শৈশবের একখন্ড চিত্র:"কাঁকড়া ধরার মজার স্মৃতি"

in আমার বাংলা ব্লগlast year

নমস্কার

বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা সবাই?আশা করি ঈশ্বরের কৃপায় সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন।আমিও মোটামুটি ভালোই আছি।

শৈশবের একখন্ড চিত্র:"কাঁকড়া ধরার মজার স্মৃতি"

IMG_20230721_182816.jpg

পর্ব- 1

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PkpkXyXwzmWEkSA7U2PjRr7VoGxjyzQFnZHCkVBWn57JTVUvY7omc512mhJJX...vDZX3Fcaov38Zxjxq21rAE9wN1b8HnrBKZamZjaRXZMJVUcaVKGLWFRFVNG6MXCo9ptvvGTefY61oasZ4TrQFVwMiYWBFUH8ivxFm1LbtvBRqtkowye4ZCeEyk.png

বন্ধুরা,প্রতিনিয়ত আমি ভিন্ন ভিন্ন পোষ্ট করতে ভালোবাসি।তাই আজ আমি আপনাদের সামনে আবারো উপস্থিত হয়েছি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি পোস্ট নিয়ে। আজ আমি আপনাদের সঙ্গে একটি শৈশব স্মৃতি শেয়ার করবো।এই অনুভূতিগুলি অনেক মজার ছিল যেটা এখন ভীষণভাবে মিস করি।আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।যাইহোক তো চলুন শুরু করা যাক----



যতই দিন যাচ্ছে,সময়ের অতল গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে অনেক কিছুই।ছোটবেলার অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে আমাদের সময়ের, যেমন-অনেকগুলো অন্যতম মজার খেলা।আর তার সঙ্গে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে চিরচেনা ছোট কাঁকড়াগুলি।এটা আমার জীবনের শৈশবের এক খন্ড চিত্র বলা চলে।তো সেটাই তুলে ধরবো আজ।যেটার মাধ্যমে কাঁকড়া ধরার বেশ কিছু সহজ উপায়ও তুলে ধরবো।

আমাদের গ্রামের এক পাশেই বড় নদী ছিল।তাই অনেক মাছের সঙ্গে নদীর বিভিন্ন খুঁটিনাটি ছোট ছোট জিনিসও আমার চেনা ও নাম জানা।যেগুলোর সঙ্গে অফুরন্ত স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে আমার জীবনে।যেমন-ছোট ছোট জলপোকা,কাঁকড়া,কড়ি ,ঝিনুকসহ নানা কিছু।তাই আজ সেই ছোট জিনিসের মধ্যে কাঁকড়ার বিষয়ে অনুভূতি প্রকাশ করবো।প্রথমেই বলে রাখি---

IMG_20230721_182806.jpg

কাঁকড়া এক প্রকার নয়।আমি যতদূর জানি,কাঁকড়ার অনেক নাম ও ভাগ রয়েছে।যেমন--পাতি কাঁকড়া,বড় কাঁকড়া,তিলে কাঁকড়া,গুঁয়ে কাঁকড়া,লাল কাঁকড়া ইত্যাদি।প্রত্যেকটি কাঁকড়ার গঠন,আকৃতি,স্বাদ ও দেখতে আলাদা ধরনের।তারমধ্যে গুঁয়ে কাঁকড়া ও লাল কাঁকড়াগুলি নদীর চর দিয়ে হাঁটাহাঁটি করতো ভাটার সময়।এই কাঁকড়াগুলি কেউ খায় না।পাতি কাঁকড়াকে আবার ছোট কাঁকড়া ও বড় কাঁকড়াকে আবার ঘিলু কাঁকড়া হিসেবেও অনেকে চিনে থাকেন।

নদীর পাতি কাঁকড়াগুলি সবসময় পাওয়া যায় না।গণমুখ 15 দিন থাকতো আর ভাটিকা 15 দিন থাকতো।যাদের নদীর পাড়ে বাড়ি তারা এই বিষয়ে জেনে থাকবেন।গণমুখের সময় অর্থাৎ তিথি অনুযায়ী ছোট কাঁকড়া বের হতো।ছোটবেলায় দেখতাম নদীতে নৌকা নিয়ে জেলেরা জাল নিয়ে যেত ছোট কাঁকড়া ধরতে।আমার বাবাও যেত জেলের নৌকায় মাঝে মাঝেই।ফলে অনেক ছোট কাঁকড়া বাড়িতে নিয়ে আসতো।তারপর অনেকগুলো বড় চারি ভর্তি করে রেখে দিতেন।এমনটা আমাদের গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে থাকতো।সেই সময়ে ছোট কাঁকড়া প্রচুর পরিমানে পাওয়া যেত তাই এটি বাজারেও বিক্রি হতো না।রাতে চারি থেকে কাঁকড়াগুলি উঠে বাড়ির এদিক-সেদিক, উঠোন দিয়ে হাঁটাহাঁটি করতো।কখনো আবার পুকুরে ,ক্যানেলে হেঁটে হেঁটে পালিয়ে যেত।

