প্রেমের গল্প:) শাখি তোমায় ভালোবাসে অতৃপ্ত হৃদয় 💓 (পর্ব- ০২)
প্রেমের গল্প:)
শাখি তোমায় ভালোবাসে অতৃপ্ত হৃদয় 💓
শাখি তোমায় ভালোবাসে অতৃপ্ত হৃদয় 💓
স্বপ্নীল শাখির ফোন পেয়ে অনেকক্ষন কথা বলতে পারেনি। অবশেষে তার নিরবতা ভাঙলো, সে বললো সত্যিই আপনি ? ফোনের অপর পাশ থেকে শাখি হাসছে। হ্যা সত্যিই আমি। আপনাকে এক কথায় একজন চমৎকার মানুষ মনে হয়েছে তাই আর ফোন না করে থাকতে পারলাম না। মনে মনে স্বপ্নীল চিন্তা করছে আমিতো হৃদয় উজাড় করা ভালোবাসা নিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে বারবার প্রার্থনা করছিলাম যাতে অন্তত একবার আপনার সাথে যেন আবার দেখা হয়। কিন্তু সে দূর্বলতা প্রকাশ করলো না। সে বললো ভীষণ খুশি হলাম আপনার ফোন পেয়ে তবে আমিও কিছুটা ভাবছিলাম আপনার কথা। শাখি বললো তা তো ভাববেন, যেভাবে তাকাচ্ছিলেন আমার দিকে। স্বপ্নীল কিছুটা লজ্জা পেয়ে গেলো। বললো আপনার হরিণী চোখের চাহনি আমার চোখের সামনে ভাসছে আর অমন মিষ্টি দেখতে মানুষকে না দেখে থাকা যায়। শাখি বেশ মিষ্টি করে অনেকক্ষন হেসে নিল। এদিকে স্বপ্নীলের হৃদয়ে যেন বিদ্যুৎ খেলে গেল। সে বললো যাক আমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হওয়া দরকার। শাখি তার পরিচয় দিল আর স্বপ্নীল তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানালো তাকে। ঐদিন তারা প্রায় আধ ঘন্টা কথা বললো । এরমধ্যে শাখির ফোনের টাকা শেষ হয়েছে এরপর স্বপ্নীলের ফোনের টাকাও শেষ। আসলে স্বপ্নীল মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। বাবা যা টাকা দেন তা দিয়ে সে লেখাপড়ার খরচ চালায়, বাড়তি কিছু লাগলে মায়ের স্বরনাপন্ন হতে হয়। এদিকে শাখি বেশ স্বচ্ছল পরিবারের একমাত্র মেয়ে তাই তার কোন অভাব অপূর্ণ থাকে না।
সকালের দিকটায় স্বপ্নীলের কলেজে ক্লাস ছিল এবং ভীষণ ব্যাস্ত সময় পার করলো। দুপুরের পর খাবার সেরে কিছুটা বিশ্রামের জন্য বিছানায় গা এলিয়ে দেখার পর শাখির কথা মনে পরে গেলো। কিন্তু তার ফোনে টাকা নেই আজ তাই চুপচাপ চোখ বন্ধ করে শুয়ে তার কথা মনে করতে লাগলো। অদ্ভুত ব্যাপার হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো। ফোনটা হাতে নিয়ে সে বেশ অবাক হলো কারন শাখি ফোন করেছে। তাড়াতাড়ি রিসিভ করলো। অপর প্রান্ত থেকে মিষ্টি কন্ঠস্বর, কি খবর মশাই ? কোন খবর নেই যে। স্বপ্নীল কি বলবে, বললো আসলে সকালে ক্লাস নিয়ে বেশ ব্যাস্ত ছিলাম আর ফোনে টাকা ঢুকাতে মনে নেই। ও তাহলে এই সমস্যা মশাইয়ের। ঠিক আছে টাকা আমি ঢুকিয়ে দিচ্ছি কিছুক্ষণ পর। স্বপ্নীল বলে উঠলো আরে নাহ্ না, আমি বিকালে ভরে নেব। কিন্তু সত্যি হলো তার কাছে টাকা নেই।
