জীবনযাত্রা :) আমাদের ঈদ শপিং। || Our Eid shopping 🛍️.
সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে শুরু করছি আমার আজকের আয়োজন। পোস্টের টাইটেল দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন কি বিষয়ে আজ লিখতে চলেছি। আজকের বিষয় আমাদের ঈদের কেনাকাটা।
মূলত আমার ইচ্ছে ছিল ৫ থেকে ৬ তারিখের দিকে ঈদ শপিং করার কিন্তু পরবর্তীতে চিন্তা করলাম ঈদের আগ মুহূর্তে হয়তো আমার অফিসের কাজের চাপ বাড়তে পারে। ঠিক সেই চিন্তা থেকে গত শুক্রবার অবশেষে শপিং করতে বের হলাম। আমরা আমাদের ঈদ শপিংকে দুটো ভাগে ভাগ করেছি, এক বাচ্চাদের জন্য শপিং এবং দুই আমাদের মানে বড়দের জন্য শপিং। যাইহোক প্রথম ধাক্কাতেই বাচ্চাদের জন্য কিছু কেনাকাটা করবো।
আমরা বাসা থেকেই মোটামুটি কি কেনাকাটা করবো তার একটা পরিকল্পনা করে বের হলাম। তবে ভালুকা শহরে যেহেতু নতুন তাই বেশ দুশ্চিন্তা হচ্ছিল, যদি ভালো মানের কাপড়চোপড় না পাই তাহলে মনটা খারাপ হয়ে যাবে। যাইহোক উপর ওয়ালার নাম নিয়ে বেড়িয়ে পরলাম।
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।
আমাদের ইয়ান সোনা ওরফে আমার সেনাপতিকে পাঞ্জাবি পায়জামাতে বেশি মানায়, তাই প্রথমেই তার জন্য পান্জাবি কেনার জন্য ঘুরতে লাগলাম। প্রথমেই কিছুটা হতাশ হলাম, কারন একদমই পছন্দ হচ্ছিল না কোন কিছুই। যাইহোক হঠাৎ ফিক্সড প্রাইসের একটি দোকানের দিকে চোখ পরলো। যাইহোক ভেতরে ঢুকেই যেন স্বস্তি ফিরে পেলাম। কারন তাদের কাপড় চোপড়ের কালেকশন দারুন। আমাদের চাহিদা তাদের জানাতেই বেশ কিছু কটি সিস্টেম পান্জাবি বের করলেন। যা দেখে এবং কাপড়ের মান পরখ করে আমার কাছে অসাধারণ মনে হলো। যদিও দাম বেশ চড়া, কিন্তু ভালো মানের জিনিস বলে কথা। যাইহোক এবার শুরু হলো গায়ে জড়িয়ে দেখার পালা। সেনাপতিকে বেশ কয়েকটি পরিয়ে মোটামুটি বেগুনি রঙেরটা পছন্দ হলো। আর কথা না বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি প্যাকেট করে দিতে বললাম।
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।
ছোট্ট জনের কেনাকাটার পর এবার ইলমার জন্য জামা খোঁজার পালা, তবে এবার বুদ্ধি করে পরিচিত একজনকে জিজ্ঞেস করলাম কোথায় পাবো আমার মেয়ের জন্য পছন্দের জামা। অবশেষে তিনি দোকানটা চিনিয়ে দিলেন, এটাও একদরের দোকান কিন্তু কালেকশন অসাধারণ। দোকানদার আমাদের সাথে কথা বলেই আমাদের চয়েস বুঝে গেছেন। বেশ কয়েকটি জামা বের করলেন। আমার তো ইচ্ছে করছিল মেয়ের জন্য সবগুলো নিয়ে যাই 😄 কিন্তু কি আর করা মধ্যবিত্ত মানেই সবকিছু সীমিত। যাইহোক দুটো জামা কিনলাম বেশ চড়া দামে, তাতে কি দুটো জামা ইলমার বেশ পছন্দ হয়েছে। সে তো মহা খুশি, সত্যিই তার আনন্দ দেখার মতো ছিল। এখান থেকে ইয়ানের একটি শার্ট এবং প্যান্ট কিনলাম, যা সত্যিই দারুন দেখাচ্ছিল।
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।
এবার জুতা কেনার পালা। প্রথমেই ইলমার জন্য জুতা খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত। সেনাপতি কিন্তু ক্লান্ত নয়, সে ঠিক বোনের জন্য জুতা খুঁজে চলেছে। একবার এতা, বাবা ওতা, বাবা এতা ছুন্দর কিন্তু 😀 কত মজার মজার অভিব্যক্তি তার। যাইহোক পরে কিন্তু ইলমার জন্য খুব সুন্দর একজোড়া জুতা পেয়ে গেলাম।
