নিজেকে আগে চিনো (Get to know yourself First)
শুভ সন্ধ্যা সবাইকে,
আজকে আমার বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন, কারন গতকাল যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছিলাম, সেটা রেশ এখনো রয়েগেছে আমার ভিতর। মনে হচ্ছে পূর্ণ অনুভূতি প্রকাশ করতে পারি নাই। আমি আসলে এই রকমই, কোন একটা বিষয় নিয়ে যখন চিন্তা করি, সেটার গভীরে ঢুকে যাই এবং নিজের চিন্তা-ভাবনার সাথে মেলানোর চেষ্টা করি। যতক্ষন পর্যন্ত সে বিষয়টি পরিস্কার না হয় এবং নিজের মাঝে তার ব্যাপারে সঠিক ধারনা কিংবা পরিস্কার অবস্থা তৈরী না হয়, ততক্ষন পর্যন্ত আমি সে বিষয়টি নিয়ে ব্যস্ত থাকি। হয়তো এটা অন্য দৃষ্টিকোন থেকে আজাইরা ভাবনা, অথবা অন্য কিছু কিন্তু আমি এটাতে আনন্দ পাই।
যাইহোক, বিষয়টি হলো আমাদের নিয়ে, আমরা কেন নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পারি না, আমরা কেন নিজেকে সহজেই একটি সুন্দর অবস্থানে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হই? এগুলো নিয়ে কখনো চিন্তা করেছেন আপনি? আপনার মাঝে কি কোন দুর্বলতা বিদ্যমান আছে? আপনি কি কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে বেশী আনন্দ পান? আপনি নিজের প্যাটার্ন ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন কখনো? নাকি শুধু সুবিধা পাওয়ার লোভে অন্যদের ফলো করে চলেছেন?
এগুলো খুব বেশী জটিল কিংবা কঠিন প্রশ্ন না, তবে হ্যাঁ, এতটুকু বলতে পারি, যদি আপনি এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর বের করতে পারেন এবং তার সাথে নিজের অবস্থান যাচাই করতে পারেন, তবে খুব সহজেই নিজের ব্যাপারে পরিস্কার একটি ধারনা তৈরী করতে পারবেন এবং নিজের একটা অবস্থান তৈরীর চেষ্টায় সফলতা লাভ করবেন। কিন্তু যদি প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর খুঁজে না পান, তাহলে আমি বলবো চেষ্টা করুন। কারন অন্তত নিজের ব্যাপারে নিজের কাছে একটা স্বচ্ছ ধারনা থাকা আবশ্যক।
লক্ষ্য করুন শিশুরা কিভাবে শেখে? তাদের প্যাটার্নটা কি? তারাতো কিছুই শিখে আসে নাই বরং নিজের কৌতুহল দিয়ে এবং একটা প্যাটার্ন ধরে শেখার চেষ্টা করে, তারপর নিজের জ্ঞানের সীমা বৃদ্ধি করে ধীরে ধীরে। আমরা সবাই তাই ছিলাম, কিন্তু দুঃখজনক হলো এই আমরা সে প্যাটার্নটা আর ধরে রাখতে পারি নাই। যার কারনে আমাদের অবস্থান এবং এগিয়ে যাওয়ার সঠিক গতি হারিয়ে গেছে। আমার বসের বড় ভাই, ৬৫ বছর বয়সেও তিনি ফরাসি ভাষা শিখেছেন, কারন উনার মাঝে শেখার আগ্রহটা এবং ছোট বেলার সেই প্যাটার্ন তখন জীবিত ছিলো। আমি নিজেও শুনে অবাক হয়েছি, বিষয়টির ব্যাপারে। উনি নিজে আমাদের অফিসের সবাইকে একদিন এটা বলেছিলেন। কারন উনি আমাদের অফিসের ছাত্রদের কয়েকটি ক্লাশ নিয়েছিলেন, ইংজেরীর উপর, তারপর আফসুস করে এই কথাটি বলেছিলেন, আমি এই বয়েসে যদি ফরাসি ভাষা শিখতে পারি, তবে ইংরেজী শেয়ার তোমাদের সমস্যা কোথায়?