এবার শাখি বলে উঠলো তা কি খেলেন দুপুরে ? স্বপ্নীল হোস্টেলের খাবারের কিছুটা বর্ননা দিল। এবার স্বপ্নীল শাখির কিছু স্বপ্নের কথা জিজ্ঞেস করলো। শাখি বললো আমি একটি সুখী জীবন চাই যেখানে আমার কোন দুঃখ থাকবে না আর আমি যা চাইবো তাই যেন পাই। এই যেমন ধরুন আমি আপনার বন্ধুত্ব চেয়েছি আমি পেয়েছি, ঠিক সেভাবেই সব পেতে চাই আমার জীবনে। স্বপ্নীল বেশ বিচক্ষণ মানুষ তাই তার উত্তর স্বপ্নীলের তেমন পছন্দ হলো না। কারন জীবনে সুখ এবং দুঃখ পাশাপাশি থাকে আর মানুষের সব চাওয়া কখনো পূর্ণ হতে পারে না। এবার স্বপ্নীলের বললো তার স্বপ্ন হচ্ছে মানুষের মতো মানুষ হওয়া এবং সততার সাথে জীবন যাপন করা। এবার শাখি কিছুটা হেসে উত্তর দিল হায়রে এই দুনিয়ায় তো সৎ মানুষের ভাত নেই। যাক এই প্রথম স্বপ্নীল বুঝতে পারলো শাখি একটু অন্য ধাঁচের মেয়ে, হয়তো তার সাথে মিলবে না। কিন্তু কি করবে সে তার মনে সে গেঁথে গেছে আর এক অচেনা তীব্র আকর্ষণ কাজ করে সারাক্ষণ। শাখির বললো আমার বাবা সরকারি চাকরি করলেও প্রচুর টাকা ইনকাম করে আর আমি যা চাই আমার সব স্বপ্ন পূরণ করে। স্বপ্নীল চুপ করে রইলো। এবার শাখি বললো কি ব্যাপার তুমি চুপ করে রইলে যে ? এবার স্বপ্নীল বেশ অবাক হলো এই প্রথম সে তাকে তুমি বলেছে। স্বপ্নীল বললো আপনি তাহলে আমাকে তুমি বললেন। মিষ্টি হেসে সে উত্তর দিল আর কতক্ষন এই আপনি আপনি করা যায়। আচ্ছা কিছুক্ষণ পর তোমার ফোনে টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি আর কাছাকাছি একটি পার্কের ঠিকানা দেয় এবং তাকে আসতে বলে ফোন রাখলো। বেশ খানিকটা সুখের অনুভুতি হৃদয়ে দোলা দিয়ে গেল স্বপ্নীলের হৃদয়ে কারন তার প্রেয়সীর সাথে আজ দেখা হবে। স্বপ্নীল সিদ্ধান্ত নিল তাকে আজ তার ভালোবাসার কথাটা বলতে হবে হয়তো সেও তাকে ভালোবাসে।
বিকেলে সে তার সবথেকে প্রিয় সাদা শার্ট আর একটি জিন্স প্যান্ট পরলো, এতেই তাকে বেশ পরিপাটি আর সুদর্শন দেখাচ্ছিল। কিন্তু কি উপহার নেবে তার জন্য 🤔 অনেক চিন্তা করে একটি টকটকে লাল গোলাপ 🌹 নিল। কিন্তু গোলাপটি সে যাতে দেখতে না পায় তাই তার শার্টের ভেতরে গেঞ্জির মধ্যে নিয়ে নিল। এতে গোলাপের কাঁটা তার বুকে বারবার বিঁধে যাচ্ছিল আর সত্যিই একটি অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছিল। এদিকে শাখি নীল রঙের জামা পরে তারজন্য অপেক্ষা করছে। স্বপ্নীলকে দেখে একটু মিষ্টি হেসে ভেংচি কেটে বললো শার্টটা বেশ ভালোই মানিয়েছে তোমায়। স্বপ্নীল যেন কিছুটা লজ্জা পেল। এরপর দুজনেই কিছুক্ষণ নিরব, মনে হচ্ছে কেউ কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছেনা। এদিকে গোলাপের কাঁটা তার বুকে বারবার খোঁচা দিয়ে বলছে দিয়ে দে তোর হৃদয়ের গোলাপ প্রিয়তমাকে। কিছুক্ষণ পর শাখি নিরবতা ভেঙ্গে বললো বাদাম খাওয়াবে আমায় ? স্বপ্নীল বাদাম ওয়ালাকে ডাক দিয়ে বাদাম কিনে নেয় এবং বাদাম খেতে শুরু করে।
