ভুল করাটা কখনোই দোষের না
শুভ বিকেল বন্ধুরা,
আমরা মানুষ, আর মানুষ মাত্রই ভুল। এই কথাটি কিন্তু আমরা সেই ছোট বেলা হতেই শুনে এবং জেনে আসছি কিন্তু মানতে পারি নাই কখনো। কারন আমি বা আপনি যখনই কোন ভুল করেছি, তখন আমাদের চারপাশের মানুষগুলো সেটাকে কখনো সাভাবিকভাবে মেনে নেয়নি এবং মেনে নিতে চায়নি। আসলে সমস্যার সূত্রপাত এখান হতেই শুরু হয়েছে, আমাদের জানা এবং শুনা কথাগুলোর সাথে কখনোই আমরা সত্যতার মিল খুঁজে পাই নাই। যার কারনে আমাদের মানসিকতাও সেভাবে গড়ে উঠেছে, আমাদের সামনে কারো ছোটখাটো ভুলও আমরা মেনে নিতে পারি না।
বস্তুত আমরা সবাই অভ্যেসের দাস এবং মানসিকতার শিকলে বন্দি। যার কারনে আমরা এই অবস্থা হতে বের হতে চাই না এবং বের হতে পারি না। কিন্তু আমি মনে করি এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার, দরকার আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন এবং বন্দিত্বের শিকল ভেঙ্গে ফেলার। কেউ না করুন, অন্তত আমি শুরু করি। কেউ পাশে না থাকুক অন্তত আমি থাকি। তাহলে কেউতো আমার কারনে অনুপ্রেরণা খুঁজে পাবে এবং সঠিক অবস্থানে ফিরে আসতে পারবে। দেখুন একটু চিন্তা করে, আপনি কি পারবেন আর কি পারবেন না?
ভুল কারা করে এবং কেন করে? দেখুন যারা কাজ করে ভুল তাদের মাঝেই হয়, এখন আপনি যদি কাজ না করেন তবে কখনোই আপনার কোন ভুল হবে না। এখন ভুলের জন্য কি আপনি কাজ ছেড়ে দেবেন? কখনোই না, বরং আমাদের চেষ্টা করতে হবে যেখানে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেখানে একটু বেশী যত্নশীল হওয়ার। কাজগুলোর শেষে আগ্রহ নিয়ে চেক করা, যাতে ভুল হলেও সেটার উপস্থিতি দূর করা যায়। আমি মনে করি কেউ ইচ্ছে করে ভুল করে না, কারন ভুল করলে নিজের অবস্থার অবনতি ঘটবে এটা অন্তত সবাই ভালো বুঝে। তাহলে কে চায় তার অবস্থার অবনতি ঘটুক? কেউই চায় না, কিন্তু তবুও অনিচ্ছায় আমাদের অনেক ভুল হয়ে যায়, যেখানে হয়তো আমাদের কিছুটা গাফলতি থাকতে পারে। এখন চেষ্টা করতে হবে সেই গাফলতিটি যেন স্থায়ী না হয়।
আমি করি, প্রচুর পরিমানে বানান ভুল করি। এটা আমার স্কুল জীবন হতে শুরু হয়েছে এখনো চলমান আছে। স্যাররা আমার এই অতিমাত্রায় বানান ভুলের বিষয়টিকে যথেষ্ট আন্তরিকতার সাথে চেষ্টা করেছেন দূর করার। অনেক ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন, এটা আমি অবশ্যই বলবো, কারন আমার অতীত অভিজ্ঞতা তাই বলে। বিশেষ করে বাংলা লেখায় আমি খুবই দুর্বল ছিলাম, স্যাররা বার বার আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং নতুন করে বিষয়গুলো বুঝিয়েছেন যাতে আমার মাঝে শুদ্ধ বিষয়টির প্রতি আগ্রহ জাগে। একটা ঘটনা শেয়ার করছি আপনাদের সাথে-
একদিন বাংলা স্যার বাড়ীর কাজ দেখার জন্য সকলের খাতা জমা নিলেন, তারপর একজন ছাত্রকে সামনে ডেকে আমার খাতাটি বের করতে বললেন, কারন স্যার জানে অন্তত একজন ছাত্র এখানে আছে যার খাতায় সহজেই বানান ভুল পাওয়া যাবে। তারপর বাড়ীর কাজটি খুব সুন্দরভাবে চেক করলেন এবং একটি বানান ভুল বের করলেন, সেটা ছিলো শরীর বানান কারন আমি শরীর না লিখে লিখেছিলাম শরির। এই জন্য স্যার আমাকে সামনে ডাকলেন এবং তার সাথে আরো একজন ছাত্রকে ডাকলেন। তাকে বললেন বোর্ডে লিখো সঠিক বানানটি। সে লিখলো এবং আমাকে বললো সঠিক বানানটি লক্ষ্য করো। ঘটনা কিন্তু এখানেই শেষ হতে পারতো কিন্তু স্যার সেটা করলেন না, সেই ছাত্রকে দশটাকা দিয়ে বললেন, বাহির হতে দশটাকার টানা (মানে আমরা বলতাম বাদামি গাট্টা) নিয়ে আস। সকলের সামনে সেদিন সেই দশটাকার টানা আমাকে দিয়ে বললো এটা তোমার পুরস্কার কারন তুমি একটা বানান ভুল করেছো। এরপর যদি বেশী বানান ভুল করো তাহলে বেশী টানা খেতে দেব।
