বিদ্যুৎহীন একটি দিন।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
বতর্মান সময়ে ইলেকট্রিসিটি বা বিদ্যুৎ ছাড়া জীবন যাপন করা একেবারে কষ্টসাধ্য এবং অসম্ভব বলা যায়। না সম্ভব তবে আপনি দুনিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারবেন না। জ্বালানি সংকট এর কারণে ইদানীং বাংলাদেশে দেখা দিয়েছে প্রচুর লোডশেডিং। বিশেষ করে ঢাকার মতো শিল্পনগরী গুলোতে তো লোডশেডিং এর মাএা টা একটু বেশিই। কিন্তু আজ আমি লোডশেডিং নিয়ে আলোচনা করব না। আপনারা মোটামুটি সবাই অবগত আছেন গত কয়েকদিন আগে বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে গেল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় সিএাং। সিএাং এর কারণে প্রায় একদিন আমরা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিলাম। তারপর আমার ফোনে ছিল না চার্জ সবমিলিয়ে বেশ খারাপ একটা অভিজ্ঞতা ছিল। আজ সেই বিষয়ে আপনাদের সঙ্গে কথা বলব।
কয়েকদিন আগে থেকে শুনছিলাম সোমবার বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে যাবে ঘূর্ণিঝড় সিএাং। সিএাং ভিয়েতনামী শব্দ এর অর্থ পাতা। এই ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি নাকী আন্দামান নিকোবার সমুদ্র অঞ্চলে। প্রথমে খুব একটা গুরুত্বের সঙ্গে নেয় নি। যাইহোক সোমবারে আমার কলেজ ছিল না। সেদিন দিওয়ালী বা শ্যামা পুজোর ছুটি ছিল। সকালে উঠেই দেখি ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। সেদিন ছিল বাংলাদেশ এবং নেদারল্যান্ডস এর মধ্যকার টি টুয়েন্টি ম্যাচ। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে আমি ঘরে বসে ফোনে ম্যাচ দেখছি। বেশ কিছুক্ষণ পর ঐ দুপুর ১২ টার দিকে আমার মা আমাকে ডেকে বলে ইমন দ্রুত মেইন ফিউজ অফ কর। আমাদের সার্ভিস তারের উপর গাছের ডাল ভেঙে পড়েছে। আমি দ্রুত মেইন ফিউজ অফ করলাম এরপর গিয়ে দেখি একটা গাছের বেশ বড় ডাল আমাদের এবং বেশ কজনের সার্ভিস তারের উপর পড়েছে। এটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। আমি বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করলাম উনারা সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ বন্ধ করলেন। এবং বললেন সময় পেলে আসবেন এসে ঠিক করে দিয়ে যাবেন। কিন্তু উনারা আসে নাই। কয়েকঘন্টা পর গাছের ডালটা বাতাসে নিচে পড়ে যায় তবে সার্ভিস তার ঠিক ছিল। কিন্তু তার আগেই আমাদের বিদ্যুৎ অফ ছিল। মেইন ফিউজ অন করে দেখি বিদ্যুৎ নেই।
পরে খোঁজ নিয়ে দেখলাম না কারো বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। ব্যাপারটা আমি স্বাভাবিকভাবে নিলাম। এরপর যথারীতি ফোন নিয়ে কিছুক্ষণ ফেসবুক ইউটিউব ঘাটাঘাটি করলাম। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ চলল। দেখি বিকেল ৫ টা বাজে প্রায়। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে ছাতা নিয়ে বের হলাম। কিছুক্ষণ ঐ আবওহাওয়াই ঘোরাঘুরি করলাম। এরপর আমাদের এলাকার মোড়ে গিয়ে দোকান থেকে চা খেলাম। তবে চা টা এতো টাই ভালো লাগছিল একেবারে দুই কাপ খাই। যাইহোক এরপর বাড়ি ফিরছি তখন শুনি একজন বলছে সে নাকী বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দিয়েছিল আজ বিদ্যুৎ আসবে না। কথাটা শুনে আমি চিন্তায় পড়ে যায়। কারণ আমার ফোনে তখন চার্জ রয়েছে ২৫%। এবং ল্যাপটপেও চার্জ দিয়ে রাখা হয় নি কী বিপদ। ভাবলাম বিদ্যুৎ থাকবে না আলোর প্রয়োজন হবে যাই দোকান থেকে মোমবাতি নিয়ে আসি। কিন্তু অন্যরা আমার থেকে একটু বেশিই ফাস্ট। দোকানে গিয়ে শুনি একটাও মোমবাতি নেই যা ছিল সব শেষ। কী আর করার বাড়ি চলে আসলাম। ২৫% চার্জ নিয়ে সারারাত চলতে হবে এটাও কী সম্ভব বলেন।