সেই ছোট কাঁকড়াগুলি থেকে আমরা সাইজে বড় মেদি কাঁকড়াগুলি বেছে নিয়ে পুরুষ কাঁকড়াগুলি ফেলে দিতাম।প্রত্যেক বাড়িতেই ছোট কাঁকড়ার ঝোল এবং কাঁকড়ার ঘিলু দিয়ে ভাজি,পিঠা,বড়া ও ঝুরঝুরির মতো সুস্বাদু রেসিপি তৈরি করা হতো।আমাদের বাড়িতেও হতো ,সেই অফুরন্ত স্বাদ যেন এখনো মুখে লেগে আছে।কেউ এই রেসিপিগুলি না খেলে কখনোই এর স্বাদ সম্পর্কে অনুভব করতে পারবে না।ছোট কাঁকড়াগুলি এতটাই বের হতো যে নদীর জলে ভাসতে থাকতো আর নেট জালগুলি কেটে দিত কুচি কুচি করে ঠ্যাং দিয়ে কামড়ে ধরে।

আবার দেখতাম অনেকে বড় ছাকনি জাল দিয়ে ভাসমান কাঁকড়া ধরতো।কেউ কেউ আবার মুরগির নাড়িভুঁড়ি এবং চামড়াকে টোপ দিয়ে শক্ত সুতা দিয়ে পেঁচিয়ে একটি মোটা লাঠির গায়ে বেঁধে রাখতো।এমন অনেকগুলো টোপ নিয়ে নদীর মাঝে ফেলে দিত তারা।তারপর নাড়িভুঁড়ির গায়ে অনেক ছোট কাঁকড়া এসে জড়ো হলে সেগুলো একত্রে নৌকায় টেনে তুলতেন।এভাবেই জোয়ারের সময় কেউ কেউ আবার বড় কাঁকড়াও ধরতেন।

একবার আমার জেঠুর মেয়ে এসে খবর দিল যে-
(চলবে--)

আশা করি আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের পোষ্টটি ভালো লাগবে।সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ও সাবধানে থাকবেন।

💐💐ধন্যবাদ সকলকে💐💐

পোস্ট বিবরণ:

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসpoco m2
ফটোগ্রাফার@green015
লোকেশনবর্ধমান
Sort:  
 last year 

আসলে আপু আমি কাঁখড়া কখনো খায়নি তবে আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে অনেক মজার হয়েছিল। সত্যি আপু এই ধরনের রেসিপি গুলো অনেক মজার। সত্যি আপু এ ধরনের রেসিপি না খেলে স্বাদ অনুভব করা সম্ভব নয়। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ঠিক বলেছেন আপু,কাঁকড়া অফুরন্ত স্বাদের হয়ে থাকে গলদা চিংড়ির মতোই।ধন্যবাদ আপনাকে।

!upvote 40


This post was manually selected to be voted on by "Seven Network Project". (Manual Curation of Steem Seven. Your post was promoted on Twitter by the account josluds

the post has been upvoted successfully! Remaining bandwidth: 0%

 last year 

Thank you so much.

Your post has been rewarded by the Seven Team.

Support partner witnesses

@seven.wit
@cotina
@xpilar.witness

We are the hope!

 last year 

কাকড়া সম্পর্কে আমি খুব একটা অবগত নই। এত প্রজাতির কাকড়া আছে সেটা আমি আগে জানতাম না। কাকড়া ধরার বিভিন্ন কৌশল আপনার কাছ থেকে জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো আপু। জাল দিয়ে টেনে কাকড়া ধরার নিশ্চয়ই মজাই অন্যরকম। আপনার প্রথম পর্ব টি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। দ্বিতীয় পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু । আপনার জেঠুর মেয়ে আপনাকে কি বলতে এলো !! তা জানার অপেক্ষায়।

 last year 

কাঁকড়া ধরা আসলেই অনেক মজার ব্যাপার ছিল আপু।অসংখ্য ধন্যবাদ আপু,পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

দিদি কাঁকড়া সম্বন্ধে অনেক কিছু জানলাম আপনার পোস্ট পড়ে। আসলে শহরে থাকি তাই কাঁকড়া বিষয়ে কিছুই জানিনা।আর কখন ও খাওয়া ও হয়নি।আপনি অনেক সুন্দর সুন্দর খাবারের নাম বললেন কাঁকড়া দিয়ে।এরপর আসলে কি হলো? জেঠুর মেয়ে এসে কি খবর দিল?? জানতে অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ দিদি সুন্দর করে গুছিয়ে শৈশবের একখন্ড চিত্র আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আপনাদের সুন্দর মন্তব্য আমাকে অনুপ্রাণিত করে, অনেক ধন্যবাদ আপু।

 last year 

আপু আমরা যখন পুকুরে মাছ ধরতে যেতাম তখনই কাকড়া গুলো মাঝেমধ্যে হাতে কামড়ে দিত। যদিও আমি কখনো কাঁকড়া রান্না করে খাইনি। তবে শুনেছি এটি রান্না করে খেতে খুবই সুস্বাদু। তবে ছোটকালে কাকড়া নিয়ে অনেক খেলেছি আমরা। আপনারা অনেক গুলো কাঁকড়া ধরতেন এবং তার মধ্যে বড় মেদি কাঁকড়া গুলো বেছে নিয়ে পুরুষ কাঁকরাগুলো ফেলে দিতেন। তবে এ কাকড়া গুলো ধরা অত সহজ নয়। ধরতে গেলে তাদের পা দিয়ে চেপে ধরতো। অনেকেই কিন্তু এটি ধরতে অনেক ভয় পায়। কাঁকড়া ধরা মজা স্মৃতির নিয়ে লেখাগুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো আপু ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

ঠিকই বলেছেন ভাইয়া, অনেকেই কাঁকড়া ধরতে খুবই ভয় পায়।কারন খুবই জোরে কামড়ে দেয় কাঁকড়াগুলি।কিন্তু আমাদের ভয় লাগতো না,অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66740.62
ETH 3336.11
USDT 1.00
SBD 2.72