প্রেমের গল্প:) শাখি তোমায় ভালোবাসে অতৃপ্ত হৃদয় 💓( শেষ পর্ব)
প্রেমের গল্প:)
শাখি তোমায় ভালোবাসে অতৃপ্ত হৃদয়
শাখি তোমায় ভালোবাসে অতৃপ্ত হৃদয়
স্বপ্নীল শাখির দামী উপহার গ্রহণ করলেও মনে তেমন আনন্দ বোধ করলো না কারন কেমন যেন অহংকারের মোড়কে সব মোড়ানো মনে হয়েছে তার কাছে। আর তার দেয়া গোলাপ ফুল তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে শাখি গ্রহণ করেছে তাও সে স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে। স্বপ্নীল আরো বুঝতে পারলো মিথ্যে ভালোবাসার মোহে সে পরেছে, যা হয়তো তাকে বিপদের দিকে ক্রমশ এগিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু কি করবে সে, শাখির মিষ্টি হাসি আর পাগল করা চোখ তার হৃদয়ে গেঁথে গেছে। স্বপ্নীল সিদ্ধান্ত নিল শাখির মন তাকে বুঝতে হবে এবং তার সম্পর্কে সবকিছু তাকে জানাতে হবে। শাখি বলে উঠলো উফ্ ভীষণ খিদে পেয়েছে চলনা কোন ভালো রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসে কথা বলি আর খাওয়া সেরে নেই। স্বপ্নীল কি বলবে বুঝতে পারছেনা কারন তার কাছে এতো টাকা নেই তাকে দামী রেস্টুরেন্টে নিয়ে খাওয়াবে। সে আমতা আমতা করতে লাগলো। শাখি বুঝতে পেরে বললো হ্যাংলা কোথাকার তোমার কাছে টাকা নেই বললেই হয়, চল আমি খাওয়াবো তোমাকে। স্বপ্নীল আরো অপমানিত বোধ করতে থাকলো। নিতান্তই অনিচ্ছা সত্ত্বেও সে যেতে রাজি হলো।
যাক দুজনে একটি ভালো রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসলো। ওয়েটার আসা মাত্র একগাদা দামী খাবার অর্ডার দিয়ে বসলো শাখি। এদিকে স্বপ্নীল ইতস্তত করে বললো এতো খাবার কার জন্য অর্ডার করলে আমি তো বেশি খাবো না। শাখি হেসে উত্তর দিল আমি আজ তোমায় এমন সব খাবার খাওয়াবো যে তুমি সারাজীবন মনে রাখবে। যাক এখানকার নিয়ম হচ্ছে খাবার অর্ডার দেয়ার পর তৈরি করে দেয়া হয়। এর মানে ওরা কিছুক্ষণ নির্জনে কথা বলতে পারবে। এখানে সুবিধা হলো রেস্টুরেন্টটি বেশ নিরিবিলি একটি পরিবেশ রয়েছে আর অনেকেই নিরিবিলি গল্প করে যাচ্ছে।
স্বপ্নীল সিদ্ধান্ত নিল শাখিকে সবকিছু খোলাখুলি বলবে এবং তার হৃদয়ের কথা বোঝার চেষ্টা করবে। স্বপ্নীল বলে উঠলো শাখি একটা কথা বলতে চাই তোমাকে, আমি তোমাকে ভালবাসি। আর প্রথম দেখাতেই আমি তোমার হরিণী চোখে আর মিষ্টি হাসির প্রেমে পরে গেছি। শাখি ওর কথা শুনে অনেকক্ষণ হাসলো। এরপর বললো, স্বপ্নীল সেটা আমি তোমার তাকানোর ভঙ্গিমায় বুঝেছি প্রথমেই। তবে একটা বিষয় হলো দেখ তোমার মনে হয়তো এই ব্যাপারটা ঘুরপাক খাচ্ছে, হয়তো আমিও তোমাকে