ঢাকা থেকে কুমিল্লা ভ্রমণ কাহিনী || যেখানে আনন্দ আর বিভ্রাট ছিল সাক্ষী।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)
ঢাকা থেকে কুমিল্লা ভ্রমণ কাহিনী

যেখানে আনন্দ আর বিভ্রাট ছিল সাক্ষী



Polish_20220423_135858096.jpg

ছবিটি পলিশ অ্যাপস দিয়ে তৈরি করা

"ঢাকা থেকে কুমিল্লা ভ্রমণ কাহিনী" আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করার জন্য ফিরে এলাম ☺️ আসলে কুমিল্লা আমার শশুর বাড়ি। এবার চিন্তা করেছি ঈলমার স্কুল ছুটি হয়েছে গত ২১ তারিখ তাই কুমিল্লার উদ্দেশ্যে চলে যাব ঈদ করার জন্য। আরো একটা বিষয় তা হল আমি কোরবানির ঈদটা আমাদের বাড়িতে আব্বা আম্মার সাথে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কুমিল্লাতে আসার জন্য ২১ তারিখ সন্ধ্যায় কিছুটা শপিং করেছি কুমিল্লাতে আসার পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে। অবশেষে আমরা ২২ তারিখে কুমিল্লা আসার সিদ্ধান্ত নেই। আসলে আমাদের পুরো ভ্রমণটা বেশ বিভ্রাট এবং আনন্দের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে আজ সেটা নিয়েই আপনাদের সাথে কথা বলি তো চলুন শুরু করা যাক।

"ভ্রমণ প্রস্তুতি"

IMG20220422130939_01.jpgIMG20220422130935_01.jpg

অবস্থান সংযুক্তি

আমার মেয়ে ইলমা সাজগোজ করতে সবসময়ই ভীষণ পছন্দ করে তাই সকাল থেকেই তার সাজগোজের শুরু হয়ে যায়। আর এদিকে আমি এবং আমার স্ত্রী দুজনে মিলে সবকিছু গুছিয়ে নেই। আমি কুমিল্লার লাল-সবুজ এসি বাসের যাবার জন্য সিদ্ধান্ত নিলাম কিন্তু ওদের কোন অনলাইন সার্ভিস না থাকায় ওদের কাউন্টারে যেয়ে টিকিট কাটতে হবে তাই একটু বেশি চিন্তার মধ্যে ছিলাম। আমাদের বাস ছিল বিকেল চারটায়।

"ভ্রমণ শুরু"

IMG20220422151532_01.jpgIMG20220422151529_01.jpg

অবস্থান সংযুক্তি

আমরা দুপুর দুইটায় উত্তরখান থেকে আব্দুল্লাহপুর আমাদের কাউন্টারের উদ্দেশ্যে রওনা করি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আব্দুল্লাহপুর কাউন্টার এ ঢুকার ঠিক আগ মুহূর্তে প্রচন্ড বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। এমন একটা অবস্থা সৃষ্টি হয় আমরা কাউন্টার পর্যন্ত পৌঁছাতেই পারছিলাম না এদিকে আমরা যদি চারটার বাসটাও মিস করি, তাহলে আজকে আর কুমিল্লা যাওয়া হবেনা। তাই বেশ চিন্তার মধ্যে ছিলাম। ইলমাদের একটি ও নিরাপদ আশ্রয়ে কোনমতে রেখে আমি বৃষ্টি মাথায় করে নিয়ে বেশ ভিজে কাউন্টারে পৌঁছাই এর কারণটা হচ্ছে আমাকে টিকিটটা আগে থেকেই নিশ্চিত করতে হবে নাহলে কাঙ্খিত অবস্থানে সিট পাওয়া যাবে না। যাক আলহামদুলিল্লাহ আমি ঠিক মাঝ বরাবর তিনটি সিট পাই। ঠিক তখনও বৃষ্টি অবিরাম চলছে, এখন মাথায় প্রধানত চিন্তা হলো উনাদেরকে কাউন্টার পর্যন্ত পৌঁছানো। এদিকে প্রায় সাড়ে তিনটা বেজে গেছে এবং আর মাত্র ৩০ মিনিট রয়েছে আমাদের বাস আসতে। আমি আবারও বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কোনো মতে একটি রিকশা জোগাড় করে ওদের নিয়ে কাউন্টার পর্যন্ত পৌছাতে পারলাম। ঠিক চারটায় আমাদের বাস এসেছিল।

