সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।
Source
উপস্থিত সকল মানুষেরাই কালুর প্রস্তাবটি মেনে নিলো। এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই হঠাৎ করে কালু শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়লো। তারপর একদিন সকাল দশটার সময় কালুর মৃত্যু হয়ে গেল। এরপর উক্ত লোকালয়ের মানুষেরা অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে কালুকে ধার্মিক লোকের কবরের পাশেই দাফন সম্পন্ন করলো। এরপর দিনের পর দিন, মাসের পর মাস চলে যেতে লাগলো। এমনি করে অনেকটি বছর কেটে গেল। ধার্মিক লোকের কথা এবং সাথে কালুর কথা উক্ত লোকালয়সহ আশপাশের সব গুলো লোকালয়ের মানুষের মুখে ছড়িয়ে পড়লো। ধার্মিক লোকের কথা এবং কালুর কথাগুলো বয়স্ক মানুষের মুখে শুনে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা দারুন ভাবে ধর্মীয় শিক্ষা নিতে লাগলো। এদিকে ধার্মিক লোকের ও কালুর কবরকে বাদ দিয়ে আশপাশের জায়গাগুলো সুন্দর আবাদি জমিতে পরিণত হলো।
শুধু তাই নয়, ধার্মিক লোকের কবরের পাশ দিয়ে একটি বেলগাছ জন্ম হয়ে বেল গাছটি বেশ মোটা হয়ে গেছে। পাশাপাশি কবর দুটি যুগের পর যুগ স্থানীয় লোকালয়ের মানুষেরা যত্নের সাথে সংরক্ষণ করে রেখেছে। আবার প্রত্যেক শুক্রবার এবং বিশেষ ধর্মীয় দিনে কবর দুটিতে স্থানীয় লোকালয়ের মানুষেরা জিয়ারত করে। একই সাথে উক্ত স্থানে ধর্মীয় মাহফিলের ব্যবস্থা করে। ধার্মিক লোকের সম্মান দিতে কেউ কার্পণ্য করে না। বরং ধার্মিক লোকের দেখানো পথ অনুসরণ করে চলে আসছে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মের মানুষেরা। কিন্তু ধার্মিক লোকের লোকালয়ের দুইজন মানুষ ছিল তারা ধার্মিক লোকের কথাগুলো বিশ্বাস তো করতোই না, বরং ধার্মিক লোক ও কালুর কথা শুনে ঠাট্টা ও হাসি তামাশা করতো। স্থানীয় মানুষেরা সেই দুইজন মানুষকে ধার্মিক লোক সম্পর্কে হাসি তামাশা করতে বারবার নিষেধ করতো।
কিন্তু সেই মানুষ দুটি ছিল শয়তান প্রকৃতির। তাদের নাম ছিল রানা ও সবুজ। রানা ও সবুজ ইচ্ছা করে ধার্মিক লোকের কবরের পাশে গিয়ে বেসুরো কণ্ঠে আবোল তাবোল গান বলতো এবং বিড়ি সিগারেটের পাশাপাশি গাঞ্জা টানতো। ওদের দুজনের কার্যকলাপ দেখে উক্ত লোকালয়ের মানুষেরা বেশ বিরক্তবোধ করতো এবং সকলেই তাদেরকে এরকম কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করতো। কিন্তু রানা ও সবুজ কারো কথা কর্ণপাত করতো না। একবার রানা ও সবুজ ধার্মিক লোকের কবরের পাশের বেশ কিছু জমি আবাদ করতে লাগলো। তারা দুজন মিলে ধার্মিক লোকের কবরের পাশের অনেকগুলো জমিতে ছোলা ফসল চাষ করেছিল। কিন্তু ছোলা ফসল গুলো যখন পরিপুষ্ট হয়েছিল ঠিক তখনই কারা যেন রাতের বেলায় এসে অনেকগুলো ছোলা চুরি করে নিয়ে গেল। তাই রানা ও সবুজ তাদের ছোলা ফসল রাতের বেলায় পাহারা দেওয়ার জন্য ধার্মিক লোকের কবরের পাশে বাঁশের একটি মাচা তৈরি করে।