সমস্যা হলো, আমরা আমাদের মাঝে নেই, নিজেকে চিনি না, নিজের নির্দিষ্ট কোন প্যাটার্ন নেই আমাদের। আমাদের অবস্থান হলো কাকের মতো, যে ময়ূরের নাচ শিখতে গিয়ে নিজেরটাই ভুলে গেছেন। এখন না পারেন নিজেরটা করতে না পারে ময়ূরের নাচ নাচতে। যাইহোক, আমার বলার উদ্দেশ্য ছিলো, নিজের প্যাটার্নটা ধরে রাখো। শিশুর মতো ঐ যে প্রথম শিখেছিলেন প্রশ্ন করার মাধ্যমে, বাবা ঐটা কি? তারপর হতে সে যাই দেখে প্রশ্ন করে এটা কি? ঐটা কি? এই প্যাটার্নটা ধরেই শিশুরা শেখা শুরু করে এবং নতুন যাই দেখে সেটার ব্যাপারে প্রশ্ন করতে থাকে। এই যে শেখার আগ্রহটা, এটা আমাদের মাঝে যতক্ষন থাকে, ততোক্ষন আমরা নতুন বিষয়ে জ্ঞান লাভ করার সুযোগ তৈরী করতে পারি।
আসলে আমি বলতে চাচ্ছি, এই যে শেখার আগ্রহ, এই প্যাটার্নটাকে ফিরিয়ে আনুন। তবে আর পূর্বে নিজের সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা তৈরী করুন। কোন বিষয়গুলো আপনার কাছে ভালো লাগে এবং কোন বিষয়গুলো আপনি বেশী উপভোগ করেন। তারপর সেখানে একটি প্যাটার্ন দাড় করান এবং তা নিয়ে সামনে এগিয়ে যান। এতে আপনার দুটো লাভ হবে, এক) আপনার ভালো লাগার বিষয়ে আরো সুন্দর অনুভূতি তৈরী করতে পারবেন এবং দুই) সেই বিষয়ে আরো বেশী জ্ঞান লাভ করার সুযোগ তৈরী করতে পারবেন। আসলে যতক্ষন না নিজের মাঝে নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে প্যাটার্ন দাড় করাতে পারবেন, ততোক্ষন পর্যন্ত সেই বিষয়ে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পাবেন না, এটা আমি নির্দিধায় বলতে পারি।
সুতরাং নিজেকে প্রকাশ করার পূর্বে আগে নিজেকে চিনতে হবে, নিজের ভালোলাগা, আগ্রহ, আনন্দ এবং সর্বোপরি দুর্বলতাগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। তারপর একটা নির্দিষ্ট প্যাটার্ন ধরে এগুনোর চেষ্টা করা করতে হবে। তবেই সেই ক্ষেত্রে যেমন আনন্দ খুঁজে পাবেন, পাবেন সফলতা। নিজের মাঝে খুঁজে পাবেন অন্য এক আপনার অস্তিত্ব। চলুন তাহলে শুরু করা যাক, নিজের মাঝে অন্য এক অস্তিত্ব খোঁজার চেষ্টা।
W3W Code: https://what3words.com/disposing.whistling.pony
Device: Redmi 9, Xiaomi
ধন্যবাদ সবাইকে।
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
100 SP | 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP |
সবসময়ের মতো আপনি কিছু মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ কথা তুলে ধরেন। সত্যি অনেক ভালো লাগে আপনার এই কথা গুলো। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে আমারদেড় সাথে শেয়ার করার জন্য।
খুব ভালো একটা কথা বলেছেন ভাই। নিজেকে চেনাটা খুবই দরকার। আমরা আসলে নিজেকে না চিনেই অন্যকে অনুসরণ করতে শুরু করি। যেটা আমাদের ভিতরে লুকায়িত শক্তি টাকে নষ্ট করে দেয়। যার ফলে আস্তে আস্তে আমরা অকর্মণ্য হয়ে পড়ি। একসময় আশপাশের সবাইকে তারপর নিজেকে দোষারোপ করা শুরু করি। কিন্তু যদি নিজের শক্তি জায়গাটাকে চিনতে পারি তাহলে লখ্যে পৌছে যাওয়া অনেক সহজ হবে।
খুবই সত্য কথা বলেছেন ভাই, ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য ভাগ করে নেয়ার জন্য।