বাস যাত্রা

IMG20220422161344_01.jpgIMG20220422161417_01.jpg

IMG20220422161430_01.jpg

অবস্থান সংযুক্তি

অবশেষে আমরা আমাদের কাঙ্খিত বাসে উঠতে পারলাম। আর বাইরের আবহাওয়া ছিল ভীষণ খারাপ বৃষ্টি এবং অন্ধকার হয়ে এসেছিল। আমরা আমাদের কাঙ্খিত সিট গুলো খুঁজে নিয়ে সেখানে বসে পরলাম আর মনে মনে আশ্বস্ত হচ্ছিলাম মনে হয় আর কোন সমস্যা হবে না এবং আমরা নির্বিঘ্নেই পুরো ভ্রমণটা উপভোগ করতে পারব। কিন্তু কুড়িল বিশ্বরোড পৌঁছাতেই আমাদের এক ঘন্টা চলে গেল আর কুড়িল বিশ্বরোডে পৌঁছানোর পর শুনলাম ফ্লাইওভার একপাশে বন্ধ আমাদের মেইন রাস্তা দিয়েই সায়েদাবাদ পর্যন্ত আসতে হবে। আমাদের গাড়ি আরো কিছুদূর সামনে এগিয়ে আসার পর বিকল্প রাস্তা অবলম্বন করার জন্য আবার পিছনে ঘুরিয়ে প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে উত্তর বাড্ডা এবং মধ্যবাড্ডা হয়ে সায়েদাবাদ পৌঁছাতেই আমাদের ইফতারের সময় হয়ে যায়। অবশেষে সায়েদাবাদে এসে আমরা ইফতার সম্পন্ন করলাম। সবথেকে যেটা আমার কাছে আনন্দ লেগেছে তা হলো লাল সবুজ বাসের কর্মীরা একত্র হয়ে আমাদের জন্য ইফতারের আয়োজন করেছিলেন।

IMG20220422210243_01.jpgIMG20220422210301_01.jpg

IMG20220422210307_01.jpg

অবস্থান সংযুক্তি

রেস্তোরাঁয় বিরতি

IMG20220422210347_01.jpgIMG20220422210407_01.jpg
IMG20220422210410_01.jpgIMG20220422210358_01.jpg

অবস্থান সংযুক্তি

আমরা তো ঠিক রাত নয়টার সময় একটি রেস্তোরাঁয় বিরতি পাই। রেস্তোরাঁটির নাম হল জম জম রেস্তোরাঁ। ভীষণ সুন্দর মনোরম পরিবেশ আলোকসজ্জা এবং এদের খাবারের মান অত্যন্ত ভালো যদিও দাম একটু বেশি। আমি এবং আমার স্ত্রী দু'কাপ চা খেলেও ইলমা ফাস্টফুড খেয়েছিল।

IMG20220422212405_01.jpgIMG20220422210630_01.jpg

IMG20220422211202_01.jpg

অবস্থান সংযুক্তি

ভ্রমণ সমাপ্তি

অবশেষে আমরা রাত সাড়ে এগারোটার সময় আমাদের কাঙ্খিত গন্তব্যে এসে পৌঁছাই। সবাই আমাদের দেখে বেশ আনন্দে আত্মহারা হবার মত অবস্থা। সবার চোখে আনন্দ এবং উচ্ছ্বাস দেখে আমাদের পুরো ভ্রমণের কষ্ট এবং ক্লান্তি একদমই দূর হয়ে যায়।

