আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ৩০ | মজাদার ফুলকপির পায়েস রেসিপি।
রেসিপি:
shy-fox
হ্যালো সবাইকে
কেমন আছেন সবাই ?আশা করি ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আল্লাহর রহমতে। আজকে আরও একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছ । আজকে আমার পোস্টটি হলো রেসিপি পোস্ট। "আমার বাংলা ব্লগের" রেসিপি কনটেস্টে শীতকালীন সবজি দিয়ে রেসিপি তৈরির কন্টেস্ট দেওয়া হয়েছে । সেই কনটেস্টে জয়েন করে আজকের এই রেসিপিটি তৈরি করেছি। আমার আজকের রেসিপিটি হল ফুলকপির পায়েস। আশা করি আপনাদের কাছে আমার এই রেসিপিটি ভালো লাগবে।
আমার বাংলা ব্লগের প্রতিযোগিতা শীতকালীন সবজির রেসিপি ।কনটেস্টে জয়েন করেই আজকের এই রেসিপিটি করা। শীতকালীন রেসিপির কনটেস্টে সবাই অনেক সুন্দর সুন্দর রেসিপি শেয়ার করেছে। কন্টেস্ট টি দেখার পর আমি ভাবলাম আমি শীতকালে সবজি দিয়ে কি তৈরি করব । হঠাৎ করে মাথায় এলো ফুলকপির পায়েসের কথা। কারণ অনেকদিন আগে একবার শীতকালে নানার বাড়িতে গিয়েছিলাম। তখনই প্রথম ফুলকপির পায়েস খেয়েছিলাম। খেতে অনেক মজা লেগেছিল তাই ভাবলাম আজকে আমার বাংলা ব্লগের এই কনটেস্টে ফুলকপির পায়েস সবার সাথে শেয়ার করি।রান্নাটা রাতের বেলা করেছিলাম। আমি যখন রান্না করছিলাম তখন আমার ছোট ভাই এসে দেখছিল বারবার কি রান্না করছি। এরপর রান্না যখন শেষ হয়ে গেছে তারপর আমি কিছু কাজ করছিলাম। আমার ছোট ভাই আমার পিছু থেকে আমাকে হেল্প করতেছে। আমিও বুঝতেই পেরেছি আমি কি রান্না করছি সেটা খাওয়ার জন্য এরকম আশেপাশে ঘুরঘুর করতেছে । এরপর আমি যখন আমার কাজ শেষ করে বললাম খেতে। তখন সে সারারাত যতক্ষণ পর্যন্ত ঘুমায়নি ততক্ষণ পর্যন্ত একটু একটু করে সারাক্ষণ খেয়েছিল। তার কাছে অনেক মজা লেগেছে। খেতে অনেক মজা হয়েছিল। ফুলকপির পায়েস রান্না করার জন্য ফুলকপি তো লাগবেই। ফুলকপির পায়েস রান্না করার জন্য আমি শুধু ফুলকপির ফুল ব্যবহার করেছিলাম ডাটা ব্যবহার করিনি। আর ফুলকপির পায়েস সাধারণ পায়েসের মতো সবকিছু দিয়ে রান্না করেছি। শুধু ফুলকপিটা যোগ করা হয়েছে। যেহেতু ফুলকপির পায়েস সেজন্য ফুলকপিটা পায়েসের মধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। কাউকে যদি না বলে এই পায়েসটা খেতে দেওয়া হয় তাহলে সে বুঝতেই পারবে না পায়েসের মধ্যে ফুলকপি দেওয়া হয়েছে বা সবজি দিয়ে পায়েস রান্না করা হয়েছে।
আমি রান্না করতে অনেক পছন্দ করি। রান্না করাটা আমার একটা শখ । আজকেও আপনাদের সাথে নতুন একটি রান্নার রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি আপনাদের কাছে আমার এই রেসিপিটি ভালো লাগবে।
উপকরণ
নাম | পরিমাণ |
---|---|
ফুলকপি | ১ টি |
চাল | ২ কাপ |
দুধ | ১ লিটার |
ঘি | ২ চামচ |
