শৈশব যেখানে এক নির্মম পরিহাস।২২ শে সেপ্টেম্বর,২০২১।।
ইট ভাটার বাচ্ছা ছেলে |
---|
জীবন সত্যি বড় বৈচিত্র্যময়।কোথাও রংয়ের ঘনঘটা আবার কোথাও লোপ পেয়েছে সবটুকু রঙ।সেই সাদা কালো জীবনের একদল মানুষ নিরন্তর সংগ্রাম করে চলেছে দুমুঠো ভাতের জন্য।বন্ধুরা আশা করি সবাই ভাল আছেন,সুস্থ আছেন।সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি আজকে আমার লেখা শুরু করছি।সমাজে বর্ণপ্রথা ছিল আছে ভবিষ্যতেও অনেক দিন থাকবে।এর কতটুকু উপকারিতা আছে সেটা আমি সঠিক জানিনা তবে এর যে খুব ক্ষতিকর প্রভাব প্রয়োজনে সমাজে সেটা অনেক বেশি স্পষ্ট।আমি এই বর্ণপ্রথার সম্পূর্ণ বিরোধী।কিন্তু সমাজে বিভিন্ন রকম স্তর রয়েছে সেই স্তর দূর হোক এরকম আকাশ কুসুম কল্পনা আমি করতে চাই না।সমাজে ভেদাভেদ থাকুক পেশাগত কারণে মনুষ্যত্ব এ নয়।দুঃখের বিষয় আমাদের সমাজে পেশাগত যেরকম তারতম্য রয়েছে তার থেকেও বেশি প্রকট হল মানুষে মানুষে ভেদাভেদ।
একদল মানুষ যারা উপরতলায় বসবাস করছে নিচের তালার মানুষের ঘাড়ে ভর করে,সেই সব ধনী আরো ধনী হচ্ছে।আর নিচু তলার মানুষরা দরিদ্রতার চরমসীমা অতিক্রম করে আরো আরো দরিদ্র হচ্ছে।এই চিত্র আমাদের সমাজের চারিদিকে।এর নিরসনের পথ থাকলেও সেই পথে হাঁটছে না কেউ ,বা হাঁটতে চাইছে না অথবা কোন নোংরা রাজনীতি আমাদের কে শক্ত হাতে প্রতিহত করছে। যাই হোক এরকম রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইছি না।সেটা আমাদের এই কমিউনিটির নিয়ম বিরোধী।
বেশ কিছুদিন আগে তা বেশ কয়েক মাস হবে আমি আর আমার এক বন্ধু বেরিয়েছিলাম জীবন সম্বন্ধে ফটোগ্রাফি করবো বলে।সাবজেক্ট হিসেবে আমরা বেছে নিয়েছিলাম একটি ইট ভাটাকে। এটাকে কেন্দ্র করে একদল মানুষের জীবন অতিবাহিত হচ্ছে।এই মানুষগুলো আমাদের সমাজের সবথেকে নিচু তলায় বসবাস করে।এই একবিংশ শতাব্দীতে সভ্যতার এই বিশাল বিকাশে এই মানুষগুলো জীবনযাপন করছে মধ্যযুগীয় দাসপ্রথার নিয়ম মেনে। ভাবলে অবাক লাগে এদের স্বাধীন ভাবে জীবন যাপন এবং স্বাধীন কোন চিন্তাভাবনার সুযোগ নেই।এদেরকে এক প্রকার জিম্মি করে এদের পরিশ্রম কে কাজে লাগিয়ে একদল অসৎ ব্যবসায়ী শুধু তাদের কালোটাকার পাহাড় করে চলেছে।আমার বক্তব্য এই নয় যে সব ইটভাটার মালিক খারাপ কিন্তু সিস্টেম যেটা চলছে সেটা সব জায়গায় অন্তত দুঃখজনক এবং হতাশাজনক।এখানে আমি ফোটোগ্রাফি করতে গিয়ে যে দৃশ্য দেখলাম তা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক।
যে বয়সে বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়ার কথা হাসি গল্পে মাতোয়ারা হওয়ার কথা সেই বয়সে এদের জীবন কাটছে দুঃসহ যন্ত্রণা আর বাধ্যবাধকতা নিয়ে।এই বয়সে তারা যে কাজ করছে তাকে আমরা শিশুশ্রম বলে জানি এবং এটা আইনত অবৈধ। তবুও সকলের চোখের সামনেই সরকার ও প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে।ব্যক্তিবিশেষ ,মানবাধিকার এর বিরুদ্ধে কিছু বলছে না।ফটোগ্রাফির মাধ্যমে এখানে জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে চলা কিছু বাচ্চাদের ফটোগ্রাফি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম।আমরা এদের কিছু ফটোগ্রাফি করছিলাম এই জন্য এদের ভিতর একটু আনন্দ একটু চঞ্চলতা অনুভব করলাম।