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।
ইলমার জুতা কেনার পর সেনাপতির জুতা দরকার। সেতো বলেই বসলো বাবা আমার জুতো হবে না 🥺 আমি বললাম কেন নয় বাবা। চলো এবার তোমার জন্য আমরা জুতা খুজবো। তার জুতা কিন্তু আমার পছন্দে কেনা। তাকে রিতিমত টেবিলের উপর বসিয়ে জুতা ট্রায়াল দেয়া হয়েছে। অবশেষে জুতা পছন্দ হয়েছে এবং প্যাকেট করা হলো। আমরা দাম মিটিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে পরলাম।
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।
রাত আটটা থেকে প্রায় এগারোটা পর্যন্ত ছুটাছুটি করে ঈদ শপিং করতে করতে সবাই বেশ ক্লান্ত। এবার ইলমা আর ইয়ানের খিদে পেয়ে গেছে। যাইহোক তাদের সিদ্ধান্তে ফুসকা খেতে বসলাম আর ইয়ানের জন্য কেক আর সেভেন আপ নিলাম। বেশ জমজমাট খাওয়া হলো ওদের কিন্তু দুঃখের বিষয় আমি ফুসকা আর চটপটি একদমই পছন্দ করি না। যাইহোক আমি আর ইয়ান কেক আর সেভেন আপ খেয়ে পেট ঠান্ডা করলাম। আর ওদিকে মা মেয়ের ফুসকা খাওয়া দেখে বেশ ভালো লেগেছে 😄 খেয়ে দেয়ে এবার বাসার দিকে রওনা দেয়ার পালা
ছবির অবস্থান :- ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।
বাসায় ফিরে এক ঝলক ফটোসেশনে মোবাইল ক্যামেরা প্রস্তুত করলাম। আমার সেনাপতি কি যে খুশি সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আর সমানতালে ইলমার মুচকি হাসি। যাইহোক ওদের এই মুখের হাসি আমার অনেক বড় প্রাপ্তি আর বাবা হিসেবে স্বার্থকতা। ☺️
আরো বেশ কিছু কেনাকাটা রয়েছে, হয়তো আরো দুই একদিন বাজারে আবারো আসতে হবে।
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।
এতা নয় ওতা এতা সুন্দর। বাবা আমার কি জুতা হবে না এসব আধো আধো শব্দ গুলো পড়ে আমি আবেগে আপ্লুত হয়ে গেছি। আপনার ছেলের কথা গুলো হৃদয় ছুয়ে গেলো আমার। অনেক সুন্দর সুন্দর ড্রেস কিনেছেন ভাইয়া।আসলে ভালো মানের জিনিসের দাম ভালো তো হবেই।আপনার ছেলের পাঞ্জাবি ভীষণ সুন্দর হয়েছে। সেনাপতি বলে কথা পাঞ্জাবি তো মানাবেই আর একজন্য ক্লান্তি নেই। আপনার মেয়ের লাল সাদা ড্রেসটি বেশ কিছু দিন থেকে মার্কেটে খুজি কিন্তুু পাই না।ওই ড্রেসটি আমার মেয়ের ভীষণ পছন্দের। আপনার ছেলে মেয়ের মুক্ত ঝড়ানো হাসি দেখে প্রানটা জুড়িয়ে গেলো।বাবা হিসেবে সত্যি আপনি সার্থক এমন ভুবন ভুলানো হাসি ফোটাতে পেরে।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
সত্যিই বাবা হিসেবে ওদের হাসি আমার সবথেকে বড় প্রাপ্তি। লাল রঙের জামাটা আমরা অনেক খুঁজে মাত্র একটি দোকানে পেয়েছি। আপনার চমৎকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। খুব ভালো থাকুন দোয়া রইল।