ভালোবাসি কারন আমি তোমার ফোন নাম্বার মুখস্থ করে আগে ফোন দিয়েছি। কিন্তু সেটা তুমি ভুল ভেবেছো কারন আমার কাছে ট্রেনে তোমার আচরণ এবং কথা বলার ধরন শুনে কিছুটা ভালো লেগেছে তাই তোমাকে কিছুটা পরিক্ষা করে নিলাম। তবে তুমি ভালো ছেলে এটা আমি মানছি কিন্তু ভালো প্রেমিক নও। দেখ ভালো প্রেমিক হতে হলে পকেটে প্রচুর টাকা থাকতে হয়, দামী উপহার দিতে হয় আর দামী রেস্টুরেন্টে খাওয়াতে হয়। যার কোনটাই তুমি পারবে বলে আমার মনে হচ্ছে না, কোন দিক দিয়েই। তাই আমি তোমাকে জাষ্ট বন্ধু ভাবতে পারি এর বেশি কিছু কখনো কল্পনাও করবেনা। স্বপ্নীলের চোখ মুখ সব অন্ধকার হয়ে গেল। সে মনে মনে বিধাতার কাছে চিৎকার করে বলছে কেন তুমি আমায় আজ গরিব ঘরে পাঠালে।
ইতিমধ্যে খাবার এসেছে টেবিলে। শাখি খাবার খেতে বললো স্বপ্নীলকে কিন্তু স্বপ্নীল কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। তার কি এখান থেকে উঠে যাওয়া উচিত শাখিকে রেখে? না সে তা করলো না কারন সে চিন্তা করলো একা একটি মেয়েকে রেখে যাওয়া উচিত হবেনা। শাখি খাওয়া শুরু করে দিয়েছে আর স্বপ্নীলকে জোর করছে। কিন্তু এ খাবার কিভাবে তার গলা দিয়ে নামবে বুঝতে পারছেনা। স্বপ্নীল কিছুটা খাবার গ্রহন করেই তার খারাপ লাগছে বলে মুখ ধোয়ার জন্য উঠে গিয়েছে। যাক শাখি খেয়েছে পর্যাপ্ত। সবশেষে শাখি বিল মিটিয়ে বিদায় নিল, আর বললো রাতে ফোন দেবে।
আসলে স্বপ্নীল এতটাই অপমানিত বোধ করলো শাখির আচরণের, সে সত্যিই ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়লো মানসিকভাবে। আর সে বারবার বিধাতার কাছে প্রশ্ন ছুড়তে লাগলো কেন তাকে গরিব করে দুনিয়াতে পাঠালেন। আর এদিকে শাখিদের মতো মেয়েদের প্রেমিক অভাব হয়না কিন্তু আদৌ ভালো মানুষ পাবে কি সেটাই দেখার বিষয়। কিন্তু শাখির খেলা তখনও শেষ হয়নি। শেষ আর একটা গোল স্বপ্নীলকে দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
কয়েকদিন শাখি ফোন দিলেও স্বপ্নীল আর ফোন ধরেনি কিন্তু হঠাৎ মেসেজ এলো ভীষণ জরুরী কথা আছে প্লিজ একবার তুমি এসো সেই আগের জায়গায়। আসলে এটা ছিল শাখির শেষ খেলা আর সে জানতো এভাবে বললে নিশ্চয়ই সে ওখানে যাবে। ঠিক তাই হলো স্বপ্নীল যথা সময়ে সেখানে উপস্থিত। হঠাৎ একটি দামী মটর সাইকেল তার সামনে এসে দাড়ালো , চোখে রঙিন চশমা পড়া এক যুবক। আর তার বেশ-ভুষা দেখে বোঝা যাচ্ছে বেশ বড় লোকের ছেলে হবে। ঠিক পিছনেই বসে রয়েছে শাখি, লাল টুকটুকে জামা আর রঙিন চশমা পরে। সে বাইক থেকে নেমে বললো, স্বপ্নীল পরিচিত হও আমার বয় ফ্রেন্ড রবিনের সাথে।