জেনারেল রাইটিংঃ- পানিতে ডুবে যাওয়া যুবক
আজ - বৃহস্পতিবার
বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটা বাস্তব ঘটনা শেয়ার করব যে ঘটনাটা আমাদের কুষ্টিয়াতেই ঘটেছিল। সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে ফেসবুকে অনেকগুলো নোটিফিকেশন আসলো তখন আমি ফেসবুকে ঢুকে কয়েকটা ভিডিও স্ক্রল করতেই হঠাৎ একটা নিউজ সামনে ভেসে উঠলো সেটা হচ্ছে আমাদের কুষ্টিয়ায় পলিটেকনিক এ একজন যুবক পানিতে ডুবে মারা গেছেন। তবে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে ওইখানের সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল সিসিটিভি ক্যামেরা তে সম্পূর্ণ ঘটনাটি রেকর্ড হয়েছে কিন্তু একজনাও সেখানে ছিল না যে সে ছেলেটার সাহায্য করবে। আসলে এগুলো দেখতেও বেশ কষ্ট লাগে মনোযোগ দিয়ে পুরো দৃশ্যটা দেখলাম কিভাবে উনি মারা গেলেন এবং কিভাবে উনি পানির ভিতরে বাঁচার হাজারো চেষ্টা করছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত পানিতে ডুবে গেলেন। এমনই একটা সেম ঘটনা আমাদের এলাকাতে ঘটেছিল তখন আমি ক্লাস ফাইভে পড়তাম। আমাদের প্রাইমারি স্কুলের পিছনের দিকে অনেক বড় একটা পুকুর ছিল যে পুকুরে সবাই গোসল করতেন এবং মাছ ধরতেন। এই পুকুরটা আয়তনে বড় হওয়ার কারণে আমাদের অনেক ভালই হয়েছিল কারণ আমরা এখানে ঝাপড় খেলতে পারতাম এবং গ্রামের অনেক কাজে আসতো এই পুকুরটা।
সেই সাথে প্রতিবছর এই পুকুর থেকে বেশ বড় বড় মাছ উৎপাদন হতো যেগুলো মাঝেমধ্যে আমাদেরও বাসার জন্য ক্রয় করে আনতো এবং ওগুলো আমরা খেতাম অনেক সুস্বাদু, সুস্বাদু মাছ এখানে পাওয়া যেত। একদিন আমাদের স্কুল ছুটি হওয়ার পরে বন্ধুরা মিলে সবাই সিদ্ধান্ত নিলাম যে ওই পুকুরটাতে আমরা গোসল করব। তাই যেমন সিদ্ধান্ত তেমন কাজ, আমরা আমাদের এলাকার প্রায় কয়েকজনকে নিয়ে এবং স্কুল পারার কয়েকটা ছেলে মেয়েকে নিয়ে গোসল করতে নেমে পড়লাম তখন তখন হঠাৎ একজনা সাঁতার কাটতে কাটতে তলিয়ে যাচ্ছিল। আমরা তো প্রথমে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম এবং আমাদের মধ্যেও যে সবচেয়ে লম্বা ও গিয়ে ওকে টেনে পানি নিয়ে আসলো সে যদিও অনেক বেশি পানি খেয়ে ফেলছিল তবুও তার কিছু হয়নি। এই ঘটনার পর থেকে আমরা আর একসঙ্গে গোসল করতে নামতাম না কারণ আমাদের এলাকা থেকে ওই পুকুরটা বেশি দূরেই ছিল তাই আমরা এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় আর গোসল করতে যেতাম না। আমাদের ওই গ্রামে যেই ছোট ছোট পুকুর গুলো ছিল সেখানেই আমরা গোসল করতাম।
কিন্তু কয়েক মাস যাওয়ার পরে হঠাৎ সোনাগেল যে সৌখিন পানিতে ডুবে মারা গেছে। আমরা তো সবাই হতবাক হয়ে গেলাম কারণ ও মোটামুটি বেশ লম্বা ছিল তবুও পানিতে কিভাবে ডুবলো তো এসব কিছু না ভেবে আমরা দ্রুত এক দৌড়ে চলে গেলাম ওদের বাড়িতে এবং ওখানে গিয়ে দেখি অনেকে কান্নাকাটি করছে তবে একজন মানুষ ওর বুকে চাপ দিচ্ছিল এবং মুখ দিয়ে ফু দিচ্ছিল একটি এক পর্যায়ে ওর মুখ থেকে অনেকগুলো পানি বের হয়ে গেল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার আর জ্ঞান ফিরিনি। নিজের চোখে এমন জলজ্যান্ত একজন এর মৃত্যু দেখে সত্যিই খুব কষ্ট লাগছিল এবং সবচেয়ে বড় কষ্টের বিষয় ছিল যে ওই ছেলেটাই তার পরিবারের একমাত্র সন্তান ছিল। তার মা এর কান্না দেখে আমরাও কান্না করে দিয়েছিলাম কারণ তারা যে কি পরিমাণে একটা ধাক্কার মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল হয়তো বা তারাই উপলব্ধি করতে পারবে। কারণ যখন পরিবারের আর কেউ মারা যায় তখন সেই এটা সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারে যে এটা কতটা কষ্টের। সৌখিন বয়সে কম হওয়ার কারণে হয়তো বা কোনোভাবে সে সঠিকভাবে সাঁতার না জানাতে হয়তো বা সে মারা গেছে।
