জীবনের প্রথম শিক্ষক।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আচ্ছা জীবনের প্রথম শিক্ষক কে এটা নিশ্চয়ই আমরা সবাই জানি। একজন মানুষের জীবনের প্রথম শিক্ষক হলো তার মা। এজন্যই হয়তো বলে শিক্ষক জাতীর জন্য শিক্ষিত মায়ের প্রয়োজন। তবে এই শিক্ষিত বলতে কিন্তু একাডেমিক ডিগ্রিধারী শিক্ষিত মায়ের কথা বলা হয় নি। একজন মানবশিশু জন্মের পর থেকে পরিবারের কাছে বেড়ে উঠে। এসময়ে নৈতিকতা বলেন আদর্শ বলেন শিষ্টাচার বলেন এসব শিক্ষা কিন্তু পরিবারের থেকে পেয়ে থাকে। বিশেষ করে একজন মানব শিশু তার দিনের বেশিরভাগ সময় কাটাই তার মায়ের সঙ্গে। তাই বলাই যায় একজন মা তার সন্তানকে যেমনভাবে গড়ে তুলবে শিশু বড় হয়ে ঐরকম গুণের অধিকারী হবে। যদিও কিছু ব্যতিক্রমও দেখা যায়।
এই বিষয়ে আমি আমার নিজের ছোটবেলার কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করে নেব। আমার মায়ের ছোট ছেলে আমি। আমার একটা বড় ভাই আছে। তবে অন্য পরিবারে দেখা যায় পরিবারের ছোট ছেলেমেয়েদের সব শখ আগে পূরণ করা হয়। তাদের আবদার জেদ এগুলো বেশি থাকে। তবে এক্ষেত্রে আমি ছিলাম আলাদা। আমার থেকে আমার বড় ভাইয়ের শখ আমার বাবা মায়ের কাছে বেশি গুরুত্ব পেত। এর অবশ্য কারণও আছে। এছাড়া আমি ছোট থেকেই খুব একটা জেদ করতাম না কোনো জিনিসের জন্য। আমার মা খুব একটা শিক্ষিত না। ঠিকমতো প্রাইমারি এর গন্ডি পেরিয়েছিল কীনা সেটা আমি জানি না। তবে মোটামুটি অক্ষরজ্ঞান আছে। আমি তখনও স্কুলে ভর্তি হয়নি। আমার মনে আছে আমার যখন তিন চার বছর বয়স মোটামুটি পরিষ্কারভাবে কথা বলি। ঐসময়ে রাতে আমাদের এলাকায় কোনোদিন কারেন্ট থাকত না। কারণ গ্রাম্য এলাকা ছিল। তো প্রতিদিন রাতে আমার মা আমাকে গল্প শোনাতেন, কবিতা শোনাতেন। আমার বয়সী অনেকেই তখন স্বরবর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণ চিনে গেছে কিন্তু আমি বই থেকে দূরে থাকতাম।
ঐ সময়ে প্রতিদিন রাতে আমার মা আমাকে একটি করে কবিতা শেখাতেন। আমার মনে আছে প্রথমে আমার মা বলত এবং তারপর আমি বলতাম। এভাবে আমার মা আমাকে অনেকগুলো কবিতা শেখাই। এরমধ্যে ছিল হাট্টিমাটিম টিম, আমাদের ছোট নদী, ঐ দেখা যায় তাল গাছ, আয় আয় টিয়ে, আম পাতা জোড়া জোড়া, আরও বেশ কিছু কবিতা যেগুলোর নাম আমার মনে নেই। বলতে পারেন এই কবিতা গুলো আমি আমার মায়ের থেকে শিখেছি। পড়ে যখন কিছুটা বড় হলাম দেখি এই কবিতাগুলো বইয়ে রয়েছে। তখন আমার আর বেশি বেগ পেতে হয়নি কবিতা গুলো পড়তে। সাধারণত ঐ সময়ে স্যার রা বলতেন বানান করে কবিতা গুলো পড়তে। কিন্তু আমার মুখস্থ থাকায় আমি গড় গড় করে পড়ে যেতাম হি হি। এরপর যখন আরেকটু বড় হলাম তখন নতুন আরও কিছু অভিজ্ঞতার সম্মূখিন হলাম।
