কক্সবাজার- অনুভূতির সতেজতায় আনন্দ ভ্রমণ (পর্ব-১)

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি এবং পরিবারের সবাইকে নিয়ে সুন্দর সময় ব্যয় করার চেষ্টা করছি। সত্যি বলতে সময়ের সাথে সাথে আমাদের মানসিকতার দারুণ পরিবর্তন খুবই জরুরী। এখানে শুধু পরিবর্তন শব্দটা ব্যবহার না করে দারুণ পরিবর্তন বলেছি কারন এই পরিবর্তনটা অবশ্যই বাধ্য হয়ে না বরং আনন্দের সাথে হওয়ার উচিত। দেখুন কোন কিছু বাধ্য হয়ে করলে তা যতটা সুন্দর ও ভালো হবে যদি সেটা আনন্দ নিয়ে করা যায় তাহলে তার ফলাফলটা নিঃসন্দেহে দ্বিগুন ভালো ও সুন্দর হবে, এটাই বুঝাতে চেয়েছি আমি।

যাইহোক, ভূমিকায় খুব বেশী কথা আজ বলবো না কারন সেই মানসিকতাও নেই। তবে হ্যা, মাস খানেক আগে অনুভূতিগুলোকে আরো একটু সতেজ ও চঞ্চল করার নিমিত্তে এবং তার সাথে সাথে বন্ধুত্বের টানে কক্সবাজার ভ্রমণ করেছিলাম, এটাকে আনন্দ ভ্রমণও বলতে পারেন। যদিও হৃদয়ের টানে কলকাতা ভ্রমণ করেছিলাম সেই পর্বগুলো এখনো শেষ করতে পারি নাই অথচ পুরো এক বছর পার হয়ে গেলো, আদতে আমি খুবই অলস প্রকৃতির একজন মানুষ, না না না আমি কখনো এটা স্বীকার করি না বরং আপনাদের ভাবি সুযোগ পেলেই এটা বলে থাকেন, হি হি হি। বাদ দিন, দেখা যাক কক্সবাজারের পর্বগুলো শেষ করতে পারি কিনা? আর হ্যা, সেন্টমার্টিন ভ্রমণের পর্বতো শুরুই করা হয় নাই এখনো, বুঝেন তাহলে সত্যটা কি!

IMG_20240524_215302.jpg

IMG_20240524_215259.jpg

এটা আমার অন্যতম একটা বড় সমস্যা, কি নিয়ে শুরু করতে চাই আর কি দিয়ে শুরু হয়ে যায়, হি হি হি। তবে এবার কক্সবাজারের যাত্রা শুরুটা মোটেও সুখকর ছিলো না আমাদের জন্য। একে তো অফিসে কাজের চাপ ছিলো প্রচুর, তারপর প্রকৃতি মানে পরিবেশের অবস্থাও খুব একটা ভালো ছিলো না। যদিও আমরা বহু আগেই টিকেট করে ফেলেছিলাম অনলাইন এর মাধ্যমে। অবশ্য এখনে সুমন ভাইয়ের ক্রেডিটটাই বেশী, কারন আজকাল অনলাইনের টিকেটও সিন্ডিকেটের হাতে চলে গেছে। আপনি আমি চাইলেও শান্তিতে অনলাইন হতে টিকেট ক্রয় করতে পারবো না, একাধিক ফোন এবং ব্যক্তি নিয়ে জাস্ট টাইমে ট্রাই করতে হয়। তারপরও ভাগ্য ভালো না হলে সেটাও মিলবে না।

IMG_20240524_215321.jpg

IMG_20240524_215406.jpg

তবে সুমন ভাই এবং তার দক্ষ টীম মেম্বাররা আমাদের হতাশ করেন নাই, টিকেট নিশ্চিত করেছেন যথা সময়ে। তারপর অফিসের বসদের ম্যানেজ করে ছুটি নিশ্চিত করেছি, যদিও তারা বার বার অনুরোধ করেছেন পরিস্থিতি ও পরিবেশ বিবেচনায় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার। কারন আমাদের যাত্রা শুরুর আগেই ঘূর্ণিঝড় রেমাল নিয়ে হৈ চৈ শুরু হয়েছিলো। যার কারনে ঘরে এবং বাহিরে উভয় দিক হতেই না যাওয়ার একটা সতর্ক বার্তা ছিলো। তবে আমাদের মাঝে অন্য রকম একটা উত্তেজনা ছিলো, সত্যি বলতে ভিন্ন প্রকৃতির মাঝে বিশাল সমুদ্রের উত্তাল দৃশ্যগুলো বার বার আমাদের আকর্ষণ করতেছিলো। অবশ্য আমি আর আরিফ ভাই এই রকম দৃশ্যের সাথে সেই ছোট বেলা হতেই পরিচিত।

