আফসোস ( দ্বিতীয় পর্ব )।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ শনিবার, ২২ ই, অক্টোবর ২০২২।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে



paper-airplanes-gd039f33b3_1920.jpg

Source



প্রথম পর্বের পর



এরপর একদিন কলেজে গিয়ে তমা তার একজন বান্ধবীর ফোন দিয়ে যোগাযোগ করে মৃদুলের সঙ্গে। তমা সবকিছু খুলে বলে মৃদুল কে। এবং তমা বলে মৃদুল আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচব না। চলো আমরা পালিয়ে বিয়ে করে নি। তখন মৃদুল বলে আমি নিজেই এখনো লেখাপড়া করছি তোমাকে বিয়ে করলে তোমার খরচ কীভাবে চালাবো। তখন তমা বলে একটা ব‍্যবস্থা হয়ে যাব। তমা এবং মৃদুল কোর্টে গিয়ে কোর্ট ম‍্যারেজ করে ফেলে। এরপর তারা দুজন মৃদুলের বাড়ি যায়। মৃদুল তার বাবা মায়ের একমাএ সন্তান তারা মেনে নেয়। কিন্তু তমার বাড়ির লোক মেনে নেয় না। এরপর থেকে তমা মৃদুলদের বাড়িতে থাকতে শুরু করে। তমার লেখাপড়া এবং অন‍্যান‍্য খরচ চালানোর জন্য মৃদুল শুরু করে টিউশনি। কারণ তার পিতার পক্ষে দুজনের লেখাপড়া অন‍্যান‍্য খরচ চালানো ছিল বেশ কষ্টসাধ্য। এভাবে বছর খানেক চলে। ভালোই ছিল দুজন। এরই মধ্যে মৃদুল অনার্স কমপ্লিট করে এবং একটা চাকরি যোগার করে নেয়। ততদিনে তমার বাড়ির লোক মোটামুটি শান্ত হয়েছে। তবে সেরকমভাবে কোনো মিল হয়নি।

প্রথম অবস্থায় মৃদুলের বেতন কম ছিল। তবু সে কষ্ট করে চলতে থাকে। এরপর চলে আসে তমার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। তমা উচ্চমাধ‍্যমিকে বেশ ভালো ফলাফল করে। এবং সে ডাক্তার হতে চাই। সেজন্য তাকে এখন কোনো কোচিং সেন্টারে ভর্তি হতে হবে এডমিশন টেস্ট এর প্রস্তুতির জন্য। কিন্তু সে অনেক খরচ। তমা যখন এই কথা মৃদুলকে বলে। মৃদুল বলে ঠিক আছে। আমি তোমার সব খরচ দেব তুমি প্রেপারেশন নাও। তমা কোচিং সেন্টারে গিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করল। অনেক কষ্ট করে মৃদুল সংসার খরচ চালিয়ে তমার খরচ দিত। যাইহোক কয়েক মাস প্রস্তুতি নেওয়ার পর তমা মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দেয়। এবং তমা সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে চান্স পাই। কিন্তু তমা মনে করেছিল মৃদুল এতো খরচ বহন করতে পারবে না। আমার ডাক্তার হওয়াও হবে না। কিন্তু মৃদুল তমাকে বলে তুমি যাও তোমার সব খরচ আমি দিব মাঝে মাঝে গিয়ে দেখা করে আসব এবং তুমি নিজেও এসো। তমা মৃদুলকে ছেড়ে চলে গেল কলেজ হোস্টেলে। তবে প্রতিদিন দুজনের কথা হতো।



