আবোল-তাবোল জীবনের গল্প [ বোধোদয় ]

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আমি বেশ ভালো আছি এই কথা বলতে পারছি না, কারণ হলো গরম-ঠান্ডা, বেশ ঘোমট একটা পরিবেশ সহ্য করতে হচ্ছে। হয়তো সামনে আরো বেশী গরম সহ্য করতে হবে। কিন্তু সহ্যটা তখনই সীমার বাহিরে চলে যায় যখন অফিস হতে বাহিরে আসি। কি আর করার, গরীব মানুষ বলে কথা গাড়ী কেনার সুযোগ নেই তাই পাবলিক বাসে যাতায়ত করতে হয়। তবে আশাবাদী হয়তো ভবিষ্যতে সেই সুযোগটা দারুণভাবে দেখা দিতে পারে। কারন পরিবর্তিত অবস্থার সাথে আমরাও পরিবর্তন হচ্ছি এবং আমাদের মানসিকতার পরিবর্তনও ঘটছে।

আসলে আর্থিকভাবে সক্ষম হওয়াটা বড় কথা না বরং মানসিকভাবে সক্ষম হওয়াটা বেশী জরুরী। যদিও আমরা সক্ষমতার বিষয়টিও সঠিকভাবে বুঝতে পারি না বা বুঝতে অক্ষম। তাই আমাদের কাছে শাব্দিক অর্থ কিংবা সংজ্ঞাটা বিশেষ গুরুত্ব বিবেচনা করে না বরং আমাদের মানসিকতা মানে আমরা কি জানি এবং কি বুঝছি? সেটাকে আমরা বেশী গুরুত্ব দিতে পছন্দ করি। হোক সেটা ভুল কিংবা ভিন্ন কিছু, তাতে কি? আমি যেটা জানি বা বুঝি সেটাই সঠিক। প্রয়োজনে কারো মাথা ফাটিয়ে দিবো, তবুও নিজের ক্ষেত্রে নত স্বীকার করবো না। না এগুলো শুধু কথা প্রসঙ্গে বলছি না বরং এগুলোই এখনকার সময়ের বাস্তবতা।

যাইহোক, মূল কথায় ফিরে আসি, না হলে গরমের পরিমান আবার বেড়ে যাবে হি হি হি। থানকুনি পাতার বড়া বা পাকোড়া যেটাই বলেন নিশ্চয় মনে রয়েছে। আর মনে না থাকলে আবার মনে করিয়ে দিবো নতুন করে কিছু ফটোগ্রাফি করে। জ্বী অনেকগুলো পাতা এনেছিলাম সেবার। কারন সামনে রোজা ছিলো আর রোজার সময় আমরা জেনে শুনে বিষ পান করি। বুঝলেন নাতো? দেখুন একে তো গরম তারপর উপর আবার রোজা, দিন শেষে রোজা ভাঙ্গার সময় আবার আমরা তেলে ভাজা জিনিষ বেশী বেশী খেয়েছি তাহলে অবস্থাটা বেগতিক না হয়ে উপায় আছে? আর এই রকম পরিবেশে ইফতারের সময় ভাজা পোড়া জাতীয় কিছু খাওয়া মানেই হলো বিষ খাওয়ার মতো, কিন্তু আমরা ঠিক ইফতারিতে সবাই ভাজা পুড়া খেয়েছি, আপনারা কি করেছেন জানি না, আমি কিন্তু ঠিকই খেয়েছি। আরে ধুর এখন স্বীকার করলে সমস্যা নাই, রোজা তো শেষ। কিন্তু যত যাইহোক এবং যত যুক্তিই দেয়া হোক না কেন? আমরা তো এসব খাওয়া বন্ধ করি নাই ভবিষ্যতেও করবো না এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়, কি বলেন আপনারা?

