অভাগীর জীবন কাহিনী (পর্ব ১)

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

হ্যালো সবাইকে

কেমন আছেন সবাই ?আশা করি ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আল্লাহর রহমতে। আজকে আরও একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। এক অভাগীর জীবনের গল্প আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্টটি ভালো লাগবে।

1000028754.jpg

আজকে আর একটি নতুন গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। গল্প পড়তে এবং গল্প লিখতে দুটোই আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে গল্প পড়তেই অনেক ভালো লাগে। সবাই খুবই সুন্দর সুন্দর গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করে থাকে যেগুলো আমি পড়ে থাকি এবং আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। তবে গল্পের মধ্যে সবথেকে বেশি ভালো লাগে ভূতের গল্প। আপনাদের মাঝে আমি অনেক ভূতের গল্প শেয়ার করেছি আগে তা ছাড়া অন্য গল্প গুলো শেয়ার করেছি। আজকে আরেকটি নতুন গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি। আমার আজকের গল্পটি নাম হলো এক অভাগীর জীবন কাহিনী। তাহলে চলুন শুরু করা যাক আজকের গল্পটি।

কুসুম ছোটবেলা থেকে তার মা-বাবা থেকে আলাদা থাকতো। তার নানার বাড়িতে সে মানুষ হয় নানা-নানীর কাছে নানা-নানী তাকে খুবই আদর যত্ন করে মানুষ করে তোলে। দেখতে শুনতে খুবই সুন্দর ছিল কুসুম। ছোটবেলা থেকে মা বাপের ঘরেও অভাব অনটন থাকার কারণে তার মা-বাবা তাকে তার নানার বাড়িতে দিয়ে দেয়, তারাই তাকে মানুষ করে। কিন্তু বড় হয়ে যাওয়ার পর একটা সময় তার যখন বিয়ের বয়স হয়ে যায় তখন সে তার মা-বাবার কাছে চলে আসে। দেখতে শুনতে অনেক বেশি ভালো হওয়ায় গ্রামে আসার পর তখন অনেক মানুষেরই চোখে পড়ে। কুসুম একদিন গ্রামের মেম্বারের চোখে পড়ে মেম্বার জিজ্ঞেস করছিল তার পাশের লোককে যে এই মেয়েটাকে দেখতে খুবই সুন্দর এই মেয়েকে তো আগেই গ্রামে কখনো দেখিনি।

তখন মেম্বারের পাশের লোকটি বলল যে এই মেয়ে আমাদের গ্রামে থাকে না তার নানার থাকে। তখন মেম্বার বলল এই মেয়ের বাবাকে ডেকে পাঠাতে মেম্বার তার সাথে কথা বলবে। কুসুমের বাবা যখন মেম্বারের সাথে কথা বলতে যায় মেম্বার তখন কুসুমের বিয়ের প্রস্তাব দেয় মেম্বারের ছেলের জন্য। এটা শুনে কুসুমের বাবা অনেক বেশি খুশি হয়ে যায়। গরিব হয় গ্রামের মেম্বারের ছেলের সাথে তার মেয়ের বিয়ে দেবে এর থেকে ভালো কিছু তো হতে পারে না। সেজন্য কুসুমের বাবাও রাজি হয়ে যায়। এরপর কুসুমের সাথে মেম্বারের ছেলের বিয়ে ঠিক হয়ে যায় এবং বিয়েও হয়ে যায়। কুসুমের মা-বাবা তো অনেক বেশি খুশি যে ছোট থেকে অভাবের কারণে মেয়েটাকে তাদের পাশে রাখতে পারেনি। কিন্তু তাদের মেম্বারের বাড়িতে মেয়েটা বউ হয়ে থাকবে তারা মা-বাবা দুজনই খুবই খুশি।

বিয়ের দিন রাতেই ঘটলো যত সব অঘটন। মেম্বারের ছেলে বিয়ের দিন রাতে কুসুমকে অনেক কথা বলে অপমান করে এবং বলে যে তার মত একটা গরিব পরিবারের মেয়ের সাথে সে কখনোই সংসার করতে পারবে না। তার পক্ষে একদমই সম্ভব নয়। সে বিয়ে করেছে তার বাবার কথা বাধ্য হয়ে না হলে কুসুমকে কখনোই বিয়ে করতো না। এসব শুনে অনেক বেশি ভেঙে পড়ে এবং মেম্বারের ছেলে কুসুমকে বলে যে পরের দিন সকালবেলা যদি সে এ বাড়ি থেকে বেরিয়ে না যায় তাহলে তার সাথে তার মা বাপেরও অনেক বেশি ক্ষতি করে দিবে। বিয়ের স্বপ্ন দেখে বিয়ের দিন রাতেই এসব কিছু ঘটার পর কুসুম খুবই কষ্ট পায় এবং এই কষ্ট নিয়ে তার স্বামীর কথা অনুসারে সকাল সকাল বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।

