শোভা রানীর গল্প |পর্ব-১|
হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
পৃথিবীতে বিবাহ হচ্ছে পবিত্র একটি বন্ধন। এটি পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের জীবনের একটি অংশ। বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে মানুষ নতুন একটি সম্পর্কে আবদ্ধ হয়। বিয়ের মাধ্যমে মূলত স্বামী স্ত্রী কিংবা একজন জীবনসঙ্গী কিংবা সঙ্গিনী লাভ করে থাকে যারা সারাজীবন সমস্ত বিপদ আপদে একই সাথে পথ চলতে থাকে। পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষের জীবনে বিয়ের পরবর্তী সময় থেকে বিবাহিত জীবন বলা হয়। বিবাহিত জীবন নিয়ে প্রতিটি মানুষের আলাদা আলাদা অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি রয়েছে। ঠিক তেমনি শোভা দির জীবনে অনেক কিছুই পরিবর্তন এনেছে।
শোভা রানী আলোহা কোচিং এর একজন স্টাফ।তার কাজ ধোয়ামোছা পরিস্কার করা বাচ্চাদের দেখাশোনা করা।তার মাসিক বেতন ৩-৪ হাজার টাকা।আলোহা কোচিং এ যাওয়া-আসার সুবাদে শোভা রানীর সাথে আমার বেশ ভালোই পরিচিতি এবং অনেক কথাবার্তা হয় তার সাথে।আজ বিশেষ একটা কারনে আলোহা মিস ও শোভা রানী আমার বাসায় আসেন।কথায় কথায় অনেক গুলো বিষয় জানা হলো।হঠাৎ তার অতীতের গল্প গুলো শুনে আমি পুরোই বিস্মিত।আপনারা তো জানেন আমি কতটা সঙ্গীত প্রিয় একজন মানুষ।তাই যারা সঙ্গীতের সাথে জড়িত তাদের কে আমি খুবই ভালোবাসি এবং সন্মান করি।আজ তার জীবনের কিছু উত্থানপতন আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
পরিচয়
নাম-শোভা রানী
বয়স-আনুমানিক ২৩-২৪ হবে হয়তো
জন্মস্থান-জয়পুর হাট জেলা কালাই উপজেলায়।
ভাই-বোন- দুই ভাই এক বোন
শিক্ষাগত যোগ্যতা-আমার জানা নেই
বৈবাহিক অবস্থা-বিবাহিত এক পুত্র এক কন্যা সন্তানের মা
পরিচিতি-রংপুর বেতারে তালিকা ভুক্ত ভাওয়াইয়া শিল্পী এবং জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী।
শোভা রানী যখন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে তখন শোভা রানীর গান সম্পর্কে কোনো ধারণাই ছিলো না।কিন্তু
হঠাৎ একদিন তার স্কুল থেকে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য ডাক আসে।টিচার রা তাকে আশ্বস্ত করেন যে কয়েকদিন হাতে সময় আছে তোমাকে আমরা শিখিয়ে পড়িয়ে নিবো,কোন রকমে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করো।শোভা রানী বাড়িতে এসে এই খবর তার পরিবার কে জানায়।আর এই খবর শোনার সাথে সাথে শোভা রানীর পরিবার এক বাক্যে না করে দেন।পরেরদিন শোভা রানী এই বিষয় টি তার স্কুল কর্তৃপক্ষ কে জানিয়ে দেন।স্কুল কতৃপক্ষ চিন্তার মধ্যে পড়ে গেলেন তাহলে প্রতিযোগিতায় কে অংশগ্রহণ করবে!স্কুল থেকে একজন টিচার শোভা রানীর বাবার কাছে যান এবং তাকে পুরো বিষয় টি বুঝিয়ে বলেন।সবকিছু শোনার পর শোভা রানীর বাবা রাজি হয়ে যান।কিন্তু শোভা রানীর ভাই কোনোভাবেই মানতে নারাজ।তার কথা গ্রামে তাদের বসবাস, তার বোন যদি গান গেয়ে বেড়ায় তাহলে তার বিয়ে দেওয়া খুবই মুশকিল হয়ে যাবে। তখন তারা সমাজে চলবে কি করে!
