বন্ধু চল ঘরে আসি(শেষ পর্ব)।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
অর্নবের মামা বাড়ি গিয়ে ওরা বলে বাড়িতে কেউ আছেন। বাড়ি থেকে একজন ভদ্রলোক বের হয়ে আসে, বলে কী চাই। তখন শামসু বলে অর্নব আছে। ঐ ভদ্রলোক বলে অর্নব নামের কেউ তো এখানে থাকে না তোমরা ভুল ঠিকানায় এসেছ। মোস্তাক শামসুকে বলে এই শালা শুনলি না ওর নাম নীরব অর্নব বললে চিনবে। ঐ ভদ্রলোক বলল,, কী নাম বললে নীরব। হ্যা ও এখানেই থাকে ও আমার বোনের ছেলে। রাহুল বলল আমরা ওর বন্ধু। বৃহস্পতিবার আমাদের ঘুরতে যাওয়ার কথা কিন্তু ওর কোনো খোঁজ পাচ্ছি না দুদিন। ও কোথায় বলবেন। ঐ ভদ্রলোক বলল নীরবের বাবার শরীরটা খারাপ তাই ও একটু বাড়িতে গিয়েছে। ওর বাবা সুস্থ্য হলেই ও চলে আসবে। রাহুল বলল ও কবে আসতে পারে জানেন এবং ওর বাড়ি কোথায় বলবেন। জবাবে ভদ্রলোক বলল ওর বাড়ি হচ্ছে ময়মনসিংহ আর ওর আসতে দেরী হতে পারে কয়েকদিন। সমস্যা নেই ও আসলে আমি তোমাদের সঙ্গে দেখা করতে বলব। আসলে ও এতো দ্রুত চলে গেছে তোমাদের জানাতে পারে নাই। ওরা বলল ঠিক আছে মামা আমরা তাহলে আসি ও আসলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলবেন।।
পরেরদিন সবাই ক্যাম্পাসের ক্যান্টিনে কথা বলছে এখন কী করা যায়। শামসু বলল অনেক কষ্টে বাড়িতে রাজি করিয়েছি সব ঠিকঠাক এখন যেতেই হবে ঘুরতে অর্নব এর জন্য অপেক্ষা করে থাকা যাবে না তাহলে আর যাওয়ায় হবে না। অনলও শামসুর কথার সঙ্গে সহমত পোষণ করল। রাহুল বলছে কিন্তু তাই হলে অর্নব কে ছাড়াই যাব। এটা কীভাবে সম্ভব। মোস্তাক বলছে দেখ রাহুল এখন তো কোনো উপায় নেই আমি টিউশনি থেকে ছুটি নিয়ে নিয়েছি পরে চাইলে আর দেবে না। অর্নবের জন্য আমারও খারাপ লাগছে কিন্তু কী করার। চল আমরা গিয়ে ঘুরে আসি পরে না হয় অর্নব আসলে আবার কোথাও যাওয়া যাবে। রাহুল বলল তাই বলে অর্নবকে ছাড়াই যাব। শামসু বলল রাহুল আমারও খারাপ লাগছে কিন্তু ও কবে আসবে এটা ওর মামাও বলতে পারলো না। এতোদূর এসে পরিকল্পনা ক্যানসেল করতে পারব ন। সবকিছু ভেবে রাহুল বলল ঠিক আছে আমরা তাহলে কালকেই যাচ্ছি।।
যাওয়ার দিন কেউ ক্যাম্পাসে আসেনি সবাই যার যার মতো প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। দেখতে দেখতে দিনটা কেটে গেল। সন্ধ্যার পর পর সবাই ঠিক রাত ৮ টার সময় ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে মিলিত হলো। শামসু বলছে তোরা দাঁড়া আমি টিকিট কেটে নিয়ে আসি। মোস্তাক বলল চল আমিও যাচ্ছি তোর সঙ্গে। বেশ অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ট্রেনের টিকিট কেটে নিয়ে আসলো। সবাই অনেক উচ্ছসিত কিন্তু রাহুল কিছুটা চুপচাপ। অনল বলছে কী রে রাহুল তোর কী হয়েছে এতো চুপচাপ কেন তুই। রাহুল বলল না রে অর্নব কে ছাড়া যেতে ভালো লাগছে না। ছেলেটা ঐদিকে ওর বাবাকে নিয়ে কী করছে সেটা জানিও না। ওকে ছাড়া যাচ্ছি। অনল বলল ঠিকই বলেছিস তখন কিছু মনে না হলেও এখন আমারও খারাপ লাগছে।। শামসু বলল যাইহোক এসব বাদ দে চল ট্রেনে উঠি সময় হয়ে এসেছে।। ট্রেন ছাড়তে আর কিছুক্ষণ বাকি।।
সবাই ট্রেনে উঠে সিটে বসে পড়ল। সবাই যে যার ব্যাগ রাখতে ব্যস্ত। ট্রেন এর হুইসেল বাজিয়ে দিয়েছে এখনি ছেড়ে দেবে। মোস্তাক গিয়ে ট্রেনের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ দেখে স্ট্রেশনে অর্নব কাঁধে ব্যাগ। মোস্তাক জোড়ে ডাক দেয় এই অর্নব আমরা এদিকে। এটা শুনে রাহুল শামসু ওরাও চলে আসে। ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। অর্নবও দৌড় দিয়েছে ট্রেন ধরবে অর্নবের কাঁধে ব্যাগ। কোনোরকম দৌড়ে ট্রেন ধরলো অর্নব। রাহুল বলছে কী রে তুই কখন এসেছিস বাড়ি থেকে। অর্নব বলছে এইতো কিছুক্ষণ আগে শুনলাম আমার মামাবাড়িতে গেছিলি। তাই দেরী না করে স্টেশনে চলে এলাম আমিও তো যাব। অর্নবের এইরকম আগমন সবাইকে অবাক করেছে। শামসু হলে অর্নব তুই টিকিট কেটেছিস? মোস্তাক বলে আরে ও ট্রেন মিস করছিল আর তুই টিকিট নিয়ে পড়ে আছিস। শামসু বলছে কিন্তু টিকিট ছাড়া ট্রেনে ভ্রমণ করলে জরিমানা করবে। রাহুল বলছে সেটা দেখা যাবে। এরপর সবাই ওদের সিটে গিয়ে বসে। অর্নব শেষ মূহুর্তে এসেছে এতে সবাই অনেক খুশি। সব বন্ধুদের একসঙ্গে যাওয়া তাহলে হচ্ছে।।(সমাপ্ত)।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আপনাদের বন্ধুত্ব নিয়ে অনেক সুন্দর পোস্ট করেছেন। বন্ধুর মামার বাড়িতে গিয়ে তাকে খোঁজ করলেন কিন্তু সেই নেই তার মামা প্রথম এখানে নেই এই নামে কেউ নেই। তারপর বলল আমার ভাগিনা বাবার অসুস্থ চাই তাই গ্রামের বাড়িতে গেল। এরপর আপনারা চলে আসলেন তারপর দিন থেকে ট্রেনের টাইমে আপনার বন্ধু আপনাদের সাথে অ্যাড হলেন। সত্যি বন্ধুত্বের মর্ম খুব সুন্দর করে আপনি আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করেছেন। শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে।
কথায় বলে ভাত ছাড়া যায় তবু সঙ্গী ছাড়া যায় না। বেশ ভালো লাগলে আপনাদের বন্ধুত্বের বন্ধন। বন্ধুদের নিয়ে বেশ ভালই ঘোরাঘুরি ও এনজয় করলেন। আপনাদের সকল বন্ধুর জন্য রইল শুভকামনা।