এরপর প্রত্যেকদিন সন্ধ্যার পর থেকে রানা ও সবুজ উক্ত বাঁশের মাচায় বসে তাদের ছোলা ফসল পাহারা দিতো। ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি সময়, রাতের বেলায় বেশ কিছুটা শীত অনুভূত হয়, পাশাপাশি জোসনা রাত চারিদিকে ঝলমল প্রকৃতি। আর এমন প্রকৃতির মাঝে ছোলা ফসল পাহারা দিতে এসে রানা ও সবুজ বেশ আত্মহারা হয়ে যেত। তারা দুজনে গাঞ্জা টানার পাশাপাশি বাজে কন্ঠে আবোল তাবোল গানে আশপাশের পরিবেশটা একেবারেই দূষিত করে দিতো। কেউ যদি তাদেরকে নিষেধ করতে যেত তাহলে রাতের বেলায় তাকে আবার উল্টো রানা ও সবুজ মারতে যেত এবং গালিগালাজ করতো। এরকম অবস্থা কিছুদিন যেতে না যেতেই উক্ত লোকালয়ের ইমাম সাহেব স্বপ্নে দেখলো যে, তার কাছে ধার্মিক লোকটি বেশ রাগান্বিত অবস্থায় চলে এসেছে এবং ধার্মিক লোকটি ইমাম সাহেবকে বলতে লাগলো যে, আমার কবরের পাশে দুইজন জঞ্জাল আমাকে খুবই বিরক্ত করছে, তাদেরকে এখান থেকে চলে যেতে বলবে। এরকম স্বপ্ন দেখার সাথে সাথে ইমাম সাহেবের ঘুম ভেঙ্গে যায়।
ইমাম সাহেব তার স্বপ্নের কথাটি উক্ত লোকালয়ের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষের কাছে শেয়ার করলো। তারপর উক্ত লোকালয়ের ইমাম সাহেব সহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ রানা ও সবুজকে ডেকে ইমাম সাহেবের স্বপ্নের কথা বললো এবং তাদের এরকম কুকর্ম করা থেকে কঠোরভাবে বিরত থাকার নির্দেশ করলো। লোকালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সামনে রানা ও সবুজ তাদের ভুল স্বীকার করলেও রাতের বেলায় ঠিকই তাদের কুকর্ম গুলো পরিচালনা করতে লাগলো। এরপর একদিন রাত্রে রানা ও সবুজ ভয়ংকর এবং মর্মান্তিক একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হলো----
গল্পটির ১২তম পর্বটি পড়ার লিঙ্ক
গল্পটি চলমান থাকবে। গল্পটির ১৪তম পর্বটি আগামী সপ্তাহে শেয়ার করা হবে।
আমার পরিচয়।
আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।
১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ। |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
দেখতে দেখতে সম্মান গল্পটার ১৩টা পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। কালুর কথা শুনে অনেক বেশি খারাপ লেগেছে। কালু ও কয়েকদিন পরে মারা গিয়েছে শুনে খারাপ লাগলো। আর দেখছি গ্রামের সবাই তাদেরকে এখনো অনেক বেশি সম্মান করে। আর বাচ্চারাও এসব কিছু শুনে শিক্ষা গ্রহণ করা শুরু করে। কিন্তু রানা ও সবুজ নামের লোকগুলো তো দেখছি বেশি বাড়াবাড়ি করতেছে। তাদের সাথে মর্মান্তিক ঘটনা তো হবেই। যাই হোক দেখা যাক তাদের সাথে কি হয়। ১৪ নাম্বার পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
সম্মান গল্পটার প্রত্যেকটা পর্ব আমার পড়া হয়েছে। প্রত্যেকটা পর্বের মত আপনি 13 তম পর্বটা ও অনেক সুন্দর করে শেয়ার করেছেন সবার মাঝে। ধার্মিক লোকের মৃত্যুর কথা শুনে যেমন খুব খারাপ লেগেছিল, তেমনি কালুর মৃত্যুর কথা শুনেও খারাপ লেগেছে। ওই দুজন লোক তো দেখছি ধার্মিক লোকটার কবর এবং কালুর কবরের পাশে গিয়ে খারাপ খারাপ কাজ করতো। তাদের সাথে খারাপ কিছু হলেই একেবারে ভালো হয়, কারণ তারা একটু বেশি খারাপ। তাদের সাথে কি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে এটা জানার আগ্রহ জন্মেছে।