ঘাড়ে ব্যথা রুগীদের গল্প
হ্যালো! আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভাল আছেন। আমার পোস্টে আপনাকে স্বাগতম। হাজির হলাম চেম্বার কথনের আরেকটা গল্প নিয়ে। আজকে আমরা শুনবো ঘাড়ে ব্যথার রুগীদের গল্প। একজন রুগীর কথা দিয়ে গল্পের অবতারণা করলেও এটা শুধু একজনেই আবোধ্য থাকবে না। আমার মনে হয় আমাদের সবারই গল্প এটা । মূল গল্পটা বেশ ছোট! চলুন পড়ে ফেলি গল্পটা!
আমার ডিউটি শেষ হবার আধা ঘন্টা আগে পরিচিত এক ব্যক্তি মোবাইলে কল দিলেন। আমি কোথায় চেম্বার করছি সেটাই জানার জন্যে উনি মুলত কল দিয়েছেন। উনার পরিচিত একজন রুগী আসবেন। বাংলাদেশী ডাক্তার খুজছেন। তাই আমার খোজ!
যাহোক। ১৫ মিনিটের মধ্যে রুগী এসে হাজির চেম্বারে। কি সমস্যা? ঘাড়ে ব্যথা! ডিজিটাল মেশিনে প্রেশার চেক করেছেন। উপরের রিডিং এসেছে ১৪১ মিমি মার্কারি। ব্যস। প্রেশারের জন্যেই উনার ঘাড়ে ব্যথা হচ্ছে ধরে নিয়েই আমার কাছে এসেছেন চিকিৎসার জন্যে।
আমি প্রেশার মাপলাম। বাম হাতে পেলাম ১৪০/৮০। ডান হাতে পেলাম ১৩০/৮০! মানে হচ্ছে উনার উচ্চ রক্তচাপ না। উনার ঘাড়ের ব্যথা প্রেশারের জন্যে না। আমার কথা যেন উনার বিশ্বাসই হচ্ছিল না। যাহোক বুঝিয়ে সুঝিয়ে ব্যথার ওষুধ দিয়ে বিদায় করলাম রুগীটিকে।
আজকের গল্পের এই রুগীটিই শুধু নয়, এরকম শতশত রুগী আছেন যারা একটু ঘাড়ে ব্যথা হলেই ভাবেন যে প্রেশার বেড়েছে। অনেক সময় প্রেশার মেপে বেশী পাওয়া যেতেও পারে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে ঘাড়ে ব্যথা থাকা অবস্থাতেও প্রেশার স্বাভাবিকই পাওয়া যায়। মজার ব্যাপার হচ্ছে, মেডিকেলের বই পুস্তকে কোথাও ঘাড়ে ব্যথার কারণ হিসাবে প্রেশার বেশি থাকাটা কে উল্লেখ করা হয় নাই। পাশাপাশি দুইটা সমস্যা থাকতে পারে কিন্তু ঘাড়ে ব্যথার মুল কারণ উচ্চ রক্ত চাপ নয়। তবে প্রেশার অনেক বেশী হলে বা একেবারেই কমে গেলে মাথা-ঘাড়ে অস্বস্তিভাব হতে পারে!
এমনও রুগী পাওয়া যায় যারা একটু ঘাড়ে ব্যথা হলেই ব্যথার কোন ওষুধ না খেয়ে কোন একটা প্রেশারের ওষুধ খেয়ে নেয়। ব্যথা ঠিক হয়েগেলে আর খায় না। প্রেশারের ওষুধ এমন অনিয়মিত ভাবে খাওয়াটা শরীরের জন্যে বেশ ক্ষতিকর একটা অভ্যাস!
ঘাড়ে ব্যথার সবচেয়ে কমন কারণ হচ্ছে মাংসপেশী ব্যথা। রাতে শোয়ার সময় পজিশন আকাবাকা করে ঘুমালে সকালে ব্যথা শুরু হয়। লম্বা সময় একই পজিশনে মাথা বাকিয়ে বা ঝুকিয়ে রাখলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। হঠাত করে মাথা বা ঘাড় ঘুরালে ব্যথা হতে পারে। মাথায় কিছু বহন করলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। হাড় ক্ষয় হলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে! এসব ক্ষেত্রে পেইন কিলার ট্যাবলেট বা মলম লাগালে এবং গরম স্যাক দিলেই সাধারণত ব্যথা ঠিক হয়ে যায়।
আজকে এ পর্যন্তই। কেমন লাগলো আজকে লেখাটি তা অবশ্যই জানাবেন কমেন্টের মাধ্যমে। ভাল থাকুন সবাই।
ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা নিরন্তর
ডা হাফিজ
ওমান
৭ই অক্টোবর,, ২০২৪
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া অনেকেরই এই ভুল ধারণা রয়েছে যে ঘাড়ে ব্যথা শুধুমাত্র প্রেশার বাড়ার কারণেই হয়। আবার অনেকেই পেশার বেড়েছে মনে করে প্রেসারের ঔষুধ খেয়ে ফেলে। কিন্তু আসল কারণ কেউ আর খুঁজতে যায় না। আপনারা পোস্টটি পড়ে অনেকে এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারবে। ধন্যবাদ শিক্ষনীয় একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
0.00 SBD,
0.01 STEEM,
0.01 SP
জ্বী। এরকম অনেক রুগী পাই যারা ঘাড়ে ব্যথা হলেই প্রেশার এর ওষুধ খায়, ব্যথার ওষুধের পরিবর্তে। এটা মারাত্মক ভুল।
ধন্যবাদ আপনাকে।
একদম ঠিক। ঘাড় ব্যথা করলেই দৌড়ায় আসে প্রেশার মাপার জন্য। প্রেশার ঠিক পাওয়া গেলে বিশ্বাসই করতে চায় না যে প্রেশার ঠিক আছে।
0.00 SBD,
0.01 STEEM,
0.01 SP
একদম বাস্তব কথা ভাই।
ধন্যবাদ আপনাকে।