দেখলাম এরা মুহূর্তে খুশি হয়ে গেল এদের ভেতর এক ধরনের হুড়োহুড়ি পড়ে গেল।প্রতিযোগিতা শুরু হলো কে আগে ক্যামেরার সামনে পোজ দেবে।বহুদিন ধরে খরার পর যখন বৃষ্টি নামে তখন একটা এক প্রকার স্বস্তির বার্তা নিয়ে আসে।আমরা যেন এদের এই বর্ণহীন জীবনে একটা স্বস্তি একটা ভালোলাগা হয়ে গিয়েছিলাম।আমরা বেশ কিছু চকলেট কিনে এদেরকে বিতরণ করেছিলাম তখন মনে হয়েছিল যদি এদেরকে দুহাত ভরে কিছু দেওয়া যেত।
মনস্থির করেছিলাম দুই বন্ধু আবার ফিরে আসবো এদের জন্য কিছু উপহার নিয়ে, যদিও এদের জন্য বেশি কিছু করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয় উপরতলার শক্ত হাত আমাদেরকে যখন তখন পিষে দিতে পারে।এরা অল্পতেই খুশি সামান্য মৌলিক অধিকারে জীবন আনন্দময় হতে পারত কিন্তু শুধুমাত্র কিছু স্বার্থন্বেষী মানুষদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য এদের এই আনন্দময় শৈশব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সবার চোখের সামনে নিদারুণভাবে এরা দিন কাটাচ্ছে।
Support @amarbanglablog by Delegation your Steem Power
100 SP | 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP |
Take it out and let it go.
Creativity and Hard working. Discord
এই লাইনগুলো অনেক বেশি সত্যি ভাইয়া।তিক্ত সত্যি বলতে গেলে।আসলেই উপর তলার মানুষগুলো দিন দিন আরো উপরে উঠছে, আমার তাতে সমস্যা নেই। সমস্যা হচ্ছে অভাগী গুলোর ভাবনার দিন শেষ হচ্ছেনা হয়তো হবার ও নয়।
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
জীবনের এই সমস্ত ঘটনা দেখে ও শুনে যেনো মন টা কেঁদে ওঠে। তোমার লেখনীতে সবসময় কঠিন বাস্তব চিত্র তুলে ধরো। আজ খুবই দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করা মানুষ ।যারা প্রতিনিয়ত জীবন সংগ্রাম করছে দুমুঠো ভাতের জন্য। ওরা যেনো সেই অনাদিকাল কাল থেকে কায়িক পরিশ্রমে বিশ্বাস করে। নিজেরাই কাজ করছে সাথে ছোট ছোট বাচ্চারা ।একদম যথার্থ বলেছো যেখানে বাচ্চারা বই খাতা নিয়ে ইস্কুলে যাবে পড়াশুনা করবে সেখানে তারা কাজ করছে। তারা যে অবুঝ তারা বাবা মায়ের সাথে কাজ করছে। এই শিশু শ্রম সত্যিই খুবই শোচনীয়। যারা তাদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য শিশু শ্রম করাচ্ছে এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিত। সাথে সাথে এই সকল গরিব পরিবারের পাশে সরকার ততা সমাজ সেবক দের এগিয়ে আসা উচিত ।যাতে শিশু শ্রম বন্ধ হয়ে শিশু রা শিক্ষার আলো দেখতে পারে। খুব ভালো লাগলো তুমি চকলেট দিয়েছিলে ওদের। ওরা ভীষণ খুশি হয়েছিলো । আরো কিছু দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ ও করেছো। তুমি বড় মনের মানুষ। সমাজের স্বার্থ নেসি মানুষদের তাদের স্বার্থ পরথা কমানো উচিত। শিশু শ্রম বন্ধ হওয়া উচিত। কিন্তু সরকারের ও কোনো উদ্যোগ নেই। আমাদের আরো বেশি সচেতন হওয়া উচিত। একটা কঠিন বাস্তিবিক চিত্র তুলে ধরার জন্য অনেক শুভেচ্ছা নিও।
