সুন্দরবন পর্ব-4:"সুন্দরবন এলাকার কিছু আলোকচিত্র"(10% বেনিফেসিয়ারী লাজুক খ্যাককে)
নমস্কার
বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা সবাই?
আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন।আজ আমি আপনাদের মাঝে হাজির হলাম "সুন্দরবন এলাকার কিছু আলোকচিত্র"নিয়ে।
●●বন্ধুরা, মাসদুয়েক আগে আমি যখন সুন্দরবন বেড়াতে গিয়েছিলাম সেটির কিছু ছবি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করেছিলাম সুন্দরবন সংলগ্ন বিভিন্ন নদীর আলোকচিত্র এবং আমি সেখানে কিভাবে গিয়েছিলাম।যাইহোক আমি আরো কিছু ছবি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো,আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের কাছেও।তো চলুন দেখে নেওয়া যাক----
●●এটা ছোটমোল্লাখালী গ্রাম।এই গ্রামের ঠিক সামনে গাড়াল নদী পার হলেই সুন্দরবন।আমার খুবই ইচ্ছা ছিল একবার সুন্দরবনের মধ্যে গিয়ে জায়গাটি উপভোগ করার।কিন্তু ওখানে যাওয়ার পরই শুনি কয়েকদিন আগে একজন দাদার বাবাকে বাঘে ধরে নিয়ে গেছে খুব খারাপভাবে।তাছাড়া কয়েকদিন ধরে বেশ বাঘের উপদ্রব দেখা দিয়েছে ফলে হঠাৎ করেই যখন তখন মানুষকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে।পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ এইজন্য ওখানকার মানুষকেও কিছুদিন অব্দি কাঁকড়া ধরা ও মৎস্য শিকার করা নিষেধ করেছে বন বিভাগের কর্মকর্তারা।তাই আর সাহস হলো না আমার সুন্দরবনের মধ্যে প্রবেশ করার।যেহেতু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাই এই গ্রামের মানুষের প্রধান সম্বল নৌকা সারি সারি গাছের গায়ে দড়ি দিয়ে বাঁধা রয়েছে।
●●গ্রামের রাস্তা অনেকটাই কাঁচা আবার কিছুটা ইটের ।বৃষ্টি হলে খুবই সমস্যা হয়ে যায় এই পথ ধরে চলতে।তাছাড়া এখানে নদী ভাঙ্গন খুব দেখা যায়।রাস্তা ধরে ব্যাগ হাতে হেঁটে চলেছে দাদু মানে আমার বাবার বড়ো মামা।দাদুর বাড়ি থেকে লোকজন ফুরায় না ,সবসময় গ্রামের লোকজন দাদুকে ঘিরে বসে থাকে গল্প করার জন্য।দাদুও নিজ হাতে সকাল বিকেলের নেশা চা করে সকলকে পরিবেশন করিয়ে তৃষ্ণা নিবারণ করেন।দাদুকে গ্রামের ছোট ,বড়ো ,যুবক সকল স্তরের মানুষ বেশ পছন্দ করেন।দাদু অনেক বড় গুনীন,তাই কাঁকড়া ধরা তার পেশা হলেও তিনি কখনো কাঁকড়া খান না।কাঁকড়া খেলে গুনীনদের কানের সমস্যা হয় এইজন্য।গ্রামে কারো গলায় মাছের কাঁটা ফুটলে,কারো সাপে কাটলে আবার কেউ জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে গেলে দাদুকে নিয়ে যান।দাদু বাঘবন্দি ও করতে পারেন মন্ত্র দ্বারা, 78 বছর বয়সেও দাদুর অনেক মন্ত্র জলের মতোই ঠোঁটস্ত ।আমি তো তার স্পষ্ট মন্ত্র উচ্চারণ শুনে রীতিমতো মুগ্ধ হয়ে যাই।
●●দাদু ধর্মীয় বই পড়তে খুব ভালোবাসেন।কিন্তু দুঃখের বিষয়, দাদুর অনেক বই বন্যার জলে ভেসে গেছে যা তিনি আর সংগ্রহ করতে পারেননি।যাইহোক দাদুকে কাঁকড়া ধরতেও অনেকেই সাথে নিয়ে যান ,মোটকথা দাদু সঙ্গে থাকলে সবাই সাহস পায়।যদিও এখন দাদুর বয়স হয়ে গেছে তাই কম যান জঙ্গলে।আমরা গিয়েছিলাম বলে জঙ্গলে যাওয়া নিষেধ ছিল সকলের এইজন্য দাদু বাড়ির পাশে জোয়ারের সময় কিছু কাঁকড়া মেরে আমাদের খেতে দিয়েছিলেন।