আপনার জুনিয়র সাহেব তো বেশ খুশি তার চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছে। তবে ঈদ আসলেই বাচ্চারা যদি কেনাকাটা করতে পারে তারা খুব বেশি আনন্দিত হয়। প্রথম ধাপে বাচ্চাদের কেনাকাটা করে নিলেন বেশ ভালই লাগলো। তবে আপনি জামা গুলো বেশ ভালোই কিনলেন আমার সব গুলো পছন্দ হয়েছে। আর জুতা গুলো চমৎকার হয়েছে। অনেক ভালো লেগেছে আপনার ব্লগটি পড়ে। মনে হয়েছে আপনার ব্লগটা পড়ে ঈদের আনন্দ খুঁজে পেয়েছি।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আপনার মন্তব্য পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। আপনাদের মন্তব্য পড়লে মনে হয় সত্যিই আমার পোস্ট করা সার্থক 🤗 খুব ভালো থাকুন এবং পরিবারের সাথে চমৎকার ঈদ উদযাপন করেন এই কামনা করছি।
আপনার ঈদ শপিং দেখে খুবই ভালো লাগলো। পরিবার নিয়ে ঈদের শপিং করার মজাই আলাদা। আপনি ইলমা এবং ইয়ানকে জমা জুতা কিনে দেওয়ার জন্য তারা অনেক খুশি হয়েছে ফটোগ্রাফি দেখে বুজতে পেরেছি। ঈদে শপিং করার মুহূর্ত অসাধারণ লাগে ছোটদের কাছে। শপিং করার শেষে আপনারা ফুচকা খেয়েছন। শপিং শেষ করে খাওয়া-দাওয়া অন্যরকম ফিলিংস। আপনার ঈদ ভালো কাটুক আপনার পরিবারকে ঈদের শুভেচ্ছা ।
ইতিমধ্যেই ঈদের কেনাকাটা শেষ করে ফেলেছেন এটা দেখে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। আসলে এটা সত্য কথা যে ফিক্সড প্রাইস এর দোকানগুলোতে গেলে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায়। কেননা এই দোকানে গেলে কোন জিনিস ক্রয় করে ঠকে যাবার সম্ভাবনা কম থাকে।
বাচ্চাদের এমন আধো আধো কথা শুনতে বেশ মজা লাগে।এছাড়া ঈদের শপিং করতে নিয়ে গেলে তাদের আনন্দের আর শেষ থাকে না।ঈলমার জামাগুলি খুবই সুন্দর, বেশ অনেক শপিং এর মাধ্যমে দারুণ সময় পার করেছেন ভাইয়া।আমাদের স্টিমিট বয় অনেক বড় হয়ে গিয়েছে, অনেক আদর রইলো।
অনেক ধন্যবাদ আপু।
সে এখন অনেক দুষ্টুমি করে আপু, সামলানো মুশকিল 😀
ভাইয়া আপনার সেনাপতিকে পাঞ্জাবীতে কিন্তু দারুন মানিয়েছে,মাশাল্লাহ। সবাই বেশ আনন্দ নিয়েই কেনাকাটা করলেন।ছোটদের কেনাকাটা শেষ হলো।যাক বাচ্চাদের মুখে হাসি দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। মুহুর্ত গুলো ভালো কাটুক এমনটাই আশাকরি। ধন্যবাদ ভাইয়া। পরিবারের সবাই কে নিয়ে ভালো থাকবেন।
অনেক ধন্যবাদ আপু, আমার পরিবারের জন্য দোয়া করার জন্য। খুব ভালো থাকুন দোয়া রইল।
তাহলে ভাইয়া ঈদের শপিং শুরু করে দিয়েছেন। আসলে আস্তে আস্তে কেনাকাটা শুরু করে দেওয়াই ভালো একবারে বেশি কিনতে গেলে চাপ বেশি পড়ে। সেনাপতিকে আসলেই পাঞ্জাবীতে অনেক বেশি মানাচ্ছে। সব মিলিয়ে কেনাকাটা শেষে খাবার-দাবারও ছিল দেখি বেশ ভালো একটি কম্বিনেশন।
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1774474487960047896?t=u6qQQmZKatAlkiF7HxZRMQ&s=19
আপনাদের ঈদ শপিং এর পোস্ট পেয়ে তো সত্যি ভীষণ খুশি হলাম। একদমই ঠিক বলেছেন ইয়ানকে পাঞ্জাবিতে অনেক সুন্দর মানায়। আর ইলমা এবং ইয়ান বাবু তো নতুন জামা কাপড় পেয়ে সত্যি ভীষণ খুশি। বাচ্চাদের এমন খুশি মুখ দেখলে সত্যি ভীষণ ভালো লাগে। আগে আগে শপিং করে খুব ভালো করেছেন। আর পরে করলে হয়তো আপনার কাজের চাপ এবং লোকজন এর ও ভিড় বেশি হবে। ফটোসেশন দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। আপনাদের সবার জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং শুভ কামনা রইলো।