মানব সভ্যতা ও মহাকাশ গবেষণা (দ্বিতীয় পর্ব- মঙ্গল)। 10 শতাংশ লাজুক শেয়ালের জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আজ- ১৬ ফাগুন | ১৪২৮ , বঙ্গাব্দ | মঙ্গলবার | বসন্তকাল |


mars-g71711f831_1920.jpg
MARS
Source

আসসালামু-আলাইকুম। আশা করি সবাই ভাল আছেন। প্রথম পর্বে আমরা দেখেছিলাম টেলিস্কোপ আবিষ্কার এর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সামনে এক অন্য জগতের দুয়ার খুলে যায়। গ্রাউন্ড টেলিস্কোপ এর সীমাবদ্ধতা কাটাতে কক্ষপথে স্থাপন করা হয় স্পেস টেলিস্কোপ। সৌরজগতে আমাদের প্রতিবেশী গ্রহগুলোর অবস্থা জানতে পাঠান হয় বিভিন্ন স্পেস প্রোব, স্যাটেলাইট আর রোভার। বিশেষ করে প্রতিবেশী মঙ্গল গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব সম্পর্কে বহুদিন যাবৎ চলে আসা সন্দেহ নিরসনের জন্য সেখানে পাঠানো হয় কিউরিওসিটি, সোর্জানার, প্রিজারভেনস আর অপারচুনিটির মত অনেকগুলো রোভার। যার ফলে লাল গ্রহ মঙ্গলের অনেকখানিই এখন মানুষের দৃষ্টি-সীমায় উন্মোচিত হয়েছে।

apocalypse-g1286d1f7c_1920.jpg
Source

আমরা সবাই জানি লক্ষ লক্ষ বছর আগে আমাদের এই পৃথিবীতে রাজত্ব করত ডাইনোসর নামের এক বিশাল প্রাণী। মহাকাশ থেকে আগত উল্কাপিণ্ডের আঘাতে আর বরফ যুগের কারণে একসময় পৃথিবী থেকে পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে এই প্রজাতি কিন্তু আকৃতিতে ক্ষুদ্র আর স্বল্প আয়ু বিশিষ্ট এই মানব জাতি বুদ্ধিমত্তায় অদ্বিতীয়। মানুষের নানা বিধ কর্মকাণ্ড অথবা প্রাকৃতিক বিপর্যয় এর কারণে আমাদের এই পৃথিবী এক সময় মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে এটা প্রায় নিশ্চিত। ভবিষ্যতের এই বিপর্যয় থেকে মানব জাতিকে রক্ষার জন্যই এখনকার মানুষ নানা রকম প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছে।

pexels-pixabay-73910.jpg
Curiosity rover
Source

এখন পর্যন্ত পাওয়া বৈজ্ঞানিক গবেষণা লব্ধ তথ্য হতে আমরা জানি শুধুমাত্র আমাদের পৃথিবীতেই মানুষ বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশে আছে। কিন্তু ভবিষ্যতে হয়ত এমন থাকবেনা। তখন মানব সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজন পড়বে কলোনাইজেশনের। মানুষের বাসযোগ্য গ্রহের সন্ধানে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মিশন পরিচালিত হয়েছে। সৌরজগতের গ্রহগুলোর মধ্যে কেবলমাত্র মঙ্গল গ্রহের পরিবেশেই পাওয়া গেছে পৃথিবীর সঙ্গে কিছুটা সাদৃশ্য।

spacecraft-gdaf958699_1920.jpg
Source

বর্তমান প্রযুক্তিতে স্পেস ক্রাফট বা রকেটের মঙ্গল গ্রহে পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস। এই দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করার জন্য প্রয়োজন হয় বিপুল পরিমাণ জ্বালানির। মনুষ্যবাহী কোন রকেটের পক্ষেই এই জ্বালানি সেইসঙ্গে এই দীর্ঘদিনের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার দাবার ও ইকুইপমেন্ট নিয়ে মঙ্গল গ্রহে গিয়ে আবার ফেরত আসা বলতে গেলে অসম্ভব। তাই মঙ্গল গ্রহে পদার্পণ কারী প্রথম মানব দলটিকে দেয়া হবে ওয়ান ওয়ে টিকিট। অর্থাৎ তারা আর কখনই ফেরত আসতে পারবেন না। তাদের কাজ হবে বসতি গড়ে তোলার মাধ্যমে পরবর্তী মানবদলের সব রকম সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যে সারা পৃথিবীব্যাপী ভলান্টিয়ার সংগ্রহের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। অদূর ভবিষ্যতে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধিত হলে হয়তো মঙ্গলই হবে মানুষের দ্বিতীয় বসতি।

আজকের মতো এতোটুকুই। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মত এখানেই শেষ করছি।

Sort:  

মানব সভ্যতা ও মহাকাশ গবেষণা সম্পর্কে খুব সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে অনেক কিছু শিখতে এবং জানতে পারলাম। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি শিক্ষামুলক পোস্ট আমাদেরকে উপহার দেয়ার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

আপনার মত এখনো দু চারজন মানুষ আছে বলেই এ ধরনের পোস্টগুলো করার সাহস পাই। ভালোবাসা রইলো আপনার জন্য।

