|| সুন্দরবন ভ্রমণ(তৃতীয় পর্ব)||

খান জাহান আলীর মাজারে যাওয়ার পথের দু ধারে অনেক রকম দোকান।। মাজারে ঢুকতেই আমরা একসঙ্গে হলাম। তখন স‍্যার আমাদের খান জাহান আলীর সম্পর্কে বললেন। উনি ছিলেন একজন তুর্কিস নাগরিক। ১৬০০ শতকের দিকে ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য এখানে আসেন। এবং উনিই ষাট গম্বুজ মসজিদ প্রতিষ্টা করেন। যেটা এখন বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার নিদর্শনের মর্যাদা পেয়েছে। খান জাহান আলীর মাজারের ভেতরে যেতে হলে পায়ের জুতা খুলে যেতে হয়। এবং ওখানে কোনো ছবি তুলতে দেওয়া হয় না। আমাদের ক্ষেএেও তাই করা হয়েছিল। খান জাহান আলীর মাজারের পাশে বসে ছিল উনার কয়েকজন খাদেম। খান জাহান আলীর মাজারের বাইরে রয়েছে বিশাল একটা দীঘি। দীঘি টা বেশ সুন্দর এবং অনেক বড়। আমরা দীঘির পাড়ে গিয়ে বসে ছিলাম বেশ কিছুক্ষণ। কথিত আছে এই দীঘিতে দুইটা কুমির আছে। কুমির দুইটা নাকী খান জাহান আলীর খাদেম। এবং মাঝে মাঝে ভেসে উঠে। যদিও আমাদের কপালে ছিল না কুমির দেখা। এবং পাশে একটা সতর্কীকরণ বোর্ড ছিল এই দীঘিতে কুমির আছে কেউ নামবেন না। খান জাহান আলীর মাজারের বাইরে থেকে আমরা সবাই একসঙ্গে গ্রুপ ফটো তুলি। আমার এক বন্ধু ক‍্যামেরা নিয়ে গেছিলে ঐ তুলেছিল ছবিগুলো।।

এরপর আমরা আবার বাসের কাছে চলে যায়। এবার কিন্তু আমাদের গন্তব্য ষাট গম্বুজ মসজিদ। ওখান থেকে কিছুটা দূরেই ষাট গম্বুজ মসজিদ। যথারীতি বাস ছাড়লো। ষাট গম্বুজ মসজিদের সামনে গেলাম সকাল ৭:৪৫ এর সময়। ষাট গম্বুজ মসজিদে ঢুকতে টিকিট লাগে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা এবং শিক্ষার্থী হলে ৫ টাকা ছিল তখন। তো আমাদের টিকিট কাটে স‍্যার। কারণ সব খরচ চাঁদার মধ্যে ছিল।। আমরা ঠিক ৮ টাই ঢুকলাম ষাট গম্বুজ মসজিদে এবং এখান ঘোরার জন্য সময় ছিল ৩০ মিনিট। কারণ আমাদের আসল গন্তব্য এখনো বাঁকি। ষাট গম্বুজ মসজিদের ভেতরটা দারুণ এবং সুন্দর। অনেক ফুলে গাছ রয়েছে। এককথায় অসাধারণ প্রাকৃতিক পরিবেশ বলা যায়। এবং একটা বিষয় ক্লিয়ার করি ষাট গম্বুজ নাম শুনে আপনারা মনে করেন ঐ মসজিদের গম্বুজ ৬০ টা। আসলে তা না মসজিদের মোট গম্বুজ সংখ‍্যা ৭৭ টা। কিন্তু গম্বুজ গুলোর আকার একই সেজন্য নাম ষাট গম্বুজ মসজিদ।

---

Source

---

সবাই যার যার মতো ঘুরে দেখছে। আমরা ঘুরছি। আমার সঙ্গে ছিল আরিফুল এবং রাসেল। যাইহোক এরপর আমরা জুতা খুলে মসজিদের ভেতরে গেলাম। দেখলাম মসজিদের ইমাম সাহেব আছেন। উনার কাছে যেতেই উনি এই মসজিদের ইতিহাস আমাদের শোনালেন। বেশ ভালো লাগল। অনেক সুন্দর ব‍্যবহার উনার। এবং ভেতর থেকে দেখলে বোঝা যায় সত্যি এই স্থাপনা অনেক পুরানো। এরপর আমরা বাইরে এসে ষাট গম্বুজ মসজিদের চারিদিকটা ঘুরে দেখি। মসজিদের পাশে একটা বটগাছ আছে অনেক বড়। হঠাৎ জহিরুল স‍্যার আমাকে ডাক দেয় বলে তোর চশমটা দে। আমার চোখে একটা চশমা ছিল কালো সানগ্লাস। স‍্যার যেটা পড়ে আমার কাছে ফোন দিয়ে বলে পেছনে মসজিদ টা নিয়ে একটা সুন্দর ছবি তুলে দে। যাইহোক এরপর আমাদের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হলে আমরা বের হয়ে আসি। মসজিদের বাইরে এসে আমি এবং আমার বন্ধুরা চা খাই। আসলে অনেক ভোরে উঠছি সেরকম কিছুই খাওয়া হয়নি। চা খাওয়া শেষ করে বাইরে রাস্তার ধারে আড্ডা দিচ্ছি। স‍্যার বললেন সবাই বাসে উঠ এবার আমরা সুন্দরবনের উদ্দেশ্য রওনা দেব। এখান থেকে বেশ অনেকটা দূর। ওখানে গিয়ে তৈরি হবে সকালের নাস্তা। এরপর সবাই বাসে উঠলাম বাস ছেড়ে দিল। মংলা পোর্ট এর উদ্দেশ্যে আমাদের যাএা শুরু হলো।।

চলবে....

---

---

---

সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।

---

---

Facebook
Twitter
You Tube

---

---

অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।

---

---

---

---

---

---

---

---