"গ্রামের প্রাকৃতিক মাশরুম রেসিপি"[ইউনিক](10% বেনিফেসিয়ারী লাজুক খ্যাককে)
নমস্কার
বন্ধুরা,আপনারা সবাই কেমন আছেন?
আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলেই ভালো ও সুস্থ আছেন।আজ আবারো হাজির হলাম আমি @green015 সবার পরিচিত কিন্তু একদম নতুনভাবে ,নতুন আঙ্গিকে একটি ইউনিক রেসিপি নিয়ে।আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করে শুরু করছি আজকের রেসিপি সম্পর্কে কিছু তথ্য ও তৈরির পদ্ধতি নিয়ে।
★গ্রাম্য প্রাকৃতিক মাশরুম সম্পর্কে আমার নিজস্ব কিছু তথ্য:
গ্রামের প্রকৃতির অপার সুন্দরতার মধ্যে মাশরুম একটি।যা খাওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে সকলেই অবগত নয়।এমনকি পূর্বে আমি ও অবগত ছিলাম না।আমি জানতাম শুধু কেনা মাশরুমগুলিই খাওয়া যায়।কিন্তু আমাদের বাড়িতে অনেক মাশরুম প্রকৃতির মধ্যে জন্মাতো।তখন খেতাম না ,কারণ তখন রান্নার পদ্ধতি ও স্বাদ সম্পর্কে অবগত ছিলাম না।ছোটবেলায় আমরা একে ছাতার মতো দেখতে বলে "ব্যাঙের ছাতা" বলতাম এবং নিয়ে খেলা করতাম।যাইহোক প্রকৃতিতে অনেক ধরনের মাশরুম জন্মায়।কিন্তু সব মাশরুম খাওয়ার উপর্যুক্ত নয়।যেমন প্রকৃতির মাঝে জন্মানো- ছোট একধরনের মাশরুম,সাদা রঙের মাশরুম,কাঠের গায়ে জন্মানো পুরু মাশরুম ,এছাড়া ফেনার মতো দেখতে মাশরুমগুলি খুবই বিষাক্ত ,যা খাওয়ার অযোগ্য।কিন্তু আজ আমি যে মাশরুমের কথা বলছি এগুলো ও এমনিই প্রকৃতিতে জন্মানো।কিন্তু এগুলো খাওয়ার একেবারে উপযুক্ত ।তাই প্রকৃতিতে জন্মানো মাশরুম খাওয়ার পূর্বে আমাদেরকে সেই খাওয়ার উপর্যুক্ত মাশরুমকেই বেছে নিতে হবে।আমাদের এখানের স্থানীয় লোকজন এই মাশরুমগুলি খুব খায় এবং আমাদের বাড়ি থেকে ও নিয়ে যায় ।এই মাশরুমগুলি শুধুমাত্র ধানের খড় বা ধানের গাদা পচে গিয়ে জন্মায়।আর আমরা সবাই জানি, ধানের খড় পচে গেলে প্রচুর পরিমানে প্রাকৃতিক সার হয়।ফলে ওই সারি স্হানে বা পচা খড় এর গাদায় এই মাশরুমগুলি হয়।অনেকে ইচ্ছে করে মাশরুম জন্মানোর জন্য খড় বর্ষার আগে ছড়িয়ে রেখে দেন।ফলে সেই ছড়ানো বা বিছানো খড় পচে তার উপরে এই মাশরুমগুলি জন্মায়।তাই এটি একেবারেই খাওয়ার উপযুক্ত ।এটি খুবই সুস্বাদু ,না খেলে হয়তো অনুভব করা যাবে না।এটি শুধুমাত্র গ্রামেই পাওয়া যায়।
★উপকরণ:
1.প্রাকৃতিক মাশরুম -2 টি
2.মাঝারি সাইজের আলু - 1 পিচ
3.পেঁয়াজ কুচি - 2 টি
4.রসুন কুচি - 10 কোয়া
5.কাঁচা লঙ্কা - 5 টি
6.লবণ- 1/2 টেবিল চামচ
7.হলুদ - 1/2টেবিল চামচের কম
8.গোটা জিরা- 1/2 টেবিল চামচ
9.শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো- 1/2 টেবিল চামচ
10.গরম মসলা গুঁড়ো- 1/2 টেবিল চামচের কম
11.জিরা গুঁড়ো -1/2টেবিল চামচ
12.সরিষার তেল - 60 গ্রাম
13.জল - 1 কাপ
★তো চলুন দেখে নেওয়া যাক রান্নার পদ্ধতিসমূহ:-
ধাপঃ 1
●আমি প্রথমে আমাদের পচে যাওয়া খড়ের গাদায় জন্মানো মাশরুম সংগ্রহ করবো।
ধাপঃ2
●এক্ষেত্রে কোনো ফুটন্ত মাশরুম একদিনের বেশি ভালো থাকে না, নষ্ট হয়ে যায়।তাই আমি সকালে তাজা মাশরুম সংগ্রহ করলাম।এটি এমনিই খড়ের গাদায় হয়েছে ।আজ 2 টি হয়েছে।এইরকম প্রতিদিনই 1টি ,2টি অথবা 3 টি ও তার বেশি ও জন্মায়।কিন্তু আমি সবসময় খাই না, এখানের স্থানীয় মানুষ এসে নিয়ে যায়।এটি মাশরুমের উপরের অংশ।
ধাপঃ 3
●এটি মাশরুমের নিচের অংশ।এটি আমার কাছে কিছুটা পেঁয়াজের কুচানো অংশের মতো দেখতে লাগে।কি সুন্দর দেখতে বন্ধুরা তাইনা?
