আমরাই সেরা প্রজন্ম (১৯৯১-২০০৭ ইং) // পর্ব-১২।

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ সোমবার। ২৯ ই এপ্রিল, ২০২৪ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।

IMG_20220914_122847_984.jpg



গাছে উঠার সাথে সাথে ডাহুক পাখি উড়ে অন্য গাছে বসতো। আবার অন্য গাছ থেকে ডাহুক পাখি উড়ে জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে যেত। সঙ্গে সঙ্গে আমরা সকলেই ডাহুক পাখির পিছনে দৌড়াতে শুরু করতাম। পাড়ার সকল ছেলেদের সাথে বেশ কয়েকজন মেয়েরাও আমাদের সাথে ডাহুক পাখি ধরার কাজে অংশগ্রহণ করতো। আর বেশিরভাগ মেয়েরা ডাহুক পাখি কোথায় গিয়ে বসছে সেই স্থানটি দেখাতে ব্যস্ত থাকতো। শুধু তাই নয়, ডাহুক পাখি যেই জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে পড়তো সেই জায়গায় আমরা যখন পৌঁছাতাম, সেখানে আমরা যেন আস্তে আস্তে প্রবেশ করি সেটাও আমাদেরকে ইশারায় বোঝা তো আমাদের সমবয়সী মেয়েরা। আসলে আমাদের শৈশবের সময় পাড়ার সকল ছেলেমেয়েরা মিলে-- আমরা যে খেলায় করতাম না কেন, এতে অভিভাবকদের কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকতো না। আর এ কারণেই হয়তো আমাদের প্রজন্মের সকল ছেলে-মেয়েদের মধ্যে এতো পরিমাণে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার সম্পর্ক বিদ্যমান।



যাহোক, একটি ডাহুক পাখিকে ধরার জন্য ডাহুক পাখির পিছনে দৌড়াদৌড়ি করার প্রজন্মই হলাম আমরা। ঝোড়ের ভিতরে ঢুকে ঝাঁপাঝাঁপি-লাফালাফি আর তীব্র হইচই করার মধ্য দিয়ে ঝোড়ের ভিতর থেকে ডাহুক পাখিকে ফাঁকা স্থানে বের করে আনতাম। ডাহুক পাখি যখন ঝোড় থেকে বের হতো তখন আমরা সকলেই গলা ফাটিয়ে বলতাম "ধর ডাহুক পাখিকে"। একটি ডাহুক পাখি ধরার জন্য হইচই করে পুরো পাড়া মাথায় করে ফেলতাম। ডাহুক পাখির পেছনে দৌড়ানো দেখে, আর হইচই করা দেখে সমাজে বয়স্করা অর্থাৎ আমাদের অভিভাবকেরা পর্যন্ত আনন্দে মেতে উঠতো। এরপর পুরো বিকেল ডাহুক পাখির পেছনে বৃথা পরিশ্রম করার পর আমরা সকলেই সন্ধ্যার সাথে সাথে নিজ নিজ বাড়িতে চলে যেতাম। আবার আমাদের মধ্যে অনেকেই মাগরিবের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে চলে যেত।



আমরা ডাহুক পাখি ধরতে না পারলেও পুরো পাড়ার ছেলেমেয়েরা একত্রিত হয়ে যে পরিমাণ মন খুলে চিল্লাতে পারতাম, ডানা মেলে উড়ে বেড়ানো পাখির মতো মুক্ত ভাবে বিকেলের সময় উপভোগ করতে পারতাম, আর স্বাধীনভাবে সমবয়সী সকল ছেলে-মেয়েদের সাথে প্রাণ খুলে কথা বলতে ও মন খুলে হাসতে পারতাম সেটা হয়তো আর অন্য কোন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা পারবে না। পুরো বিকেলের সময়টা সমবয়সী ছেলে-মেয়েদের সাথে খেলাধুলা এবং হইচই করার পর ক্লান্ত শরীর নিয়ে সন্ধ্যার পর পরই বই সামনে নিয়ে পড়তে বসার প্রজন্মই হলাম আমরা। বাবার ভয়ে যখন বই পড়ায় একেবারে মশগুল হয়ে যেতাম ঠিক তখনই সুস্বাদু খাবার রান্না করে মা হাজির হয়ে যেত। পড়া বাদ দিয়ে মায়ের হাতে গরম গরম সুস্বাদু খাবার খেতে দ্রুত চলে যেতাম। কোনদিন দেশি মুরগির মাংস রান্না, আবার কোনদিন ডিম ভাজি আর আলু ভাজা এবং সাথে খেসারির ডাল রান্না, আবার কোনদিন জিওল মাছের ঝোল তরকারি, পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকারের টাটকা সবজি রান্না। মায়ের হাতে রান্না করা এরকম সুস্বাদু খাবার খাওয়ার সাথে সাথে সারাদিনের ক্লান্তি যেন এক নিমিষেই দূর হয়ে যেত।



রাতের খাবার খাওয়ার পরে পড়াশোনার ক্ষেত্রে অন্যরকম এক শক্তি অনুভব হতো। আবার রাত পোহালে স্কুলে গিয়ে স্যারের পড়া দিতে হবে-- এই দুশ্চিন্তাটাও বেশ মাথার মধ্যে থাকতো। তবে বই পড়া শুরু করলে খুব দ্রুত বইয়ের পড়া গুলো মুখস্ত হয়ে যেত। আবার পড়তে পড়তে কখন যে দুচোখে ঘুমের ভাব চলে আসতো বুঝতে পারতাম না। বাড়িতে বাবার ভয় এবং স্কুলে স্যারের ভয়ে দুচোখ থেকে খুব সহজেই ঘুম তাড়িয়ে দিতাম। দুচোখে ঘুমের ভাব আসার সাথে সাথে খুব দ্রুত টিউবওয়েলে গিয়ে চোখমুখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধৌত করে নিতাম। তারপরে আবার পড়াশোনায় মন দিতাম। আসলে আমাদের প্রজন্মের প্রায় সকল ছেলেমেয়েরা এভাবেই লেখাপড়া করে তাদের ছাত্র জীবনের সফলতা অর্জন করেছে।



চলবে।



একাদশতম পর্বটি পড়ার লিংক



আমার পরিচয়।

IMG_20220709_132030_108.jpg



আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।



১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 64252.58
ETH 3495.24
USDT 1.00
SBD 2.50