!! অসমাপ্ত উপন‍্যাস!! শেষ পর্ব। ১০% বেনিফেসিয়ারি @Shy-fox এর জন্য।

সেদিন সারারাত ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয় বিজুবাবু। পরেরদিন বেশ সকালে উঠে বাগানে যায় বিজুবাবু। সাথে যায় সাইমনও। হীরালাল সেটা খেয়াল করে। হীরালাল গিয়ে বলে বাবু এখন কেমন আছেন। জবাবে গম্ভীরভাবে বিজুবাবু বলল ভালো। এরপর যথারীতি আবার ঘরের মধ্যে চলে এলেন বিজু বাবু। এসে আগের মতোই টেবিলে বসে বিড়বিড় করতে লাগল। সেদিন আবার সাইমনও বেশ উদ্বিগ্ন ছিল। মাঝে মাঝে ডেকে উঠছিল। এভাবে সারাদিন কেটে গেল। সেদিনের রাতটা একেবারে আলোময়। আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ সম্পূর্ণ চাঁদের আলো জানালা দিয়ে ভেতরে আসছে। বিজু বাবু দুই তিনবার সাইমনের পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়ে ডাকলেন সাইমন সাইমন। এরপর আর কোনো সাড়াশব্দ নেই।

---

---

সকালে হীরালাল উঠে দেখে বিজুবাবু টেবিলের পড়ে আছে। প্রথমে হীরালাল ভাবে বাবু হয়তো শুয়ে আছে। কিন্তু কয়েকবার ডাকার পরেও কোনো সাড়াশব্দ নেই। হীরালাল গায়ে হাতে জোড়ে ডাক দেয় বাবু ও বাবু। তখন হীরালাল বুঝতে পারে বাবু আর নেই। হীরালাল জোড়ে চিৎকার করে উঠে বাবু। এরপর হাওমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে হীরালাল গনেশ বাবুর বাড়ি ছোটে। গিয়ে বলে গনেশ বাবু আমার বাবু আর নেই। গনেশ বাবু বলে কী হয়েছে। উওরে হীরালাল বলে বাবু আপনার বন্ধু আর নেই। দৌড়ে ছুটতে ছুটতে গিয়ে গনেশ বাবু ও তার জেলে হীমেশ দেখে গনেশ বাবু টেবিলের উপর পড়ে আছে। নিচে সেই অসমাপ্ত উপন‍্যাস হাতে কলম আছেই। হর ডাক্তার এসে দেখে বলে এই মধ‍্যরাতের দিকের ঘটনা।

---

---

হর ডাক্তার বলে ছোটখাট একটা ব্রেনস্ট্রোক হতে পারে তার থেকেই এই মৃত্যু। কিন্তু বিজুবাবুর মৃতদেহ কাটাকাটি হবে এটা হীরালাল ও গনেশবাবু কেউ মেনে নিতে পারেনি। তাই স্বাভাবিক মৃত্যু বলে উপারা বিজুবার শেষকৃত‍্য করে দেয়। বেচারা সাইমন এখন একেবারে নুইয়ে পড়েছে কারণ তার বাবু আর নেই। হীরালাল হয়তো এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে কিন্তু এই বাড়ির কী হবে কী হবে সাইমনের। শেষকৃত‍্য শেষ করতে করতে বিকেল। এরপর হীরলাল নিজের ঘরে এবং সাইমন বিজুবাবুর সেই লেখার টেবিলের পাশে বসে থাকে। তখন প্রায় মধ‍্যরাত হঠাৎ বিজুবাবুর ঘরে চেয়ার দোলার শব্দ। এবং সেই সাইমন সাই...মন ডাক। এবং ঐ অসমাপ্ত উপন‍্যাসের উপর দিয়ে কলম চলছে। কে লিখছে তার কোনো অস্তিত্ব নেই। জোড়ে ঠকঠক চেয়ার দোলার শব্দ শুনে হীরালাল এসে পুরো ঘটনা দেখে রীতিমতো ভীমড়ি খেয়ে অচেতন হয়ে পড়ে যায়। পরেরদিন সকাল সকাল গনেশবাবু গিয়ে সব কিছু খুলে বলে হীরালাল। কিন্তু গনেশবাবু বিশ্বাস করতে পারছিল না। তাই গনেশবাবু বলে ঠিক আছে আজ রাতে আমি তোদের বাড়িতে থাকব। যথারীতি সন্ধ্যারাতে চলে যায় গনেশবাবু। এরপর ঠিক যখন মধ্যরাত তখন আবার সেই চেয়ারের ঠকঠক শব্দ সাথে সেই ডাক সাইমন সাই....মন। সাইমন পাশে বসে ডাকছে। তার চোখে একপ্রকার আনন্দের ছোঁয়া। সে যেন তার বাবুকে দেখছে। পাশের ঘর থেকে ছুটে আসে হীরালাল ও গনেশবাবু। এসে দেখে বিজু বাবুর উপন‍্যাস কে যেন লিখছে তারই কলম দিয়ে। কিন্তু কাউকে দেখা যাচ্ছিল না। হঠাৎ একটা শব্দ। কিরে মূর্খ গনশা আমি বেঁচে থাকতে তো কোনোদিন আমার লেখার সময় আমার ঘরে আসিস নাই। তবে আজ কেনো। গনেশ বাবু এবং হীরালালের বুঝতে বাকি রইল পা এইটা তাদের বিজু বাবু। এরপর আর থাকতে না পেরে হীরালাল তার গ্রামে চলে যায়। কিন্তু শত চেষ্টা করেও হীরালাল সাইমনকে নিয়ে যেতে পারেনা। সাইমন ঐ বাড়িতে থেকে যায়। এইভাবে প্রতিদিন রাতে বিজু বাবুর অতৃপ্ত আত্মা এসে লিখতে থাকে। এবং সাইমন ঐ সময়ে যেন তার মালিককে ফিরে পায়। বেঁচে থাকতে শেষ করতে না পারা উপন‍্যাস বিজু বাবু তার মৃত্যুর পরে এসে শেষ করে। উপন‍্যাস শেষ হওয়াই বিজুবাবুর আত্মা এখন মুক্ত। সে আর রাতে উপন‍্যাস লিখতে আসে না। এইরকম কয়েকদিন চলার পরে সাইমন ও তার দেহ ত‍্যাগ করে............

সমাপ্ত

---

---

সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।

---

---

---

---

---

---