রাগ অভিমান করে কুসুম যখন বেরিয়েছে হাঁটতে হাঁটতে একটা পর্যায়ে একটা নদীর সামনে এসে দাঁড়ায়। তার মনে মনে চিন্তা করতে থাকে সারা জীবন অভাবের কারণ নানার বাড়িতে থেকে মানুষ হয়েছি। মা-বাবা বিয়ে দিয়েছে এখন যদি আবার গিয়ে মা বাবার ওপর উঠে তাহলে তো তারা অনেক কষ্ট পাবে। তারা নিজেরা ঠিক করে খেতে পারেনা আমাকে আবার কি সারা জীবন বয়ে বেড়াবে এসব চিন্তা করে সে চায় আত্মহত্যা করতে। তাকে আত্মহত্যা করা অবস্থায় একটা লোক দেখে ফেলে। দেখে কুসুমকে আত্মহত্যা করা থেকে বাঁচায়। পরে লোকটি জিজ্ঞেস করে কেন কুসুম আত্মহত্যা করতে যাচ্ছে। তখন কুসুম তার সব কষ্টের কথায় ভেঙে বলে। তখন লোকটি কুসুমকে অনেক বেশি আত্ম বিশ্বাসই করে তোলে তার কথার মাধ্যমে। কুসুমকে বিভিন্ন সব কিছু বুঝিয়ে বললে কুসুম তখন আর আত্মহত্যা জীবনে বেঁচে থাকার সাহস পায়(চলবে...)


1 (1).png

IMG-20221013-WA0015.jpg

Sort:  
 5 months ago 

গল্পে কুসুম ক্যারেক্টারটা আসলেই অভাগী। ছোট থেকেই ভাগ্য সহায় ছিলনা তার। অভাব অনটনের কারণে বাবা-মায়ের আদর বঞ্চিত, কুসুম নানা বাড়িতে বড় হয়। যদিও মেম্বারের ছেলের সাথে বিয়ে হয় কিন্তু শুরুতেই অঘটন! দেখি ,পরের পর্বে গল্পের মোড় কোন দিকে যায়। গল্পটি ভালো হয়েছে আপু। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 5 months ago 

আপু আপনি দেখছি খুবই সুন্দর ভাবে আমার এই গল্পটি পড়েছেন এবং দারুণ একটি মন্তব্য করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

আত্মহত্যা তো কোন বিষয়ের সমাধান নয়। এজন্যই তো কুসুম লোকটির কথা শুনে আত্মহত্যার পর থেকে ফিরে এসেছে। আসলে কুসুম ই বা কি করবে বিয়ের রাতে যদি স্বামীর কাছ থেকে এমন কথা শুনে। তাহলে তো কষ্ট পাওয়ারই কথা। কিন্তু কুসুমের উচিত ছিলো শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে সব কিছু খুলে বলা। যাইহোক বেশ ভালো লাগলো গল্পটি। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 5 months ago 

হ্যাঁ আপু আত্মহত্যা কোন সমাধান নয় ।একজন মানুষ যখন সবকিছু হারিয়ে ফেলে তখন সে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে। ভালো একজন মানুষ যদি তাকে বুঝেই পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে পারে তাহলে খুব ভালো হয়। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

মানুষের জীবনে কিন্তু বাধাবিপত্তি আসে আর বাধাবৃত্তির কারণে মানুষ হুটহাট করে অনেক বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে তবে সে ক্ষেত্রে যদি কিছু মানুষ তার পাশে থাকে তাহলে আত্মহত্যার বিষয়টি তার মাথায় আসে না। যেমন গল্পের কুসুম জীবনের সাথে অনেক সংগ্রাম করে চলেছে এমনকি বিয়ের পরেও তার স্বামীর সাথে এমন ঝামেলা হওয়ার কারণে সে আত্মহত্যা করতে চায় কিন্তু লোকটি তার মনে আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তোলে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

ধন্যবাদ আপনাকে খুবই সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য গল্পটি পড়ে। খুব তাড়াতাড়ি আপনাদের সাথে পরবর্তী পর্বটি শেয়ার করব।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

