মগের মুলুক!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
ছোট থেকে একটা কথা প্রচুর শুনতাম। কথাটা ছিল মগের মুল্লুক। জানি না আপনাদের এলাকার ভাষায় এটাকে কী বলে। তবে এটার অর্থ দাঁড়ায় যা ইচ্ছা সেটাই করে ফেলা। এটাকেই বলা হয় মগের মুল্লুক। বাংলাদেশে এমন একটা জায়গা আছে। যেখানে পাবলিক যেকোনো সাধারণ হোক বা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হোক সেটা নিয়ে আন্দোলনে বা সমাবেশে নেমে পড়ে। ঐ জায়গা টা কে মগের মুল্লুক বা মামা বাড়ির আবদার নাম দেওয়াই যায়। কেন তার যথেষ্ট কারণ আছে। সেগুলো এখন আমি বলব। গত শুক্রবারের কথা। আমার শুক্রবার সারাদিন কাটে ইউনিভার্সিটি তে। গত শুক্রবার বৃষ্টির জন্য ক্লাসে উপস্থিতি কম ছিল। এইজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নেয় শেষের ক্লাস টা করব না। কাকতলীয় ভাবে আমরা না বলার আগেই দেখি স্যার বলছে আজ আমি ক্লাস নিতে পারব না।
ক্লাস শেষ যখন হলো তখন বাজে বিকেল ৪ টা। পুরো বিকেল টা পড়ে আছে এখনও। এমন বিকেলে হাতে সময় এবং পকেটে টাকা থাকলেই আমার মনে হয় যায় নীলক্ষেতে যায়। কিছু বই কিনে আনি এবং ঘুরে আসে। শেষ বই কিনেছিলাম গতমাসে। পকেটে দেখি ৫০০ টাকা আছে অতিরিক্ত। আর কী চলে গেলাম নীলক্ষেত। তবে যাওয়ার পথে আমি বেশ ঝামেলায় পড়ি। গুলিস্তান থেকে রিক্সায় নীলক্ষেতে যেতে হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস- শাহবাগ এগুলো হয়ে। আর এই জায়গাটা যেন মগের মুল্লুক। সবসময় এখানে কোন না কোন আন্দোলন দাবি সমাবেশ চলতেই থাকে। বিশেষ করে শুক্রবার বেশি হয়ে থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আগেই দেখি একটা দল লাল পতাকা নিয়ে সমাবেশ করছে কোন দাবি আদায়ের জন্য। ওখানে বেশ ভীড় বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হলো।
এরপর আরেকটু এগিয়ে গিয়ে দেখি আরেকটা গ্রুপ। ঐ গ্রুপেও উপস্থিতি ভালো। তারাও একটা দাবি নিয়ে নেমে পড়েছে। ভাষণে পুরো চারপাশ গরম করে দিচ্ছে বক্তা। ঐ জায়গাটাতেও বেশ ভীড় ছিল। এরপর গেলাম সেই ঐতিহ্যবাহী রাজু ভাস্কর্যের কাছে। ওখানেও একটা গ্রুপ। তবে এরা শিক্ষার্থী। এদের দাবি পার্বত্য চট্টগ্রাম, আদিবাসীদের নিয়ে যে ঝামেলা টা শুরু হয়েছে সেটার সমাধান। এই টাইপের কিছু তাদের দাবি। ওখানেও বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলাম। আরেকটু এগিয়ে যেতেই দেখি আরেকটা শিক্ষার্থীদের গ্রুপ। এই গ্রুপের প্রায় ৫০ এর মতো শিক্ষার্থী। যেখানে একজন বক্তব্য দিচ্ছে। তার বক্তব্য অবৈধ অযোগ্য শিক্ষকদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে।
এভাবে করে সবমিলিয়ে প্রায় ৫০০ মিটারের মধ্যেই ৪-৫ টা গ্রুপ আন্দোলন করছে। তারা তাদের দাবি নিয়ে কিছু মানুষ নিয়ে নেমে পড়েছে। তা সেই দাবিতে যৌক্তিকতা থাক আর না থাক। এখানে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। হাতে যে সময় টা নিয়ে গিয়েছিলাম তার অধিকাংশ টা পথেই কেটে যায়। তখন ব্যাপার টা হঠাৎ আমার মনে আসলো। আসলেই শাহবাগ- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস জায়গাটা হলো মগের মুল্লুক। ওখানে যেকোনো দাবি নিয়ে নেমে পড়া যায়। কেউ কিছু বলে না। এটা যেন মামাবাড়ির আবদার। এমনটা হলে তো ভালোই হয়। আমাদের দেশের মানুষের এতো পরিমাণ সময় এবং এনার্জী। কোন কারণ ছাড়াই এরা পথে নেমে জনগণের দূর্ভোগ সৃষ্টি করার ক্ষেএে সেরা।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এটা ঠিক বলেছেন, আজকাল মানুষ কিছু হলেই পথে নেমে যায়।শাহবাগ হচ্ছে সবার প্রান মেলা।এতে করে যে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পরে তা যেনো তাদের মাথায় ই থাকে না।