স্পর্শের বাহিরে তুমি-পার্ট২

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

তিন আইডির ভেতর থেকে যে কেউ একজন রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করেছে সেটা এনামুল তখনো জানতো না।ঘন্টা চারেক পরে ডাটা অন করতেই নোটিফিকেশন এলো।নোটিফিকেশন দেখেই এনামুলের চোখ যেন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল।আনন্দের চোটে কি করে না করে তার ঠিক নেই।কিন্তু পরে যখন মনে হলো যে সে তো জানেনা,যে কে এই আইডির মালিক?রাজিয়া নাকি অন্য দুইজনের মধ্যে কেউ?বেচারার মুখের সেই হাসি আবার হারিয়ে গিয়েছিল।
message-in-a-bottle-413680_640.webp
Link
এনামুল সংকোচবোধে ম্যাসেজ দেয়নি আর ওই প্রান্তের ব্যক্তি তো দেয়ইনি।দুইদিন কেটে যাওয়ার পর এনামুল ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিল।স্ট্যাটাস দেয়ার কারণ ছিল এটা দেখা যে ওই আইডির মালিক রিয়েক্ট দেয় কি না।কিন্তু দুরভাগ্যের ব্যাপার হলো কোনো রিয়েক্ট পায়নি এনামুল।
উপায় না পেয়ে এক বন্ধুকে এনামুল বলেই ফেলেছিল এই এই ঘটনা।বন্ধু তো?নিজের দায়িত্ব সেরে ফেলেছিল এনামুলের কথা শুনে।এনামুলের কাছে থেকে ফোনটা নিয়ে ডিরেক্ট ম্যাসেজ করেছিল ওই আইডিতে।যাতে লিখেছিল,

আমি কি রাজিয়াকে ম্যাসেজ করছি?

বন্ধুর কাজে এনামুল একটু খুশি হলেও ভয় তার থেকে বেশিই পেয়েছিল।কিছুক্ষন বন্ধুর সাথেই ছিল যাতে রিপ্লাই পেলে কি বলবে না বলবে সেটা ও বলে দেয়।কিন্তু রিপ্লাই আসেনি।
পরেরদিনেও কোনো রিপ্লাই নাই।এনামুল নিজেই এটা সেটা ভেবে নিজেকে শান্তনা দিচ্ছিলো।এরই মধ্যে হঠাৎ করেই টুং করে শব্দ হলো।হাতে ফোন নিয়ে দেখে ও প্রান্তের ম্যাসেজ কড়া নেড়েছে।ম্যাসেজের রিল্পাই ছিল;

জি,আমি রাজিয়া।আপনি কে?

ম্যাসেজটুকু পড়ে বোধয় এনামুল অতলে হারিয়ে গিয়েছিল।মনে হচ্ছিল যেন কি না কি পেয়েছে।আবেগের ঠেলায় রাজিয়ার ম্যাসেজের উত্তর দিতেও দ্বিধায় ভুগছিল।ছয় বা সাত মিনিট পর এনামুল রিপ্লাই দিয়েছিল;

আমি আর তুমি একসাথেই কেমিস্ট্রি প্রাইভেট পড়ি।আমার নাম এনামুল।বোধয় চিনেছো।

তারপর চলতে থাকে-

রাজিয়াঃ নাম শোনা শোনা লাগছে।তবে চিনি নাই।
এনামুলঃ আচ্ছা ঠিক আছে,চিনতে হবে না।নাম জানো সেটাই অনেক।

রাজিয়াঃ এতোবার রিকোয়েস্ট কেন দিচ্ছিলে?সমস্যা কি?

এনামুলঃ আসলে তেমন কিছুই না।কথা বলার ছিল কিছু।

রাজিয়াঃ তুমি শুধু আমায় না,আমার বাকি দুই বান্ধবিকেও অনেকবার রিকোয়েস্ট দিয়েছিলে।তো কথা কার সাথে?আমার সাথে নাকি ওদের কারো সাথে?

