জেনারেল রাইটিংঃ বৃষ্টির দিনের ছোট‌ মাছ

in আমার বাংলা ব্লগlast month (edited)

আজ - মঙ্গলবার

২১ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অক্টোবর ০৮, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ

🌺 চলুন শুরু করি 🌺

হিন্দু ভাইদের নমস্কার এবং মুসলমান ভাইদের কে সালাম জানিয়ে আজকের নতুন আরেকটি ব্লগ শুরু করতে যাচ্ছি..! আশা করি সবাই শেষ পর্যন্ত পাশে থাকবেন

আজকে বিলের দিকে গিয়েছিলাম যাওয়ার পরে দেখছি যে অনেক ছেলে-মেয়ে বসে, বসে বিলে বরশি দিয়ে মাছ ধরতেছে। বৃষ্টির সময় বিলে খালে এবং পুকুরে মাছ ধরার কিন্তু একটা ট্রেন্ড হয়ে গেছে আর মাছ ধরতে আমিও অনেক পছন্দ করি। তবে একটা বিষয় আছে সেটা হচ্ছে বরশি দিয়ে মাছ ধরতে হলে কিন্তু অনেক ধৈর্য লাগে যেটা আমার একেবারেই কম। তাই বরশি দিয়ে মাছ ধরাটা আমার কাছে একটু কঠিন কাজ মনে হয়। তবে বরশিতে যখন টপাটপ মাছ উঠে তখন কিন্তু একটা অন্যরকম আনন্দ পাওয়া যায়। আর মাছ ধরেও যেমন আনন্দ পাওয়া যায় তেমনি ভাবে মাছ ধরা দেখেও কিন্তু অনেক বেশি মজা পাওয়া যায়। তো ওদের মাছ ধরা দেখে আমার সেই ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেছিল আজ। আমরা ছোটবেলায় এভাবেই মাছ ধরতাম এবং যখন বৃষ্টির পানি শুকিয়ে যেত তখন আমরা খাল বিল গুলোতে ছোট, ছোট হাপা তৈরি করে ওর ভিতরে ডালপালা রেখে দিতাম এবং কয়েকদিন পরে ওখান থেকে অনেক বেশি মাছ পাওয়া যেত। যখন আমাদের জমিতে এমন পানিতে ভরে যেত তখন আমি এবং আমার আব্বু দুজনে মিলে ছোট এমন হাপা তৈরি করতাম।

1000001370.jpg

source

তবে আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে হাপা তৈরি করার কয়েক সপ্তাহ পর থেকেই মাছ ধরা যেত। কিছুদিন পরই লক্ষ্য করতাম যে হাপার ভিতরে অনেক ধরনের মাছ ফুটতেছে এবং যখন এটা দেখতাম তখন বুঝতে পারতাম যে এর ভিতর এখন মাছ চলে এসেছে। তখন আবার দুই দিকের মুখ বন্ধ করে ছাকা শুরু করে দিতাম এবং ওখান থেকে অনেক মাছ পেতাম। বলা যায় যে একটা আপা থেকে প্রতিদিন দুই থেকে তিন কেজি মাছ পেতাম যেটা বেশ ভালো একটা বিষয় ছিল। তবে এটার জন্য কিন্তু অনেক পরিশ্রম করা লাগতো বিশেষ করে হাপা কাটতে অনেক বেশি সময় লাগতো এবং অনেক বেশি পরিশ্রমের কাজ ছিল আর যদি হাফার যেই বাঁধ গুলো রয়েছে ওটা যদি মজবুত না করা যেতো সেই ক্ষেত্রে পানির ঢেউ এসে ওটা ভেঙ্গে দিত তখন এটা ঠিক করতে অনেক বেশি কষ্ট হতো। তাই আমরা যখন এটা তৈরি করতাম তখন মোটা করে বাঁধ দিতাম তারপর তৈরি করতাম। বৃষ্টির পানিতে আবার স্রোতের মুখে আমরা বৃত্তি পেতে রাখতাম হয়তোবা বিত্তি আপনারা অনেকেই চিনে থাকবেন আবার অনেকে নাও চিনতে পারেন এটা এক ধরনের ঠোঙ্গা মত হয় যার ভিতর ছোট মাছগুলো পড়ে।

1000000893.jpg

source

তো এভাবে স্রোতের মুখে পাঁচ সাতটা যদি পেতে রাখা যেত তাহলে সেখান থেকে মোটামুটি দুই থেকে তিন কেজি মাছ পাওয়া যেত। আর ছোট মাছ গুলো যখন চচ্চড়ি করা যেত তখন তো খেতে আরো বেশি সুস্বাদু লাগতো। আর আমরা সবাই জানি যে ছোট মাছে অনেকপ্রোটিন থাকে এবং এটা চোখের জন্য অনেক উপকারী। সেই সাথে আমরা বৃষ্টির দিনে কারেন্ট জাল পেতে মাছ ধরতাম তো এইজালের একটা সুবিধা ছিল কি যে এই জালে যদি কোন মাছ বেঁধে যেত তাহলে সেই মাছ আর বের হতে পারত না তাই আমরা দুই থেকে তিন ঘন্টা পরপরই এই জাল তুলে, তুলে দেখতাম যে মাছ কয়টা এখানে বেধেছে এবং তখন ওই মাছগুলো জাল থেকে খুলে নিতাম কারণ যদি দীর্ঘ সময় ধরে ওই মাছ ওখানে বেঁধে থাকে সেক্ষেত্রে মাছটি মারা যায়। আর যদি মাছ মারা যায় এবং ওটি যদি পানির ভিতরে থাকে তাহলে ওটা খুব দ্রুতই নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমরা তিন থেকে চার ঘন্টা পর, পর মাছ ওখান থেকে সংগ্রহ করে নিতাম। তো এভাবে বৃষ্টির দিনে আমরা অনেক মাছ ধরতাম এবং অনেক সময় দেখা যেত যে মাছ অনেক বেশি হয়ে গেছে তখন আমরা আরও তে গিয়ে ওগুলো বিক্রি করে দিতাম।

