আমরাই সেরা প্রজন্ম (১৯৯১-২০০৭ ইং) // পর্ব-১১।

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ শুক্রবার। ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।

IMG_20220914_122847_984.jpg



একমাত্র আমাদের প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা অর্থাৎ আমরা আমাদের দাদা-দাদির সাথে যেভাবে মিশতে পেরেছি এবং দাদা দাদির কাছ থেকে যে পরিমাণ আদর স্নেহ পেয়েছি সেটা হয়তো অন্য কোন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা পাইনি। আমার আজও মনে আছে আমরা যখন ছোটবেলায় প্রাইমারি স্কুলে পড়তাম তখন প্রত্যেকদিন আমাদের টিফিনে এক প্যাকেট করে শুকনো বিস্কুট খেতে দিতো। টিফিনের সময় বিস্কুটের প্যাকেট হাতে পেয়ে প্রথমে মনে পড়ে যেত আমার দাদা-দাদির কথা। একটা প্যাকেটে বিস্কুট থাকতো আট থেকে নয়টি। আর কয়েকটি প্যাকেটে বিস্কুট থাকতো দশটি করে। বিস্কুট গুলো স্বাদে অনন্য ছিল। এক প্যাকেট শুকনো বিস্কুট খেয়ে কারো মনের তৃপ্তি মিটতো না।



বিস্কুট গুলো খেতে যেমন ভালো লাগলো ঠিক তেমনি ছিল স্বাস্থ্যসম্মত। কিন্তু টিফিনে পাওয়া বিস্কুটের মিষ্টি স্বাদও হার মেনেছে আমার দাদা-দাদির কাছ থেকে পাওয়া আদর-স্নেহের কাছে। প্রত্যেকদিন প্যাকেটের অর্ধেক বিস্কুট টিফিনে খেতাম এবং বাকি অর্ধেক দাদা ও দাদীর জন্য স্কুল থেকে এক দৌড়ে বাড়িতে নিয়ে আসতাম। দাদীর হাতে দুইটা বিস্কুট তুলে দিতাম আর দাদার হাতে দিতাম দুইটা বিস্কুট। দাদা ও দাদী বিস্কুট হাতে পেয়ে যে কি পরিমাণ আনন্দিত হতো সেটা ভাষায় বোঝানো সম্ভব নয়। দাদা ও দাদী বিস্কুট খাওয়া বাদ দিয়ে প্রথমে আমার মাথায় হাত দিয়ে মন থেকে দোয়া করতো। দাদা ও দাদীর কাছ থেকে এরকম অকৃত্রিম ভালবাসা ও দোয়া পাওয়ার সৌভাগ্য একমাত্র আমার ও আমার প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদেরই হয়েছে।



আমরা আমাদের দাদা দাদির কাছ থেকে যে পরিমাণ আদর ও স্নেহ পেয়েছি সেটা আমাদের মা-বাবার থেকে পাওয়া আদর ও স্নেহ থেকেও কোন অংশে কম নয়। আমাদের দুষ্টুমিতে আমাদের মা ও বাবা বিরক্তবোধ হলেও আমাদের দাদা-দাদী এক বিন্দুমাত্রও বিরক্ত অনুভব করত না। আমার আজও মনে আছে, আমার দুষ্টুমিতে আমার মা যখন আমাকে মারতে আসতো ঠিক তখনই দাদির কোল ছিল আমার অত্যন্ত নিরাপদ একটি স্থান। দাদীর কাছে চলে যেতে পারলেই সব অপরাধ মাপ। আবার কোন কারনে যদি আমার আব্বা আমাকে একটু বকাবকি করতো তাহলে দাদাকে আবার কে ঠেকায়? দাদার গরমে আব্বা বাড়ি থেকে বাইরে যেতে বাধ্য হতো।



দাদা-দাদির নিকট থেকে একমাত্র আমাদের প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরাই অধিক ভালবাসা পেয়েছে। দাদা ও দাদিকে আমাদের মতো এতটা আপন করে কোন প্রজন্ম পায়নি। দাদা ও দাদীর কথা মনে হলে খুবই কষ্ট লাগে আমাদের। তাদের দেওয়া ভালোবাসার স্মৃতিগুলো কখনোই আমরা ভুলে থাকতে পারবো না। তারা আজ পৃথিবীর বুকে নেই কিন্তু আমাদের মনের আসনে তারা স্থায়ীভাবে সব সময়ের জন্য বিরাজ করে। আমাদের সেই শৈশবের ভালোবাসার মানুষ, আমাদের খেলার সাথী, আমাদেরকে আদর স্নেহ দেওয়ার অফুরন্ত ভান্ডার--আমাদের সেই দাদা-দাদী আজ যদি আমাদের মাঝে থাকতো তাহলে আমাদের জীবন আরো বেশি মধুর হতো, আরো বেশি উপভোগ্য হতো।



আমাদের প্রজন্মের সকল ছেলেমেয়েরা তাদের শৈশবের মুহূর্তটুকু যেভাবে আনন্দ উপভোগের মধ্য দিয়ে কাটিয়েছে সেটা হয়তো আমাদের দেশের আর কোন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের সুযোগ হয়নি কিংবা ভবিষ্যতে আর হবেও না। আমার আজও মনে আছে, আমার শৈশব জীবনে প্রতিদিন বিকাল বেলা হওয়ার সাথে সাথে পাড়ার আমার প্রজন্মের প্রায় সকলে খেলাধুলা করার জন্য একত্রিত হতাম। কোনদিন বিকেলের সময়টা খেলার মধ্যে দিয়ে কাটিয়ে দিতাম। আবার কোনদিন আমরা সকলেই দল বেঁধে চলে যেতাম ডাহুক পাখি ধরতে। যেদিন আমরা দল বেধে ডাহুক পাখি ধরতে যেতাম সেদিনের বিকেলটা নিছক ব্যর্থ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে শেষ হতো।



ডাহুক পাখি ধরতে না পারলেও ডাহুক পাখির পিছনে দৌড়ানোর সময় এক ধরনের হই-হুল্লো সৃষ্টি হয়ে যেত। যেটা দেখে আমাদের সমাজের বয়স্ক মানুষেরা আনন্দ করতো এবং হাত-তালি দিতো। আবার অনেকেই আমাদেরকে সাবধান করে দিতো যাতে আমরা ঝড়ের মধ্যে প্রবেশ না করি। কারণ ঝড়ের মধ্যে বিষাক্ত সাপ থাকার সম্ভাবনা থাকতো। আবার অনেকে নিষেধ করত আমরা যাতে গাছে না উঠি। কিন্তু কে শুনে কার কথা,, আমরা দুই তিনজন মিলে একজন বন্ধুকে উঁচু করে ধরে গাছে উঠিয়ে দিতাম-- ডাহুক পাখি ধরে আনার জন্য।



চলবে।



দশম পর্বটি পড়ার লিংক



আমার পরিচয়।

IMG_20220709_132030_108.jpg



আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।



১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 61795.04
ETH 3458.89
USDT 1.00
SBD 2.52