এনামুলঃ না না,কথা তোমার সাথেই আছে।আসলে আমি জানতাম না তোমার আইডি কোনটা।তাই তিন আইডিতেই ওতোবার রিকোয়েস্ট দিয়েছিলাম।
রাজিয়াঃ আচ্ছা বুঝেছি।যা বলার তাড়াতাড়ি বলে ফেলো। ভাইয়া যদি দেখে ছেলে ফ্রেন্ড রেখেছি আমায় মেরেই ফেলবে।

এনামুলঃ বিষয়টা কিভাবে নেবে জানিনা।প্রথম যেদিন তোমার ওই দুই চোখের দিকে তাকিয়েছিলাম সেদিন থেকেই ভুলতে পারিনি তোমার চোখ দুটির অনবদ্য সৌন্দর্য।দিন রাত খালি ওই চোখ দুটোই ভাসে আমার চোখের সামনে।

রাজিয়াঃ এসব কি ধরনের কথা?খবরদার আর বলবে না।স্যারকে বলে দেবো।আর একটা কথা আমায় কিংবা আমার কোনো ফ্রেন্ডকে যেন আর ডিস্টার্ব না করা হয়।

এনামুলঃ আমি দুঃখিত।যা বলার ছিল তা সম্পূর্ণ বলতেই পারলাম না।আচ্ছা ঠিক আছে,আমরা কি ফ্রেন্ড হতে পারি?

রাজিয়াঃ না।তা সম্ভব না।আমার কোনো ছেলে ফ্রেন্ড নাই আর আমি চাইও না।

এনামুলঃ আচ্ছা ঠিক আছে।প্লিয আজকের এই ঘটনা যেন কাউকে জানাইওনা।দুজনের মাঝে থাকলেই খুশি হবো।

রাজিয়াঃ আচ্ছা,আমারও তাই মনে হয়।ঠিক আছে,কথা বেশি হয়ে যাচ্ছে।একটাই কথা আর যেন নক না দেয়া হয় কিংবা আমাদের ডিস্টার্ব না করা হয়।

এনামুলঃ আল্লাহ হাফেয।

wedding-rings-2284923_640.jpg
Link
স্বপ্ন দেখেছিল অনেকদূর পর্যন্ত। কিন্তু অঙ্কুরেই তা নষ্ট হয়ে গেছে।এনামুলের শেষ ম্যাসেজ সিন করেই ব্লক দিয়েছিল রাজিয়া।তারপর আর চেষ্টা করে দেখেনি এনামুল।প্রাইভেট গেলে শুধু চোখ দুইটার দিকে একাতবার তাকায় তাও রাজিয়ার অজান্তে।

সমাপ্ত

স্পর্শের বাহিরে তুমি-পার্ট১

Cc. @farhantanvir
Date.21/10/21

Sort:  
 3 years ago 

ভাই অসাধারণ একটি গল্প লিখেছেন গল্পটি যতই পড়ছি ততই ভাল লাগছিল। পড়তে পড়তে এর শেষে যখন গেলাম তখন খালি আফসোস করলাম এই বুঝি শেষ হয়ে গেল আজকের জন্য। ভাই পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি প্রেমের কাহিনী আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

এই গল্পের এখানেই ইতি🥀

 3 years ago 

গল্পটা দারুণ।
অবশ্য আমি একজন গল্পের পাগল আর গল্প আমার সামনে দিয়ে দেওয়া মানে হচ্ছে আমি সব কিছু ছেড়ে তা পড়ে ফেলা।
দারুণ লিখছেন, চালিয়ে যান আপনি।

 3 years ago 

আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনুপ্রেরণা পেলাম❣️ধন্যবাদ

 3 years ago 

এগিয়ে যান। ❤️

প্রেম কাহিনি খুবই রসাত্মক ভাবে তুলে ধরেছেন। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকা আমাত ব্যকুল মন।

 3 years ago 

এটার পার্ট তো এখানেই শেষ ভাই🥀তবে ইনশাআল্লাহ নতুন কাহিনী শীঘ্রই আনবো

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 65800.35
ETH 3464.66
USDT 1.00
SBD 2.68