কিন্তু আজকের নিউজ যেটা দেখলাম সেটা হচ্ছে প্রায়ই ২৫ থেকে ২৬ বছর বয়সী যুবক হবে উনি যিনি পানিতে ডুবে মারা গেলেন। অথবা তাদের যেই সঙ্গী সাথীগুলো রয়েছে তারা যদি একটু রেস্পন্সিবল হয়ে উনার দিকে একটু খেয়াল রাখত তাহলে হয়তোবা এই ঘটনাটা ঘটতো না। আর আমার মনে হয় যে ছোটবেলা থেকে আমাদের সবার সাঁতার জানা উচিত কারণ জীবনের কোন একটা পর্যায়ে সাঁতার অবশ্যই একটা মানুষের জানা লাগে। ভাবুন আপনি কোন একটা নদীতে পারাপার হচ্ছেন এবং হয়তোবা একটা দূর্ঘটনাবশত আপনাদের নৌকাটা পানিতে ডুবে গেল তখন যারা পানিতে সাঁতার কাটতে পারবে তারাই হয়তোবা বাঁচতে পারবে আর যারা পারবেনা তারা সাহায্য পৌঁছানোর আগেই পানিতে ডুবে যাবে তাই অবশ্যই আমাদের সাঁতার শেখা প্রয়োজন আর এটা অনেক সোজা একটা জিনিস যে কেউ চাইলেই সাঁতার শিখতে পারবে। জানিনা ওই যুবকের পরিবারের উপর দিয়ে এখন কি যাচ্ছে হয়তো বা তারা এখন দুঃখে কাতরে তাদের খারাপ অবস্থা তবে ওই যুবকের জন্য দোয়া করি সে যেন জান্নাতুল ফেরদৌস তার কপালে নসিব হয় এবং তার পরিবারের সবাই যেন এটা সহ্য করতে পারে এবং ধৈর্য ধরতে পারে আল্লাহ তাদের এই পরীক্ষাটা সহজ করে দিক।
যাহোক সবাইকে ধন্যবাদ এতক্ষণ পাশে থেকে আমার ব্লগ টি উপভোগ করার জন্য আবারো খুব সেগুলো দেখা হচ্ছে নতুন কোন পোস্টে ততক্ষণ সবাই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন আল্লাহ হাফেজ।
ব্লগার | @emonv |
---|---|
ডিভাইস | Tecno camon 20 |
শ্রেণী | লাইফ স্টাইল |
লোকেশন | মৎস্য ডিপ্লোমা হোস্টেল |
আমার নাম মোঃ ইউনুস আলী ইমন। বর্তমানে আমি সিরাজগঞ্জ মৎস ইনস্টিটিউট এর একজন ছাত্র হিসেবে পড়াশোনা করছি। এছাড়া পরিচয় দেওয়ার মতো এখনো কিছু করে উঠতে পারেনি তবে নিজের ব্যক্তিত্ব এবং ক্যারিয়ারের উপরে কাজ চলমান......। আমি নিজেকে ভেঙে চুড়ে নতুন করে আবিষ্কার করতে অনেক পছন্দ করি এবং আমি মানুষকে সাহায্য করতে অনেক ভালোবাসি। আমি প্রায়শই নিজেকে আবিস্কার করি। কেননা এটা আমার কথায় এবং লিখাতে নতুন স্বাদ যুক্ত করে, যার ফলে আমি নিজের সবথেকে ভালো টুকু আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে পারি। আমি প্রতিদিন একবার নিজের সাথে কথা বলি, কারণ এটা আমার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দেয়। আমি ভ্রমণ করতে এবং ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। আমি প্রতিনিয়ত নতুন ,নতুন মানুষদের সাথে মিশে তাদের জীবনের অভিজ্ঞতার ভালোটুকু আমার জীবনে বাস্তবায়িত করতে পছন্দ করি। আপনাকে স্বাগতম আমার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হওয়ার জন্য। ভালোবাসা রইলো অবিরাম সবাইকে 💝।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার গল্পটি পড়ে অনেক খারাপ লাগলো। আসলে ভাইয়া বর্তমান বাচ্চারা বেশির ভাগ সাঁতার জানে না। সত্যি বাচ্চাদের সাঁতার শিখানো জরুরি। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমি সাঁতার জানি না তাই এরকম ভয়ংকর বিষয় কল্পনা করলেও হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসে। বিশেষ করে নৌকায় উঠলে তো আরো বেশি ভয় লাগে। তাছাড়া ঠিকই বলেছেন ওই লোকটির সাথের লোক গুলো যদি তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে তাহলে হয়তো মারা যেত না। সাঁতার না জানলে পানি থেকে সাবধান থাকা ভালো।