যাইহোক শীত প্রায় আগত সন্ধ্যা হয়ে যায় খুব দ্রুত। সন্ধ্যার পর কিছু করার নেই। ফোনে গান শুনছিলাম। এবং মাঝে মাঝে ফেসবুকে গিয়ে সিএাং এর খবর নিচ্ছিলাম। দেখলাম উপকূলীয় অঞ্চলে মারাত্মক তান্ডব চালাচ্ছে সিএাং। আমাদের দিকেও বেশ প্রচণ্ড বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়া ছিল। কয়েক ঘন্টা গেল। রাত তখন ৯ টা আমার ফোনে চার্জ মাএ ৮% কী বিপদ বলেন। কোনোরকম রাতের খাবার শেষ করে ঘরে এসে শুয়ে থাকলাম। এখন সাধারণত ১২-১ টার আগে কোনোভাবেই ঘুম আসে না। লেখাপড়া,ফোন ল্যাপটপ নিয়ে সময় কেটে যায়। কিন্তু আজ কী করব। বিদ্যুৎ নেই কোনো কিছুই করার উপায় নেই। অন্ধকারে শুয়ে আছি ঘুম আসছে না। বিদ্যুৎ এর অভাব বুঝতে পারছি। একসময়ে মনে হচ্ছিল আমরা এগুলোর উপর এতটাই নির্ভরশীল হয়ে গেছি যে এটা ছাড়া টিকে থাকতে পারব না বিষয়টি এমন। মাঝে মাঝে ফোনে শুধু সময় দেখছি। রাত তখন ১১:৩০ ততক্ষণে সিএাং এর তান্ডব কিছুটা কেমেছে। দেখি বিদ্যুৎ এসেছে। কিন্তু তাতে লাভ নেই। কারণ ফেজ নেই বা ভোল্টেজ একেবারেই কম। ফোন চার্জও হচ্ছে না। বেশ রাগ হচ্ছিল। কিন্তু কিছুই করার নেই। কারণ এর মধ্যে বিদ্যুৎ স্পালাই দিলে অনেক বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে সেটা আমার জানা আছে। সেজন্য কী আর করার। তবে এই বিষয়টি আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেল আমরা যতটাই আধুনিক হয়ে যায় না কেন প্রকৃতির কাছে আমরা অসহায়।।।
------- | ------ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @emon42 |
ডিভাইস | VIVO Y91C |
সময় | অক্টোবর,২০২২ |
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
এক সময় আমরা বিদুাৎ ছাড়া জীবন-যাপন করেছি।তবে যখন বিদুাৎতের উপর নির্ভরশীল হয়ে গেলাম এখন আর চলে না জীবন।হয়ত বিদুাৎ না থাকলেও কোন একদিন অভ্যাস হয়ে যাবে।আপনাদের মেইন সুইচ অফ না করলে হয়তো বড় বিপদে পড়তেন।ভাগ্যিস তার ছিড়ে যায় নি।আর আপনি ফোন করাই উনারা লাইন বন্ধ করেছে।বড় বিপদের হাত থেকে বেঁচে গেছেন।
যদি ও বিদ্যুৎহীন একটি দিন টাইটেলে লিখেছেন। কিন্তু পুরো লেখাটি পড়ে বুঝতে পারলাম রাত ১১.৩০ মিনিট পযন্তও কারেন্ট ছিল না।আর ১১.৩০ মিনিটেও যে কারন্ট এসেছে তাতে মোবাইল বা ল্যাপটপ কিছুই চার্জ দেওয়া যায়নি। সেই হিসাবে রাতে ও কারেন্ট ছিল না।আসলে বর্তমানে কারেন্ট ছাড়া সময় পার করা একেবারেই মুশকিল। কারন কারেন্ট ছাড়া তো মোবাইল বা ল্যাপটপ চার্জ দেওয়া যায় না।সর্বোপরি,আপনার একা নয় যেখানেই কারেন্ট ছিল না,আমার জানা মতে প্রত্যেকেই অনেক কষ্ট করেছিল।আসলে আপনার নিচের উক্তির মাধ্যমেই তা ফুটে উঠেছে।
একেবারে ঠিকই বলেছেন ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।।
সত্যি ভাইয়া আমি ও আপনার মতো সেই দিন বিদ্যুৎ এর অভাব বুঝেছি। কারেন্ট না থাকার যে অভাব সেই দিন উপভোগ করেছি।আসলে ফোনে দেখতে দেখতে কখন যে রাত ১২ টা বেজে যায় বুঝতে পারি না। তবে ঝড়ের দিন ফোনে চার্জ না থাকায় রাত যেন আর বাড়ে না।ফেজ বা ভোল্টেজ না থাকলে ও কারেন্ট এসেছিল, আমাদের তাও আসেনি।সত্যি বলেছেন ভাইয়া আমরা যতই আধুনিক হয় না কেনো প্রকৃতির কাছে আমরা অসহায়।
আমাদের সবারই প্রায় একই অবস্থা ছিল।। ধন্যবাদ আপনাকে।।