আর স্বপ্নীলকে পরিচয় করিয়ে দিল বন্ধু হিসেবে। যাক কথার ছলে শাখি বললো স্বপ্নীল রবিন কিন্তু বিশাল বড়লোক বাবার একমাত্র সন্তান, কি কেমন লাগলো আমার পছন্দ ? কোন উত্তর দিতে পারলো না স্বপ্নীল। শুধু মাত্র ছটফট করতে লাগলো ওখান থেকে সরে আসার। অবশেষে তারা বিদায় নিল আর স্বপ্নীলের হৃদয়ে রেখে গেলো সীমাহীন যন্ত্রনা। সে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করতে লাগলো কেন তার সাথে এমনটা হলো আর কি অপরাধ ছিল তার ? এরপর থেকে স্বপ্নীল চিরতরে মানসিক রোগী হয়ে গেলো 😕।
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1543698937877389312?t=0eXWgeVHqdLNcV5-kmTawA&s=19
আপনি ঠিকই বলেছেন জীবন বড়ই নির্মম বাস্তবতায় ঠাসা। শাখি ও স্বনীল এর গল্পটি পড়ে যদিও প্রথমের দিকে ভালো লেগেছে। তবে শেষের দিকে খুব খারাপ লাগলো। এখন আসলে অধিকাংশ মেয়েরা গরিব ছেলেদের ভালোবাসার মূল্য দিতে যানে না। তবে এরাই হলো সত্যি কারের প্রেমিক। আপনি বাস্তব প্রেমের গল্প শেয়ার করেছেন। আপনার পোস্ট ভিজিট করে সব সময়ই ভালো লাগে। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় এই কামনাই করি।
ধন্যবাদ লিমন। আসলে পৃথিবীতে ভালোবাসা অর্থের কাছে বিক্রি হয়ে যায় নিমেষেই। মানুষ একমাত্র অর্থের কারনে স্বার্থপর হয়ে যায়। তবে প্রকৃত ভালোবাসা কখনো বিক্রি হয়না।
আপনি ঠিকই বলেছেন 💞
কিছু কিছু পরিস্থিতি এমন জায়গায় নিয়ে দাঁড় করিয়ে দেয় তখন মনে হয় যেন গরীব হওয়াটা একটা অভিশাপ। তবে প্রেম-ভালোবাসা জিনিসটা এমনই একটা জিনিস যা সত্যি ভালোবাসা মানুষকে পাগল করে দেয়। দারুন ছিল আপনার গল্প। আমাদেরকে এত সুন্দর একটি গল্প উপহার দেওয়ার জন্য, আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা ও অবিরাম।
পৃথিবীতে যাদের টাকা কিছুটা কম তারা ভীষণ কষ্টে থাকে সবদিক থেকেই। তাঁরা না পায় ভালোবাসা আর না পায় জীবনে ভালোভাবে বাঁচার সুখ। তবুও জীবন এগিয়ে নিয়ে যেতে হয় এই মানুষগুলোর। তবে যারা অর্থের নেশায় মোহিত একদিন সব মাটির সাথে মিশে যাবে সেটা ভাবতেই পারেনা।
আপনার লিখিয় 'শাখি তোমায় ভালোবাসে অতৃপ্ত হৃদয়' গল্পটির প্রতিটি পর্বের মতই এবারের শেষ পর্বটি বেশ ভালো লেগেছে। জীবনে চলতে হলে উঠা নামা আসবেই। অনেক কঠিন সিচুয়েশন আমাদের ফেইস করতে হবে। গল্পটি ভালো ছিলো। নতুন গল্পের অপেক্ষায় থাকবো।
ধন্যবাদ ভাই আমার গল্পটা আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভীষণ খুশি হলাম।
পরবর্তী গল্প আসছে নিজের ভালোবাসার।।
আশাকরি সাথেই থাকবেন।