1000000894.webp

source

বৃষ্টির দিনে এটাই ছিল আমাদের রোজকারের প্রধান পন্থা। আবার বৃষ্টির দিনে খালের ভিতরে যে বড়, বড় জালগুলো রয়েছে ওগুলোতেও প্রচুর পরিমাণে মাছ উঠত। আর রাস্তার পাশে সবাই দেখতাম যে পুঁটি মাছ ধরার প্রতিযোগিতা লাগাতো। অনেকে বর্ষি দিয়ে পুটি মাছ ধরত এবং অনেকে রয়েছে ওই পুটি মাছ বড়শিতে গেছে বাইম মাছ বা চ্যাং মাছ ধরার চেষ্টা করত যেটা অনেক মজাদার ছিল। আমরা মূলত একটি ছোট মাছ ও বড়শিতে গেছে সারারাত রেখে দিতাম তখন দেখা যেত যে দশটা বর্ষী যদি এভাবে রেখে দেওয়া যেত তাহলে ওখান থেকে তার থেকে পাঁচটাতে বড় , বড় চেং মাছ বেধে থাকতো তখন আমরা সকাল বেলায় উঠে ওই মাছগুলো ওখান থেকে ছুড়িয়ে নিতাম। আবার অনেকে রয়েছে যে ষোলা পদ্ধতিতে মাছ ধরত। আপনারা হয়তোবা দেখে থাকবেন যে কিছু, কিছু শোলা বড়শিতে বেঁধে ওগুলো পানির ভিতরে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং দুই থেকে চার ঘন্টা পর ,পর ওই শোলা গুলোতে মাছ বেধেছে কিনা সেগুলো দেখা হয়। তো বৃষ্টির দিনে মাছ এমন করে আমাদের অনেক পন্থা ছিল যে পন্থা অবলম্বন করে আমরা দিনশেষে একটা ভালো পরিমাণের মাছ সংগ্রহ করতে পারতাম।

1000000895.jpg

source

যত দিন যাচ্ছে তখন তত আমরা অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হয়ে যাচ্ছি আর ওই সময় গুলো যেন আমাদের লাইফ থেকে চলে যাচ্ছে। তবে ছোটদের যখন ওই ভাবে মাছ ধরতে দেখি তখন সত্যি অনেক ভালো, লাগে। যাই হোক এটাই ছিল আমার ছোটবেলার স্মৃতি এবং মাছ ধরার গল্প ধন্যবাদ সবাইকে এতক্ষন পাশে থেকে আমার ছোট্ট উপভোগ করার জন্য খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে আমি নতুন কোন কিছু নিয়ে হাজির হব ইনশাল্লাহ সবাই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন আল্লাহ হাফেজ।

ব্লগার@emonv
ডিভাইসTecno camon 20
শ্রেণী ‌জেনারেল রাইটিং

🔚 সমাপ্তি

Screenshot_20240511-225100.jpg

আমার নাম মোঃ ইউনুস আলী ইমন। বর্তমানে আমি সিরাজগঞ্জ মৎস ইনস্টিটিউট এর একজন ছাত্র হিসেবে পড়াশোনা করছি। এছাড়া পরিচয় দেওয়ার মতো এখনো কিছু করে উঠতে পারেনি তবে নিজের ব্যক্তিত্ব এবং ক্যারিয়ারের উপরে কাজ চলমান......। আমি নিজেকে ভেঙে চুড়ে নতুন করে আবিষ্কার করতে অনেক পছন্দ করি এবং আমি মানুষকে সাহায্য করতে অনেক ভালোবাসি। আমি প্রায়শই নিজেকে আবিস্কার করি। কেননা এটা আমার কথায় এবং লিখাতে নতুন স্বাদ যুক্ত করে, যার ফলে আমি নিজের সবথেকে ভালো টুকু আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে পারি। আমি প্রতিদিন একবার নিজের সাথে কথা বলি, কারণ এটা আমার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দেয়। আমি ভ্রমণ করতে এবং ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। আমি প্রতিনিয়ত নতুন ,নতুন মানুষদের সাথে মিশে তাদের জীবনের অভিজ্ঞতার ভালোটুকু আমার জীবনে বাস্তবায়িত করতে পছন্দ করি। আপনাকে স্বাগতম আমার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হওয়ার জন্য। ভালোবাসা রইলো অবিরাম সবাইকে 💝।

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPjVagCKakAuSTsQyj2bkd5a1qGy627tazWyRR8KvSGF5XUzUYGAJxbEm1Wagp...Lv2At2mGmrfEMg6f1U32Fbx5AMXoYvtwxPoGN64iEBA4Rv1YhRRuUftAwRmKthwLZXLSTwWxtFD7Sj1QyBBErTgPny6vsjAKSJvXy9ovR9TDNhx7vqPZQ8nKqg.png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last month 

বৃষ্টির দিনে ছোট‌ মাছ ধরতে কি যে আনন্দ লাগে আসলে তা বলে বোঝানো যাবে না। মাছ খাওয়ার চেয়ে ধরার আনন্দটাই অনেক বেশি হয়ে থাকে। বিশেষ করে যখন জমিতে নতুন নতুন পানি হয় তখন মহল্লার ছেলেরা সবাই মিলে গিয়ে বেশ আনন্দ করে মাছ ধরতাম। আপনার পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.18
JST 0.032
BTC 88358.62
ETH 3275.22
USDT 1.00
SBD 3.02