শৈশব স্মৃতি - পোড়া মিষ্টি আলু

in আমার বাংলা ব্লগlast month

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি এবং সুস্থ আছি। যদিও মাঝে মাঝে সত্যটা লুকিয়ে মিথ্যাটা প্রকাশ করার চেষ্টা করছি, কারণ পরিবেশ কিংবা পরিস্থিতি কোনটাই আমাদের অনুকূলে থাকে না। কিন্তু তবুও আমাদের নিজেদের অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হয় ভিন্ন ভিন্নভাবে। যাইহোক, ভালো থাকি কিংবা মন্দ থাকি জীবন গতিশীল রাখতে পেরেছি এটাই এখন মূখ্য বিষয়, আর বাকি বিষয়গুলো আড়ালে থাক। চলুন আজকে শৈশব স্মৃতি কিছু ভিন্ন অনুভূতি শুনি, যা এখনো হৃদয়ে চঞ্চলতা ছড়ায়।

আমাদের শৈশবের অনেক স্মৃতি আছে, এটা শুধুমাত্র যে আমার জীবনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তেমনটা নয় কিন্তু বরং সকলের শৈশব জীবনে এমন কিছু সুন্দর ঘটনা আছে যা প্রাপ্ত বয়সে এসে ভীষণভাবে মিস করে এবং মাঝে মাঝে অতীতের সেই ঘটনাগুলোর মাঝে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে। হয়তো এই কারনেই আমাদের জীবনের সেরা সময় বলা হয় শৈশব জীবনকে। দুরন্তপনা কিংবা অস্থিরতার সেরা প্রকাশ ঘটে থাকে এই সময়টায়। এখন যেহেতু শীতকাল তাই শৈশব জীবনের শীতকালের একটা মজার না শুধু মজার না বরং স্বাদের অনুভূতি আজকে শেয়ার করবো।

vegetable-3559112_1280.jpg

মিষ্টি আলু হয়তো সবাই চিনেন? আমি অবশ্য একটু বেশীই চিনি। কারন আমার দাদার বাড়ির পিছনে এবং ডানদিকে যে খেতগুলো ছিলো সেগুলোতে মিষ্টি আলু চাষ করা হতো। স্কুল বন্ধের সময় আমি যেমন নানু বাড়িতে যেতাম ঠিক তেমনি দাদুর বাড়িতেও যেতাম। যদিও দাদুর বাড়িতে যেতে ভীষণ কষ্ট হতো কিন্তু তবুও আম্মু অনেকটাই জোর করে সেখানে পাঠাতেন। অবশ্য সমবয়সী একাধিক চাচাতো ভাই থাকার দারুণ সেখানে যাওয়ার পর দারুণ উপভোগ কিংবা দুষ্টুমি করার সুযোগ পেতাম। খেত হতে মিষ্টি আলু তুলে আনতাম, একদম তাজা আলু। মাটি সরিয়ে তারপর আলু সংগ্রহ করতাম।

যেহেতু খেতগুলো আমাদের আত্মীয়দের ছিলো, সেহেতু সেটা নিয়ে তেমন কোন সমস্যাই হতো না। তারপর দুপুরের রান্না যখন শেষ হতো, তখনও চুলায় জ্বলন্ত কয়লা থাকতো। আমরা সেখানে গিয়ে আলুগুলোকে দিয়ে দিতাম। তারপর কিছু একটা চুলার উপর দিয়ে ঢেকে দিতাম। তারপর আমরা একদম স্বাভাবিক থাকতাম, যাতে কেউ কিছু বুঝতে না পারে। অবশ্য কেউ কেউ ঠিকই বুঝে যেতো কারণ আলুগুলো যখন পুড়তে শুরু করতো তখন একটা মিষ্টি ঘ্রাণ ঠিক ছড়িয়ে যেতো চারপাশে। আর এটা যে আমাদের কাজ ছিলো সেটাও অনেকেই বুঝে যেতো।

দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষে সবাই যখন ঘুমিয়ে যেতো, তখন শুরু হতো আমাদের দ্বিতীয় মিশন মানে পোড়া মিষ্টি আলুর স্বাদ নেয়ার মিশন হি হি হি। আমরা আলুগুলো সংগ্রহ করতাম তখনও অবশ্য বেশ গরম থাকতো। তারপর সেগুলোকে নিয়ে পুনরায় ফাঁকা থাকা কোন খেতের মাঝে চলে যেতাম, পোড়া আলুর স্বাদের সাথে চলতো কাল্পনিক সকল গল্প, যে যেভাবে পারতো গল্প বলতো আর তার সাথে চলতো পোড়া আলুর দারুণ স্বাদ। এছাড়াও আরো অনেকভাবে মিষ্টি আলু খেতাম। তবে মাঝে মাঝে আমরা খেতের মাঝেই ধুয়ে কাঁচা মিষ্টি আলু খেতাম। কাঁচা মিষ্টি আলুও খেতে কিন্তু দারুণ স্বাদের।

