বলাই(তৃতীয় পর্ব)।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
অদিতি এবং বলাই দুজন গিয়ে পার্কের একপাশে বসল। অদিতি বলল তুমি তো আমাকে প্রায় দেড় বছর ধরে দেখে আসছ। তো এতো দেরি করলে যে বলতে। বলাই বলল, তার মানে তুমি আমাকে দেখতে। হ্যা দেখতাম তো। খারাপ লাগত না। যদিও বলতে এতো সময় নেবে সেটা ভাবিনি। ও হ্যা এই নাও বলে আড়াল থেকে গোলাপ টা অদিতির হাতে দিল বলাই। আরে গোলাপ নিয়ে এসেছ। তোমাকে যতটা বোকা ভেবেছিলাম ততটা বোকা না তুমি। এভাবে দুজনের মধ্যে অনেকক্ষণ কথোপকথন চলল। অদিতিও বলাইকে পছন্দ করে। সন্ধ্যার সময় পাড়ার মোড় পযর্ন্ত একসঙ্গে গেল দুজন। এরপর অদিতি তার বাড়িতে চলে গেল। বলাইও সরাসরি তার ঘরে ঢুকল।। হঠাৎ মিনতীর আগমন
হ্যা রে বলাই কখন এলি দেখা করে।
এই তো কিছুক্ষণ আগে।
তো কী হলো বল। রাজি হয়েছে অদিতি।
হ্যা।
তাহলে আমার গিফট কোথায়।
আরে দেব এতো ব্যস্ত কেন তুই।
বলাই এবং অদিতির সম্পর্ক এভাবেই চলছিল। প্রতিদিন বলাই দাঁড়িয়ে থাকে অদিতির কলেজের সামনে। এবং প্রায়ই দেখা করে বিকেলে। শনিবার বিকেল বেলা। বলাই বের হচ্ছে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার জন্য। হঠাৎ বলাইয়ের মেসো বলে বলাই বাবা শোন তো
হ্যা মেসো কিছু বলবে?
হ্যা বলছি কাল তোর দিদি মিনতী কে পাএপক্ষ দেখতে আসবে। সারাদিন বাড়ি থাকিস। আর আমার সঙ্গে তোকে বাজারে যাওয়া লাগবে। আসলে আমার বয়স হচ্ছে। মেয়েটাকে এবার পাএস্থ তো করতে হবে। ছেলেটা ভালো। কানাডাতে থাকে। ওরা মিনতীকে দেখেছে ওদের পছন্দ। বিয়ে হলে ছেলের সঙ্গে মিনতীও কানাডা চলে যাবে।
মেসো তোমার একমাএ মেয়েকে এতো দূরে পাঠাবে। তোমাদের দেখবে কে??
আরে তুই আছি না। তুই তো আমাদের ছেলেই।
কথাটা শুনে বলাইয়ের চোখে পানি আসার উপক্রম। আচ্ছা ঠিক আছে মেসো। কাল আমি বাড়িতেই থাকব। রবিবার দুপুরে পাএপক্ষ চলে আসলো। মিনতীকে দেখলো ছেলেটা। ছেলেটার পছন্দ হয়েছে। পাএপক্ষের কোনো দাবি নেই। শুধু বিয়েটা দ্রুত দিতে হবে। এবং মিনতীকে চাকরি টা ছাড়তে হবে। মিনতী প্রথম অবস্থায় রাজি হয়নি বাবা মা বলাইকে ছেড়ে বিয়ে করে অন্য দেশে পাড়ি দিতে। কিন্তু পরে বাবা মা দুজন তাকে বুঝিয়েছে। হঠাৎ বলাই গিয়ে মিনতীকে বলল
কী রে তাহলে শেষমেশ দূর হচ্ছিস আমাদের বাড়ি থেকে। এবার এই পুরো বাড়িটা আমার দখলে থাকবে।
মিনতী একটু কান্নাস্বরে বলল। বলাই আমি যাওয়ার পর বাবা মাকে দেখে রাখিস। তুই ছাড়া আর কেউ থাকলো না।
আরে আমি তো উনাদের ছেলে। তোকে বলা লাগবে না।
কিছুদিনের মধ্যেই বিয়ে হয়ে গেল মিনতীর। নিজের একমাএ মেয়ের বিয়েতে কোনো ক্রুটি রাখেনি বলাইয়ের মেসো। নিজের সারাজীবনের সঞ্চয় লাগিয়ে দিয়েছে। নিজের এবং স্ত্রীর জন্য সেরকম কিছু রাখেনি। পরের মাসেই কানাডায় চলে যাবে মিনতী। ঐ কাগজপত্র ঠিক করতে যতদিন লাগবে ততদিন এদেশে আছে আর কী। হঠাৎ একদিন বলাইকে অদিতি বলল
বলাই এবার একটা চাকরি খোঁজ। আমার বাড়ি থেকে আমার বিয়ের কথা বলছে।
হ্যা এবার চাকরির চেষ্টা করতে হবে। আসলে মেসোর অবসরের পর মিনতীই সংসার টা চালাত। মেসোর সঞ্চয় বলতে যা ছিল মিনতীর বিয়েতে সব শেষ। আগে না বুঝলেও এখন বুঝেতেছি। এবার একটা চাকরির ব্যবস্থা করতেই হবে।
হ্যা দ্রুত দেখ। আমি চাই না তুমি ছাড়া অন্য কেউ আমার জীবনে আসুক।
এরই মধ্যে মিনতী কানাডায় চলে যায়। মাসি মেসো বলাইকে কিছু না বললেও বলাই বুঝতে পারে। বলাই সত্যি সত্যি চেষ্টা করতে থাকে চাকরির। কিন্তু কোনো কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। কানাডা থেকে নিয়মিত যোগাযোগ হয় মিনতীর সঙ্গে। হঠাৎ মিনতী একদিন বলাইকে বলে
বলাই আমি একটা ঠিকানা দিচ্ছি। কাল এই ঠিকানায় গিয়ে যোগাযোগ করবি। এটা তোর জামাইবাবুর বন্ধু। তোর একটা চাকরির ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
ঠিক আছে যাব।
পরের দিন বলাই চলে যায় ঠিকানা মতো। বলাইয়ের একটা চাকরির ব্যবস্থাও হয়ে যায়। যদিও খুব বড় কোনো চাকরি না। তবুও সেটা শুনে অদিতি এবং বলাইয়ের মাসি মেসো খুব খুশি হয়। এভাবে চলতে থাকে। হঠাৎ মিনতীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় তার বাবা মা এবং বলাইয়ের।
চলবে.....
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।