পাউডার দুধ | ১ কাপ |
তেজপাতা | ২ টি |
এলাচি | ৩ টি |
চিনি | ২ কাপ |
লবন | ১ চামচ |
পানি | পরিমাণ মতো |
কাজুবাদাম/কাঠবাদাম | পরিবেশন জন্য |
জাফরান | পরিবেশন জন্য |
তৈরি করার পদ্ধতি:-
একটি পাতিলের মধ্যে আমি পানি নিলাম। পানির মধ্যে আমি কিছুটা পরিমাণ লবণ দিয়ে দিয়েছি। কারণ ফুলকপি কেটে এই পানি গুলোর মধ্যে ভিজিয়ে রাখবো। ফুলকপির ভিতরে কোন ধরনের পোকা বা জীবাণু থাকলে বেরিয়ে যাবে।
একটা বড় সাইজের ফুলকপি নিলাম। ফুলকপি কেটে নেব পায়েসের মধ্যে দেওয়ার জন্য ।শুধু ফুলকপির ফুল গুলো কেটে নিয়েছি । একেবারে ছোট ছোট করে ফুলগুলো কেটে নিয়ে আমি লবণ পানির মধ্যে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রেখেছি। তারপর ফুলকপি গুলোকে ভালো করে ধুয়ে একটা বাড়ির মধ্যে নিলাম।
একটা বাটির মধ্যে এক কাপ পাউডারের দুধ নিলাম ।তার মধ্যে সামান্য পরিমাণ পানি দিয়ে দিলাম। পানি দিয়ে পাউডারে দুধ মিশিয়ে নিলাম। এখানে পাউডার দুধ এর সাথে পানি মেশানোর কারণ হচ্ছে পায়েস রান্নার মধ্যে যদি আম গুঁড়ো দুধ বা পাউডার দুধগুলো দিয়ে তাহলে ধলা পেকে যাবে। সেজন্য আগে থেকে পানি মিশিয়ে রেখেছি।
একটা পাতিল এর মধ্যে আমি দু চামচ ঘি দিয়ে দিলাম। ঘি গরম হওয়ার পর আগে থেকে ধুয়ে রাখা দু কাপ চাল আমি পাতিলের মধ্যে দিয়ে দিলাম। ভালোভাবে নেড়েচেড়ে চাল ভেজে নিলাম ঘি এর মধ্যে।
এখন আমি পাতিলের মধ্যে দুধ দিয়ে দিব। এক লিটার দুধ আগে থেকে একটি বাটির মধ্যে ঢেলে নিলাম । তারপর পুরো এক লিটার দুধ পাতিলের মধ্যে দিয়ে দিলাম । দুধ দেওয়ার পর ভালোভাবে নেড়েচেড়ে নিলাম। এই পর্যায়ে অনেকক্ষণ নাড়াতে হবে যাতে চাল নিচে বসে না যায় বা ধলা পেকে না যায়।
এখন আমি পায়েসের মধ্যে লবণ দিয়ে দিব। এক চামচ লবণ আমি দিয়ে দি পায়েসের মধ্যে ।এখানে স্বাদ অনুযায়ী লবণ দিতে হবে । আমার পায়েসের মধ্যে এক চামচ লবণ যথেষ্ট ছিল। লবণ দেওয়ার পর আমি আরো আবারও চামচ দিয়ে পায়েস নেড়ে দিলাম।
এখন আমি পায়েস এর মধ্যে দুটো তেজ পাতা দিয়ে দিলাম। তেজপাতা দুটো দিয়ে আরো কিছুক্ষণ আমি পায়েস রান্না করলাম।
এখন আমি পায়েসের মধ্যে এলাচি দিয়ে দেবো। তিনটি এলাচি দিয়ে দিলাম পাশের মধ্যে। তারপর কিছুক্ষণ রান্না করে এলাচি গুলো আবার পায়েস থেকে তুলে নিলাম। কারণ বেশিক্ষণ রান্না করলে এলাচির ভিতরের অংশগুলো বের হয়ে পায়েস এর স্বাদ নষ্ট হয়ে যাবে।
এখন আগে থেকে কেটে রাখা ফুলকপি পায়েসের মধ্যে দিয়ে দিব। ফুলকপি গুলো পায়েস এর মধ্যে দিয়ে অনেকক্ষণ পায়েস নেড়ে নিলাম।
এখন আমি পায়েসের মধ্যে চিনি দিয়ে দিব । চিনিটা যে যার মত দিতে পারে কেউ চিনি কম খায় আবার কেউ বেশি খায়। আমি দুই কাপ চিনি দিয়েছি । চিনি দেওয়ার পর আমি অনেকক্ষণ রান্না করলাম।
