আমরাই সেরা প্রজন্ম (১৯৯১-২০০৭ ইং) // পর্ব-০২।
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ শুক্রবার। ২৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, নয় মাস রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয়ে পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের দেশে সময়ের তালে তালে এক এক প্রজন্ম এসেছে। স্বাধীনতার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত যদি একটু সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করি তাহলে সুস্পষ্ট ভাবে দেখা যাবে যে, ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত এই প্রজন্মটা এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের সবথেকে সেরা প্রজন্ম। আমার দৃষ্টিতে এই প্রজন্মটা কেন সব থেকে সেরা প্রজন্ম সেই কথাগুলো আজ আমি আপনাদের নিকট উপস্থাপন করছি। আমি আশা করি, আমার লেখাগুলো পড়ে আপনাদের সামান্য পরিমাণ হলেও ভালো লাগবে।
আমরাই সেই প্রজন্ম যারা সপ্তাহে একদিন টেলিভিশনে মুভি দেখার জন্য পুরো একটি সপ্তাহ অপেক্ষা করেছি। সপ্তাহের শুক্রবারের বিকেল বেলার জন্য আমরাই সকাল থেকে নিজেদেরকে প্রস্তুত করেছি টেলিভিশনের মুভি দেখার জন্য। তখন সপ্তাহে একদিন টেলিভিশনে মুভি দেখার মাঝে যে পরিমাণ আনন্দ অনুভব করেছি বর্তমান সময়ে প্রতিদিন মুভি দেখার মাঝে সেই আনন্দ আর নেই। আমরা দেখেছি রাজ্জাক, কবরী, শাবানা, আলমগীর এর সামাজিক মুভি। এসব শিল্পীদের প্রত্যেকটি মুভি ছিল জীবনমুখী, জনগণকে সচেতন করার মুভি, জনসাধারণকে সামাজিক শিক্ষা দানের মুভি।
আমরা দেখছি রাজীব, হুমায়ুন ফরিদী সহ আরো বেশ কয়েকজন খলনায়ক চরিত্রে অভিনয়কারী শিল্পীদের অসাধারণ অভিনয়। এছাড়াও আমরা দেখেছি টেলিসামাদ এবং দিলদারের মতো হাস্যরস সৃষ্টিকারী শিল্পীদের মন মাতানো অভিনয়। এসব গুণী শিল্পীদের অভিনয় দেখে আমরা যেমন হেসেছি ঠিক তেমনি কেঁদেছি। আর আমরা এতটাই সৌভাগ্যবান যে, একমাত্র আমাদের প্রজন্মই এ সমস্ত শিল্পীদের পেয়েছিল। আসলে আমাদের প্রজন্মের সময় আমাদের দেশের সংস্কৃতি সবথেকে বেশি উন্নত হয়েছিল।
আমাদের প্রজন্মের কোন মানুষই মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব রূপ দেখতে পারেনি। কিন্তু আমরা দেখতে পেরেছি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের সিনেমা, আমাদের কিশোর বয়সের সময় প্রত্যেক বছরের ডিসেম্বর মাস এলেই সাদাকালো টেলিভিশনে দেখতে পেতাম হাঙ্গর নদীর গ্রেনেড কিংবা আগুনের পরশমনির মতো মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কালজয়ী সিনেমাগুলো। এসব মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমাগুলো দেখেই আমরা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তথ্য গুলো জানতে পেরেছি। এসব সিনেমার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি যে, কিভাবে আমাদের নিরস্ত্র বাঙ্গালীদের উপর, আমাদের নিরস্র বাঙালি মা-বোনদের উপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তার দোসররা কিভাবে হত্যা,অত্যাচার এবং নিপীড়ন চালিয়েছিল।
এসব সিনেমার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছিলাম যে, কিভাবে তরতাজা জীবন বিসর্জন দিয়ে আমাদের দেশের সোনার ছেলেরা দেশের মাটিকে শত্রুমুক্ত করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিল। শুধু তাই নয়, এ ধরনের সিনেমাগুলো দেখে মনের অজান্তেই দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে রেগে আগুন হয়ে যেতাম, শরীরের রক্ত যেন টগবগ করে ফুটতে থাকতো। আবার কখন যে মনের মাঝে দেশের প্রতি অগাধ ভালোবাসা জন্ম নিয়ে এবং দেশের স্বাধীনতা অর্জনে আত্মত্যাগকারী শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধায় আমাদের শরীরের প্রতিটি পশমের গোড়া শিহরে ফুলে উঠতো বুঝতে পারতাম না।
আসলে স্বদেশপ্রেম ভিত্তিক সিনেমাগুলো আমরাই বেশি দেখেছি। আর এ ধরনের সিনেমাগুলো দেখার পরে আমাদের মনের মধ্যে যে অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছে সেই অনুভূতি যে কত গৌরবের, কত গর্বের, কত অহংকারের, কত সম্মানের-- সেটা ভাষায় বোঝানো সম্ভব না। আমাদের প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরাই সপ্তাহে একটি মুভি দেখার পরে সেই মুভিটি পুনরায় দেখার জন্য সপ্তাহের পর সপ্তাহ, মাসের পর মাস অপেক্ষা করেছে। সত্যিই অসাধারণ মধুর ও উপভোগ্য ছিল আমাদের সেই সময়টুকু।
চলবে।
#general-writing #thebestgeneration #memories #steemexclusive #krsuccess #amarbangla-blog #bangladesh
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আপনার পোস্টের কথাগুলো পড়ে অসাধারণ লাগল ভাই। সত্যি বলেছেন আমরাই সেরা প্রজন্ম। যারা টিভি দেখার জন্য অপেক্ষা করতাম অনেক টা দিন। আমাদের একটা নিজস্ব কাল্পনিক জগত ছিল। আমরা নিজেদের শৈশব কে পূর্ণাঙ্গভাবে উপভোগ করেছি। যেটা বতর্মান প্রজন্ম বা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আর পারবে না। অসাধারণ লিখেছেন ভাই।
আমার পোস্টটি পড়ে অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।