শোভা রানীর বাবা অনেক বুঝিয়ে তার ছেলেকে রাজি করান।তারপর শুরু হয় গানের প্রাকটিস।প্রতিযোগিতার দিন শোভা রানী তার বাবা মা ভাইকে নিয়ে উপজেলায় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় যায়।তারপর গান শুরু হয় বিচারকগণ শোভা রানীর গান শুনে মুগ্ধ হয়ে যান এবং তাকে প্রথম বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করেন।তারপর শোভা রানী সার্টিফিকেট ও পুরস্কার নিয়ে খুশি মনে বাড়িতে ফিরে আসলো।এবার তাকে যেতে হবে জেলা পর্যায়ে..........।
শোভা রানী শুন্য থেকে কিভাবে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত, বিটিভি এবং রংপুর বেতারের একজন তালিকাভুক্ত শিল্পী হলো সেই গল্প পরবর্তী অংশে জানতে পারবেন।সেই পর্যন্ত সবাই সাথেই থাকবেন।
আজ এখানেই শেষ করছি।সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি।
OR
শোভা রানীর গল্প গল্প পড়ে মোটামুটি ভালই লাগলো। তবে প্রত্যেক মানুষ বাঁচতে হলে মানুষের সংঘ পেতে হলে তাকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হয়। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে মানুষের জীবন অনেক সুন্দর হয়। তবে আপনার গল্পের শোভা রানীর জীবন কাহিনী পড়ে খুব ইন্টারেস্টিং লাগতাছে। তার গান-বাজনা সম্বন্ধে তেমন ধারণা নেই সে আবার প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে গেল। দেখি আপনার পরের পর্বে কি হয় সে অপেক্ষা রইলাম। আশা করি গল্পটি তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন।
গান বাজনার ক্ষেত্রে তারো কোনো অভিজ্ঞতা ছিলো না,শুধু ঈশ্বর প্রদত্ত মিষ্টি কণ্ঠ ছিলো বলেই শোভা রানী এতো দূর পর্যন্ত এগিয়ে যেতে পেরেছিলো।ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে এই ব্যাপার গুলো এখনো গ্রামের দিকে দেখা যায় , গ্রামের মেয়ে গুলো একটা শাসনের মধ্যে থাকে সব সময় ৷ মেয়ের বর্তমান জীবনের চেয়ে বিয়ের চিন্তায় বেশি করে পরিবার ৷ যাই হোক , তারপর কি হলো শোভা দিদি'র ? উপজেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান গিয়ে সার্টিফিকেট ও পুরস্কার পাওয়ার পর...? বেশ ভালো লাগলো শোভা দিদির শুরুর গল্পটা ৷ পরবর্তীতে পর্বের অপেক্ষায় রইল ৷ এবং অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি আপনাকে , এতো সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে নিয়ে আসার জন্য ৷
ঠিক বলেছেন ভাইয়া গ্রামের মানুষ সবার আগে বিয়েকেই বেশি প্রাধান্য দেন।পরবর্তী গল্পে বাকিটা জানতে পারবেন,সাথেই থাকুন ভাইয়া।আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া।
গ্রামের মানুষ শুধু চিন্তা করে কিভাবে তার মেয়েকে বিয়ে দেওয়া যায়।বয়স হলে লোকে কি বলবে এরকম চিন্তাভাবনা।ধন্যবাদ ভাইয়া।