উপরের কথা গুলো একদমই ঠিক বলেছেন। আসলে আমাদের এখানে ও সেদিন বিদ্যুৎ অনেক ঝালিয়েছিলো। সারা দিন বৃষ্টি ও হয়েছিলো। আসলে বিদ্যুৎ ছাড়া এক মূহূর্তেও চলা যায় না।
আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।।
ভাইয়া বিদ্যুৎ ছাড়া দিনগুলো বেশ কষ্টকর। এখনকার সময় আসলে বিদ্যুৎ ছাড়া একটা দিনও কল্পনা করা যায় না। আপনার তো একদিন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল আমাদের এখানে প্রায় চার দিন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল । কিন্তু দূরে বাজারে কারেন্ট ছিল। সেখান থেকে ফোন চার্জে দিয়ে স্টিমিটের কাজ চালিয়ে গেছি। অনেকের ফ্রিজের তো অনেক মাছ মাংস প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে।
আপনি তো দেখছি আমার থেকে বেশি বিপদে ছিলেন। ধন্যবাদ আপনাকে।।
আসলে ভাইয়া সেদিন ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে সারা বাংলাদেশের বিদ্যুতেরই একই অবস্থা হয়েছিল । আমাদেরও সারারাত বিদ্যুৎ ছিল না । বিদ্যুৎ না থাকলে কেমন যেন নিজেদেরকে বড়ই অসহায় মনে হয় । আপনি শেষের লাইনটা ঠিকই বলেছেন আমরা যতই আধুনিক হয়ে যাই না কেন প্রকৃতির কাছে আমরা ঠিকই অসহায় । আর বিদ্যুতের উপর আমরা অনেক বেশি নির্ভরশীল । আর মোবাইল ল্যাপটপ না থাকলে মনে হয় যেন নিজের কোন কাজই থাকে না ।সময়টা যেন কাটতেই চায় না । আপনার লেখাটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো । ধন্যবাদ ।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।।
সত্যি কথা বলতে তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে বিদ্যুৎ আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হয়ে গেছে। যেদিন বিদ্যুৎ ছিল না সেদিন খুবই খারাপ একটি দিন গেছে। যেহেতু আপনার বাসায় আরো আগে বিদ্যুৎ লাইনের সমস্যা হয়েছে তাই আপনার সমস্যাআরো বেশি হয়েছে। আসলে বৈদ্যুতিক তারের উপর গাছ পরাতে খুবই সমস্যা হয়েছে। তবে যাই হোক ভাইয়া মাঝে মাঝে ভিন্ন অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলে ভালই লাগে। সবকিছু ছেড়ে সেদিন নিজের মত করে প্রতিটি সময় কেটেছে সবার।
জী আপু পরবর্তীতে সতর্ক থাকব এই রকম হলে। ধন্যবাদ আপনাকে।।
ঠিকই বলেছেন সেদিন ঝড়ের কারণে আমারও একই অবস্থা হয়েছিল ফোনে কোন চার্জ ছিল না। আমাদের চারিদিকে ঝড়-বৃষ্টি বইছিল এতটা হবে সেটা ভাবি নি তাই ফোনেও চার্জ দিয়ে রাখিনি। আমাদের তো ঝড়ের দিন সকাল থেকে পরের দিন বিকেল পর্যন্ত কারেন্ট ছিল না। ফোন কারেন্ট ইন্টারনেটে এগুলো না থাকলে কেমন যেন নিজেদেরকে অসহায় মনে হয়। আমরা আসলেই এগুলোতে একটু বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। আর কারেন্ট না থাকলে তো মোমবাতির দামও বাড়িয়ে দেয় আবার প্রয়োজনের সময় পাওয়াও যায় না। সত্যিই অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয় মানুষকে।
তাহলে বর্তমান সময়ে আমরা বিদ্যুতের সাথে এতটাই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে একদিন বিদ্যুৎ না থাকলে আমাদের জীবনযাত্রা যেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আপনাদের এলাকার মত আমাদের এলাকাতে ওই দিনে একেবারেই বিদ্যুৎ ছিল না। প্রায় ১৮ ঘণ্টার মতো বিদ্যুৎ সংযোগের বাইরে ছিলাম। আপনার তো তাও মোবাইলে ৮% চার্জ ছিল আমার তো মোবাইলে একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল চার্জের অভাবে।