতে। রোহান খুশি হয়। রোহান তারপর রূপাকে মেসেজ দেয় বাসস্ট্যান্ডে যেন দাড়াঁয়। এদিকে ঘড়ির কাটাঁতে তখন সকাল সাড়ে নয়টা বেজে গেছে। রোহান তখন ঢাকার কাছাকাছি এসে পড়েছে। রোহান রূপাকে বলেছিল তাকে নীল শাড়ি পড়ে আসতে। নীল শাড়িতে রূপাকে দারুণ লাগবে রূপাকে। রূপাও সকাল সকাল শাড়ি পড়ে বসে থাকে। রোহানের কথামতো নীল শাড়িটাই পরে। কিন্তু রূপার মা তখন জিজ্ঞেস করে সকাল সকাল শাড়ি পড়ে কোথায় যাওয়া হচ্ছে! রূপা কোনো উপায় না পেয়ে বলে, মীরার বাসায় যাবে তার এক বান্ধবীর জন্মদিন। এজন্য সকাল সকাল যেতে হবে? রূপার মা সবসময় মেয়েকে নজরে রাখে। একটিমাত্র মেয়ে এবং তাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন। রূপা তখন তার মা কে বলে সব বান্ধবীরা শাড়ি পরে আসবে, আমি শাড়ি না পরে যায় কিভাবে? রূপার মা কিছুতেই মেয়েকে এভাবে ছাড়তে রাজি না। রূপাকে বলে তোমার বান্ধবীর ফোন নাম্বার দাও আমি কথা বলি। রূপা তখন মীরার ফোন নাম্বার দেয়। মীরা সবকিছু আগে থেকেই জানে। মীরাকেও বলে রেখেছিল সকাল সকাল রেডি থাকার জন্য। রূপার মা মীরাকে ফোন দিয়ে বলে "তোমাদের কোন বান্ধবীর জন্মদিন?" মীরা কিছুটা বিস্মিত হয়ে, ফোন দিয়েই এমন প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত ছিল না সে। তখন মীরা বলে আন্টি, "দিনার বার্থডে! আমরা সবাই যাচ্ছি। " রূপার মা তখন আবার বলে তাহলে এতো সকালে কেন? মীরা বলে আমরা সারাদিন ঘুরাঘুরি করবো আর আড্ডা দিবো। তখন রূপার মা কিছুটা নিশ্চিন্ত হয়।

digital-art-398342__480.webp

Image source

রূপা এদিকে অনেক টেনশন করতেছিল কি না কি বলে ফেলে মীরা। রূপার মা তখন রাজি হয়। রূপা শাড়ি পরে সেজে বসে থাকে। কপালে ছোট একটি টিপ আর চোখে কাজলে দারুণ লাগে যেমনটা রোহান বলেছিল। রূপা রেডি হয়ে মীরাকে ফোন দিয়ে বলে বের হতে। এদিকে রোহান টাঙ্গাইল বাস স্ট্যান্ড এর কাছাকাছি চলে এসেছে। রোহান রূপাকে মেসেজ দিয়ে বলে আর বিশ মিনিটের মতো লাগবে বাসস্ট্যান্ড আসতে। রূপা বাসা থেকে বেরিয়ে পরে। সাথে একটি রিকশা করে মীরাকে নিয়ে বাসস্ট্যান্ড এর উদ্দেশ্য। মীরা কিছুটা ভয় পাচ্ছিল কারণ আগে কখনো কোনো ছেলের সাথে এভাবে দেখা করেনি। এজন্য সে সাথে মীরাকেও নিয়ে নেয়। মীরা আর রূপা রিকশা করে টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ডে চলে আসে। রোহান তখন বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি। ঠিক পাচঁ মিনিট পর রোহান বাস থেকে নেমে পরে। তারপর রূপাকে ফোন দেয় যে তারা কোন পাশে। রূপা শাড়ি পরে দাড়িয়েছিল হাতে কাচের চুরি, খোপায় দোলনচাঁপা ফুল। রোহান দূর থেকেই আন্দাজ করতে পারছিল এটা নিশ্চয় তার রূপা হবে। যেমনটা ভেবেছিল ঠিক সেরকম তার রূপা। রূপার পাশে মীরাকেও সে দেখতে। মীরা রোহানের খালাতো বোন। মীরার মাধ্যমেই রোহান আর রূপার সম্পর্ক এতদূর গড়িয়েছে। রূপা রোহানকে দেখে কিছুটা লজ্জা পাচ্ছিল। এভাবে কারো সাথে রূপার কথাও বলা হয়নি। রোহান নীল রঙের একটি শার্ট পরে এসেছিল। রূপার নীল রঙ পছন্দ। রোহান রূপার জন্য একটি সাদা গোলাপ নিয়ে এসেছিল ব্যাগে করে। আজ তাকে গোলাপ ফুলটি দিবে। রোহান এসেই রূপাকে বলে তুমি রূপার মতোই সুন্দর! রূপার ঠোঠেঁর কোণে মৃদু হাসি দেখে রোহান আরও খুশি হয়ে যায়। তারপর মীরা এসে বলে,"তোরা কি এখানেই কথা বলবি?"

চলবে



10% beneficary for @shyfox ❤️



ধন্যবাদ

WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg



আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  
 2 years ago 
 2 years ago 

গল্প পড়া লোক আমার বাংলা ব্লগে খুব কম রয়েছে ভাই। আমিও গল্প লিখি কিন্তু খেয়াল করেছি খুব কম সংখ্যক মানুষ এ দিকে লক্ষ্য করে। যাই হোক ভালো লাগা একটি গল্প শেয়ার করেছেন আপনি। আমার খুবই ভালো লাগলো এত সুন্দর একটি গল্প পড়তে পেরে।

 2 years ago 

হুমম ভাই আপনি ঠিক বলেছেন গল্প পড়া লোকের বড়ই অভাব 🙂🙂। আপনাকে ধন্যবাদ দিতে চাই গল্পটি পড়ার জন্য।

সবাই এখন পর্বভিত্তিক নাটকের দিকে ঝুঁকছে। আপনার দ্বিতীয় পর্ব টি পড়ে খুব ভালো লাগল। এরপর তৃতীয় পর্ব পড়ার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। ধন্যবাদ আপনাকে

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 60164.54
ETH 2420.67
USDT 1.00
SBD 2.43