আফসোস ( শেষ পর্ব )।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
তমা সোহানকে নিয়ে বেশ ভালোই ছিল। কিন্তু বিবাহিত জীবনের বছরখানেক যেতেই তমার উপর হতে থাকে নির্যাতন। তমা কোনো ভুল করলেই গালাগালি করত সোহান। এবং কথায় কথায় মৃদলকে তুলে কথা বলত। তমা তখন বুঝতে পারে সে মৃদুলকে ছেড়ে এসে কতটা ভুল করেছে। এরপর সোহান ৩৬ তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এবং খুব ভালোভাবে প্রিলি তে টিকে যায়। তখন তমা এবং মৃদুলের কোনো যোগাযোগ ছিল না। এরপর রিটেন এবং ভাইবা দিয়ে মৃদুল বিসিএস ক্যাডার হয়ে যায়। যেদিন মৃদুল জানতে পারে সে এখন একজন বিসিএস ক্যাডার সেদিন সে অনেক কেঁদেছিল। সে কান্না করতে থাকে যে সফলতার জন্য তমা তাকে ছেড়ে চলে গেছে সেই সফলতা আজ তার কাছে। কিন্তু যার জন্য এতকিছু সে নেই। মৃদুল তমার দ্বারা প্রতারিত হয়েছে কিন্তু সে ঠিকই সফলতা অর্জন করেছে।
অন্যদিকে প্রতিনিয়ত তমার জীবন দূর্বিসহ হতে থাকে। সোহান ভদ্র সমাজের ডাক্তার রুপী এক অমানুষ। কিন্তু কিন্তু এভাবে আর কতদিন। এক পর্যায়ে তমা এবং সোহানের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তমা ততদিনে অবশ্য খবর পেয়েছে মৃদুল এখন বিসিএস ক্যাডার। কিন্তু মৃদুলের কাছে ফিরে যাওয়ার তার সব পথ বন্ধ। ঐভাবে একা একা দিন কাটাতে থাকে তমা। তমার সঙ্গে মৃদুলের বিচ্ছেদ হয়েছে অনেকদিন। মৃদুল এখন সফল। মৃদুলের জন্য তার বাবা মায়ের কাছে অনেক ভালো ভালো জায়গা থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসা শুরু করে। এবং অনেক সুন্দর একটি মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যায় মৃদুলের। ক্রমেই মৃদুল ভুলে যায় তমার কথা। সে এখন বেশ সুখি। কিন্তু তাকে ধোঁকা দিয়ে চলে যাওয়া তমা সুখি নেই। তমা যেভাবে মৃদুলকে প্রতারিত করেছিল ঠিক একইভাবে সে নিজেও প্রতারণার স্বীকার হয়েছে। একেই বুঝি বলে প্রকৃতির নিয়ম। তমার জীবন এখন শুধুই আফসোসের।
তমার আর কোনো খবর আমি জানি না। তবে সেই মৃদুল ভাইয়ের সঙ্গে আমার মাঝে মাঝেই কথা হয়। তার পরিবারে এখন নতুন সদস্যের আগমন হয়েছে। সবমিলিয়ে সে সুখি আছে। তবে সে আমাকে বলে লেখাপড়া চলাকালীন কোনো মেয়ের সঙ্গে প্রেম করবি না। আর যদি প্রেম করিসও তাহলে বিয়ে করবি না। আসলে এটা কোনো গল্প ছিল না। এটা ছিল একেবারেই বাস্তব। এই ঘটনাটা ছিল আমার বন্ধু নাভিদ এর মামাতো ভাইয়ের। নাভিদের থেকে ঘটনা টা আমি এভাবেই শুনেছি। এবং সেইরকম ভাবেই আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিয়েছি। আমার এই গল্পের সবগুলো পর্ব যারা পড়েছেন তারা হয়তো এইরকম আরও কিছু ঘটনা সম্পর্কে জানেন। কারণ এগুলো এখন নির্মম বাস্তবতা। স্বার্থের টানে প্রিয়জন দূরে চলে যায়। এখানে আমাদের শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছু আছে।