ধাপঃ 4
●এরপর মাশরুমের উপরে যে লোমের মতো অংশ আছে সেটি ছাড়িয়ে নেব হাত দিয়ে।
ধাপঃ 5
●তো দেখুন পরিষ্কার করে নিয়েছি সব মাশরুমগুলি।
ধাপঃ 6
●এরপর আমি ঠান্ডা জলে মাশরুমগুলো হাত দিয়ে চেপে গলিয়ে নেব।তারপর 2-3 বার ধুয়ে নেব।এক্ষেত্রে জলের রং গোলাপি হয়ে যাবে।ভালোভাবে ধুয়ে এটি পরিষ্কার কাপড়ে দিয়ে চেপে জল ঝরিয়ে নেব।
ধাপঃ 7
●এবার সকল মসলাগুলি একত্রে নিয়ে নেব।যেমন-পেঁয়াজ ও রসুন কুচি করে নেব,আলু ও লঙ্কাগুলি কেটে নেব বটির সাহায্যে এবং গুঁড়ো জাতীয় সব মসলাগুলি নিয়ে নিলাম।সঙ্গে মাশরুমগুলি ও।
ধাপঃ 8
●আমি চুলায় মিডিয়াম আঁচে একটি কড়াই ধুয়ে বসিয়ে দেব ।কড়াইতে পরিমাণ মতো তেল দিয়ে গরম করে নেব।এরপর কুচিয়ে রাখা পেঁয়াজ , রসুন ও গোটা জিরা দিয়ে দেব তেলের মধ্য।
ধাপঃ 9
●পেঁয়াজ ও রসুন হালকা ভেঁজে নেওয়া হয়ে গেলে তার মধ্যে পরিমাণ মতো-লবণ, হলুদ, জিরা গুঁড়া,শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো,গরম মসলা গুঁড়া দিয়ে হালকা কষিয়ে নিলাম।
ধাপঃ 10
●এইবার ছোট ছোট করে কেটে রাখা আলুগুলো দিয়ে দেব।তারপর নেড়েচেড়ে 3 মিনিট ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখে দেব।
ধাপঃ 11
●3 মিনিট পর নেড়েচেড়ে মাশরুমগুলি দিয়ে দেব।মাশরুমের গায়ে মসলা মিশিয়ে নেব।
ধাপঃ 12
●এইবার পরিমাণ মতো অল্প জল দিয়ে দেব এবং কেটে রাখা কাঁচা লঙ্কা দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখে দেব 7 মিনিট মতো।
ধাপঃ 13
●7 মিনিট পর আলুগুলো সেদ্ধ হয়ে গেলে তরকারীটি নেড়েচেড়ে ফুটিয়ে নেব।
ধাপঃ 14
●এরপর একটি পাত্রে তরকারীটি নামিয়ে নেব।তো আমার রেসিপিটি পুরোপুরি হয়ে গেছে।
ধাপঃ 15
●এইবার গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করতে হবে।এটি কিন্তু অসম্ভব স্বাদের ।আপনাদের গ্রামের বাড়িতে এই মাশরুম থাকলে আপনারা অবশ্যই এভাবে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
আশা করি আমার আজকের রেসিপিটি আপনাদের সকলের কাছে খুব ভালো লাগবে।
ধন্যবাদ সবাইকে।
সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।
আপু আপনার রেসিপি টা অনেক লোভনীয় হয়েছে।
আমি মাশরুম এখনো খায়নি তবে আপনার রেসিপি দেখে খেয়ে নিতে ইচ্ছে করছে।
অনেক সুন্দর হয়েছে আপনার রেসিপিটা প্রতিটি ধাপ অনেক সুন্দর ভাবে বিবরণ দিয়েছেন।
আপু অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
শুভকামনা রইলো।
আপু, পার্সেল করে রেসিপিটা পাঠিয়ে দেব😊!অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার সুন্দর মজার মন্তব্য করার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপু মনি😍😍
😊
বাহ আপনি একটি আশ্চর্যজনক মাশরুম রেসিপি তৈরি করেছেন, এবং আপনি ধাপগুলি খুব ভালভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।
অনেক ধন্যবাদ বন্ধু, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
মাশরুম কখনো খেয়ে দেখি তবে আপনার রেসিপি টা দেখে জিভে পানি এসে গেল। দেখতে যতটা সুন্দর হয়েছে আশাকরি খেতে তার থেকেও সুন্দর হয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা রেসিপি আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য।
