DIY-"এসো নিজে করি" সপ্তাহ" ||আমার হাতের তৈরি- "একগুচ্ছ কাগজফুল"
*নমস্কার*
প্রথমেই আমাদের সকলের শ্রদ্ধেয় @rme দাদাকে কৃতজ্ঞতা স্বরূপ এবং সকল মডারেটর দাদাদেরকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানাই আমার হাতের তৈরী একগুচ্ছ কাগজফুল দিয়ে।সত্যি,@rme দাদা খুব সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন সপ্তাহব্যাপী।আমার খুবই ভালো লাগে তার এই নতুনের সন্ধানকে এবং নতুন চিন্তাধারাকে।এছাড়া তিনি সর্বদা নতুন বিষয়ে আমাদেরকে দিকনির্দেশনা দিয়ে কাজের প্রতি উৎসাহ- উদ্দীপনা এবং অনুপ্রেরণা দেন।
সপ্তাহব্যাপী প্রতিযোগিতার বিষয়টি খুবই চমকপ্রদ এবং আকর্ষণীয়।নিজে কিছু তৈরি করা।এতে নিজের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের মনের দানাবাধা প্রতিভাগুলি মানুষের সম্মুখে উম্মোচিত হবে।মানুষের সৃজনশীলতা প্রকাশ পাবে।এছাড়া আমরা বন্দিদশায় থেকেও ছোটবেলাকার মনে আঁকড়ে রাখা স্মৃতিগুলো পুনরায় সত্যি করে ফিরে পাবো।যা সম্ভব হচ্ছে শুধুমাত্র "আমার বাংলা ব্লগে"।যে ছোটবেলার ছড়ানো স্মৃতি জড়ো করে আমরা ফিরে পাব আমাদের আনন্দঘন মুহূর্তটাকে।এইজন্য বিশেষভাবে ধন্যবাদ @rme দাদাকে।
নিজে কোনো কিছু তৈরী করা মোটেও সহজসাধ্য ব্যাপার নয়।কারণ এখানে নিজের প্রতিভা কথা বা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না প্রতিভা হাতের কাজ দিয়ে মানুষের মনকে জয় করতে হবে।যেমন নকশী কাথায় হাজারো সুখ-দুঃখ,হাসি-কান্নার কথা ফুটে উঠে তেমনি নিজের তৈরি কোনো কাজের মধ্যে ও হাজারো না বলা কথা বা জমানো কথা প্রকাশ পায়।এই কাজগুলো সময় দিয়ে পরিমাপ করা যায় না কারন এটি সম্পূর্ণ মনের আঙ্গিকে মাধুরী মিশিয়ে রূপ দেওয়া হয়।[আপনি যা তৈরী করুন না কেন তাতে আপনার মধ্যেকার কিছু মনের ভাব লুকিয়ে থাকবে, ছোঁয়া থাকবে হাতের।]
[হয়তো অনেকেই অনেক কিছু তৈরি করবেন।তাতে মজা,হাসি বা রসিকতা থাকবে কিন্তু তাতে থাকবে সত্যিকারের সৃজনশীলতা । ]এবার ফিরে আসি আমার মনের আঙিনায় নতুন কিছু তৈরিতে যেখানে কথা হবে না ,শুধুই কাজের বহিঃপ্রকাশ।প্রথমেই একগুচ্ছ ফুল বানানো দিয়ে শুরু করি আমার প্রথম diy প্রতিযোগীতাই অংশগ্রহণ।
চলুন শুরু করি--
●ধাপঃ 1
1.আমি এখানে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করেছি-
গেরুয়া রঙের কাগজ
আকাশি রঙের কাগজ
স্কেল
কেচি
সবুজ হাইলাইট পেন
এবং আঠা
2.প্রথমেই আমি স্কেল দিয়ে গেরুয়া রঙের কাগজ কেটে নেব যেকোনো মাপের চারকোনা করে।যদি ও আমি সবুজ মোম রঙ নিয়েছিলাম কিন্তু আমি সেটি ব্যবহার না করে সবুজ হাইলাইট পেন ব্যবহার করেছি।
3.ফুলটি বানানোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কাগজের ভাঁজ করা।এখানে আমি চারকোনা কাগজ নিয়ে ত্রিভুজের মতো 5 টি ভাঁজ দিয়ে নেব।
4.মনে রাখতে হবে,5 টি ত্রিভুজ ভাঁজ দিয়ে আমাকে তিনটি সিঁড়ির মতো ভাঁজ তৈরি করতে হবে।তারপর কেচি দিয়ে সমান করে ঘুরিয়ে কেটে নিতে হবে কাগজের মোটা দিক।
●ধাপঃ 2