শৈশব বড় বিচিত্র জিনিস। এই শৈশবকে ঘিরে শুরু হয় জীবনের পথচলা। কারো শৈশব সাজানো রঙিন স্বপ্ন দিয়ে আবার কেউ স্বপ্ন দেখে দুমুঠো ভাতের আশা। সবাই মানুষ তবে তাদের পার্থক্য হলো জীবনের পথ চলার। আপনার ফটোগ্রাফিতে প্রকাশিত হয়েছে সমাজের বাস্তব চিত্র গুলো। এই সমাজের দরিদ্র মানুষগুলোর জীবন সংগ্রামের কথা আপনি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
মানবতার চোখ দিয়ে যদি কেউ এই বাচ্চাদের দিকে তাকায় তাহলে চোখের পানি ধরে রাখা কষ্ট হবে।
তারা আপনাদের হাত থেকে এই খাবার পেয়ে যে কতটা খুশি হয়েছে সেটা তাদের মনের ভেতরে গেলেই বুঝতে পারতেন দাদা।
অনেক ধন্যবাদ দাদা খুব সুন্দর এবং সামাজিক পোস্ট করেছেন।ভালোবাসা রইলো আপনার জন্য।
শিশুশ্রম বর্তমান সমাজে একটি মারাত্মক জঘন্যতম কাজ।কিন্তু সমাজের স্বার্থপর মানুষেরা নিজেদের ফায়দার জন্য শিশুদের দিয়ে এই ধরনের কাজ করতে বাধ্য করছে তাদের দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে।আমাদের শুধুই মনে মনে দুঃখপ্রকাশ ও আপসোস করা ছাড়া কিছুই করার থাকে না, কারণ প্রশাসনরা চোখে পট্টি বেঁধে বসে থাকেন।ফলে অসৎ ব্যবসায়ীরা আর ও সুযোগ পেয়ে যায়।খুব সুন্দরভাবে শিশুশ্রম নিয়ে উপস্থাপনা করা হয়েছে।ধন্যবাদ দাদা।
এই সময়আমরা যখন আমাদের প্রাপ্তবয়স্ক দের থেকে এত আলাদা করে তুলছি, কিন্তু আমি আপনাকে অভিবাদন জানাই, আপনি ছোট বাচ্চাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে খুব জ্ঞানী।
হতদরিদ্র এই শিশুদের প্রতি আপনার যে এক প্রকারের টান কাজ করছে তা দেখে খুবই ভালো লাগছে।সবার মতো আপনার মনটা এতো কঠোর নয়,অসৎ ব্যবসায়ীরা তো শুধু ব্যস্ত আছে তাদের কালোটাকার পাহাড় বানাতে, তাদের কি আর এসব দুঃস্থ শিশুদের দিকে তাকানোর সময় আছে?
এরা একটু সুযোগ অনেকে একটা সুন্দর জীবন পেত।ধন্যবাদ আপনাকে।
আমি নিজেও আপনার মতো বর্ণপ্রথার সম্পূর্ণ বিরোধী ভাই, কারন এটা সমাজে বিভক্তি সৃষ্টি করে এবং সঠিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। আপনি ঠিকই বলেছেন, একদল মানুষ শুধুই ধনী থেকে ধনী হচ্ছে আর আরেক শ্রেণী খুবই নিম্নমানের জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। জীবনের নির্মমসত্য কথাগুলো খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে, সাথে ফটোগ্রাফিগুলোও চমৎকার ছিলো। ধন্যবাদ
ছবি যখন কথা বলে । বাস্তবতাকে এমন ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, তার সাদৃশ্য প্রমাণ হচ্ছে আপনার ছবিগুলো। একদম চরম বাস্তবতা ফুটিয়ে তুলেছেন ছবির মাধ্যমে ।শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য ভাই ।