ছবির বিবরণ
বিষয়বস্তুঢাকা থেকে কুমিল্লা ভ্রমণ কাহিনী
ছবি যন্ত্ররিয়েলমি সি-২৫
ছবির কারিগর@emranhasan

বিদায় (1).gif

Sort:  

ইলমাদের একটি ও নিরাপদ আশ্রয়ে কোনমতে রেখে আমি বৃষ্টি মাথায় করে নিয়ে বেশ ভিজে কাউন্টারে পৌঁছাই এর কারণটা হচ্ছে আমাকে টিকিটটা আগে থেকেই নিশ্চিত করতে হবে নাহলে কাঙ্খিত অবস্থানে সিট পাওয়া যাবে না।

বৃষ্টিতে ভিজে সবার জন্য টিকেট নিশ্চিত করা খুবই ভালো লেগেছে। একজন বাবা যে বট বৃক্ষের মত, কথাটা যে চিরন্তন সত্য সেটা আবারও আপনাকে দেখে মনে হয়। ঢাকা থেকে কুমিল্লা বাস ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার পরিবার সব সময় নিরাপদে থাকুন।আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
সত্যিই ওদের সকল কষ্টের হাত থেকে আগলে রাখতে চাই।
ভালো থাকুন। আপনার জন্য দোয়া রইল।

 2 years ago 

দেশের বাড়িতে ঈদ করতে সবারই ভালো লাগে। বাবা মা গ্রামের প্রতিবেশী সকলের সাথে ঈদ করার আনন্দ অন্যরকম।

আরো একটা বিষয় তা হল আমি কোরবানির ঈদটা আমাদের বাড়িতে আব্বা আম্মার সাথে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

ভাইয়া কোরবানীর ঈদ নাকি রমজানের ঈদ? আর ইলমা মনে হয় অনেক খুশি।

 2 years ago 

একটু মনোযোগ দিয়ে পড়লে আপু বুঝতে পারতেন।

আসলে কুমিল্লা আমার শশুর বাড়ি। এবার চিন্তা করেছি ঈলমার স্কুল ছুটি হয়েছে গত ২১ তারিখ তাই কুমিল্লার উদ্দেশ্যে চলে যাব ঈদ করার জন্য। আরো একটা বিষয় তা হল আমি কোরবানির ঈদটা আমাদের বাড়িতে আব্বা আম্মার সাথে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

মানে হলো আমি শশুড়বাড়ি যাচ্ছি ঈদ করতে স্পষ্ট লিখেছি আমি। জি ঈলমা বেশ খুশি ছিল।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Please check my new project, STEEM.NFT. Thank you!
default.jpg

 2 years ago 

ঢাকা থেকে কুমিল্লা ভ্রমণ কাহিনী বেশ সুন্দরভাবে গুছিয়ে বর্ণনা করেছেন ভাইয়া। লাল সবুজ এসি বাসে করে কুমিল্লার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন, যেহেতু এসি বাসে করে যাত্রা সেহেতু যাত্রাটা অনেক প্রাণবন্ত হয়েছিল মনে হচ্ছে। কেননা এই কিছুদিন আগে আমিও এসি গাড়িতে করে ঢাকা গিয়েছিলাম।তাইতো ভালভাবেই বুঝতে পারছি যাত্রাটা কত আরামদায়ক হয়েছিল। লাল সবুজ গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ইলমা সোনামনির ফটোগ্রাফি বেশ সুন্দর হয়েছে। আপনার ভ্রমণকাহিনী আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

জি ভাই ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্যের জন্য 🥀
আসলে ভ্রমণটা বেশ আরামদায়ক হতে পারতো কিন্তু বৃষ্টি এবং রাস্তায় বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।

 2 years ago 

অবশেষে আমরা রাত সাড়ে এগারোটার সময় আমাদের কাঙ্খিত গন্তব্যে এসে পৌঁছাই। সমা সবাই আমাদের দেখে বেশ আনন্দে আত্মহারা হবার মত অবস্থা। সবার চোখে আনন্দ এবং উচ্ছ্বাস দেখে আমাদের পুরো ভ্রমণের কষ্ট এবং ক্লান্তি একদমই দূর হয়ে যায়।