প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই আমার মা আমাকে নিয়ে পড়তে বসাতেন। আমি বেশ ফাঁকিবাজ ছিলাম। সেজন্য আমার মা সন্ধ্যা হলেই আমার পাশে বসে থাকত এবং আমি পড়তাম। এতো গেল শিক্ষার কিছুটা অংশ। ছোটবেলা বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে আমি বেশ অনেক দুষ্টুমি করেছি। সেগুলোর সাজাও আমার মা আমাকে দিয়েছেন। এরপর যখন মোটামুটি সবকিছু বুঝতে শিখলাম তখন আমার মা আমাকে কিছু কথা বলেছিল। একদিন বলেছিল ইমন জীবনে কারো উপকার করতে না পারিস কখনো কারো ক্ষতি করবি না। তোর দ্বারা যেন কারো ক্ষতি না হয়। আর যদি অজ্ঞতা বশত হয়েও যায় তাহলে ক্ষমা চেয়ে নিবি কোনো দ্বিধা ছাড়া। এছাড়া বলেছিলেন একজন বয়স্ক মানুষ তোর সঙ্গে যত খারাপ আচরণই করুক তুই কখনো তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করবি না। এই কথাগুলো সবসময় আমার মনে থাকে। আমি নিজেও চেষ্টা করি কথাগুলো মেনে চলার। আমি নিজেও দেখেছি এগুলো সবসময় আমাকে যেকোন প্রকার খারাপ কাজ বিরত রাখে। আমার জীবনে আমি আমার নৈতিক শিক্ষাগুলো আমার মায়ের থেকেই পেয়েছি। এখনও তার থেকে আমার কথা শোনা লাগে। হয়তো কিছু টা বড় হয়েছি মা নিজেও এখন আগের মতো আর উপদেশ দেন না। হয়তো আমি নিজের পথে ঠিকই অবিচল আছি এজন্য।।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
সত্যি ভাইয়া, একজন সন্তানের জন্য তার মা ই প্রধান শিক্ষক।আপনি ছোট বেলা কোনকিছু নিয়ে জেদ করতেন না, শুনে ভাল লাগলো। আর এটাও ঠিক কারো উপকার না পারো কিন্তু অপকার করতে যেওনা। সব মায়েরা মনে হয় এক কথাই বলে।অনেক ভাল লাগলো ভাইয়া।শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আসলেই ভাইয়া একজন মানুষের জীবনের প্রথম শিক্ষক হচ্ছে তার মা, মায়ের কাছে থেকেই সন্তানেরা ভালো-মন্দ যাচাই করা সহ সব ধরনের শিক্ষা পেয়ে থাকে। আমারও মনে আছে আপনার মত আমার মা ও আমাকে ছোটবেলায় কবিতা সহ বর্ণমালা শেখাতো। নিজের সম্পূর্ণ জীবন যদি এই শিক্ষকের পেছনে গোলামী করে শেষ করি তারপরেও যেন এই ঋণ শোধ হবেনা। নিজের ছোটখাটো আবদার, নিজের শখ পূরণ সবকিছুই যেন মায়েদের কাছে থেকেই বেশি সময় আসে। সবশেষে একটি কথাই বলতে চাই, আমি ভালোবাসি, আমি আমার মাকে ভালোবাসি জীবনের প্রথম শিক্ষা নেওয়ার শিক্ষককে।
আপনার মায়ের কথাগুলো শুনে সত্যি মুগ্ধ হয়ে গেছি। আসলে মায়ের কাছ থেকে জীবনের বাস্তবতা সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি শেখা হয় সেই প্রসঙ্গে মাকেই জীবনের প্রথম শিক্ষক বলা যায়। আপনার কথাগুলো পড়ে সত্য অনেক ভালো লাগলো, আসলে ভাইয়া আপনার মত আমিও ছোটবেলা অনেক দুষ্টুমি করতাম 😋