পায়েসের মধ্যে এখন দিয়ে দিব দুধের পাউডার আগে থেকে পানির মধ্যে মিশিয়ে রাখা মিশ্রণটি। দুধের পাউডার গুলো আমি পায়েসের মধ্যে দিয়ে ভালো করে নেড়েচেড়ে নিলাম।
অনেকক্ষণ রান্না করার পর আমি দেখছিলাম পায়েসের মধ্যে দেওয়ার চাল আর ফুলকপি গুলো ঠিকভাবে রান্না হয়েছে কিনা। বেশ কিছুটা সময় রান্না করার পর তৈরি হয়ে গেল ফুলকপির পায়েস। চুলা থেকে পাতিলটি নামিয়ে নিলাম।
পায়েস পরিবেশন করার জন্য একটি মাটির পাত্রের মধ্যে আমি পায়েস নিয়েছি। মাঝখানে বাদাম দিয়ে সাজিয়ে নিলাম এবং পায়েসের মধ্যে সামান্য পরিমাণ জাফরান ছড়িয়ে দিলাম। এরপর ফুলকপি, তেজপাতা,বাদাম দিয়ে ফটোগ্রাফি করে ফেলেছি। ফুলকপির পায়েস খেতে অনেক মজা হয়েছিল ।আশা করি আপনাদের কাছে আমার এই রেসিপিটি ভালো লাগবে।
শ্রেণী | রেসিপি |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @fasoniya |
ডিভাইস | Vivo Y15s |
লোকেশন | ফেনী |
আমার পরিচয়
আমার নাম ফারজানা আক্তার সোনিয়া। আমি বাংলাদেশী।আমি বর্তমানে লেখাপড়া করি আমি একজন স্টুডেন্ট। আমি আর্ট করতে ভালোবাসি আর যখনই সময় পাই তখনই আর্ট করি।আমি ফটোগ্রাফি করতে খুবই ভালোবাসি । যখনই কোথাও খুব সুন্দর কিছু আমার চোখে পড়ে আমি ফটোগ্রাফি করে ফেলি। এছাড়াও আমি ক্রাফট তৈরি করে থাকি । বিভিন্ন ধরনের রান্না করে থাকি রান্না করতে অনেক পছন্দ করি। আমি আমার পরিবারের সবচেয়ে বড় মেয়ে । আমার ছোট ছোট দুইটা ভাই আছে। আমার অনেক স্বপ্ন রয়েছে যেগুলো স্টিমিট এ কাজ করে পূরণ করতে চাই।
প্রতিযোগিতার আয়োজন করলে অনেক ভালো হয় প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অনেক ইউনিক কনটেস্ট দেখতে পারি।আপনি অনেক সুন্দর করে ফুলকপি দিয়ে পায়েস করেছেন দেখতে অনেক লোভনীয় দেখাচ্ছে।আমার কাছে আপনার আজকের পায়েস রেসিপিটি সম্পূর্ণ নতুন ছিল অনেক ভালো লেগেছে তৈরি করে খেয়ে দেখতে হবে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু অনেক সুন্দর একটি মন্তব্য করেছেন।
আপু আপনি আপনার নানার বাড়িতে গিয়ে ফুলকপির পায়েস তৈরি করা শিখেছেন জেনে ভালো লাগলো। আসলে এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো হয়তো আমরা তৈরি করতে জানিনা। তাই তো খাওয়া হয়না। ফুলকপির তরকারি কিংবা পাকোড়া সব সময় খাওয়া হয়।কখনো পায়েস তৈরি করে খাওয়া হয়নি। ভালো লাগলো নতুন একটি রেসিপি শিখতে পেরে।
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি কমেন্ট করার জন্য। জেনে খুবই খুশি হলাম নতুন একটি রেসিপি আমার পোস্ট থেকে আপনি শিখলেন।