●●আমরা যখন গিয়েছিলাম তখন সবে গাছে কেওড়া ফুল ধরেছিল,এতদিনে নিশ্চয়ই কেওড়া পাক ধরেছে।কেওড়া গাছ ,সুন্দরী গাছ দিয়ে খুবই শ্বাসমূল বের হয়।এগুলো পায়ে খুবই লাগে হাঁটার সময়, যাইহোক এটাই লবনাক্ত এলাকায় গাছেদের অক্সিজেন নেওয়ার উপায়।নদীর জল সারাবছর নোনা থাকে এখানে।
●●এটা একটা ঘের বলা যায় অর্থাৎ পাশাপাশি অনেকগুলো পুকুর।যেখানে আলাদা আলাদা মাছের পোনা রাখা আছে।এখানে মূলত বাগদা চিংড়ির পোনা ,গলদা চিংড়ির পোনা অর্থাৎ রেনু চাষ করা হয়।তাই প্রতিটি আলাদা আলাদা নেট জালের ভিতর সংরক্ষণ করে রাখা আছে সুন্দরভাবে।
●●মেঠো পথের পাশে জঙ্গলে ঘেরা সুন্দরবন এলাকায় সন্ধ্যা নেমে এক নীরবতায় ছেয়ে গেছে আকাশ ও প্রকৃতি।নিস্তব্ধ প্রকৃতির মাঝে কোথাও এক ভয়ংকর ভীতিভাব কাজ করে মনে।
আশা করি আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের ফটোগ্রাফিগুলি ভালো লাগবে।সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ও সাবধানে থাকবেন।
টুইটার লিংক
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 2/8) Get profit votes with @tipU :)
খুবই সুন্দর কিছু আলোকচিত্র দেখালেন। আপনার দাদুর বাড়ি সুন্দরবন, তাই আপনার সুবিধা অনেক বেশি রয়ে সয়ে দেখার।
এটা ঠিক বলেছেন ভাইয়া, ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনিও গেছিলেন? আমিও। গত রবিবার ফিরলাম। কোনদিন ভুলব না নদীতে এই তিনদিনের অভিজ্ঞতা।
আমি অবশ্য মাসদুয়েক আগে গিয়েছিলাম দিদি।ধন্যবাদ আপনাকে।
পৃথিবীর সবথেকে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন যেটি বাংলাদেশ এবং ইন্ডিয়া নিয়ে অবস্থিত।। আমি যদিও এখনো সুন্দরবন ভ্রমণ করিনি।। তবে আপনার ফটোগ্রাফি গুলা দেখে খুবই ভালো লাগলো।। মাঝে মাঝেই বাঘের উপদ্রব লক্ষ্য করা যায় বাংলাদেশ ভারত দুদিকেই অনেক মানুষেরই প্রাণ গেছে বাঘের কাছে।। যাই হোক আপনার দিনটি খুবই সুন্দর ছিল নদী থেকে টাটকা কাকড়া ধরে তারপরে রেসিপি প্রস্তুত করে খাওয়া হয়েছে আপনাদের জেনে খুবই ভালো লাগলো।।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া, টাটকা কাঁকড়ার স্বাদই আলাদা ছিল।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
দেখে এসেছি সুন্দরবন
অনেকদিন আগে,
সুন্দরবনের বানরগুলো
বন্ধু আমার লাগে।
সুন্দরবনের আলোকচিত্র
নিল মনটা কেরে,
মনে হচ্ছে হিংস্র বাঘ
আসলে বুঝি তেড়ে।
♥♥
হি হি,লিখেছেন আপু অসাধারণ👌,
এইজন্য আপনাকে জানাই মনঢালা অভিবাদন।।💝☺️
দিদি নমস্কার
আপনি সুন্দরবন এলাকার বেশ কিছু সুন্দর সুন্দর আলোকচিত্র আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দিদি ৷
আপনি বনের ভিতরে যান নি ভাল করেছেন ৷কারন দূর্ঘটনা তো বলে আসে না ৷আর দাদুর কথা বেশ ভালো লাগলো যে কাকড়া খেলে কম শুনতে পায় ৷
যাই হোক দিদি খুব ভালো লাগলো পোষ্টটি পড়ে
হ্যাঁ দাদা,বাঘের খুব উপদ্রব ছিল।তাছাড়া গুনীন মানুষরা কাঁকড়া খান না।ধন্যবাদ আপনাকে।