কিছুদিন আগে আমি আমার কলেজ লাইব্রেরিতে বসে ছিলাম। সেখানে দেয়ালে দেয়ালে অনেক বিখ্যাত ব্যক্তির উক্তি ছিল। এর মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটা উক্তি ছিল যেটা আমার খুব ভালো লেগেছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি টা ছিল এমন রাস্তা পার হওয়ার সময়, এবং ক্যারিয়ার গঠনের সময় মেয়েদের দিকে তাকাবেন না। এই দুই ক্ষেএেই দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। এই উক্তিটার একেবারে বাস্তব উদাহরণ ছিল এই ঘটনা। ক্যারিয়ার গঠনের সময় এসব থেকে যত দূরে থাকা যায় ততই ভালো। কিন্তু এখনকার ট্রেন্ড হয়ে গেছে স্কুল থেকে প্রেম শুরু করা। স্যোসাল মিডিয়ার খারাপ ব্যবহারের জন্য এসবের বিস্তার আরও বেশি লাভ করছে। ঘটনা টা আমি ইচ্ছা করেই একটু ছোট করেছি যেন এই পর্বে আমি আমার নিজের কিছু মতামত আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করে নিতে পারি।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
সত্যি বলেছেন ভাইয়া কাউকে ঠকালে নিজেকে এভাবে ঠকতে হয়, এটাই প্রকৃতির নিয়ম। তমা যেমন মৃদুলকে ছেড়ে গিয়েছিল,তার প্রতিফল তমা নিজেই পেয়েছে। কিন্তু অন্য দিকে মৃদুল বিসিএস ক্যাডার হয়ে সফলতা অর্জন করেছে। হয়তো তমাকে ভুলতে মৃদুলের অনেক কষ্ট হয়েছে।জি ভাইয়া এটা গল্প নয় বাস্তব। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি টা ছিল এমন রাস্তা পার হওয়ার সময়, এবং ক্যারিয়ার গঠনের সময় মেয়েদের দিকে তাকাবেন না, একদম সত্যি। ধন্যবাদ
আসলে বাস্তবতাটা এমনই হয়। কেউ কাউকে ঠকালে নিজেকে ঠকতে হয়। কথায় আছে আপনি যদি কারো জন্য গর্ত করেন সেই গর্তে আপনাকেই পড়তে হবে। তমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এই গল্প থেকে আমাদের সকলকে শিক্ষা নেওয়া উচিত এখানে অনেক শিক্ষনীয় বিষয় রয়েছে। যার সাথে এত বছর সম্পর্ক করে বিয়ে করার ফলে শুধুমাত্র নিজের ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে তাকে ভুলে যাওয়া এটা কত বড় যে একটা অমানবিক বিষয় শুধুমাত্র সোহান সেটা বুঝতে পারবে আমরা দূর থেকে শুধু অনুভব করতে পারব সামান্য কিছু। ধন্যবাদ ভাই খুবই চমৎকার একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
spirit and together we fight buddy
চমৎকার একটি গল্প লিখেছেন ভাই। বাস্তবতার একটি নির্মম ইতিহাস। আসলে কাউকে ঠকিয়ে কেউ ভালো থাকতে পারে না। প্রকৃতির খেয়ালেই সেও প্রতারিত হবেই। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
এই গল্পের প্রত্যেকটা পর্ব আমি পড়েছি আমি তো মনে করেছিলাম এটা আপনার নিজের লেখা আর আমি এটাও মনে করেছিলাম যে আপনি দ্বিতীয় পর্বে গল্পটা শেষ করে দিয়েছেন। কিন্তু এখন দেখলাম গল্পটা আরো ভিন্নভাবে শেষ করলেন। এটা যে একটি বাস্তব ঘটনা বুঝতেই পারিনি। আসলে মানুষের জীবনে এরকম অহরহ ঘটে থাকে। আর ছেলেটা ভালো ছিল বিধায় শেষ পর্যন্ত অনেক বড় কিছু হতে পেরেছে আর মেয়েটা প্রতারণার শিকার হয়েছে। আল্লাহ মানুষের শাস্তি ঠিকই দেন আমরাই বুঝতে পারি না।