5.এবার কাগজের মোটা দিক কেচি দিয়ে কুঁচি কুঁচি করে কেটে নিতে হবে।তো এভাবে বেশ কয়েকটি কাগজের পাশ একটি কুচি ডিজাইন দিয়ে আমি আবার কোনটার মাঝবরাবর কিংবা মাঝের থেকে ছোট করে বিভিন্ন আকার দিয়ে কেটে নেব।
●ধাপঃ 3
6.এরপর প্রত্যেকটি কুচি কাগজ কেচি দিয়ে একটু হালকা মুড়িয়ে সেপ দিয়ে নেব।তারপর কাগজের কেটে রাখা একঅংশে অল্প আঠা লাগিয়ে অপর পাশ ঘুরিয়ে চেপে দিয়ে ফুলের সেপ তৈরি করে নিতে হবে ছোট, বড়ো সব কাগজ দিয়ে।
●ধাপঃ 4
7.এরপরই বড়ো ফুলের কাগজের মধ্যে ছোট ফুলের কাগজগুলো থরে থরে সাজিয়ে বসাতে হবে আঠা দিয়ে এবং সব কাগজ বসানো হয়ে গেলে এটি একটি সুন্দর ফুলের আকার হবে।কাগজের সরু দিকে আঠা লাগাতে হবে।
8.এভাবে আমি একটি,দুটি করে 6 টি ফুল কুড়িসহ একইভাবে বানিয়ে নিয়েছি।তারই একটি বানানোর সম্পূর্ণ ধাপ তুলে ধরলাম আপনাদের সামনে।
●ধাপঃ 5
9.এরপর আমি ফুলের পাতা ও ডাল তৈরি করবো।তো আমি এখানে আকাশি রঙের কাগজ নিয়েছি ।কারণ আমার কাছে সবুজ রঙের কাগজ নেই।তো ছোট ছোট করে কাগজগুলি কেটে নিলাম।তারপর একটি কাগজ ভাঁজ দিয়ে কেচি দিয়ে কেটে নেব পাতার আকারে।তো আমি দুটি কাগজের পাতা কেটে নিয়েছি।
10.এবার পাতার ভাঁজসমেত পাশে কেচি দিয়ে কুঁচি করে কেটে নেব।কিন্তু আমার কাছে সবুজ রঙের কাগজ নেই তো পাতায় সবুজ রং তো করতে হবে।তাই সবুজ হাইলাইট পেন দিয়ে রং করলাম আকাশি কাগজের উপরে।এখন তৈরি হয়ে গেল আমার হালকা সবুজ দুটি পাতা।
●ধাপঃ 6
11.এবার সরু কাগজের টুকরো গুটিয়ে কয়েকটি ছোট-বড়ো ডাল তৈরি করলাম।পাতার মতো একইভাবে সবুজ রং করে নিলাম ডালে।
●ধাপঃ 7
12.এরপর ফুলের মতো করে ফুলের মুকুট তৈরি করলাম কয়েকটি।এবার মুকুটের শুধুই বাইরের অংশ সবুজ রং করলাম।এক্ষেত্রে কাগজগুলো ছোট করে কাটতে হবে তারপর মাঝবরাবর কেটে একাংশে আঠা দিয়ে লাগাতে হবে।তৈরি হয়ে গেল ফুল বানানোর সব উপকরণ ফুল,পাতা,মুকুট ও ডাল।
●ধাপঃ 8
13.এবার এক এক করে ফুলের মুকুটগুলি ফুল ও ফুলের কুঁড়ির নিচে সরু অংশে আঠা দিয়ে লাগিয়ে নেব।তারপর ডালের মাথা একটু চিরে চারটি করে নিয়ে ,আঠা লাগিয়ে মুকুটসমেত ফুল বসিয়ে দেব ডালে।এভাবে প্রত্যেকটি ফুল তৈরি করে নিলাম।
●ধাপঃ 9
14.এরপর বড়ো ডালের মধ্যে সবচেয়ে ছোট কুঁড়ি ফুলটি আঠা দিয়ে লাগিয়ে নেব এভাবে প্রত্যেকটি ফুল উপর থেকে নিচে পর্যন্ত আঠা দিয়ে সাজিয়ে নেব।উপরে ছোট এবং নিচে বড়ো ফুল ।সবশেষে পাতা দেব একেবারে ডালের নিচের অংশে।আমি এখানে ডালের কিছু অংশে একটি সরু কাঠি এবং ডালের গায়ে একটু সুতো দিয়ে দেব।তো আমার ফুলটি একেবারেই রেডি হয়ে গেছে।
আসলে আমি অনেক ছবি ক্যাপচার করেছিলাম ।কিন্তু আমার দাদা বলল,50 টার বেশি ছবি আপলোড করা যায় না।তাই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কিছু ছবি সংযুক্ত করতে পারেনি।
আশা করি আমার বানানো ফুলটি সকলের কাছে ভালো লাগবে।এছাড়া আপনারা আমার বানানো ধাপ দেখে ফুল তৈরির পদ্ধতিও বুঝতে পারবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
ফটোগ্রাফি: @green015
ক্যামেরা: poco m2 এবং redmi note 10 pro max
