"নিরামিষ বাঁধাকপির মহারানী ভোগ রেসিপি"
নমস্কার
নিরামিষ বাঁধাকপির মহারানী ভোগ রেসিপি:
কি বন্ধুরা,রেসিপির মজার নামটি শুনেই জিভে জল চলে আসছে তাইনা!আসলেই রেসিপিটি একদম নিরামিষ এবং বেশ জনপ্রিয়।এই রেসিপিটি বাঁধাকপি দিয়ে তৈরি করা হয়।রেসিপিটি সম্পূর্ণ নিরামিষ হলেও অনেকগুলো উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়।তাই রেসিপিটি খেতেও অনেক সুস্বাদু ও মজার।তবে তৈরি করতে অনেক সময়সাপেক্ষ ও একটু কষ্টকর।যাইহোক রেসিপিটি অনেকটাই বড় এবং এটি তৈরি করতে অনেকগুলো স্টেপ পার করতে হয়েছে আমাকে।আসলে এই রেসিপিটি মায়াপুরের ইসকন মন্দিরেও করা হয়ে থাকে।সেখানে বিদেশি অনেক নিরামিষ ভক্তরা এই রেসিপিটি তৃপ্তি করে খেয়ে থাকেন।আমি এই রেসিপিটি সম্পূর্ণ পেঁয়াজ-রসুন ছাড়া তৈরি করেছি।
বাঁধাকপি একটি শীতকালীন সবজি কিন্তু এটি সারাবছরই বাজারে পাওয়া যায়।যারা বাঁধাকপি খেতে পছন্দ করেন না তাদের কাছেও এই রেসিপিটি খুব ভালো লাগবে।এছাড়া রেসিপিটার কালারটি যেমন সুন্দর হয়েছিল তেমনি খেতে খুবই মজার ও সুস্বাদু হয়েছিল।তো চলুন শুরু করা যাক রেসিপিটা---
উপকরণ:
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
গোটা বাঁধাকপি | 1 টি |
গুঁড়া দুধ | 1 প্যাকেট |
মিষ্টিকুমড়া বীজ | 10 টি |
পোস্ত | 3 টেবিল চামচ |
কাজুবাদাম | 4 পিচ |
লবন | 1.5 টেবিল চামচ |
হলুদ | 1 টেবিল চামচ |
গোটা জিরে | 1/2 টেবিল চামচ |
চিনি | 1/2 টেবিল চামচ |
জিরে গুঁড়া | 1 টেবিল চামচ |
শুকনো মরিচ গুঁড়া | 1 টেবিল চামচ |
কাঁচা মরিচ | 3 টি |
গরম মসলা গুঁড়া | 1/3 টেবিল চামচ |
তেজপাতা | 3 টি |
গোটা শুকনো মরিচ | 2 টি |
এলাচ | 1 টি |
আদা কুচি | 1/2 টেবিল চামচ |
সরিষার তেল | 80 গ্রাম |
সাদা সুতার গুটি ও ব্লেড | 1 টি |
জল |
প্রস্তুতপ্রণালী:
ধাপঃ 1
প্রথমে আমি একটি গোটা বাঁধাকপি নিয়ে নিলাম।আমি বাঁধাকপির উপরের কিছু অংশ বাদ দিয়ে নিয়েছি।
ধাপঃ 2
এখন বাঁধাকপিটি বড় বড় লম্বা পিচ করে কেটে নিলাম বটির সাহায্যে।এরপর বাঁধাকপিগুলি জল দিয়ে ধুয়ে নেব।
ধাপঃ 3
এবারে একটি সাদা রঙের সুতার গুটি থেকে সুতা নিয়ে প্রত্যেকটি বাঁধাকপির পিচ আলাদা আলাদা করে পেঁচিয়ে বেঁধে নিলাম তারপর ব্লেড দিয়ে কেটে নিলাম।
ধাপঃ 4
তো আমার বাঁধাকপির প্রত্যেকটি পিচ বেঁধে নেওয়া হয়ে গেল।
ধাপঃ 5
এখন আমি পরিমান মতো পোস্ত,কাজুবাদাম ও কুমড়ার বীজ নিয়ে নিলাম।কুমড়ার বীজের খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে।
ধাপঃ 6
এরপর তিনটি উপকরণ একত্রে বেঁটে নিলাম শীল-পাটার সাহায্যে মিহি করে।
ধাপঃ 7
এবারে একটি পাত্রে গুঁড়া দুধ নিয়ে পরিমাণ মতো জল দিয়ে মিশিয়ে নেব। এখন রান্না করে নেওয়ার পালা।
ধাপঃ 8
এরপর আমি একটি পরিষ্কার কড়াই চুলায় মিডিয়াম আঁচে বসিয়ে দেব।তারপর কড়াইতে বাঁধাকপি সেদ্ধ করার জন্য পরিমাণ মতো জল দিয়ে নেব।
ধাপঃ 9
