গল্প :- সম্মান // পর্ব:-০৭

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ রবিবার। ২৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।

religion-2689453_1280.jpg

Source



তারপরে রাত কেটে গেল। চারপাশের গ্রাম থেকে ফজরের আজানের ধ্বনি কালুর কানে আসলো। আর তখনই কালু পরিপূর্ণভাবে জ্ঞান ফিরে পেল। তারপর আস্তে আস্তে যখন সূর্যের আলো সেই ধার্মিক লোকের বাগানে আসতে শুরু করলো তখন বাগানের পুরো দৃশ্য কালু তার নিজ চোখে দিয়ে দেখতে লাগলো। কালু দেখলো সুজন মূর্তির মতো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, আবার একটু দূরে রাসু ও তার দলবল কলা গাছের কাঁধির কাছে মূর্তির মতো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সকল জীবন্ত মানুষ গুলোকে এভাবে মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কালু হতবাক হয়ে গেল। তারপর কালু ভাবতে লাগলো যে, এখানে কোন মানুষ আসার আগেই তাকে এখান থেকে পালিয়ে যেতে হবে।

তারপর কালু সেই ধার্মিক লোকের বাগান থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলো। তারপর সেই বাগান থেকে দৌড় দেওয়ার সাথে সাথে কারা যেন পেছন দিক থেকে কালুকে টেনে ধরলো। তারপর কালু একটু জোর করতেই অদৃশ্য ভাবে কারা যেন কালুর মাথার চুল টেনে ধুবধাব করে পিঠের উপর ঠ্যাঙানি বসিয়ে দিলো। কালু অনুভব করলো যে, প্রতিটি ঠ্যাঙ্গানি যেনো এক মণের উপরে ওজন হবে। আর এরকম ওজনের ঠ্যাঙ্গানি খেয়ে কালু একেবারেই নিস্তেজ হয়ে পড়লো। সে নিশ্চিত হয়ে গেল যে, এখান থেকে নিজে প্রচেষ্টা করে পালিয়ে যাওয়া কখনোই সম্ভব নয়। কারণ সেই ধার্মিক লোক এখানে অনুপস্থিত থাকলেও স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা এখন তার বাগান দেখাশোনা করছেন। তাই এরকম ধার্মিক লোকের বাগানে চুরি করতে আসা তাদের মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত ছিল-- এটা কালু হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারলো।

এরপর কালু কান্না করতে লাগলো এবং সৃষ্টিকর্তার নিকট ক্ষমা চাইতে লাগলো। সে সৃষ্টিকর্তার নিকট ওয়াদা করলো যে, এখান থেকে যদি সে প্রাণে বেঁচে যায় তাহলে তার জীবনের সে আর কখনো চুরি করবে না। এমনকি কালু তার সঙ্গীদের পর্যন্ত চুরি করা থেকে বিরত করাবে এরকম দৃঢ় ওয়াদা সৃষ্টিকর্তার নিকট করতে লাগলো। ঠিক এমন মুহূর্তেই ঝড়ো বাতাস বইতে লাগলো। পাশাপাশি বাতাসের এক ধরনের অদ্ভুত শব্দ বের হতে লাগলো। কালু মাটি থেকে উঠে বসে খেয়াল করলো যে, বাগানের বাইরে বাতাসের কোন প্রভাব নেই। ঝড়ো বাতাস এবং বাতাসের শব্দ শুধুমাত্র বাগানের মধ্যেই। তারপর ঝড়ো বাতাসের সাথে সাথে সুজন, রাসু ও তার দলবল যারা মূর্তির মতো হয়ে দাঁড়িয়েছিল তারা সকলেই চোখ দিয়ে তাকাতে লাগলো এবং আশপাশের দৃশ্য দেখতে লাগলো। কিন্তু তারা নড়াচড়া করতে ও কথা বলতে পারলো না।