কারণ আমাদের গ্রামের বাড়ির অবস্থানটা এমন জায়গায়, যেখানে যাওয়া আসার সময় আমরা প্রতিনিয়ত এই রকম দৃশ্যের সম্মুখীন হই। সুতরাং ভয়ের বিষয়টি আমাদের মাঝে একদমই ছিলো না। তাই মে মাসের ২৪ তারিখ অর্থাৎ শুক্রবার রাতের ট্রেন ধরার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে সোজা চলে যাই কমলাপুর রেলস্টেশনে। প্রথমে আমি পৌঁছাই, তারপর সুমন ভাই এবং তার টীমের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। চারপাশের দৃশ্যগুলো দেখা, ফটোগ্রাফি করা এবং কোন প্লাটফর্ম হতে ট্রেনে উঠবো, ইত্যাদি খবরা খবর আমি আগেই নিয়ে নিয়েছিলাম। সুতরাং সুমন ভাই চলে আসলে আমরা নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে অপেক্ষা করতেছিলাম কাংখিত ট্রেন এর জন্য।

IMG_20240524_215424.jpg

IMG_20240524_221612.jpg

IMG_20240524_221616.jpg

যথা সময়ের মাঝে ট্রেন চলে আসে এবং আমরা কাংখিত সীট সমূহে গিয়ে আসন গ্রহণ করি। কিন্তু সমস্যা বাধে আমার সীট নিয়ে, কোন ভাবেই তাকে কাইত করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছিল ঢাকা শহরের ট্রাফিক সিগন্যালের মতো কিছু, চার হাত তুলেও যেখানে ড্রাইভারদের গাড়ি থামানো যায় না। কি আর করার, আমি আর সুমন ভাই যাওয়ার কষ্টটা ভাগেযোগে শেয়ার করে নেই। অনুভূতির নতুন উত্তেজনায় ছুটতে থাকে ট্রেন আর এর মাঝে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে নেই আসার সময়ের টিকেট বাতিল করে শীততপ নিয়ন্ত্রিত সীট নিশ্চিত করার। যদিও তার জন্য হালকা পাতলা জরিমানা গুনতে হয়েছিলো আমাদের, হি হি হি।

তারিখঃ মে ২৪, ২০২৪ইং।
লোকেশনঃ কমলাপুর, ঢাকা।
ক্যামেরাঃ রেডমি-৯ স্মার্টফোন।

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  
 2 months ago 

যাক অবশেষে আপনি সময় গুলো আনন্দের সাথে কাটাচ্ছেন পরিবারের সাথে সেটাই ভাল লাগল। সবকিছু পরিবেশ পরিস্থিতির উপরে ছেড়ে দিলেই চলবে না। পরিস্থিতি যেমন হবে হোক সবকিছুকেই মেনে নিয়ে আমাদেরকে আনন্দের সাথে সময়গুলো পার করতে হবে। সেটা আসলে বলার কিছু নেই ভাগ্যে যা থাকে আর কি। আর আপনি যা ফটোগ্রাফি সংগ্রহ করে রেখেছেন মনে হয় আরো দুই বছর চলবে কোন ধরনের ভ্রমণ না করলেও। অবশেষে আপনারা কক্সবাজার ভ্রমণে আসছিলেন বিষয়টি জানা ছিল। তখনকার সময়ের ওয়েদারটা খুবই বাজে ছিল সেটাও জানা ছিল। যাক শত ব্যস্ততার মাঝেও খারাপ পরিস্থিতির মাঝেও আপনারা সুন্দর সময় কাটিয়েছিলেন কক্সবাজার।

 2 months ago 

একদমই ঠিক বলেছেন আপু, সব কিছু পরিস্থিতির উপর ছেড়ে দেয়া যাবে না। হা হা হা হা তা ঠিক অনেক ফটোগ্রাফি জমা আছে আমার কাছে। অবশ্য আপনার সাথে দেখা হলে ফটোগ্রাফির সংখ্যা আরো কিছুটা বেড়ে যেতো।

 2 months ago 

ও কক্সবাজারে ট্রেনও যায় জানা ছিল না ভাই। আমি শেষবার যখন গেলাম, ঢাকা থেকে হানিফ ট্রাভেলস এর বাসে গেছিলাম। যদিও সেই যাত্রা বড়ই মধুর ছিল।। রাতে কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে স্টপেজ দিয়েছিল। সেসব এক নতুন অভিজ্ঞতা। একা ট্রাভেল। আপনার মত আমার সেই যাত্রাপথ ও ঘোরার বর্ণনাও লিখবো একদিন। তবে কমলাপুর থেকে ট্রেন যায় এই তথ্যটি নতুন পেলাম। আপনার ঘোরা বেশ মনের মত হয়েছে তা বুঝতেই পারছি। ভালো থাকবেন।

 2 months ago 

এটা নতুনভাবে করা হয়েছে ভাই আগে যেতো না, খুব বেশী দিন হয় নাই এটা উদ্বোধন করা হয়েছে। আপনার সেই ভ্রমণ কাহিনী পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম। ধন্যবাদ

 2 months ago 

ভাই কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকেট পাওয়াটা খুবই কঠিন, সেটা আমি খুব ভালোভাবে জানি। কারণ সকালবেলা যখন অনলাইনে টিকেট বিক্রি করা শুরু হয়, সাথে সাথেই সব টিকেট বিক্রি হয়ে যায়। আসলে সিন্ডিকেট এর কারণে আমরা কোনো কিছু করে শান্তি পাই না। যাইহোক আপনারা যখন কক্সবাজার গিয়েছেন,তখনকার আবহাওয়া সত্যিই খারাপ ছিলো। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 61870.12
ETH 2401.56
USDT 1.00
SBD 2.53