আসলে আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা দরিদ্রতার কারণে সন্তানকে কাছে রাখতে পারেনা। ঠিক তেমনি তারা কুসুমকে তার নানা নানীর কাছে রেখেছিল। ছোট থেকে বড় তার নানা নানি তাকে করেছিল। কিন্তু মেম্বারের ছেলের সাথে তার বিয়ে হওয়ার পর, বিয়ের রাতে দেখছি অনেক বড় একটা অঘটন ঘটে গিয়েছে। মেম্বারের ছেলে তো দেখছি তার বাবার কথামতো কুসুমকে বিয়ে করেছিল। আজ সকাল সকাল তাকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য বলাতে, সে উঠে সকাল সকাল বেরিয়ে গিয়েছিল। আর নদীর পাড়ে গিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করলেও একটা লোক তাকে বাঁচিয়ে নিয়েছিল এবং বেঁচে থাকার জন্য আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে ছিল দেখে ভালো লাগলো। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়।

 5 months ago 

একদম ঠিক বলেছেন আপু দরিদ্রতার কারণে অনেকে নিজের সন্তানকে নিজের কাছে রাখতে পারেনা। আপনি গল্পটি পড়েছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

মেয়েটা ছোটবেলা থেকে বাবা মায়ের ভালোবাসা পায়নি। নানা নানীর কাছে বড় হয়েছিল। কারণ তার বাবা-মা ছিল দরিদ্র। তাকে ভালোভাবে মানুষ করতে পারবে না এই জন্য। কিন্তু বিয়ের বয়স হওয়ার পর বাড়িতে নিয়ে আসলেও, বিয়ে হয়েছিল অনেক খারাপ একটা ছেলের সাথে। যদিও ছেলেটা মেম্বারের ছেলে, কিন্তু ছেলেটা তো দেখছি একেবারে অমানুষ। বিয়ের রাতে কিভাবে পারলো মেয়েটার সাথে এরকম আচরণ করতে। সকালবেলায় উঠে মেয়েটাকে চলে যেতে বলেছিল। তাই তো মেয়েটা চলে গিয়েছিল, আর আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল। কিন্তু একটা মানুষ তাকে বাঁচিয়ে নিয়েছিল জেনে ভালো লাগলো। এখন তাহলে সে বেঁচে থাকবে, আর এরকম কথা মুখে আনবে না। তার জীবনে পরবর্তীতে কি হতে চলেছে এটাই দেখতে হবে এখন।

 5 months ago 

মেয়েটার কপাল খারাপ ছোটবেলা থেকে মা বাবার আদর যত্ন পায়নি। বিয়ের পর থেকেই তার কোন সুখ নেই। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য গল্পটি পড়ে।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

আপনার গল্পের প্রথম পর্ব পড়ে খুব ভালো লাগলো। তবে কুসুমের কাহিনী যখন পড়তেছি তখন মাঝখানেও সত্যি অনেক খারাপ লাগলো। অভাব অনটনের কারণে নানার বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করেছে। যদিও কুসুমের ভালো ঘরে বিয়ে হয় মেম্বারের ছেলের সাথে। এবং মেম্বারের ছেলে এত অমানুষ হবে আসলে কল্পনার বাইরে। তবে কুসুম রাগ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করল। বিপদের সময় কেউ না কেউ পাশে এসে দাঁড়ায়। আশা করি পরের পর্ব খুব তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন আপু।

 5 months ago 

এই গল্পের প্রথম পর্বটি পড়ে আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুবই ভালো লাগলো। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ প্রথম পর্বটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

যারা গরীব তারাই বরং গরীবের কষ্ট বুঝতে পারে। মেম্বারের উচিত ছিল তার ছেলের মতামত নেওয়া। তাহলে হয়তো দু'টো মানুষের জীবন নষ্ট হতো না। মেম্বারের ছেলের এত যখন অহংকার ছিল তাহলে বিয়ের আগে না করলেই তো পারতো। তাহলে তো কুসুমের জীবনটা এভাবে নষ্ট হতো না। তবে কুসুম আত্মহত্যা করতে গিয়ে সেখান থেকে অন্য লোক তাকে বাঁচিয়ে খুব ভালো করেছেন। এখন দেখা যাক কুসুম সেই লোকটির কথায় সাহস পেয়ে নিজেকে কতটা পরিবর্তন করতে পেরেছেন। আপনার গল্প পড়ে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।

 5 months ago 

এই কথাটি একদমই ঠিক বলেছেন গরিবের কষ্ট গরিবই বুঝে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 59583.90
ETH 2578.21
USDT 1.00
SBD 2.48