এখন জল গরম হয়ে গেলে তার মধ্যে সামান্য লবণ-হলুদ দিয়ে নিলাম।
ধাপঃ 10
এবারে বাঁধাকপিগুলি জলের মধ্যে দিয়ে দেব।তারপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দেব কয়েক মিনিটের জন্য।
ধাপঃ 11
তো আমার বাঁধাকপিগুলি সেদ্ধ করা হয়ে গেছে।এখন বাঁধাকপিগুলি একটি পাত্রে তুলে নিয়ে চেপে জল বের করে নেব।
ধাপঃ 12
এরপর কড়াই পরিষ্কার করে নিয়ে তার মধ্যে পরিমাণ মতো সরিষার তেল দিয়ে গরম করে নিলাম।তারপর সেদ্ধ করে নেওয়া বাঁধাকপিগুলি দিয়ে দিলাম।
ধাপঃ 13
এখন আমি বাঁধাকপিগুলি উল্টেপাল্টে ভেঁজে নেব।
ধাপঃ 14
তো আমার বাঁধাকপিগুলি ভেঁজে নেওয়া হয়ে গেছে।এবারে একটি পাত্রে তুলে নিলাম।
ধাপঃ 15
এবারে কড়াইতে পুনরায় তেল দিয়ে দেব।তার মধ্যে তেজপাতা,এলাচের মুখ ফাটিয়ে দিয়ে দেব এবং শুকনো গোটা মরিচ 2 টি দিয়ে একত্রে ভেঁজে নেব।
ধাপঃ 16
এরপর গোটা জিরে,আদা কুচি দিয়ে দিলাম।তারপর পোস্ত,কাজুবাদাম ও মিষ্টি কুমড়ার বীজ একত্রে বেঁটে নেওয়া মিশ্রণটি দিয়ে দিলাম কড়াইতে।
ধাপঃ 17
এখন কাঁচা মরিচ ও বাকি গুঁড়া মসলার সব উপকরণগুলি(লবণ, হলুদ,চিনি, জিরে গুঁড়া ইত্যাদি) একত্রে দিয়ে নিলাম।তারপর প্রত্যেকটি উপকরন একত্রে নেড়েচেড়ে কষিয়ে নিতে হবে।
ধাপঃ 18
তো আমার সব মসলা কষিয়ে নেওয়া হয়ে গেছে।
ধাপঃ 19
এবারে দুধের মিশ্রণটি দিয়ে দেব মসলার মধ্যে।তারপর কয়েক মিনিট ফুটিয়ে নেব।
ধাপঃ 20
সবশেষে ভেঁজে নেওয়া বাঁধাকপির পিচগুলি একটি একটি করে দিয়ে দেব তরকারির মধ্যে।
ধাপঃ 21
এবারে কিছু সময় ধরে তরকারিটি ফুটিয়ে নেব।
শেষ ধাপঃ
এখন একটি পাত্রে নামিয়ে নেব বাঁধাকপির রেসিপিটি।তো তৈরি করা হয়ে গেল আমার "নিরামিষ বাঁধাকপির মহারানী ভোগ রেসিপি"।
পরিবেশন:
এবারে এটি থেকে সুতা খুলে নিয়ে গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করতে হবে ।এটি খুবই সুস্বাদু ও মজাদার খেতে হয়েছিল।
আশা করি আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের রেসিপিটা অনেক ভালো লাগবে।সকলে ভালো থাকবেন ও সুস্থ থাকবেন।
টুইটার লিংক
আপু আপনি যেটাকে বাঁধাকপি বলছেন এটা কি আমরা পাতাকপি বলে থাকি। যাহোক আপনি নিরামিষ বাঁধাকপির মহারানী ভোগ রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনি যেভাবে এই রেসিপিটি তৈরি করেছেন আমি আমার কখনো এভাবে খাওয়া হয়নি। এই সবজিটা সাধারণত আমরা ভেজে অথবা কলাই এর ডাল দিয়ে ঘণ্টো করে খায়। তবে রেসিপি তৈরি প্রক্রিয়াটি দেখে মনে হচ্ছে খেতে বেশ সুস্বাদু হয়েছে। তৈরির প্রক্রিয়াটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন আপনাকে ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
আমরাও এটাকে মাঝে মাঝেই পাতাকপি বলি ভাইয়া।এভাবেও করে খেয়ে দেখবেন দারুণ মজার।ধন্যবাদ ভাইয়া।
একদম নতুন একটি রেসিপি দেখলাম। পাতাকপি দিয়ে এভাবে রেসিপি করা যায় তা মোটেও জানা ছিলো না। আর রেসিপির নামটাও অসাধারণ। নামকি আপনি রেখেছেন?
