২য় পর্বঃ জবার স্বপ্নপূরণ
23-10-2022
০৮ কার্তিক ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয় অনেক ভালো আছেন 🌼। আমি ভালো আছি। তবে রোদের যে তীব্রতা ভালো কি আর থাকা যায়। যায়হোক, আপনাদের সাথে একটি গল্পের প্রথম পার্ট শেয়ার করেছিলাম। যেহেতু কয়েকটি পার্টে গল্পটি সাজিয়েছি তাই আজকে আপনাদের সাথে দ্বিতীয় পার্ট শেয়ার করবো। আপনাদের কাছেই ভালো লাগলে আমার লেখা স্বার্থক!
১ম পর্বের পর
তারপর জবা ও রায়হানের মাঝে শুরু হয় কথোপকথন! রায়হান সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এ পড়ে। ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্ট নিয়ে। জবা নরসিংদী পলিটেকনিক এ ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্ট নিয়ে। তাদের কনভার্সেশন ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। জবার কোনো প্রবলেম বুঝতে সমস্যা হলে রায়হানের সাথে শেয়ার করে। জবা তাই রায়হানকে স্যার বলেই ডাকে। এই নিয়ে অবশ্য রায়হানের কোনো আপত্তি নেই! কারন জবার ফ্যামিলি এর কেউ চায়না জবা কোনো ছেলের সাথে কথা বলুক। তারপর একদিন বিকাল বেলা জবা রায়হানকে ফোন দেয়। জবার ফোন পেয়ে রায়হান কিছুটা বিস্মিত হয়ে পড়ে। হঠাৎ জবার ফোন! জবার ফোনটা রিসিভ করতেই শুরু হয় তাদের কথা। জবা বাড়ির বাহিরে গিয়ে কথা বলে। জবার মা জানতে পারলে খবর আছে! রায়হান এর আগে কখনো কোনো মেয়ের সাথে কথা বলেনি। বলা যায় কখনো কথা বলার সৌভাগ্যও হয়নি। কারণ সে সারাদিন বই নিয়ে পড়ে থাকে। রায়হানকে নিয়ে তার বাবা মায়েরও খুব ইচ্ছে। ছেলে অনেক বড় হবে, তাদের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখবে।
রায়হান জবার সাথে কথা বলতে কিছুটা লজ্জা পাচ্ছিল। কিন্তু জবা বারবার রায়হানকে স্যার বলতেছিল। রায়হানের জবার কাছ থেকে স্যার শুনতেও ভালো লাগছিল। জবার সাথে কথা বলেই রায়হান বুঝতে পারে জবা অনেক ফ্রি মাইন্ডেড! তবে কথা কারো সাথে বলার সুযোগ হয়নি। জবা তার পরিবার সম্পর্কে বলে। কত বাধ্যবাধকতার মধ্যে দিয়ে এ পর্যন্ত জবাকে আসতে হয়েছে। পলিটেকনিক লাইফে কলেজেও খুব কম গিয়েছে। এজন্য প্র্যাকটিক্যাল নাম্বারও স্যারদের কাছ থেকে কম পেয়েছে। এ নিয়ে অবশ্য জবার কোনো আক্ষেপ নেই। রায়হানের সাথে ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি হয় জবার। সেটা শুধু বন্ধুত্বের! কিন্তু জবা রায়হানকে স্যার হিসেবেই সম্বোধন করে। কিছুদিন পর সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা! জবা নিয়ে অনেক টেনশনে থাকে। কিন্তু রায়হান জবাকে বলেছিল, তার যদি কোনো ম্যাথ বুঝতে সমস্যা হয় তাকে জানাতে। সে বুঝিয়ে দিবে সুন্দর করে। জবার প্রায়ই ম্যাথে সমস্যা হতো। জবা তখন রায়হান মানে তার স্যারকে ফোন দিয়ে প্রবলেম সলভ করে নিতো। তবে কিছু বিষয় ছিল যেগুলো অনেক কঠিন। আর পরীক্ষা যেহেতু আর বেশিদিন নেই তাই বেশি পড়ে লাভ নেই।