man-gbaa53a21f_1920.jpg

দেখুন বলা হয়, রোজার মাধ্যমে নিজের প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রনের শিক্ষা দেয়া হয়, কিন্তু আমরা কি করেছি? নিজেদের প্রবৃত্তিকে আরো চাঙ্গা করার ঠিক উল্টো চেষ্টাটা করেছি। যেখানে সংযম করার কথা ছিলো, সেখানে আমরা আরো বেশী পরিমানে বেশী বেশী খরচ করার চেষ্টা করেছি। তাই আমাদের ফলাফলটাও উল্টোভাবে আসে। যাক সে সব কথা বলতে চাই না, কারন তাতে বিষয়টি অন্যদিকে চলে যেতে পারে। অবশ্য এখন রোজা শেষ, তাই কেউ মনে কষ্ট পাবে না, এটা আমি নিশ্চিত। কারন রোজার সময় বললে হয়তো কারো কারো সেটা মেনে নিতে কষ্ট হতো, কারন ভাজা পোড়াতো খাওয়া আর বন্ধ করতে পারতো না, আবার সত্যিটাও স্বীকার করতো না।

আর বাঙালি হিসেবে কিছু বৈশিষ্ট্য তো থাকা চাই আমাদের তাই না? চিন্তা করতে হবে না, সেটা তো আছেই, আরে ভাই বাঙালী বলে কথা না থাকলে কেমনে হবে। তাইতো আমাদের দুই বার খরচা না করলে কোন কাজে স্বার্থকতা আসে না। আবারও বুঝলেন না তাইতো? দেখুন আমরা প্রথমে টাকা দিয়ে খাবার কিনে খাই, তাও যতটা সম্ভব বেশী বেশী খাই কিন্তু তারপর? তারপর আবার ডাক্তার এর কাছে যাই এবং আবার টাকা খরচা করে ঔষধ কিনে খাই। কষ্ট কিংবা খরচা যাইহোক না কেন? খাওয়া বন্ধ করা যাবে না। প্রয়োজনে দুই দিন হসপিটালে থাকবো কিন্তু তবুও নিজেদের চরিত্র থেকে বের হয়ে আসবো না বা সেটার চেষ্টাও করবো না। হ্যা, এটা শুধুমাত্র আপনাদের জন্য প্রযোজ্য না বরং আমার ক্ষেত্রেও, কারন আমি নিজেও বাঙালি হি হি হি।

hatena-gd0d510582_1920.png

থাক অন্য দিকে ফিরি এবার, সত্যি বলছি শীতের সিজনে আমার শরীর যেমন ভালো থাকে ঠিক তেমনি পেটও সুস্থ্য থাকে। কিন্তু গরমকাল আসার সাথে সাথে শরীর যেমন ঠিক থাকে না ঠিক তেমনি পেটও কথা শুনে না। আসল কথা হলো এই সিজনে খুব ভালো কিংবা স্বাদের সবজি পাওয়া যায় না, তাছাড়া জিনিষ পত্রের দামও খুব বেশী থাকে। আসলে গরম কালে আবহাওয়ার সাথে সাথে সব কিছুই গরম থাকে, আর এই গরমের প্রভাবটা চরমভাবে পড়ে মধ্যবিত্ত পরিবারদের উপর। এই জন্যই বলা গ্রীষ্মকালে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো অনেকটা শিকলে বন্দী হয়ে যায়। চাইলেও সেখান হতে বেরিয়ে আসতে পারে না। যেহেতু আমিও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সেহেতু বিষয়টি আমি বেশ ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারি।

তবে এটাকে কখনো অস্বীকার করছি না, আমাদের সঠিক জ্ঞান কিংবা বোধদয় পারে সকল অনাকাংখিত পরিস্থিতি হতে আমাদের মুক্ত রাখতে। কিন্তু আমাদের সঠিক বোধদয় হবে কিভাবে? আমরাতো সত্যটা শুনতে চাই না, আমরাতো সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে চাই না, কারন আমাদের ইগোর সাইজ বিশাল। প্রসঙ্গক্রমে বলতে হয়, যে ঘুমিয়ে থাকে তাকে সহজেই জাগানো সম্ভব কিন্তু যে জেগে থেকে ঘুমের ভান ধরে থাকে তাকে জাগানো অসম্ভব। তবুও প্রত্যাশা করছি আমাদের বোধদয় হবে এবং আমরা সঠিক অবস্থানে ফিরে আসতে সক্ষম হবো।

Image Taken from Pixabay 1 and 2

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break.png
Leader Banner-Final.pngbreak.png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break.png

Banner.png

Sort:  
 2 years ago 

কারন সামনে রোজা ছিলো আর রোজার সময় আমরা জেনে শুনে বিষ পান করি।.