Image Taken from Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last month 

আপনার শৈশবে পোড়া মিষ্টি আলু খাওয়ার স্মৃতি পড়ে আমারও ছেলেবেলা এ মিষ্টি আলু পুড়িয়ে খাওয়ার স্মৃতি মনে পড়ে গেল। আমার মার ছিল ভীষণ পছন্দের এই খাবারটি। আর তাই মার জন্য আমাদের বাসায় আনা হত। মাকে দেখতাম গ্যাসের চুলায় মা পুড়িয়ে খাওয়াতো। আর মাটির চুলায় আলু পুরে খাওয়ার গল্প শুনাতো।শুনেছি মাটির চুলায় এর আরো স্বাদ। আসলে শৈশবে আমাদের সবার জীবনে এমন হাজারো স্মৃতি বাসা বেঁধে আছে।

 last month 

হ্যা, মাটির চুলায় কিংবা কয়লাতে পুড়ে খেলে সেটার স্বাদ বেশী পাওয়া যায়, একটা দারুণ ঘ্রাণও পাওয়া যায় সাথে ফ্রিতে হি হি হি।

 last month 

মিষ্টি আলু পুড়িয়ে খেতে ভীষণ মজার।আর পোড়ার সময়ের মিষ্টি গন্ধে আমি তা খাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠি।মাটির চুলায় মিষ্টি আলু পুড়িয়ে খাওয়া যায় তা শুনেছিলাম আব্বুর কাছে।সেভাবে খাওয়ার সৌভাগ্য আসলে কখনও হয়নি।তবে আমি আব্বুর কথা শুনে ঢাকায় বসে অভিনব পন্থায় এই মিষ্টি আলু পুড়িয়ে খাই,হিহিহি।আমি, চুলায় রুটি ভাজা তাওয়া বসিয়ে খুব হিট করি।এরপর আস্ত আলু বসিয়ে চুলা কম আঁচে রেখে আস্তে আস্তে পুড়াই।আব্বু তো এটা দেখে তখন অবাক ই হয়েছিল।টেস্ট কিন্তু ভালো ই ছিল।আজ আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে আমার সেই অনুভূতি গুলো শেয়ার করে নিলাম।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয় করার জন্য।

 last month 

এটা ঠিক বলেছেন পোড়া গন্ধটা বেশী ভালো লাগে, তবে সেটা লাড়কির চুলা হলে বেশী ঘ্রাণ পাওয়া যায়। অনেক ধন্যবাদ

 last month 

শৈশবের স্মৃতির মতো কিছুই নেই, বিশেষত সেই মিষ্টি আলুর সাথে সম্পর্কিত মুহূর্তগুলো! আপনার বর্ণনা আমাকে আমার শৈশবের অনেক ভালো মুহূর্তের কথা মনে করিয়ে দিলো। সেই আলুর পোড়া স্বাদ, সবার সাথে গল্প করা, ও খাবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করা,সব কিছু যেন খুব জীবন্ত হয়ে উঠেছে।

 last month 

শৈশব মানেই মজার কিছু এবং আনন্দের কিছু।সেই স্মৃতিগুলো আজও বেশ রঙিন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকেও।

 last month 

ভাইয়া আপনার শৈশবের স্মৃতি পড়তে গিয়ে আমার নিজের শৈশবের স্মৃতি মনে পড়ে গেল। ছেলেবেলায় আমার মা ও এমন করে মিষ্টি আলু পোড়া করে দিতো। আর আমরা মজা করে খেতাম। আপনি বেশ সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। কিছুটা সময় যেন শৈশবে হারিয়ে গিয়েছিলাম।

 last month 

শৈশবের স্মৃতিতে পোড়া মিষ্টি আলু যেন একটি বিশেষ স্থান রাখে। শীতের সকালে অথবা সন্ধ্যায়, পাড়া বা মাঠে যখন পুডিংয়ের মতো গরম পোড়া মিষ্টি আলুর ঘ্রাণ বাতাসে ভেসে আসত।তখন সেই ছোট্ট আনন্দটাই ছিল সবচেয়ে বড়। চুলার আগুনে পোড়া মিষ্টি আলু খেতে খেতে আমাদের মাঝে যেই স্নিগ্ধতা ও সুখ ছিল।তা আজও হারিয়ে যায়নি। তবে শৈশবের সেই সাদাসিধে আনন্দ আজ আর নেই। এখন মনে হয়, কখনো যদি ফিরে পেতে পারতাম।

 last month 

কাঁচা মিষ্টি আলু,পোড়া মিষ্টি আলু এবং সেদ্ধ মিষ্টি আলু ছোটবেলায় অনেক খাওয়া হতো। তবে ছোটবেলায় পোড়া মিষ্টি আলু খেতে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগতো। যাইহোক আপনারা তো দেখছি দারুণ টেকনিক অবলম্বন করে মিষ্টি আলু পুড়ে, তারপর ক্ষেতে গিয়ে বেশ মজা করে খেতেন। বেশ ভালো লাগলো আপনার শৈশবের মধুর স্মৃতি পড়ে। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last month 

বাহ, সুন্দর একটি শৈশব স্মৃতি পড়লাম ভাইয়া।ছোটবেলায় দেখতাম আমার মামাবাড়িতেও মিষ্টি আলু চাষ করা হতো।এটি কাঁচা অবস্থায়ও খাওয়া যায়।তেমনি আপনারা পোড়া করে খেতেন জেনে ভালো লাগলো, ধন্যবাদ আপনাকে।

 last month 

এগুলো শুধুমাত্র কোন ঘটনা না ভাই। এই ঘটনাগুলোর সাথে কতশত সুন্দর মূহূর্ত জড়িয়ে আছে তার কোন ঠিক নেই। আহ দারুণ লাগল আপনার পোস্ট টা ভাই। এইরকম মিষ্টি আলু পুড়িয়ে খাওয়ার অভিজ্ঞতা আমার আছে। তবে এটার জন্য আমার এতোকিছু করা লাগত না। আমার বন্ধুরাই সব দেখে নিত। আমি শুধু খাওয়ার সময় উপস্থিত হতাম হা হা।

Coin Marketplace

STEEM 0.14
TRX 0.25
JST 0.033
BTC 88414.52
ETH 2207.77
SBD 0.91