hd-wallpaper-g9afb20640_1920.jpg

source



এভাবে প্রায় মাস ছয়েক চলে গেল। সবকিছু ভালোই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই তমা মৃদুলের সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেয়। দুইদিন তিনদিন পর কথা বলত তাও অল্প সময়। তমা তার কলেজের একজন সিনিয়রের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ঐ ছেলের নাম সোহান। সোহান একবছর পরেই ডাক্তার হিসেবে বের হবে। তার ভবিষ্যৎ ভালো পরিবার ভালো। এসব ভেবে তমা সোহানের প্রেমে পড়ে যায়। একপর্যায়ে তমা সবকিছু খুলে বলে সে বিবাহিত। তখন সোহান বলে সমস্যা নেই তুমি তোমার আগের স্বামীকে ডিভোর্স দাও। এবং তমা স্বার্থপর এর মতো সেই কাজটাই করে। তমা ডিভোর্স লেটার পাঠায় মৃদুল এর কাছে। মৃদুল তমাকে এসব বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তমা সরাসরি বলে তোমার সঙ্গে আমার এখন যায়না। আমি দ্রুতই ডাক্তার হবো আর তুমি একজন সাধারন চাকরিজীবী। আমাদের স্ট‍্যাটাস অনেক আলাদা। তাই আমি তোমার সঙ্গে থাকতে পারব না। মৃদুল সেদিন যেন তমার কথাগুলো বিশ্বাস করতে পারছিল না। একপর্যায়ে মৃদুল তমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়।

এর কিছুদিন পর তমা বিয়ে করে সোহানকে। মৃদুল অনেক ভেঙে পড়ে। তার ভালোবাসার মানুষ স্বার্থের জন্য তাকে ছেড়ে চলে গেল এটা সে মেনে নিতে পারছিল না। মৃদুল তার চাকরি ছেড়ে দেয়। সে বুঝেছিল এই দুনিয়া স্বার্থের পাগল সফলতার পাগল। হৃদয়ের ভালোবাসা কেউ দেখে না। সে সিদ্ধান্ত নেয় যে কারণে তমা তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে সে তার অবস্থার পরিবর্তন করবে। তাই সে চাকরি ছেড়ে দিয়ে আবার লেখাপড়ায় মনোযোগ দেয়। কয়েকবছর পর আবার লেখাপড়ার সঙ্গে যুক্ত হতে বেশ সমস্যা হচ্ছিল মৃদুলের। তারপর আবার তমার বিচ্ছেদ। কিন্তু মৃদুলের মনে ছিল একটাই বাসনা একটাই আশা কিছু একটা করে দেখাতে হবে। মৃদুল শুরু করে বিসিএস প্রস্তুতি নেওয়া। মৃদুলকে তার বাবা মা অনেক সাপোর্ট করত অনেক সাহস দিত। সে অনুসার এগিয়ে যেতে থাকে মৃদুল।।।





সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG_-akkhy.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png



Sort:  
 2 years ago 

স্বার্থের জন্য মানুষ এতটা নিচে নামতে পারে তা তমাল কে না দেখলে বুঝাই যেত না। এতটা স্বার্থপর হতে পারে মানুষ সত্যি বিশ্বাস করা যায় না। মৃদুলের কতটা কষ্ট হয়েছিল এই কষ্টটা সকলেই অনুভব করতে পারবে। কিন্তু আমার মনে হয় কেউ সহ্য করতে পারবেনা। কিন্তু এই ক্ষেত্রে মৃদুল যে সিদ্ধান্তটা নিয়েছে আমি মনে করি সঠিক একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে তমালকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য। ভালো লাগলো ভাই গল্পটি পড়ে পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago (edited)

নিজের স্বার্থের জন্য মানুষ কত নিচেই না নামতে পারে। মৃদুল অনেক কষ্ট করে তোমাকে পড়ালেখা করায়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তমা নিজের স্বার্থের জন্য মৃদুল কে ডিভোর্স দিয়ে দেয়, এবং অন্য ছেলের সাথে বিয়ে করে নেয়। প্রথম প্রথম তো সে বলেছিল সে মৃদুল কে ছাড়া বাঁচবে না , সত্যিই অবিশ্বাস্য ঘটনা ছিল। আমার মতে মৃদুল এখন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা একদমই সঠিক।

 2 years ago 

শেষ করে দিলেন কেন ভাইয়া আমি তো মনে করেছি আরো এক পর্ব আছে। মেয়েটি আসলেই অনেক স্বার্থপর মৃদুলের কাছ থেকে সবরকম সুযোগ সুবিধা নিয়ে তারপর ভালো একজন পেয়ে তার হাত ধরে চলে গেল। এ ধরনের লোকজন আমাদের সমাজে অহরহ ঘুরে বেড়াচ্ছে শুধু মানুষের কাছ থেকে নিজের স্বার্থ টুকু আদায় করে নেয়। আপনার লেখা গল্পটি কিন্তু আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া অনেক ভালো লিখেছেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 63718.61
ETH 3390.60
USDT 1.00
SBD 2.62