গল্প :- সম্মান // পর্ব:-১০

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago (edited)



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ বৃহস্পতিবার।২১ ই মার্চ, ২০২৪ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।

religion-2689453_1280.jpg

Source



পুরো বাগান নূরের আলোয় ঝলমল করছে। একই সাথে পুরো বাগান দিয়ে এক অসাধারণ সুগন্ধ বের হচ্ছে। মনে হচ্ছিল যেন বাগানে কেউ সুগন্ধ মাখিয়ে রেখেছে। তারপর আস্তে আস্তে যখন আমার পুরো জ্ঞান চলে আসলো, তখন দেখতে পেলাম সাদা পোশাক ধারী হাজার হাজার মানুষ। সকল মানুষের চেহারা দেখতে একই রকমের, একই রকম তাদের উচ্চতা এবং একই বয়সের সবাই। কিন্তু তাদের চেহারা দেখে মনে হচ্ছিল না যে তারা পৃথিবীর কোন মানুষ। একই সাথে তাদের চেহারা দিয়ে এক অসাধারণ উজ্জ্বল আলো বের হচ্ছিল। আর সেই আলোয় পুরো বাগান আলোকিত হয়েছিল। তারপরে তারা সকলেই আমাদের ধার্মিক লোকের জানাজায় অংশগ্রহণ করেছিল। তাদের মধ্যে একজন এসে আমাকে অজু করিয়ে দিয়েছিল এবং জানাযায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিয়েছিল।



অন্য একজন কালুকে জিজ্ঞেস করলো, আমাদের ধার্মিক লোককে জানাযা করিয়েছিলকে? উত্তরে কালু বললো, যে লোকটি আমাদের ধার্মিক লোককে জানাজা করিয়েছিল তাকে সামনে থেকে দেখার সুযোগ হয়নি আমার। কালু আরো বললো, জানাজা শেষে আমাদের ধার্মিক লোকের কবরে আমাকে ওরা তিনবার মাটি দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল। তারপর সকলেই যখন মাটি দেওয়া শেষ করলো তখন সৃষ্টিকর্তার নিকট সকলের মতো আমিও মোনাজাত করেছিলাম। মোনাজাত শেষে এক অপূর্ব সুগন্ধ আমার নাকে আসলো এবং শীতল বাতাস আমার শরীরে এসে লাগলো। তখন আমি সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে গেলাম। ঘুম থেকে জেগে দেখি আমাদের ধার্মিক লোকের কবর এত সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে অথচ এখানে আমি ছাড়া আর কেউ নেই। ধার্মিক লোকের জানাযায় যারা এসেছিল তারা সকলেই বাগান ছেড়ে চলে গেল।



কালুর মুখে এরকম কথা শুনে সকলেই নিশ্চিত হলো যে, আমাদের ধার্মিক লোকের সম্মানে মহান সৃষ্টিকর্তা তার বিশেষ প্রতিনিধি সবসময় বাগানে রাখতেন এবং তারাই আমাদের ধার্মিক লোকের শেষ কাজটুকু করে বাগান থেকে চলে গেছে। আর এই সব কাজটুকু হয়েছে মহান সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে। তারপরে সবাই মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্য স্বীকার করতে লাগলো এবং নিজেদের জীবনের সকল ভুল-ত্রুটির ক্ষমা প্রার্থনা করতে লাগলো। এমন সময় তাদের সকলের সামনে মাজায় গামছা বাধা এবং গায়ে ছেঁড়া একটি জামা পরিহিত মানুষ এসে উপস্থিত হলো। লোকটি এসে প্রথমে সকলের নিকট তার পরিচয় দিলো। সে পশ্চিমের একটি জনপদে বসবাস করে এবং সে পেশায় একজন মাঝি। লোকটির পরিচয় পেয়ে কালু বললো, হঠাৎ করে আপনি আমাদের ধার্মিক লোকের বাগান কিভাবে চিনলেন এবং কেন আসলেন।