স্যার প্রথমেই আপনাকে অগ্রীম ঈদের শুভেচ্ছা,মিস করবো আপনাকে💞. ঢাকা থেকে কুমিল্লা ভ্রমণ কাহিনী পরে যদিও একটু খারাপ লেগেছে তবে আপনার উপরের কথা গুলো পরে খুশি হলাম। আপনাদের জন্য দোয়া রইল ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় এই কামনাই করি। আবারও ভালো ভাবে বাসায় ফিরে আসেন এই কামনাই করি।

 2 years ago 

ধন্যবাদ লিমন। আসলে রাস্তায় এখন ভোগান্তির শেষ নেই। তাও ভালোভাবে পৌছেছি তাই আলহামদুলিল্লাহ।
দোয়া রইল তোমার জন্য।

 2 years ago 

ফটোগ্রাফির মাধ্যমে এত সুন্দর কাহিনী বর্ণনা আকারে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন,যা পড়ে খুব ভালো লাগলো। তবে দোয়া করি আপনার পরিবারের জন্য যেন সুখে থাকেন।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই মন্তব্যের জন্য 🥀

 2 years ago 

বাহ ভাইয়া এবার তাহলে ঈদটা শ্বশুরবাড়িতে হবে, ভালোই জামাই আদর পাওয়া যাবে হিহিহি ☺️
আর ইলমা মামনি দেখছি একা একা ভালই সাজগোজ করেছে।
বৃষ্টিতে ছোটাছুটি করে হলেও টিকিট সংরক্ষণ করে সুষ্ঠুভাবে আপনারা গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পেরেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া।
যাইহোক শ্বশুর বাড়িতে কিভাবে ঈদ পালন করলেন সেটা নিয়ে একটা পোষ্টের অপেক্ষায় থাকলাম । ❤️

 2 years ago 

ইভান সত্যিই তাই ওরা ভীষণ আদর করে আমায়।
আর ঈলমার আনন্দ তো বাঁধন হারা 😍
ভীষণ ভালো মন্তব্যের আনন্দ পেলাম।
দোয়া রইল ঈদ ঠিকমতো আনন্দের সাথে পালন করো।

 2 years ago 

আগাম ঈদ মোবারক প্রিয় ভাই ❤️

 2 years ago 

তোমাকেও আগাম ঈদ মোবারক 😍

 2 years ago 

আপনার ভ্রমণ কাহিনী পড়ে ভালো লাগলো ভাইয়া। সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে লাল সবুজ বাসের কর্মীরা আপনাদের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করেছে। জমজম রেস্তোরাঁটি খুবই সুন্দর ভাইয়া। আপনাদের কুমিল্লায় যেতে তাহলে বেশি সময় লাগেনি ৪-রাত ১১ টার মধ্যেই পৌঁছে গেছেন। সবার সাথে আপনার শ্বশুর বাড়িতে ঈদ পালন করবেন এবার ভালোই হবে তাহলে। ❤️

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ ভাই।
আসলে লাল সবুজ বাসের কর্মীরা বেশ ভালো ওরা আমাদের সবাইকে ইফতার করিয়েছে।
দোয়া করবেন যেন ঈদটা ভালো হয়।

 2 years ago 

জি ভাইয়া অবশ্যই ❤️

 2 years ago 

আমরাও গ্রামের বাড়িতে এসেছি বাবা মায়ের সাথে ঈদ করতে। আসলে ঈদের আগে সবাই আমরা গ্রামে যাই। আরেকটি কথা হল আসলে মেয়েদের একটু বেশি সাজগোজ পছন্দ। সেজন্য ইলমা মামনি এত সাজগোজ করেছে তবে আপনার এই গরমে যার্নি করার মুহূর্তটা খুবই কষ্টকর।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই আসলে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করার মজাই আলাদা।
ধন্যবাদ ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56477.82
ETH 2390.38
USDT 1.00
SBD 2.33