শৈশবস্মৃতি || ছাদ বাগান করার প্রথম প্রস্তুতি।

in আমার বাংলা ব্লগlast month

♥️আসসালামুআলাইকুম♥️

আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷সবার সুস্থতা কামনা করেই আজকের পোস্টটি শুরু করতে যাচ্ছি।

20240215_102219.jpg

আজ সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার পর যখন ছাদে গেলাম তখন গাছ গাছালি এবং টব গুলো দেখতে পেলাম। হঠাৎ করে আমার নানুর বাড়ির কথা মনে পড়ে গেল। আসলে আপনাদের মাঝে প্রায়ই শেয়ার করা হয়েছে আমার নানার বাড়িতে ছাদ বাগানের কিছু ছবি। আমার মেজো মামা অনেক পছন্দ করে গাছ রোপন করতে। তার পাশাপাশি ছোট মামাও পছন্দ করে। তবে তিনি যেহেতু ঢাকাতে থাকেন সেজন্য বাড়িতে তেমন একটা সময় দিতে পারেন না। যাইহোক ২০০৭ এ আমার নানা বিল্ডিং দিয়েছিল তিন তলা। আর এই তিন তলার ছাদেই মূলত ছাদ বাগানটা করা হয়েছে। এজন্য প্রথমত বিভিন্ন ডিজাইনে কয়েকটা টব লাগানো হয়েছিল। টবগুলো বেশ বড় সাইজ করেই বানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে অবশ্য কিছু বিষয় খেয়াল করে এই ছাদে টবগুলো বসানো হয়েছিল।

সেই টবগুলোর ছবি খুব বেশি তোলা হয়নি তবে আপনাদের মাঝে প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের ছবি শেয়ার করেছিলাম। আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব এই টব গুলোর মধ্যে মাটি ভরাট করা এবং গাছ গাছালি প্রথমবার রোপন করার একটা স্মৃতি। যেটা মাঝে মাঝেই আমার মনে পড়ে। আর খুব বেশি ভালো লাগে। সময়টা ২০০৮ ছিল। আমি তখন খুব বেশি বড়ও না। আমার ছোট ভাইয়ের বয়স দু'বছর ছিল। যাই হোক আমরা সবাই বাইরেই মাটি প্রস্তুত করেছিলাম। প্রথমতই মামা বাড়ির আশের ছেলেদের নিয়েই বিভিন্ন জায়গা থেকে মাটি সংগ্রহ করেছিল। পুরনো ভিটিটা যেহেতু ফ্লোর পাকা ছিল সেই হিসেবে সেখানেই সবকিছু প্রস্তুত করা হয়।

20240215_102445.jpg

যাই হোক প্রথমত মাটি নিয়ে আসা হয়। তারপর বিভিন্ন রকম সার কিনে আনা হয়েছিল। তার পাশাপাশি জৈব সারগুলো একত্রে জড়ো করলে পুরো মাটি প্রসেসিং করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে আমি এবং আমার খালামনিরা সবাই মিলে বেশ আনন্দে কাজ করেছি। ছাদে একটা বাগান হবে সেই ক্ষেত্রে আমাদের আনন্দটা অনেক বেশি ছিল। যাইহোক সবাই মিলে যেহেতু হাতে হাতে কাজ করছিলাম তাই অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই কিন্তু মাটি প্রস্তুত করা হয়ে গিয়েছিল। তবে তুলনামূলক ভাবে মাটি প্রস্তুত করতে অনেক বেশি সময় লেগেছিল। এর কারণ হলো অনেকগুলো টব প্রস্তুত করতে হবে তার পাশাপাশি মাটিগুলোকে খুব ভালো করে মিক্স করতে হয়।

20240215_102237.jpg

যাইহোক ভারী কাজগুলোর ক্ষেত্রে মামা এবং অন্যান্য লোকজন ছিল। আমরা শুধুমাত্র কিছু মজার কাজই করেছিলাম। যেটা আমাদের কাছে অনেক বেশি আনন্দের এবং মূল্যবান ছিল। কারণ আমরা ছোট হলেও বিভিন্ন রকম কাজের সহায়তা করা থেকে শুরু করে তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছিলাম। তখন অবশ্য গরমের সময় ছিল। সেজন্যই মূলত কাজ করতে কিছুটা কষ্ট হয়েছিল সকলেরই। তবে সবাই মিলে করার কারণে মূলত অনেক বেশি সহজ এবং দ্রুতই কাজটা হয়ে গিয়েছিল। যে কাজটা করতে প্রায় এক মাসের বেশি সময় লাগতো সেই কাজটা ১০-১৫ জন মানুষ মিলে করায় খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যায়।

যাইহোক মাটি প্রস্তুত করা যতটা সহজ ছিল সেগুলো ছাদে তোলা খুব বেশি সহজ ছিল না। এর কারণ হলো তিন তলা সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠা আবার নিচে নামা এভাবে অনেক বেশি কষ্টকর হয়েছিল। যাইহোক তবুও সবাই মিলে অল্প অল্প করে দিনের বেশিরভাগ সময়টাই আমরা মাটি নিয়ে ছিলাম। যতবার ছাদে যেতাম ততবার মাটি নিয়ে যেতাম। তাছাড়া এমনিতেও অন্যান্য ছেলেগুলোও অনেক মাটি তুলে দিয়েছিল। আমার নিজেরাই কাজগুলো করার চেষ্টা করেছিলাম। কারণ অন্য লোকেরা করলে ঘরের অবস্থা বেহাল দশা হয়ে যেত সে জন্যই মূলত নিজেরা করার চেষ্টা করেছি।