ঠিক বলেছেন দাদা,👍এটি অনেক স্বাদের একটি রেসিপি।কিছুটা আমিষ জাতীয় তরকারির মতো।সুযোগ পেলে চেকে দেখবেন একবার।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।
গ্রামের প্রাকৃতিক মাশরুম রেসিপি আপনি অনেক সুন্দর ভাব রান্না করছেন। আপনাকে দেখে বরবরি মুগ্ধ হই। আপনার কাজগুলো দেখে। আপনি এত সুন্দর একটা ইউনিক রান্না রেসিপি নিয়ে হাজির হলেন। আমি কখনো জানতাম না যে মাশরুম দিয়ে এত সুন্দর একটি রেসিপি তৈরি করা যায়। আপনি প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। খুবই ভালো লাগলো এবং আসলেই আমি আপনার কাজের প্রতি আবারও মুগ্ধ হয়ে গেলাম।
এবার জেনে গেলেন, সুযোগ পেলে অবশ্যই চেষ্টা করে দেখবেন ভাইয়া।খুবই ভালো লাগবে খেতে।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করার জন্য।
এভাবে কখনও মাশরুম খেয়ে দেখি নি। আপনি খুব সুন্দর ভাবে মাশরুম পরিষ্কার করা দেখিয়েছেন। আপনি রান্নার পদ্ধতিটা খুব চমৎকার করে বর্ণনা করেছেন। আপনার রেসিপি টা দেখতে খুব মজাদার মনে হচ্ছে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু,সত্যিই এটি খুবই মজার রেসিপি।একদিন খেয়ে দেখবেন এভাবে।আশা করি ভালো লাগবে।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
মাশরুম আগে কয়েকবার রান্না করেছো কিন্তু আমি খাই নি। কিন্তু এই বার মানে এই রেসিপিটি খেয়ে ভীষণ স্বাদ পেয়েছিলাম।অনেক সুস্বাদু হয়েছিলো। শুভেচ্ছা রইলো।
অনেক ধন্যবাদ দাদা।
আপনার মাশরুম রেসিপিটা খুবই সুন্দর হয়েছে। আমি মাশরুম অনেক পছন্দ করি। আপনার এই রেসিপিটি দেখে আমার খেতে খুব ইচ্ছা করছে। আপনাদের শুভকামনা রইল।
তাহলে আপনি ও বানিয়ে খেয়ে ফেলুন ভাইয়া।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ,আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
এই মাশরুমগুলো যে খাওয়া যায় তাই তো জানতাম না ।এগুলোকে আমরা ছোটবেলায় ব্যাঙের ছাতা বলতাম মনে হতো বৃষ্টি নামলে ব্যাঙ এই ছাতার নিচে যেয়ে বসে। মাশরুমের নিচের অংশটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে ,কখনো দেখাই হয়নি এভাবে ।এই প্রথম দেখলাম ।আর আপনার মাশরুম রান্নার রং কি অসাধারণ হয়েছে। জানিনা কেমন খেতে কেমন টেস্টি আমি কখনো খাইনি। দেখে মনে হচ্ছে খুবই মজা হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু,আমরা ও ছোটবেলায় তাই ভাবতাম ব্যাঙের ছাতাকে।এটি খুবই সুস্বাদু খেতে এবং অনেক মজার।অসংখ্য ধন্যবাদ আপু,আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।
সুন্দর একটি রেসিপি তৈরি করেছেন আপু।এমন রেসিপি এর আগে কখনও দেখিনি। ধন্যবাদ আপনাকে এমন সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার সুমতামত প্রকাশ করার জন্য।
মাশরুম অনেক পুষ্টিকর খাবার হওয়া সত্বেও কখনো আমার খাওয়া হয়নি, অনেক সুন্দর করে আপনি মাশরুমের রেসিপি তৈরি করেছেন, আপনার রেসিপি দেখে এখন আমার খেতে ইচ্ছে করছে, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু এমন একটি পুষ্টিকর খাবারের রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার গঠনমুলক মন্তব্যের জন্য।