অভিবাদন্তে: @green015
সুন্দর একটি কারুকার্য করেছেন।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও
দিদি অনেক সুন্দর কারুকার্য করেছেন। আশা করি আপনি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হবেন।
বিজয়ী হতে পারবো কিনা জানিনা তবে কাজটি মন থেকে করার চেষ্টা করেছি।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আপনার তৈরি কাগজের ফুলটা খুবই সুন্দর এবং দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। এবং আপনি খুব ভালো উপস্থাপন করেছেন।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।আপনার প্রশংসা শুনে খুবই ভালো লাগলো ।
শুভকামনা
আপনার তৈরীর ফুলটি অনেক সুন্দর। দিদি অনেক সুন্দর কারুকার্য করেছেন। আশা করি আপনি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হবেন। শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
বিজয়ী হবো কিনা জানিনা।তবে মন থেকে কিছু তৈরি করতে পেরে আমি খুশি।আপনাদের সুন্দর মন্তব্য আমাকে অনেক কিছু শিখতে সাহায্য করবে।অনেক ধন্যবাদ দাদা।
খুবই সুন্দর হয়েছে, তোমার গুণের শেষ নেই, শুভকামনা রইল ,অনেক ধন্যবাদ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু,আপনার সুন্দর মন্তব্য শুনে খুশি হলাম।
সত্যিকারের সৃজনশীলতা প্রকাশ পেয়েছে এই শিল্প কর্মে ।।
ধন্যবাদ দাদা।আপনার মূল্যবান মন্তব্যে আমাকে নতুন কিছু শেখার অনুপ্রেরণা জোগাবে।
অনেক সুন্দর কারুকার্য করেছেন দিদি।দেখে ভালো লাগলে অনেক।
ধন্যবাদ দাদা।আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
দারুন দারুন আপু । আমি মোহিত হয়েছি আপনার হাতের কাজ দেখে। এরকমই চাইছিলাম যে অনেক স্টেপ বাই স্টেপ বুঝিয়ে দিয়েছেন। এরকম দিলে কি হয় সকলে বুঝতে এবং শিখতে সহজ হয়। অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো আপু। আরো ভালো ভালো কাজ আপনার থেকে প্রত্যাশা রইলো।
অবশ্যই ,আমি আরো ভালো নতুন কাজ করার চেষ্টা করবো এবং ধাপে ধাপে দেওয়ার চেষ্টা করবো।অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে দাদা।আপনার কথা শুনে অনেক উৎসাহ পেলাম।
খুবই সুন্দর বানিয়েছেন। প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন ।শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপু।সময় নিয়ে আমার কাজটি দেখার জন্য।
অসাধারণ হয়েছে। এক কথায় অনবদ্য। গতকাল আমি সারাদিন বাড়িতে ছিলাম না। বোন এটা নিজে তৈরি করেছে এমনকি তৈরী করার সময় নিজে নিজে ছবিও তুলেছে। এটা বলবো অন্তত আমার কাছে নিজে নিজে ছবি তোলা কষ্টসাধ্য ।যাইহোক ও রেসিপি তৈরি করলেও নিজেই নিজেই ছবি তোলে। আমার চোখে বাণিজ্যিক ভাবে তৈরি করা ফুলের মত লাগছে। যারা বানিজ্যিক ভাবে এ ধরনের কারুকার্য তৈরী করে বাজারে বিক্রি করে। সত্যি আমি খুব খুশি বোন এতো সুন্দর একটা হাতের কাজ আমাদের মাঝে উপহার দিয়েছে। সবাই জানাবেন কেমন হলো।
অশেষ ধন্যবাদ দাদা।তাছাড়া নিজের কাজ নিজে করাই উত্তম।এতে নিজের প্রতি আলাদা মনোবল সৃষ্টি হবে।
একদম ঠিক কথা।