রায়হান অনলাইনে কোর্স করতো। বইয়ের সবগুলো টপিক সম্পর্কে ভালো আইডিয়া ছিল। ভিডিও আকারে সবগুলো ক্লাস ছিল, বুঝতেও সহজ টপিকগুলো। রায়হান যেখানে কোর্স করেছিল সেখান থেকে সাজেশন দিয়েছিল পরীক্ষার জন্য। বরাবরই সাজেশন থেকে কমন পড়ে। রায়হান জবাকে বলে তুমি করেই বলতো। কিন্তু জবা সবসময় রায়হানকে আপনি করে বলে। রায়হান জবাকে বলেছিল তার ওয়াটসঅ্যাপ নাম্বার দিতে। কিছু সাজেশন দিয়েছে সেগুলো পড়লে সেখান থেকে কমন পড়ার চান্স থাকে। জবা তার ওয়াটসঅ্যাপ নাম্বার দেয়। তারপর রায়হান সব সাবজেক্ট এর সাজেশনগুলো ওয়াটসঅ্যাপে দিয়ে দেয় জবাকে। সাজেশন পেয়ে জবার মাথায় হাত! এতো বড় সাজেশন শেষ করবে কিভাবে? পরীক্ষার আগে এতো বড় সাজেশন পড়াও যে সম্ভব না। রায়হান তখন বলে যেহেতু পরীক্ষা ৫০% মার্কসে হবে তাই বেশি পড়ার দরকার নেই। রায়হানের কথামতো জবা সাজেশন শর্ট করে পড়তে থাকে। ফাইনালি জবার পরীক্ষা সবগুলো ভালো হয়। কিন্তু প্র্যাকটিক্যাল মার্কস যে জবা কম পাবে সেটা ভালো করেই বুঝতে পারে।
রায়হানের পরীক্ষাও ভালো হয়েছে। পরীক্ষা শেষ করে রায়হান বাড়িতে চলে আসে। কিছুদিন পর জবার ফোন। জবা ফোন দিয়েই বলে, "স্যার, আপনি তো আমাকে ভুলে গেছেন! " জবার কথাশুনো রায়হান হাসমুখে উত্তর দেয় ভুলেনি। কিছুদিন হলো বাড়িতে এসেছি এজন্য খবর নিতে পারিনি। তারপর জবার পরীক্ষা সবগুলো কেমন হয়েছে জিজ্ঞেস করে রায়হান। পরীক্ষা ভালোই হয়েছে। তবে জবার কিছুটা মন খারাপ! কারণ জবার ইচ্ছে বাড়ির বাইরে পড়াশোনা করার। ডিপ্লোমা পাস করে সে ডুয়েটে প্রিপারেশন নিতে চাইছে। কিন্তু সমস্যা হলো তার বাবা তাকে বাড়ির বাইরে একা কোথাও যেতে দিবেনা। পড়াশোনা করতে হলে বাড়ির ভিতর থেকেই করতে হবে! বাবার এই বাধ্যবাধকতা শুনে জবার খুব মন খারাপ। রায়হান তখন জবাকে বলে, বাড়ির বাইরে যেতে না দিলে বাড়িতে বসেই ডুয়েটের প্রিপারেশন নেয়ার জন্য। সফটম্যাক্স অনলাইন এপস থেকে ডুয়েটের জন্য কোর্স কিনে পড়াশোনা শুরু করে দেয়ার জন্য! আর ফিজিক্স ও ক্যামিস্ট্রি বইটা কারো কাছ থেকে সংগ্রহ করে এখনি পড়ার জন্য। জবার বিশ্বাস যে রায়হান ডুয়েটে চান্স পাবে। কারণ সে অনেক ভালো স্টুডেন্ট। রায়হান শুরু থেকেই সফটম্যাক্স থেকে কোর্স কিনে পড়াশোনা শুরু করে দেয়। রায়হানের ফ্যামিলির অবস্থাও তেমন ভালো না। চাইলেও অনেক কিছু সম্ভব হয়না। তবে রায়হানের ইচ্ছে ডুয়েট প্রিপারেশন নেয়ার। আর জবাকেও বলে ডুয়েট প্রিপারেশন নিতে।