তারপরে কালু লক্ষ্য করলো যে, মূর্তির মতো যারা দাঁড়িয়ে আছে তাদের সকলের চোখ দিয়ে অঝরে জল ঝরছে। কালু বুঝতে পারলো তারা সকলেই আমার মতো অনুতপ্ত হয়েছে। তাই সকলেই নিজ নিজ প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে সৃষ্টিকর্তা নিকট কান্নাকাটি করতে লাগলো। এমন মুহূর্তে বাগানের মধ্যে সেই ধার্মিক লোকের আগমন ঘটলো। ধার্মিক লোকটি বাগানে প্রবেশ করেই উচ্চস্বরে সৃষ্টিকর্তার নিকট শুকরিয়া আদায় করলো। তারপরে ধার্মিক লোকটি যেখানে বসে সৃষ্টিকর্তার ইবাদত করেন এবং সৃষ্টিকর্তাকে পাওয়ার জন্য ধ্যান করেন সেই কক্ষে প্রবেশ করলেন। ধার্মিক লোকের হঠাৎ আগমন দেখে কালু খুবই ভয় পেয়ে গেল। কিন্তু কিছুই করার নেই, কালু ও তার চোরের দল সকলেই তো ধরা খেয়ে গেছে ধার্মিক লোকের কাছে।

কিছুক্ষণ পরে সে ধার্মিক লোক তার কক্ষ থেকে বের হলেন এবং কালু ও চোরদের সকলকে দেখে মিটমিট করে হাসতে লাগলেন। তারপরে প্রথমে ধার্মিক লোক রাসু ও তার চোরের দলের নিকটে গেলেন এবং তাদেরকে বললেন, কি ব্যাপার বাবা, তোমরা দাঁড়িয়ে আছো কেন? তোমরা কলা গাছের কাঁধি কেটে এখান থেকে চলে যাবে, তোমরা দাঁড়িয়ে কেন? ধার্মিক লোকটি এরকম কথা বলে আবার মিটমিট করে হাসলেন এবং একটু উচ্চস্বরে সৃষ্টিকর্তার প্রতি শুকরিয়া আদায় করলেন। তারপর ধার্মিক লোকটি কালুর নিকটে গেলেন এবং বললেন, বাবা তুমি তো এখান থেকে চলে যেতে পারো, চুরি করতে এসে কেউ কি কখনো এভাবে বসে থাকে? ধার্মিক লোকের এ কথা শুনে কালু উচ্চস্বরে কান্না করতে শুরু করলো।

গল্পটির ষষ্ঠ পর্বটি পড়ার লিঙ্ক





গল্পটি চলমান থাকবে। গল্পটির অষ্টম পর্বটি আগামী সপ্তাহে শেয়ার করা হবে।


১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।



Sort:  
 4 months ago 

দেখতে দেখতে সম্মান গল্পটার ৭ তম পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। সম্মান গল্প টার প্রত্যেকটা পর্ব আমার পড়া হয়েছে। কালু সকাল বেলায় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও দেখছি সে পালিয়ে যেতে পারেনি। আর অনেকক্ষণ পরে সেখানে ধার্মিক লোকটাও চলে এসেছিল। এখন এটাই দেখতে হবে যে, সৃষ্টিকর্তা এবং ধার্মিক লোকটা চোর গুলোকে ক্ষমা করে কিনা। এবং কি অন্য চোরগুলো মূর্তি থেকে আবার আগের মত হতে পারে কিনা। এই গল্পটার পরবর্তী পর্ব দেখার অপেক্ষায় থাকলাম এখন। আশা করছি শীঘ্রই সবার মাঝে পরবর্তী পর্ব ভাগ করবেন।

 4 months ago 

সম্মান গল্পটা পড়তে কিন্তু আমার কাছে শুরু থেকেই খুবই ভালো লাগতেছে। কালু সহ তার বন্ধুরা ওই ধার্মিক লোকটার বাগানে চুরি করতে গিয়ে দেখছি, অনেক রকমের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল। আর সকাল হওয়ার পাশাপাশি ধার্মিক লোকটাও চলে এসেছিল। কিন্তু তারা সেখান থেকে পালাতে পারেনি। কারণ অন্যরা মূর্তি হয়েছিল এবং কি কালু চাইলেও পালাতে পারেনি। এখন তারা ক্ষমা চাইলেও তাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে কিনা এটা দেখতে হবে। আশা করছি পরবর্তী পর্বে আরো কিছু বিষয় আমরা জানতে পারবো।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.12
JST 0.027
BTC 55093.98
ETH 2894.76
USDT 1.00
SBD 2.22