মাঝি তখন উত্তরে বললেন, আমি এর আগেও ধার্মিক লোকের বাগান এসেছিলাম। কারণ উনি আমার পূর্ব পরিচিত এবং মাঝেমধ্যে আমার নৌকায় ধার্মিক লোকটি নদী পার হতেন। তারপরে উপস্থিত সকলেই বিষয়টি বুঝতে পারলো। তখন কালু পুনরায় মাঝিকে জিজ্ঞেস করলেন, আজকে আপনি কেন এসেছেন? উত্তরে মাঝি বললো, গতকাল বিকেলে ধার্মিক লোকটি আমার নৌকায় চড়ে নদী পার হয়েছেন। কিন্তু ধার্মিক লোকের কাছে কোন টাকা পয়সা ছিল না, তাই তিনি আমাকে অনুরোধ করে বলেছিলেন, আমি যেন তার বাগান বাড়িতে গিয়ে নৌকায় যাতায়াত ভাড়ার টাকাটি নিয়ে আসি। মাঝির কথা শুনে উপস্থিত সকলেই অবাক হলো এবং সকলে বলে উঠলো আমাদের ধার্মিক লোকটি তো অনেক আগেই পরলোক গমন করেছেন। কিন্তু উপস্থিত সকলের কথাটি মাঝি একেবারেই নাকোচ করে দিল।



তখন কালু বলে উঠলো, ধার্মিক লোকটি আপনার নৌকায় চড়ে নদী পার হয়েছে গতকাল--- এর কোন প্রমাণ আছে কি আপনার কাছে? মাঝি তখন বললেন, এর কোন প্রমাণ আমার কাছে নেই। তবে ধার্মিক লোকের কিছু কথা আমার মনে আছে। মাঝি বললো, নদী পার হওয়ার সময় ধার্মিক লোকটি বলেছিল আমি আর কখনোই আমার বাগান বাড়িতে ফিরে যাব না। কিন্তু আমার বাগান বাড়ির শয়ন কক্ষের ডান দিকে একটি ধর্মীয় বই রয়েছে। সেই বইয়ের মাঝখানে একটি ১০০ টাকার নোট রয়েছে। সেই টাকাটি তুমি যাতায়াত ভাড়া হিসেবে নিবে। একই সাথে ধর্মীয় বইয়ের নিচে এক টুকরো স্বর্ণ রয়েছে। ধর্মীয় বইটি যে পড়তে পারবে এবং সংরক্ষণ করতে পারবে তার হাতে বইসহ স্বর্ণের টুকরোটি তুলে দিবে।



গল্পটির নবম পর্বটি পড়ার লিঙ্ক





গল্পটি চলমান থাকবে। গল্পটির একাদশতম পর্বটি আগামী সপ্তাহে শেয়ার করা হবে।




আমার পরিচয়।

IMG_20220709_132030_108.jpg



আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।

১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।



Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 7 months ago 

আপনি আজকে অনেক সুন্দর করে সম্মান গল্পটার দশম পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। এর আগের পর্বটা আমার পড়া হয়েছিল। ধার্মিক লোকের মৃত্যুর কথাটা শুনে খুব খারাপ লেগেছিল। কালো সবকিছু দেখছি সবাইকে খুলে বলেছিল। কিন্তু হঠাৎ করে ওই মাঝি এসে উপস্থিত। যে কিনা বলছেন ধার্মিক লোকটা তার নৌকায় চড়ে এসেছিল আর এখন টাকার জন্য এসেছে। এখন দেখা যাক তার সবগুলো কথা অনুযায়ী সবকিছু ঠিকঠাক হবে কিনা। আর ওই বইটা এবং স্বর্ণের টুকরো কে পাবে? এটাই দেখতে হবে।

 7 months ago 

দেখতে দেখতে সম্মান গল্পটার দশটা পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। আপনি একে একে অনেক সুন্দর করে এই গল্পের প্রত্যেকটা পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করে আসছেন। আর এই গল্পটার বেশিরভাগ পর্ব আমার পড়া হয়েছে শুরু থেকেই। আজকে ১০ তম পর্বটা আরো বেশি ভালো লাগলো। কিন্তু শেষের দিকটা একটু অবাক করার মতোই ছিল। যেহেতু কালু বলেছে ধার্মিক লোকটা মারা গিয়েছে। তাহলে জেলে কিভাবে বলল, গতকাল তার নৌকা করে ধার্মিক লোকটা পার হয়েছে। এটা শুনে সবাই আশ্চর্য হওয়ারই কথা। আর এটা বিশ্বাস করার মতোই ছিল না। এখন জেলের কথা অনুযায়ী ওই বইটা পাবে কিনা এটা দেখতে হচ্ছে এখন।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 67315.59
ETH 2604.26
USDT 1.00
SBD 2.71