আসলেই এরকম সুন্দর রেসিপি গুলো দেখলে খুবই ভালো লাগে। বিশেষ করে আপনি ফুলকপি পায়েস তৈরি করেছেন এটি দেখে একটু অবাক হলাম। কারন অনেক ধরনের পায়েস খেয়েছি কিন্তু কখনো ফুলকপির পায়েস খাওয়া হয়নি। আপু আপনার পোস্টটি আমার কাছে খুবই চমৎকার লাগলো। কিন্তু হয়তো ভুল বশত পোস্টের উপরে সাইফ্রোক্সের লেখাটি রয়ে গিয়েছে। কিন্তু আপনার রেসিপিটি চমৎকার হয়েছে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে খুবই সুন্দর একটি কমেন্ট করেছেন। ঠিকই বলেছেন সাইফক্সে লেখাটি উপরে রয়ে গিয়েছে। আমি প্রথমে খেয়াল করিনি। পোস্ট করার পর এডিট করার কোনো সুযোগ ছিল না সেজন্য এডিট করিনি ।
এই প্রতিযোগিতা দেওয়ার জন্য সবার কাছ থেকে বিভিন্ন রকমের শীতকালীন সবজির রেসিপি দেখতে পাচ্ছি। আমার কাছে সবার রেসিপিগুলো অনেক ভালো লেগেছে আর আমি নতুন নতুন রেসিপি শিখতে পারছি। পায়েস তৈরির সব উপকরণ একই রকম রয়েছে শুধু এর মধ্যে ফুলকপি যোগ করেছেন। আমার মনে এই পায়েসে একটু হলেও ফুলকপির ঘ্রাণ লাগে। আপনার এই রেসিপি অনেক ইউনিক লেগেছে। কখনও নাম শুনিনি আর খাওয়াও হয়নি তার জন্য এর স্বাদ কেমন হবে বুঝতে পারছি না।তবে এত সব উপকরণ দেওয়াতে মনে হচ্ছে খুবই সুস্বাদু হবে। ধন্যবাদ ইউনিক রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ সুন্দর একটি কমেন্ট করার জন্য। ফুলকপির পায়েসের মধ্যে ফুলকপির ঘ্রাণ লাগে না। বোঝাই যাবে না যে এই পায়েসের মধ্যে কোন রকমের ফুলকপি বা সবজি ব্যবহার করা হয়েছে ।বাসায় কখনো ট্রাই করে দেখেন এই ফুলকপির পায়েস নিজেই অবাক হয়ে যাবেন।
আপনাকে অভিনন্দন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। আপনি আপনার নানা বাড়ি থেকে ফুলকপির পায়েস রান্না শিখেছেন। আর আপনার কাছ থেকে আমিও শিখে নিলাম। আমি এর আগে কখনও এই পায়েস কাউকে করতে দেখিনি। এই প্রথম দেখলাম। খেতে কেমন ছিল?? ও মজার ছিল। রেসিপিটি ধাপে ধাপে তুলে ধরার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকেও খুবই সুন্দর একটি মন্তব্য করেছেন। ফুলকপির পায়েস খেতে অনেক মজা ছিল।
এটি সম্পূর্ণভাবে একটি ইউনিক রেসিপি হয়েছে ।ফুলকপি দিয়ে যে পায়েস রান্না করা যায় এটা কখনো মাথাতেই আসেনি। পায়েসের মতো খাবারের সাথে ফুলকপি আসলে কেমন লাগবে যদিও আমার এখনো কিছুটা সন্দেহ রয়ে গিয়েছে । তবে দেখে মনে হচ্ছে খেতে ভালোই হয়েছিল । পোস্টে যে ছবিগুলো ব্যবহার করেছেন সেগুলো অনেক ভালো হয়েছে । ধন্যবাদ আপনাকে ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি কমেন্ট করে উৎসাহ দেওয়ার জন্য। ফুলকপির পায়েস খেতে সত্যি অনেক সুস্বাদু ছিল।
বাহ আপু, খুব ইউনিক একটি রেসিপি দেখতে পেলাম আপনার পোস্টের মাধ্যমে। ফুলকপির পায়েস রেসিপি এই প্রথম দেখলাম। রেসিপির কালার এবং পরিবেশন এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে খেতে খুব ইয়াম্মি হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এতো মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।