ভাই খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় আলোচনা করেছেন।কিন্তু বিষয়টি আমার কাছে খুবই জটিল লাগছে। আমি যেটা বুঝেছি সেটা সবসময় নিজের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। এবং আমি কোন বিষয়ে বেশি এগিয়ে যেতে পারবো সেটা আমারই ঠিক করা উচিত।ধন্যবাদ বিষয়টি গভীরভাবে আলোচনা করার জন্য।
হ্যা, সেটাই নিজের ইচ্ছার গুরুত্ব দেয়া উচিত, না বুঝে অন্যদের অনুকরন করা ঠিক না। ধন্যবাদ
যথার্থ ভাই।
খুবই শিক্ষণীয় পোস্ট এটি। আপনার এই পোস্ট পড়ে অনেক কিছু শিখতে পারলাম ভাইয়া।আপনার সবগুলো পোস্ট করে আমি কিছু না কিছু শিখতে পারি। আসলেই তো আগে নিজেকে চিনতে হবে। আমরা নিজেকে না চিনে অন্যদের অনুকরণ করি। ভাইয়া আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
🙂🙂🙂🙂
ভাইয়া আপনার কথা গুলো আমার কাছে অনেক মূল্য অথবা মূল্য দিয়েও আপনার এই কথা গুলো কেনা যাবে না,আপনি এখানে অনেক গুলো প্রশ্ন করেছেন এবং অনেক সুন্দর ভাবে বিষয় টি বুঝিয়েছেন।
অসাধারণ, অসাধারণ লেখনী 💜💜
ধন্যবাদ ভাই, ভালো লেগেছে শুনে খুশি হলাম।
খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয় পোষ্ট এটি।অনেক কিছু শিখতে পারলাম।সত্যিই যেকোনো কিছুর পূর্বে নিজেকে চিনতে হবে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপু বুঝতে পারার জন্য।
খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন ভাই।আসলেই তো আগে আমাদের নিজেকে চিন্তে হবে।তারপর অন্য কিছু।খুবই সুন্দর লিখেছেন।ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপু আপনাকে লেখাটি পড়ার জন্য।
আপনার লেখার হাত সত্যিই আসাধারণ। খুব সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর পোস্টের জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকেও।
আপনার পোস্ট পড়ে একটা কথা মনে পড়ে গেল ক্যারি পাঠকের একটা উক্তি শক্তি রেখে যারা চলে তারা হারেনা কখনো।কি ঘাটতি রয়েছে দেখ,তা পূরণ করো।প্রয়োজনে শান্তির ঘুম হারাম করো। লড়াই করো মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যেওনা। জয় তোমার হবেই।
এই কথাটা আমাকে সব সময় অঅনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল। আজ আপনার পোস্টটি পড়েও অনুপ্রেরণা পেলাম। বিশেষ করে আমি যখন কোনো বিষয় মাথায় নেই সেটা শেষ না করে পারিনা। তবে ইদানিং কোনো কাজের পিছনে লেগে থাকতে পারছিনা।
ধন্যবাদ, আপনি আমার পোষ্টের মাঝে কিছু খুঁজে পেয়েছেন দেখে খুশি হলাম।
একদম ঠিক বলেছেন। আপনার প্রতি বাক্য কঠিন সত্যতায় মোড়ানো। কঠিন বাস্তব বিষয় তুলে ধরেছেন। আমাদের নিজেদের জানা থেকে শুরু করে দুর্বলতা যাবতীয় বিষয় অতি সহজ সাধ্য ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন আপনার লেখনী তে। অনেক কিছুই শিখতে পারলাম। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনাকেও ধন্যবাদ সময় করে লেখাটি পড়ার জন্য।
এই পৃথিবীতে আমরা সবাই একে অপরের থেকে আলাদা। এক এক রকম আমাদের গুণাবলী। এমন অনেক সময় আসে যখন আমরা নিজেরা নিজেকে নির্বাচন করতে পারিনা ,,আমরা কোন বিষয়টাতে দক্ষ এবং কোন কাজটা আমাদের করা উচিত। নিজের সাধ্যমত সঠিক পথে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছুতে হলে তাই নিজেকে চেনা টা অত্যন্ত জরুরী। আবার নিজেকে চেনা টাও যে খুব একটা সহজ কাজ আমার মনে হয় না। এটার জন্য প্রয়োজন ধৈর্যের। মনটাকে স্থির রাখা এবং লক্ষ্যে অটুট থাকা।