শোভা রানীর গল্পটা খুব ভালোই উপভোগ করেছি আমি। যেহেতু গান প্রতিযোগিতায় তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেছেন, বুঝতেই পারছি গানের প্রতি প্রতিভা সৃষ্টি হয়েছে। সবাই ওনার গান শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল অনেক বেশি। জেলা পর্যায়ে গিয়ে কোন স্থান অর্জন করেছিল, এবং পরবর্তীতে কি হয়েছিল, এসব কিছু জানার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম দিদি। আশা করছি এই গল্পের পরবর্তী পর্বটা আপনি খুব শীঘ্রই আমাদের সবার মাঝে ভাগ করে নিবেন। পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
জ্বি আপু গানের প্রতি তার অগাধ প্রতিভা ছিলো জন্যই শূন্য থেকে জাতীয় পর্যায়ে যেতে পেরেছিলো।শেষ পর্ব শেয়ার করেছি।ধন্যবাদ আপু।
শোভা রানির গল্পের প্রথম পর্ব পড়ে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। ছোটবেলায় ওনার গান সম্পর্কে কোন ধারণা না থাকলেও, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য টিচাররা ওনাকে উৎসাহিত করেছে। আর ফ্যামিলিকেও রাজি করিয়েছে। পরবর্তীতে উপজেলায় যখন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় গান পরিবেশন করেছিল, তখন সবাই মুগ্ধ হয়েছিল। আর ওনাকে প্রথম বিজয়ী হিসেবে সিলেক্ট করা হয়েছে দেখে ভালো লাগলো।
একজন মানুষ কে যদি উৎসাহ দেওয়ার মতো পাশে কেউ থাকে তাহলে সে খুব সহজেই সাফল্যের দিকে এগিয়ে যেতে পারে।শোভার রানীর টিচারের উৎসাহ তাকে অনেক দূর অব্দি নিয়ে গেছে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার গল্পের শোভা রানীর কাহিনী মনে হয় অনেক ইন্টারেস্টিং হবে। তবে গ্রামাঞ্চলের মানুষ বিয়েকে অনেক প্রাধান্য দেয়। আর জীবনে প্রত্যেক মানুষের বিবাহ আছে হয়তো আগে এবং পরে। তবে শোভা রানী গান পারেনা তারপরও তাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাকে প্রতিযোগিতায় করার জন্য বলল। তবে প্রতিযোগিতায় আবার পাস্ট হয়েছে। তবে আপনার পরের পর্বে বুঝা যাবে তার এবং কাহিনী সম্পূর্ণ। আশাকরি পরের পর্বটি খুব তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন এইটাই আশা করি।
ঠিক বলেছেন আপু গ্রামের মানুষের চিন্তাভাবনা শুধু মেয়েকে বিয়ে দেওয়া নিয়ে।তাদের মনে সবসময়ই এই চিন্তার কারনে গ্রামের মেয়েরা অনেক পিছিয়ে পড়ে।শেষের পর্পটিও বেশ চমৎকার আপু।ধন্যবাদ।
আমাদের দেশে শিক্ষার হার বেড়েছে ঠিকই ,কিন্তু আমরা শিক্ষিত নই।আমরা সবাই বলি মেয়েদের নিজের পায়ে দাড়াতে,কিন্তু সুযোগ করে দিতে চাই না। আমরা মনে করি বিয়েই মেয়েদের একমাত্র কাজ।শোভা রানী যদি সুযোগ পেতো তাহলে বেশ ভালো মানের শিল্পী হতে পারতো। বেশ খারাপ লাগলো শোভা রানীর জীবন কাহিনী পড়ে । পরবর্তি পর্বের অপেক্ষায় রইলাম শোভা রানী সম্পর্কে আরও জানার জন্য।
শিক্ষিত হলেও ভালো শিক্ষা আমরা অর্জন করতে পারিনি।মেয়েদের নিজের পায়ে দাড় করানোর চিন্তা ক’জনই বা করে আপু।আমাদের সমাজে মেয়েরা সবসময়ই অবহেলিত।ধন্যবাদ আপু।