তবে এর সাথে একটি শর্ত জুড়ে দিলেন, সেটা হলো আগামীকাল বাড়ীতে বসে পাঁচশতবার শরীর বানানটি শুদ্ধ করে লিখে আনতে হবে। লক্ষ্য করুন, একদিকে আমাকে পুরস্কৃত করলেন আবার অন্যভাবে শাস্তিও দিলেন, সাথে কিন্তু বেশ অপমানও ছিলো সেই দশটাকার টানা। বিষয়টি কিন্তু আমার জন্য মোটেও ভালো ছিলো না। কিন্তু এরপর হতে সেই স্যারের যে কোন বাড়ীর কাজের ক্ষেত্রে আমি আরো বেশী সতর্ক থাকতাম এবং সেই দিনের ঘটনাটি স্মরণ করতাম। মাঝে মাঝে আমার বড়বোনকে খাতা দেখাতাম, বানানগুলো সব ঠিক ঠাক আছে কিনা চেক করার জন্য।
ভুল নিয়ে আমরা আছি, ভুলে ভরা জীবন নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ভুল কিন্তু এখনো হচ্ছে এবং হবে। কারন ভুল হচ্ছে বলেই আমরা সঠিকটা শেখার সুযোগ পাচ্ছি। ভুল করছি বলেই তো আমরা বুঝতে পারছি এটা ভুল। যদি তা না হলো তাহলে সবাই ভুলের মাঝে থাকতাম এবং ভুলটাকেই শুদ্ধ ভেবে নিতাম। সুতরাং মানুষ মাত্রই ভুল এটা শুধু কথার ক্ষেত্রে না বরং কাজের ক্ষেত্রেও বিশ্বাস করতে হবে। ভুল হতেই পারে এটাকে সহজ ও সাভাবিকভাবে মেনে নেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। তবে সঠিকটা সামনে আসবে এবং ভুল হতে ফিরে আসার সুযোগ তৈরী হবে।
W3W Code: https://what3words.com/manifests.hothouse.tarnished
Device: Redmi 9, Xiaomi
ধন্যবাদ সবাইকে, ভুল হলে সহজভাবে ধরিয়ে দিবেন, কোন পুরস্কার দেয়া হবে না কিন্তু, হি হি হি।
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
Support @amarbanglablog by Delegation your Steem Power
100 SP | 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP |
|| Community Page || Discord Group ||
প্রত্যেক আদম সন্তানই ভুল করবে।আর যে ব্যাক্তি ভুল থেকে ক্ষমা চাইবে অথবা ভুল সুধরে নেবে সেই উত্তম পন্থা অবলম্বন করবে।
যদি কোনো ব্যাক্তি কোনো বিষয়ে ভুল করে সমাজে কিছু মানুষ ভাবে সে কি যেনো অন্যায় করে ফেলেছে।এটা মোটেও ঠিক না।
কেউ যদি ভুল না করে সে নতুন কিছু শিখতে পারবে না।
আমি যদি কোনো বিষয় ভুল করি তখন ওই বিষয় নিয়ে বেশি অধ্যায়ন করি ফলে ওই বিষয়টা সম্পর্কে বেশি জানতে পারি।
গল্পটা বেশ মজার। আপনি গল্প আকারে কোনো কিছু লিখলেও ভেতরে লুকিয়ে থাকে ছোট ছোট অনেক শিক্ষা যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে হাত ধরে কেও শুধরে দেয়না বা এটা বলে না যে ভুল কোনটা আর সঠিক কোনটা।
কিন্তু যখন আপনার লেখা পড়ি তখন নিজের ভুলগুলো নিজেই বাছাই করতে পারি,বুঝতে পারি। আপনি সবসময় আপনার লেখায় একটা শিক্ষা রেখে দেন আমাদের জন্য। এই ব্যাপারটা আমি খুব উপভোগ করি আর তাই মনোযোগ দিয়ে লিখাগুলো পড়িও। আমি নিজেও একই সমস্যা ফেইস করছি।মাঝেমধ্যে তো অনেক অনেক বেশি সহজ বানান ও মাথা থেকে উধাও হয়ে যায়! নিজের ই অবাক লাগে যে এই বানানটা আমি পারিনা!আর সত্যিই ভুল কোনো দোষের না! তাই স্বীকার করে সাবধান হয়ে যাওয়াটাই উত্তম।
অনেক শিক্ষণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন ভাইয়া।মানুষ তো ভুল করবেই , আর এটি অতি সাধারণ ব্যাপার কিন্তু আমরা সকলেই তা সহজে মেনে নিতে পারিনা। আমার মতে ছোটখাটো ভুল করে নিজেকে অনেক সহজেই শুধরে নেওয়া যায় কিন্তু সব সময় খেয়াল রাখতে হবে যদি বড় ধরনের কোন ভুল হয়ে যায় তাহলে আর নিজেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। যেমন মনে করুন কোন একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে একটি বখাটে ছেলের প্রেমে পড়ে তার হাত ধরে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল, এতে পরবর্তীতে শুধরে গেলে তার কি লাভ হবে।ঠিক বলেছি কি ভাইয়া?