এইবার জেনে গেলেন আপু,ধন্যবাদ আপনাকে।
একদম ঠিক বলেছেন দিদি নিরামিষ বাঁধাকপির মহারানী ভোগ রেসিপি নাম শুনেই জিভে পানি চলে এসেছে। ইউনিক একটি রেসিপি করেছেন দিদি বাঁধাকপি দিয়ে। আপনি রেসিপি তৈরিতে বেশ অনেক উপকরণ ব্যবহার করেছেন দেখছি। তবে খেতে মনে হয় অনেক বেশি মজাদার হয়েছিল। আমি একদিন বাসায় তৈরি করে খেয়ে দেখবো।অনেক ধন্যবাদ দিদি আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল।
হ্যাঁ আপু,অনেক উপকরণ ব্যবহার করেছি।অবশ্যই তৈরি করে খেয়ে দেখবেন,দারুণ টেস্টি।ধন্যবাদ আপনাকে।
পিয়াজ, রসুন ছাড়াও কিন্তু খাবারের অনেক সুন্দর টেস্ট হয়। কারণ আমিও অনেকবার দেখেছি, আমার ঠাকুরমা পেঁয়াজ রসুন ছাড়াও মাংস রান্না করেছে আদাবাটা, জিরা বাটা দিয়ে। যাই হোক তোমার এই রিসিটটা কিন্তু একদমই নতুন এবং ইউনিক। যদিও মায়াপুর ইসকন মন্দিরে এই রেসিপিটা দেওয়া হয় তবে আমরা সাধারণত ঘরে এরকম রেসিপি বানিয়ে খাই না।
দাদা,সাধারণ ঘরে রেসিপিটি তৈরি করে খুবই কম খায়।কারন এটা খুবই সময়সাপেক্ষ, ধন্যবাদ তোমার সুন্দর অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য।
আপু আপনার রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। আসলে আপু এই ধরনের রেসিপি আমি আগে কখনো দেখিনি। রেসিপিটি আমার কাছে একদম নতুন। যাইহোক আপু আপনার রেসিপিতে কিন্তু অনেক উপকরণ লেগেছে।প্রতিটি ধাপ সুন্দর করে দেখিয়েছেন দেখি আপনার মত একদিন তৈরি করব।ধন্যবাদ আপনাকে।
অবশ্যই তৈরি করবেন আপু।এটা খুবই সুস্বাদু রেসিপি, ধন্যবাদ আপনাকে।
বাঁধাকপি দিয়ে দারুন একটি রেসিপি তৈরি করেছেন আপু। মনে হচ্ছে খেতে বেশ মজার হয়েছিল। নামটাও কিন্তু বেশ দারুন হয়েছে। যদিও এভাবে কখনো নিরামিষ বাঁধাকপির মহারানী ভোগ খাওয়া হয়নি। তবে মনে হচ্ছে খুব শীঘ্রই তৈরি করতে হবে। এই রেসিপি দারুন লোভনীয় ছিল আপু।
আপনার প্রশংসাভরা মন্তব্য পেয়ে উৎসাহিত হলাম আপু,ধন্যবাদ আপনাকে ও।
নিরামিষ বাঁধাকপির মহারানী ভোগ রেসিপি তৈরি করেছেন।দেখতে খুব সুস্বাদু মনে হচ্ছে। আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। আপনার জন্য অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।
আপনার কাছে রেসিপিটি ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম, ধন্যবাদ ভাইয়া।
ইউনিক একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন আপনি । রেসিপিটি দেখে খুবই লোভনীয় লাগছে।রেসিপির নামটি আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আর বাঁধাকপি এভাবে রান্না করে কখনো খাওয়া হয়নি। দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই মজা হয়েছে। সুস্বাদু ও মজাদার একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
এভাবে একদিন ট্রাই করে দেখতে পারেন আপু,ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।
বাহ্! বাঁধাকপি এবং বেশ কিছু উপকরণ দিয়ে খুব লোভনীয় একটি রেসিপি তৈরি করেছেন আপু। বাঁধাকপি দিয়ে এমন মজাদার রেসিপি তৈরি করা যায়, সেটা জানা ছিলো না আমার। রেসিপিটা আমার কাছে খুব ইউনিক লেগেছে। রেসিপিটা খেতেও মনে হচ্ছে খুব ইয়াম্মি লেগেছে। রেসিপির উপস্থাপনা এবং পরিবেশনাও এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে। যাইহোক ধাপে ধাপে এতো মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
এইবার জেনে গেলেন, এভাবে ট্রাই করতে পারেন ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে ও।