সর্বোপরি ছাদে মাটি নিয়ে টবগুলো যখন ভর্তি করা হলো তখন অনেক বেশি ভালো লাগছিল। তবে সবগুলো টব তখনও ভর্তি করতে পারেনি,কারণ প্রায় ২০টি বড় বড় টব ছিল।পাশাপাশি অনেকগুলো ছোট টবও ছিল। আর এভাবেই বেশিরভাগ টবগুলো মাটি দিয়ে পূরণ করা হয় এবং তারপর গাছ লাগানো হয়েছিল। সে দৃশ্যগুলো যখন চোখের সামনে ভাসে তখন বেশি ভালো লাগে। আর এভাবে অল্প অল্প করে বাকি টবগুলো মাটি ভর্তি করা হয়। এই পর্যন্ত বিভিন্নরকম ফুল গাছ,ফল গাছ এবং শাক-সব্জি লাগানো হয়েছে।এখনো চলছে কাজ,এখন আবার আমার ছোট আন্টি, নানু আর মামাতো ভাই বোনেরাও ছাদ বাগানে বিভিন্ন কাজ করে।আমার বেশ ভালোই লাগে এটা।

সেই স্মৃতি গুলো যখন মনে নাড়া দেয় তখন মনে হয় আবারো ফিরে যাই সেই ছেলেবেলায়। যেখানে আনন্দে ভাসবো,খেলবো, কোনো চিন্তা থাকবে না।সেটা সম্ভব হবে না,কিন্তু স্মৃতিচারণ করেই ভালো লাগে।আগের মত আর যাওয়া হয় না এখন। তবে আমারও ইচ্ছা আছে সুন্দর একটা বাগান করার।সময় গুছিয়ে নিয়ে সেই কাজেও হাত দেব,ইনশাল্লাহ। আজকের এই পর্বে দারুণ একটা স্মৃতি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পেরে খুব ভালো লাগছে।

সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

♥️আল্লাহ হাফেজ♥️

মোবাইল ও পোস্টের বিবরণ

ক্যামেরাস্যামসাং গ্যালাক্সি
ধরণশৈশব স্মৃতি
লোকেশনফেনী

images (4).png

20211121_200134.jpg

আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

images (4).png

💦

💦 BRISTY 💦

💦

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last month 

বাহ আপনার নানু বাড়িতে তাহলে দেখছি ছাদে অনেক গাছ রয়েছে। সত্যি কথা বলতে গাছ লাগাতে আমারও খুবই ভালো লাগে আপু। ছোটবেলায় নানু বাড়ির ছাদে গাছ লাগানোর অনুভূতি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আর যে কোনো কাজই সবাই মিলে একসাথে করলে খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। ধন্যবাদ শৈশবে ছাদ বাগান করার প্রস্তুতির মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 21 days ago 

ঠিক বলেছেন আপু তখন থেকে এখন পর্যন্ত অনেক গাছ রোপন করা হয়, ধন্যবাদ আপনাকে।

 last month 

সবাই মিলে যে কাজ একসাথে করা হয় সেই কাজের আলাদাই আনন্দ। তাও আবার যদি বাগান করার মত কাজ হয় তার আনন্দ তো দ্বিগুণ বটেই। আমি যখন খুব ছোট ছিলাম ঠাকুমা বাগান করতেন। পরের দিকে আমার বাবাকে দেখেছি। আমার তো ছাদ নেই ছোট্ট বেলকুনি আছে এখন আমি করি। ছাদে যে সবজির টপগুলো লাগানো হয়েছে এগুলো দেখলে খুব আনন্দ হয় যখন টুকটাক সবজি ফলে।

 21 days ago 

ঠিক বলেছেন আপু ছাদ বাগান করাটা আসলেই একটা অসাধারণ অভিজ্ঞতা।

 last month 

আপনার নানুর বাড়ি ছাদ বাগানে বেশ বড় বড় টপ তৈরি করে অনেক সুন্দর সুন্দর ফুলের গাছ। ছাদের ওপর বাগান তৈরি করতে প্রথম দিকে অনেক কষ্ট হয়। তবে আপনাদের ক্ষেত্রে এটা বেশ আনন্দের সাথে এবং মজা করে বাগানটি তৈরি করেছিলেন। যদি একা একা কাজটি করা হতো তাহলে অনেক কষ্ট হয়ে যেত। ছাদে উঠবে মাটি ভর্তি করেছেন তারপরে গাছ লাগিয়েছেন বেশ ভালো লাগলো আপু আপনার পোস্ট পড়ে। ধন্যবাদ আপু শেয়ার করার জন্য।

 21 days ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু খুব সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 last month 

নিজেদের ঘরের কাজগুলো নিজেরা করতে পারলে আসলেই ভালো লাগে। আর সবাই মিলে কাজ করার মধ্যে অন্যরকম একটা আনন্দ থাকে। আপনার স্মৃতিচারণ পোস্টটা দেখে ভালো লাগলো। ছাদের মধ্যে এত সুন্দর বাগান থাকলে সত্যিই দারুন হয়। আপনারও বাগান করার ইচ্ছা রয়েছে জেনে ভালো লাগলো। আশা করি খুব শীঘ্রই আপনিও ছাদে সুন্দর একটা বাগান করতে পারবেন।

 21 days ago 

যেহেতু অনেক মানুষ ছিল তাই ভাবলাম নিজেরা সবাই মিলে করে ফেলি খুব ভালো লাগবে। ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.16
JST 0.028
BTC 68487.80
ETH 2454.84
USDT 1.00
SBD 2.61