একটু পর শাখি তার ব্যাগ খুলে একটি ভীষণ দামী ঘড়ি এবং একটি ডায়রী উপহার দেয় স্বপ্নীলকে। এগুলো নিতে ইতস্তত করছিল স্বপ্নীল। শাখি বলতে শুরু করলো তার আংকেল ভীষণ বড়লোক এবং এগুলো বিদেশ থেকে এনেছিল। স্বপ্নীল উপহার গ্রহণ করলেও এর মধ্যে কেমন যেন একটা আভিজাত্যের গন্ধ পেল। এখন বেচারা স্বপ্নীলের তো দেয়ার কিছু নেই সে বুকের ভেতর থেকে লাল টকটকে গোলাপ তাকে উপহার দিল তবে বুকের উপর রাখার দরুন পাপড়ি কিছুটা নষ্ট হয়েছে। শাখি হেসে কুল পাচ্ছে না। সে বলেই ফেললো এই সামান্য গোলাপ আবার এভাবে লুকিয়ে আনতে হয়। স্বপ্নীল তার কথায় কিছুটা কষ্ট পেলো এবং তার হৃদয়ের কথা হৃদয়েই চাপা পরে গেল।
শাখি আর স্বপ্নিলের ভালোবাসার গল্পটি করে পড়ে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া । ফাইনালি স্বপ্নীল তার ভালোবাসার কথাটি আজকেও বলতে পারল না । নিশ্চয়ই পরবর্তী পর্বে অবশ্যই শাখিকে বলে ফেলবে তার ভালোবাসার কথা । খুব সুন্দর ছিল গল্পটি । পড়ে ভালো লাগলো ।
এটাই এ গল্পের আসল চমক।
পরবর্তী পর্ব আসছে খুব তাড়াতাড়ি।
সত্যিই আমি আপনার শাখি আর স্বপ্নীল গল্পটি পড়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এধরনের রোমান্টিক গল্প গুলো পড়তে আমার ভীষণ ভালো লাগে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় এই কামনাই করি।
ধন্যবাদ লিমন চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
পরবর্তী পর্ব আসছে খুব শীঘ্রই।
শাখি আর স্বপ্নিলের ভালোবাসার গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো আমার কাছে। সত্যি অসাধারণ ভাবে আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল
ধন্যবাদ আপু আমার গল্পটি পড়ার জন্য 🥀
চেষ্টা করেছি সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে।
সুন্দর ভালোবাসার গল্পটি মিস করে গেছি মনে হচ্ছে। তবে সময় পেলে আগের পর্ব পড়ে নিব। ভালোবাসার গল্প গুলো পড়তে অনেক ভাল লাগে।
ধন্যবাদ ভাই।
চাইলে আগের পর্ব পড়ে আসতে পারেন।
খুব ভালো থাকুন দোয়া রইল 🥀
চলবে এই কথাটির অপেক্ষায় ছিলাম ।আপনার গল্পের প্রেমে পড়ে গেলাম ভাই ।তাড়াতাড়ি তৃতীয় পর্ব আমাদের মাঝে উপহার দিন।দোয়া রইল এবং শুভকামনা রইল
ধন্যবাদ ভাই।
তৃতীয় পর্ব খুব তাড়াতাড়ি আসছে।