আপু এটা সত্য কথা, সাভাবিক এবং ছোট খাটো ভুলগুলো সংশোধন করার সুযোগ থাকে কিংবা পাওয়া যায় কিন্তু বড় কিংবা জীবনের ক্ষেত্রে জটিল বিষয়গুলোর ভুল সংশোধন করার সুযোগ পাওয়া যায় না। তখন পুরো জীবনটাই নষ্ট হয়ে যায়। শেষের বিষয়টি নিয়ে আপনার সাথে আমিও সহমত পোষণ করছি। কারন আমার বড় বোনের অবস্থা অনেকটাই এই রকম এখন।
ভুল হবে আবার তা কেউ না কেউ সংশোধন ও করে দিবে।প্রত্যেকটি ভুলের মাঝে বড়ো কোনো শিক্ষা লুকিয়ে থাকে।আমি বিশ্বাস করি পৃথিবীতে এমন কোনো মহাপুরুষ নেই যার কোথাও কোনো ভুল নেই ।কিন্তু আমাদের সমাজের মানুষ ভুলটাকে স্বাভাবিক ভাবে না নিয়ে দ্বিগুণ জল ঘোলা করে ফেলে,শুদ্ধ করে দিতে যেয়ে সামান্য ভুলটাকে অসামঞ্জস্যতায় রূপান্তরিত করে।হয়তো এটাই মানুষ শিক্ষা দিতে গিয়ে আরও বড়ো ভুল করে ফেলে দৃষ্টির অগোচরে।আলো আছে যেমন তেমন অন্ধকার ও আছে।তাই সবার জীবনে ভুল করে আবার শুদ্ধ ও করে নেই।শুধু আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে তা স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিয়ে শুদ্ধতার পথ দেখাতে হবে।
অনেক সুন্দর ব্যাখ্যা করেছেন ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যা, খুব সুন্দর বলেছেন আপনি, আলোর পিছনে অন্ধকার সব সময়ই থাকবে, তাই বলে কি অন্ধকারকে অস্বীকার করা যাবে? কখনোই না। ভুলগুলো আমাদের জীবনে এভাবেই এসে থাকে। ধন্যবাদ
অনেক সুন্দর ভাবে শিক্ষণীয় একটি বিষয় গুছিয়ে লিখেছেন।আসলেই ভুল সবাই করে তবে এই ভুল থেকে যারা শিক্ষা নিয়ে নিজেকে পাল্টাতে পারে তারাই হলো আসল যোদ্ধা।কারন তারা ভুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নিজেকে গুছিয়ে নেয়।অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনাকে লেখাগুলো পড়ে আপনার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।
ভাই আপনার চিন্তাধারা আমাকে আকৃষ্ট করেছে। বিশেষ করে কিছু না করে বসে থাকার চেয়ে,কিছু একটা করে ভুল করা শ্রেয়।আইডিয়াটি যথাযথ।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
আপনার পোস্ট গুলো সব সময় কিছু না কিছু শিক্ষা দেয় ভাই।খুব ভালো কথা গুলোই যেন বেছে বেছে লেখেন আপনি।
বানান ভুল আমার ও হিউজ পরিমাণ হয়ে থাকে।আমি বেশ কয়টি জায়গায় বানানে দুর্বলতা আছি।
যেমন (ভালো,নাকি ভাল)(নামাজ নাকি নামায) (গাঁদা ফুল নাকি গাদা ফুল)(হচ্ছিলো নাকি হচ্ছিল)এরকম বানান গুলোতে আমি কনফিউজ এখন পর্যন্ত (ও কার) হবে কি হবে না এটা নিয়ে আমি খুবই কনফিউজ।
আর এটা একদম সত্যি কথা যে ভুল করাটা কোন দোষ না।আমি মনে করি ভুল করাটাই হলো একটা শিক্ষা।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রইলো ভাই।
সত্যি কিছু বিষয়ে এখনো আমি কনফিউজের মাঝে থাকি, যার কারনে এখনো বানান ভুল হয়। তবে যাইহোক ভুলের ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত এবং ভুল হওয়টা দোষের না এটাও বুঝা উচিত। ধন্যবাদ
ডিপার্টমেন্ট একবার স্যারের এসাইনমেন্ট এ নাম ভুল লিখেছিলাম। নাম ছিল Adib Ekram আমি লিখছিলাম Adib Akram . স্যার আমাকে ২০০০ বার খাতায় লিখে আনতে বলেছিল।
তার পর থেকে আর কোনো স্যারে ম্যাম এর নাম ভুল হয়নি।
ভুল করলেই মানুষ শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ পায়। শিক্ষণীয় একটি পোস্ট, ধন্যবাদ আপনাকে।