কিছুদিন পর কলেজ খোলা। পড়াশোনা সবাই শুরু করে দিয়েছে। রায়হান বাড়ি থেকে চলে যায় ক্যাম্পাসে। পড়াশোনায় সে মনোনিবেশ করে। রায়হান জবাকেও বলেছিল ভালো করে পড়াশোনা করতে। কিছুদিন পর রাতে জবার মেসেজ! স্যার আপনাকে একটা প্রশ্ন করি? রায়হান বলে, "করো। " তারপর জবা বলে আপনি কি কাউকে ভালোবাসেন, স্যার? এরকম প্রশ্ন শুনে রায়হান রীতিমত অবাক হয়ে যায়। কারণ রায়হানেরও একটা অতীত রয়েছে। সে এখন আর এসব মনে করতে চায়না। মনে করলে শুধুই কষ্ট পাবে। জবা বুঝতে পারে রায়হানের কথা। তারপর জবা আর বেশি কথা বাড়ায়নি। এভাবে জবা আর রায়হানের কথোপকথন চলতে থাকে বেশ কিছুদিন। আর কিছুদিন পর ডিপ্লোমা লাইফ শেষ হয়ে যাবে। একেকজন একেক জায়গায় চলে যাবে। কারো সাথে হয়তো কখনো দেখাও হবে না। জবা ভাবতে থাকে স্যার হয়তো তাকেও ভুলে যাবে। আর ডুয়েটে চান্স পেলে তো জবা কে, চিনবেই না! কিন্তু রায়হান ঠিকই মনে রাখবে বলে প্রতিজ্ঞা করে। পহেলা জুন জবার বার্থডে! জবা অনেকদিন ধরে একটি কথা স্যারকে বলতে চায়। তার বার্থডেতে হয়তো স্যারকে বললেও কিছু মনে করবে না। তারপর জবা.......
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Link
আপনার গল্পটা প্রথম পর্ব আমি পড়েছি আজকের পর্বটাও আমি পড়লাম। আমার কাছে মনে হয়েছে গল্পটা আপনি অনেক বেশি পেঁচিয়ে ফেলছেন একটু শর্ট করে লিখলে ভালো হয় তারপরেও ভালো লাগছে গল্পটা। আর জবা মনে হয় তার স্যারকে পছন্দ করে। আর ছেলেটা করে কিনা সেটা এখন পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত ছেলেটা ডুয়েটে ভর্তি হলে মেয়েটার সাথে আর যোগাযোগ রাখবে কিনা সেটাই আমারও জানার ইচ্ছা রইলো।
জি আপু আমি বুঝতে পারছি ব্যাপারটি। তবে সামনের পর্বে বিষয়টি পুরোপুরি ক্লিয়ার হবে হয়তো 😁। ধন্যবাদ আপনাকে 🌼
আপনার গল্পের প্রথম পর্ব টাও পড়লাম তখন অবশ্য আমি মন্তব্য করেছিলাম যে দ্বিতীয় পর্বে কিছুটা হলেও বোঝা যাবে যে দুইজনের সম্পর্কের ব্যাপারে এবং সেটাই হলো যাই হোক ভালই লাগছে পড়তে। পড়ে যেটা বুঝলাম জবা সম্ভবত রায়হান কে কিছুটা পছন্দ করা শুরু করেছে কিন্তু রায়হান পছন্দ করছে কিনা সেটা বোঝা যাচ্ছে না। অবশ্যই পরবর্তী পর্বে আরো ক্লিয়ার ধারণা পাওয়া যাবে।
জি ভাইয়া পরবর্তী পর্বে জানতে পারবেন 🌼। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া