 2 years ago 

মানব সভ্যতা ও মহাকাশ গবেষণা নিয়ে লেখা আপনার পোস্টটি পড়ে এই পৃথিবী ও মহাকাশ সম্বন্ধে অনেক মূল্যবান কিছু কথা জানতে পারলাম। আপনার তথ্যবহুল এই লেখাটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে জনবসতি গড়ে তুলতে পারলে মন্দ হতো না। সর্বশেষ তথ্য মতে যদি কখনো সম্ভব হয় তাহলে মঙ্গল গ্রহেই জনবসতি গড়ে তোলা সম্ভব হবে। ধন্যবাদ অনেক মূল্যবান একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

সময় নিয়ে আমার এই পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। আশা করি ভবিষ্যতেও এভাবে উৎসাহিত করবেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

মানব সভ্যতা ও মহাকাশ গবেষণা নিয়ে আপনার লেখা এই পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই ধরনের পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

সময় নিয়ে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। আশাকরি এ ধরনের পোস্টে সবসময় আপনাকে পাশে পাব।

 2 years ago 

বাহ খুবই সুন্দর একটি সাইন্টিফিক বিষয়ের উপর কনটেন্ট লিখেছেন।ডাইনোসরের বিলুপ্তির বিষয়টা জানতে পারলাম।মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসতি করা সম্ভব হলে পৃথিবীর উপর থেকে মানুষের কিছুটা চাপ কমবে।প্রথমে যে ভলেন্টিয়ার গণ যাবেন,তাদেরকে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হবে।

 2 years ago 

বোঝা যাচ্ছে আপনি আমার সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়েছেন। খুবই ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে। তবে প্রথম যারা ভলান্টিয়ার হিসেবে যাবেন তারা শুধু ভোগান্তি নয় নিজের জীবন বিসর্জন দিতে হবে এটা জেনে বুঝেই যাবেন।

 2 years ago 

এই পোস্টগুলো আমি প্রচুর করতাম এবং আমি প্রথম ব্যক্তি ছিলাম এই কমিউনিটিতে, যে মহাকাশ নিয়ে লেখালেখি শুরু করে। আমার দেখাদেখি আরো দুই-একজন লেখা শুরু করেছিল কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও এই পোস্টগুলোকে পড়ে কমেন্ট করতে হয় এবং এই পোস্টগুলো তাদের বেশি ভালো লাগে না। এজন্য আমি সেই পোস্ট গুলো থেকে একটু দূরে সরে আসছি। তারপরও মাঝে মাঝে লিখি কিন্তু উৎসাহ না পেলে লিখতে ভালো লাগে না ভাই। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। আপনি চালিয়ে যান ইনশাল্লাহ আপনাদের দেখে আমি আবারও ফিরে আসবো মহাকাশের পোস্ট নিয়ে।

 2 years ago 

@rupok আমাকে বলেছিল আপনার কথা। এই কমিউনিটিতে আপনিই নাকি ছিলেন এ ধরনের পোস্টের পায়োনিয়ার। সত্যি বলতে কি এই ধরনের বিষয়গুলোতে আমার আগ্রহ ছোটোবেলা থেকেই। তবে সুপার একটিভ লিস্ট তৈরিতে যদি কমেন্টস করার কোনো ভূমিকা না থাকতো তাহলে হয়তো অনেকেই সময় নিয়ে এই পোস্টগুলো পড়তেন। সবাই চিন্তা করে একটি পোস্টের পেছন যে সময় ব্যয় হবে সেই সময়ে দশটি পোস্টে কমেন্ট করে দেয়া সম্ভব। আর এ ভাবনা থেকেই পোস্টগুলো সম্ভবত এড়িয়ে যায়। যাই হোক আপনি আবার শুরু করুন, আমরা আছি আপনার সঙ্গে।

 2 years ago 

এখানেও মানুষের খারাপ চিন্তাভাবনা। নিজের আবাসস্থল ঠিক করার চেষ্টা না করে চেষ্টা করছে এই পৃথিবী ধ্বংস হলে অন্য কোথাও গিয়ে বসতি তৈরি করার। যদি এটা করতে পারে একসময় সেটাও ধ্বংস হবে। তখন কোথায় যাবে মানুষ? এই ধরনের পোস্ট পড়ার একটি অন্যরকম মজা আছে। সত্যি বলতে কমিউনিটিতে যে পোস্ট গুলি হয় বেশিরভাগ হয় দায়সারা গোছের। তোমার এই পোষ্টটি পড়ে ভাল লাগলো। ধন্যবাদ তোমাকে।

 2 years ago 

পৃথিবীর ধ্বংস অনিবার্য। হয়তো মানুষ এটাকে কিছুটা এগিয়ে নিয়ে আসবে বড়জোর। এর পূর্বেই অন্য কোন গ্রহে মানুষ নিজের প্রজাতিকে সরিয়ে নিতে পারবে কিনা এটা একমাত্র ভবিষ্যৎই বলতে পারবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 57497.94
ETH 3099.12
USDT 1.00
SBD 2.32