একজন শিশুর প্রথম শিক্ষক হল মা। মাই গল্পের ছলে প্রথম জীবনের হাতেখরি দেন। নীতি নৈতিকরার শিক্ষা দেন। আপনার লিখা পড়ে বেশ ভালো লাগলো। অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।
মা থেকে বড় শিক্ষক সমাজে আছে বলে আমার মনে হয় না। আপনি খুব সুন্দর একটি কথা বলেছেন শিক্ষিত মা বলতে শুধু ডিগ্রিধারী মা না, আমরা অনেকেই এখানে ভুল করি। একজন মানুষের জন্মের পর থেকে সারাটা জীবন মা কিছু না কিছু শিখিয়ে যায় এবং তা কোন বই পুস্তক পড়ে না।আপনার লেখা পড়ে বুঝলাম ছোটবেলায় আপনার শখ বা জেদ ছিল না এবং সেই জন্যই আপনার বড় ভাইয়ের শখ সহজেই পুরন হয়ে যেত। আপনার মা প্রাইমারি না পাশ করলে কি হবে উনি পড়ার সময় আপনার পাশে ঠিকই শিক্ষকের মত বসে থাকতেন। আপনার মা আপনাকে স্কুলে যাওয়ার আগেই অনেকগুলো সুন্দর এবং বইয়ের কবিতা মূখস্ত করিয়ে নিয়েছে। এত সুন্দর কথা একজন মা-ই বলতে পারে যে জীবনে কারো উপকার করতে না পারলেও ক্ষতি করিস না। আপনার মা আরো অনেক সুন্দর উপদেশ আপনাকে দিয়েছেন। আপনার মার প্রতি আমার শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
একদম সত্যি ভাই একজন সন্তানের জন্য প্রথম শিক্ষা হচ্ছে তার মা। মা থেকে প্রথম শিক্ষা অর্জন করে এবং তা সুন্দরভাবে তার জীবনে ব্যবহার করে। সত্যি কথা আপনি তুলে ধরেছেন জীবনে কারো উপকার করতে না পারলে ক্ষতি করবে না। এবং বয়স্ক লোক যতই খারাপ ব্যবহার করে তার সাথে যেন খারাপ ব্যবহার না করে। একমাত্র পৃথিবীতে সুন্দর ব্যবহার এবং শিক্ষা দিতে পারে মা। মা নামটা যতই মধুর তা বলে শেষ করা যাবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ খুব সুন্দর করে শেয়ার করার জন্য।
আপনি ঠিকই বলেছেন মা তার সন্তানকে যেমনভাবে গড়ে তুলবে শিশু বড় হয়ে ঐরকম গুণের অধিকারী হবে। মায়ের কাছে আমরা ভালো-মন্দ সবকিছু শিখে থাকি কোনটা করলে ভালো হবে কোনটা করলে খারাপ হবে তা আমাদেরকে মা শিখিয়ে দেয়। আপনি আজকে খুবই সুন্দরভাবে গল্প লিখেছেন। আপনি ছোটবেলায় এত বেশি রাগ করতেন না জেনে খুবই ভালো লাগলো।
একজন মা যতোটুকই খেতে হোক না কেন সে তার সন্তানকে সব সময় নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার চেষ্টা করে। তবে প্রতিটি শিশুর জন্য প্রাথমিক এবং প্রধান শিক্ষক হলো তার গর্ভধারিনী মা। তবে বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সকল মাকে শিক্ষিত হওয়া উচিত। কেননা একজন শিক্ষিত মা একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দিতে। অতি চমৎকার একটি প্রসঙ্গ নিয়ে অসাধারণ একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।