আমরাই সেরা প্রজন্ম (১৯৯১-২০০৭ ইং) // পর্ব-১৩।

in আমার বাংলা ব্লগlast month



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ মঙ্গলবার। ২৮ ই মে, ২০২৪ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।

IMG_20220914_122847_984.jpg



আমাদের প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা যতটা আনন্দের সাথে শৈশবের জীবন অতিবাহিত করেছে, সেটা হয়তো আগামী আর কোন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের শৈশব জীবনে আসবেনা। কারণ আমরা একটু লক্ষ্য করলেই দেখবো যে, বর্তমান সময়ের প্রায় সকল ছেলে মেয়েরাই তাদের শৈশবের মধুর সময়টুকু স্মার্ট মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ ব্যবহার করার মধ্য দিয়ে শেষ করে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপ ব্যবহারের মধ্য দিয়ে তাদের শরীরে অপূরণীয় ক্ষতি করছে। বিশেষ করে বর্তমান সময়ের অধিকাংশ ছেলে-মেয়েদের খুব সহজে মাথা এবং চোখে সমস্যা দেখা দিচ্ছে, শুধুমাত্র প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে।



এখানেই শেষ নয়, বর্তমান প্রজন্মের ছেলে -মেয়েরা ঘরে বসে একা একা অতিরিক্ত ল্যাপটপ এবং মোবাইল ফোন ব্যবহার করে খুব সহজে তারা মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে যাচ্ছে, খুব সহজে তারা হতাশার সাগরে ডুবে যাচ্ছে। বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মাঝে তেমন একটা প্রাণ চঞ্চলতা খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্তু আমাদের প্রজন্মের সকল ছেলে-মেয়েরা প্রাণ চঞ্চলতায় ছিল পরিপূর্ণ। জৈষ্ঠ মাস আসার সাথে সাথে আমাদের প্রজন্মের প্রায় সকল ছেলে মেয়েরাই পাকা ও মিষ্টি আম খাওয়ার নেশায় এক আম গাছ তলা থেকে অন্য আম গাছ তলায় ছুটে বেড়াতাম। সেটা হোক নিজের আমগাছ কিংবা পরের আম গাছ।



যদি পরের গাছের আম মিষ্টি লাগতো তাহলে সেই গাছের আম যে করেই হোক আমরা পেড়ে খেতাম। শুধু তাই নয়, পাখির খাওয়া একটি পাকা আম পেলে আমরা দুই-তিনজন বন্ধু সেই আমটি ভাগ করে খেতাম।আবার অন্য কারো আম গাছের দিকে তাকিয়ে যদি দেখতাম একটি পাকা আম পাখিতে খাচ্ছে, তখন আমরা বন্ধুরা মিলে সেই পাখিটিকে ঢিল মেরে তাড়িয়ে দিতাম। তারপর আম গাছের মালিকের অনুমতি ছাড়াই আম গাছে উঠে সেই আম পেড়ে বন্ধুরা মিলে ভাগ করে খেতাম। কোন কোন সময় আম গাছের মালিক আমাদেরকে দেখে ফেললে তিনি হাসিমুখেই বলতেন, "ওই দেখিস, যেন আম গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়িস না।"



কোন কোন দিন পাখির খাওয়া একটি পাকা পাড়ার জন্য গাছে উঠে আরো ৫-১০ টি পাকা পেড়ে নেমে আসতাম। আবার মাঝেমধ্যে আম গাছের মালিকও বলতো, গাছে যখন উঠেই পড়েছিস আমাদের জন্য কিছু আম পেড়ে দাও। আসলে আমাদের প্রজন্মের প্রায় সকল ছেলেরাই গাছে উঠতে অত্যন্ত দক্ষ ছিল। এমন কি আমাদের প্রজন্মের মেয়েরা পর্যন্ত গাছে উঠতে পারতো। পাকা আম খাওয়ার পাশাপাশি আমাদের প্রজন্মের সকল ছেলে মেয়েরা মনের মতো করে পাকা জাম খেতে পেরেছে। আসলে আমাদের প্রজন্মের সময় আমাদের বাড়ির আশেপাশে এবং রাস্তার ধারে অসংখ্য পরিমাণে জাম গাছ ছিল। তাই আমাদের প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা পাকা জামের অভাব খুবই কমই অনুভব করেছে।



তারপরেও যখন জাম গাছ থেকে একটি পাখি পাকা জাম মুখে করে নিয়ে উড়ে যেত, তখন আমরা বন্ধুরা মিলে সকলেই পাখির পিছু পিছু দৌড়ে যেতাম সেই পাকা জামটি খাওয়ার আশায়। আসলে আমরা ওই সময় বিশ্বাস করতাম যে, যে পাকা জামটি পাখি খায় সেটা হয়তো অতিরিক্ত মিষ্টি হয়। আসলে আমাদের প্রজন্মের সকল ছেলে মেয়েদের মধ্যে যে পরিমাণ প্রাণ চাঞ্চলতা, মনের সজীবতা, মনের আনন্দ, নিয়মানুবর্তিতা ছিল সেটা হয়তো আগামী আর কোন প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের মধ্যে দেখা যাবে না। তাই আমি মনে করি, স্বাধীন বাংলাদেশে একমাত্র আমাদের প্রজন্মই হলো সেরা প্রজন্ম এবং সৌভাগ্যবান প্রজন্ম।



চলবে।



১২তম পর্বটি পড়ার লিংক



আমার পরিচয়।

IMG_20220709_132030_108.jpg



আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।



১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last month 

বেশ ভালো লাগলো আপনার সুন্দর এই পোস্ট পড়ে। দারুন একটি বিষয় নিয়ে আপনি আমাদের মাঝে পোস্ট শেয়ার করে থাকেন। ঠিক তেমনি ভাবে আজকে আমাদের মাঝে সুন্দর এই পোস্ট শেয়ার করেছেন দেখে অনেক অনেক ভালো লেগেছে আমার। এই প্রজন্মের প্রতি আমাদের আরো সজাগ ও সচেতন হতে হবে।

 last month 

ঠিক বলেছেন , এখনকার ছেলে ৎমেয়েরা শুধুমাত্র মোবাইল এবং কম্পিউটারে আসক্ত হয়ে সারা দিন কেটে যায়। আর আগে কিনা বাইরে বেরিয়ে কত রকমের খেলাধুলা করা হতো। ছোটবেলায় আম কুড়ানো থেকে শুরু করে কত ধরনের স্মৃতি থাকে। কিন্তু এখনকার ছেলেমেয়েদের তো এই ধরনের কোন স্মৃতি থাকবে না। সে ক্ষেত্রে আগের দিনের প্রজন্ম টাই সেরা বলে মনে করি।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 58447.77
ETH 3173.14
USDT 1.00
SBD 2.43