আপনার কথাটার সাথে আমি একমত। সারা দিন রোজা রাখার পর তেলে ভাজা জিনিসগুলো আমাদের ভেতরে যে কি পরিমান খারাপ প্রভাব ফেলে তা তো আমরা সাথে সাথে বুঝতেছি না। তাই পাত্তা দেই না। তবে কিছুই করার নাই মজা তো লাগে। 😋

ভাই আপনার পোস্ট পড়ে বেশি মজা লাগে এই জন্য কারণ আপনি একের অধিক প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করেন। আপনার সাজানো গুছানো লেখা সব সময় উপভোগ করি। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

 2 years ago 

কিন্তু আমরা এই জিনিষগুলো ছাড়া অন্য কিছু খেতে মোটেও প্রস্তুত না ভাই হা হা হা

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Please check my new project, STEEM.NFT. Thank you!
default.jpg

 2 years ago 

ধরুন হঠাৎ একদিন পাবলিক বাসে আপনার সাথে দেখা তখন কি করবেন আপনি??? আমি কিন্তু আপনার পিছু ছারবোনা ঠিক আপনার বাসায় চলে যাবো সাথে সাথে 😜😜 আপনি ঠিক বলেছেন এত গরম সহ্য করার মতো না তবে গত দুইদিন বেশ ঠাণ্ডা ছিল বৃষ্টি বৃষ্টি হচ্ছিল। আপনার সবকিছুই মনে আছে থানকুনি পাতার কথাও মনে আছে। রমজান মাস আমাদের যে বিষয়গুলো শিক্ষা দেয় আমাদের মধ্যে তা মানার কম প্রবণতা দেখা যায়। বরং রমজান মাস শেষ হলে নব উদ্যমে তারা শুরু করে দেয়। তারা মনে করে একমাস কিছুটা হলেও অফ ছিলাম এখন দ্বিগুণ হারে তিনগুণ হারে আমাদের আগের অবস্থায় ফিরে যেতে হবে। কিসের সংযম, কিসের সততা কিছু মানে না তারা। আসলেই বাঙালিদের মন বোঝা বড় দায়।

 2 years ago 

খাইছে রে আপনি তো দেখছি খুবই ভয়ানক মেয়ে মানুষ, কথায় কথায় খালি ডর দেহান ক্যা? বাবারে থানকুনির পাতার কথাও মনে আছে দেখছি আপনার হা হা হা।

 2 years ago 

মোটেও আমি ভয়ানক নই ।সহজ সরল আমি ।

 2 years ago 

কে বলেছে এটা? দেখি সার্টিফিকেটটা দেখি একটু হি হি হি।

 2 years ago 

আছে আছে বুঝলেন মশাই।

 2 years ago 

দারুন লিখেছেন তো।ভাইয়া আপনার সুযোগ হলে প্রাইভেট গাড়ি না কিনে বাস কিনবেন।আর আমাদের সবাইকে আপনার বাসে বিনা ভাড়ায় উঠতে দিবেন,😉😉।যাই হোক আসলেই ঠিক রোজার মাস সংযমের মাস ঠিকই কিন্তু আমরা যে হারে ইফতারে ইফতারি বানাই বা খাই তাতে হয়ে যায় উল্টোটা।আর হাসপাতালে থাকতে পারবো কিন্তু খাওয়া বন্দ করতে পারবো না।পরিশেষের কথা একদম ঠিক ঘুমন্ত ব্যাক্তিকে জাগানো যায়,ঘুমের ভান করা ব্যক্তিকে জাগানো যায় না।ধন্যবাদ

 2 years ago 

এ্যা, দোয়া করলেন নাকি বদদোয়া করলেন বুঝতে কষ্ট হচ্ছে? নিজেদের সুবিধাটা ঠিক বুঝে ফেলেন আগেই হি হি হি।

 2 years ago 

কিন্তু যত যাইহোক এবং যত যুক্তিই দেয়া হোক না কেন? আমরা তো এসব খাওয়া বন্ধ করি নাই ভবিষ্যতেও করবো না এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়, কি বলেন আপনারা?

ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়তে আমার অনেক ভালো লাগে। কারণ আপনি সবসময় শিক্ষণীয় বিষয় তুলে ধরেন। আসলে আমাদের বাস্তব জীবনের প্রেক্ষাপটে আমরা খুবই ভিন্ন প্রকৃতির মানুষ। যেই কাজটি করলে আমাদের ক্ষতি হবে সেই কথা জেনেও আমরা সেই কাজটি করতে আগ্রহ প্রকাশ করি। রমজান মাসে যেহেতু সারাদিন রোজা রাখার পর খাওয়া হয় তখন আমরা যদি স্বাস্থ্যসম্মত বা উপকারী কোন খাবার খাই তাহলে অনেক ভালো হয়। এর বদলে আমরা বাঙালিরা বিভিন্ন রকমের ভাজা পোড়া, তেলেভাজা এসব খাই। যেগুলো খেলে আমাদের আরো বেশি ক্ষতি হয়। আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা বাঙালিরা নিজেদেরকে ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করি। আসলে এই কথাটি একদম ঠিক বলেছেন যারা জেগে থেকে ঘুমায় তাদেরকে কখনো জাগানো যায় না। আসলে যে দিন আমাদের বোধোদয় হবে সেদিন আমরা জীবনের সঠিক অর্থ খুঁজে পাবো। অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা আপনি আপনার পোষ্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন এই জন্য আপনাকে জানাচ্ছি ধন্যবাদ। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া। 💓💓

 2 years ago 

যেটাকে বলে আমরা জেনে শুনে বিষ পান করতে উদ্যত হই সর্বদা। সত্যি ভাই মাঝে মাঝে নিজের কাছেই বিষয়গুলো হতাশাজনক মনে হয়।

 2 years ago 

আমি যেটা জানি বা বুঝি সেটাই সঠিক। প্রয়োজনে কারো মাথা ফাটিয়ে দিবো, তবুও নিজের ক্ষেত্রে নত স্বীকার করবো না।

এটা ঠিক বলেছেন ভাই। আমাদের সবার মাঝেই এই প্রবৃওিটা আছে। অর্থাৎ আমি যা বুঝি যা বলি তাই সঠিক বাকি সবাই ভুল।

এটাও দারুণ বলেছেন আমরা দুইবার টাকা খরচ করতে পছন্দ করি। প্রথমে বেশি বেশি খাই পরে আবার তার ঔষধের জন্য দৌড়ায় হা হা। তাহলে প্রথমে কম খেলেই হতো।

এসবের পেছনে রয়েছে একটাই কারণ আসলে ভুল করলেও স্বীকার করতে চাই না। কারো কাছে জানতেও চাই না। দারুণ লিখেছেন ভাই।।

 2 years ago 

ঐ যে বিচার মানি কিন্তু তাল গাছটা আমার ভাগে দিতে হবে, অবস্থাটা অনেকটা সেই রকম। ঔষধের ক্ষেত্রে আমাদের টাকার ঘাটতি হয় না।

 2 years ago 

দারুণ বলেছেন ভাই👌👌👌

 2 years ago 

কিছু কিছু ভয়ংকর রোগের মাঝে একটি রোগ হলো অতিরিক্ত মাত্রায় ইগোর সমস্যা।তবে এটা না মেনে পারছিনা যে এই রোগ আমার যে একেবারেই নেই তাও না।যদি নিজেকে বদলাতে পারতাম তাহলে সত্যিই ভালো হতো।

 2 years ago 

মাঝে মাঝে বার্গারের ভিতর ট্যাবলেট দিয়ে খেয়ে নিবেন তাহলে ইগোর প্রভাব কিছুটা কম হবে হা হা হা আর না কমলে আমার দোষ না সেটা ট্যাবলেটের দোষ।

Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.

Manually curated by @jasonmunapasee

r2cornell_curation_banner.png

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 57483.55
ETH 3066.62
USDT 1.00
SBD 2.29